ভারতের বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাস

ওয়াকফ সংশোধনী বিলের মাধ্যমে ভারত আবারও প্রমাণ করল, তারা নামেই ধর্মনিরপেক্ষ, কাজে সম্পূর্ণ হিন্দুত্ববাদী দেশ।
বিরোধী দল এবং প্রায় সব মুসলিম সংগঠনই বলছে, এই বিলটি আনাই হয়েছে ভারতের সর্ববৃহৎ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করতে।
সচেতন মানুষ মাত্রই জানেন, মুসলমানদের ধর্মীয় ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সসম্মানে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার একটি শক্তিশালী মাধ্যম হলো ওয়াকফ।
প্রাতিষ্ঠানিক সম্পত্তির দিক থেকে গোটা ভারতবর্ষের তৃতীয় সর্বোচ্চ সম্পত্তির মালিক ভারতীয় ওয়াকফ বোর্ড। এর মাধ্যমে শত শত বছর ধরে ভারতের হাজার হাজার মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা-সহ নানামুখী কল্যাণমুখী কাজ পরিচালিত হয়ে আসছে।
এটা ভারতের মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সামাজিক অধিকারের বিষয়। কিন্তু সেই অধিকার খর্ব করার জন্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিমদের ঢোকানোর নতুন আইন পাস করেছে ভারত সরকার।
মুসলিম সম্প্রদায় এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রবল আপত্তির মধ্যেও ১৩ ঘণ্টার দীর্ঘ বিতর্কের পর লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাস হয়েছে বিতর্কিত ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৫। অথচ এই বিলের বিপক্ষে মত দিয়েছেন ২৩২ জন সাংসদ।
বিতর্কিত এই আইন কার্যকর হলে শত শত বছর ধরে চলে আসা মুসলমানদের ওয়াকফকৃত সম্পত্তি পরিচালনায় হিন্দুদের হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি হবে। মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা-সহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তাদের স্বকীয়তা ও ঐতিহ্য হারাবে। মুসলমানদের সম্পত্তি হিন্দু কর্তৃক বাজেয়াপ্ত করার সুযোগ তৈরি হবে।
তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ওয়াকফ সংশোধনী বিল দেশের মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ।
যে দেশের হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী হোলির রং না মাখা কিংবা গরুর গোশত খাওয়ার ‘অপরাধে’ মুসলমানদের দিন-দুপুরে শেষ করে দেয়, সেই তাদের হাতে মুসলমানদের ওয়াকফকৃত সম্পত্তি কতটা নিরাপদ থাকবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
ভারতের হিন্দুরা কি মেনে নেবে, তাদের মন্দির পরিচালনায় মুসলমানদের হস্তক্ষেপ? যদি না মানে, তবে মুসলমানদের ওয়াকফকৃত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় কেন অমুসলিমদের ঢোকানোর পাঁয়তারা চলছে? এই কি তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতার নমুনা?
আমরা এই আইনের তীব্র বিরোধিতা ও নিন্দা জানাচ্ছি।