কবিতা/গান

একদা বিদ্যানন্দ

বিদ্যানন্দ একদা একটা করিল ভীষণ পণ-
স্বদেশের তরে, যা করেই হোক, রাখিবেই সে জীবন।
সকলে বলিল, ‘আ-হা-হা কী সাধু, মহৎ চিন্তা ভাই’
বিদ্যানন্দ সজোরে বলিল, ‘ফান্ডিং তোলা চাই,
টাকা না তুলিলে কীভাবে করিব উদ্ধার এই দেশ?’
তখন সকলে বলিল- ‘বাহবা, বাহবা, বাহবা, বেশ!’

রোগে ভুগিয়া গরিবেরা মরে, দেখিবে কাহারে কেবা!
সকলে বলিল, ‘বিদ্যানন্দ, করো না ভায়ের সেবা।’
বিদ্যানন্দ চাপড়ায়ে বুক পোস্টিয়া এক ছবি–
‘কোরবানি গোশ বিলাইতাছি’, বলিয়া দিল যে কবি।
বাস্তবে কোথা দিল বা গোশত, কেহ জানিল না তাহা;
পোস্ট দেখিয়া সকলে বলিল- “বাহবা, বাহবা, বাহা!

ন্যাকামিতে সেরা বিদ্যানন্দ কহিল, ‘অফিস-ভাঙা’,
ডোনেশন নিয়া যদিও বা সে উঠিতেছে হয়ে চাঙা;
শতেক বিঘা জমি তাহাদের, তাহাতেও দিল ফাঁকি,
কাগজে-কলমে মিথ্যা বলিতে রইল না আর বাকি।
ভুয়া নাম দিয়া যাকাত তুলিয়া বলিল সকলে নিক,
তখন লোকেরা বলিল- ‘হাঁ হাঁ হাঁ, তা বটে, তা বটে, ঠিক!’

বিদ্যানন্দ পোস্ট দিয়া দিল, পাইল হাজারো রীচ;
‘মহৎ কার্যে আসিয়াছি মোরা, সাফ করিতেছি বীচ’
বাস্তবে সেথা ময়লা ফেলিয়া তাহাই তুলিয়া নিয়া,
ফটোশুট আর মার্কেটিং-এ লাখো টাকা ঢালি দিয়া–
ভালো বলে তাহা করিল জাহির, হোক বা সে কাজ মন্দ
আবেগে সকলে বলিল- ‘বাহবা, বাহবা বিদ্যানন্দ।’

নিয়মিত কিছু সেলেব আনিয়া কীভাবে কীভাবে জানি–
বিদ্যানন্দ জয় করিয়াছে মানুষের মনখানি;
অগ্নিকাণ্ডে বঙ্গবাজার পুড়িয়া হলো যে ছাই;
বিদ্যানন্দ করিবে না সেবা সম্ভব নাকি ভাই?
অন্যের ছবি করিয়া চুরি সে পোস্ট দিয়া লালে লাল;
সকলে বলিল- ‘ভ্যালা রে নন্দ, বেঁচে থাক চিরকাল।’

– Anika Tuba

ইসলামিক ইমেইল নিউজলেটার
নতুন পোস্ট প্রকাশিত হলে সরাসরি আপনার ই-মেইল ইনবক্সে পেতে সাবস্ক্রাইব করুন।
icon

মন্তব্য করুন

আরও দেখুন
Close
Back to top button