ছালাত/পবিত্রতা

করোনা ভাইরাসের আতংকে সঊদী আরবের মসজিদসমূহে আযানের সময় ‘হাইয়া আলাছ-ছালাহ’-এর বদলে ‘ছাল্লূ ফী বুয়ূতিকুম’ বলা হচ্ছে। এটা কি শরী‘আত সম্মত?

উত্তর : এটি শরী‘আতসম্মত। ঝড়-তুফান বা মহামারীর সময় আযানে ‘হাইয়া ‘আলাছ-ছালাহ’-এর পরিবর্তে ‘ছাল্লূ ফী বুয়ূতিকুম’ বা ‘ফী রেহালিকুম’ (তোমরা বাড়িতে বা স্ব স্ব আবাসস্থলে ছালাত আদায় কর) বলা যাবে (বুখারী হা/৯০১, ৬৩২; মুসলিম হা/৬৯৯, ৬৯৭; মিশকাত হা/১০৫৫)। ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্র রাসূল (ছাঃ) সফরের অবস্থায় বৃষ্টি অথবা তীব্র শীতের রাতে মুওয়াযযিনকে আযান দিতে বললেন এবং সাথে সাথে এ কথাও ঘোষণা করতে বললেন যে, তোমরা নিজ আবাসস্থলে ছালাত আদায় কর (বুখারী হা/৬৩২; মুসলিম হা/৬৯৭; মিশকাত হা/১০৫৫)। এছাড়া ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি তাঁর মুওয়াযযিনকে এক প্রবল বর্ষণের দিনে বললেন, যখন তুমি (আযানে) ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ’ বলবে, তখন ‘হাইয়া ‘আলাছ-ছালাহ’ বলবে না; বরং বলবে, ‘ছাল্লু ফী বুয়ূতিকুম’। এটা শুনে লোকেরা যেন অপসন্দ করল। তখন তিনি বললেন, আমার চেয়ে উত্তম ব্যক্তিই (অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তা করেছেন। জুম‘আ ওয়াজিব বিষয়। কিন্তু আমি তোমাদেরকে মাটি ও কাদার মধ্য দিয়ে যাতায়াতের অসুবিধায় ফেলতে অপসন্দ করি (বুখারী হা/৯০১; মুসলিম হা/৬৯৯)।
উল্লেখ্য যে, ‘ছাল্লূ ফী রেহালিকুম’ বাক্যটি আযানের মধ্যে বা আযান শেষে দু’ভাবেই বলা জায়েয। তবে আযানকে স্বস্থানে রেখে আযানের শেষে ‘ছাল্লু ফী রেহালিকুম’ বলাই উত্তম। কারণ যাদের ওযর নেই তারা জামা‘আতে হাযির হওয়ার জন্য আদিষ্ট (নববী হা/৬৯৯-এর ব্যাখ্যা; ফাৎহুল বারী হা/৬৩২-এর ব্যাখ্যা)। আর আযানের মধ্যে উক্ত বাক্য বললেও ‘হাইয়া ‘আলাল ফালাহ’ বলবে। কারণ এমতাবস্থায় ছালাত বাড়িতে আদায় করলেও কল্যাণের মধ্যে থাকবে (ইবনু কুদামা, আল-কাফী ২/৩৬, তা‘লীক্ব উছায়মীন)। মোটকথা ‘হাইয়া ‘আলাছ-ছালাহ’ ব্যতীত বাকী সব শব্দ ঠিক থাকবে। অথবা আযানের পরে মুছল্লীদের ভাষায় ‘তোমরা তোমাদের বাড়ীতে বা আবাসস্থলে ছালাত আদায় কর’ বলা যাবে। এতদসত্ত্বেও কেউ মসজিদে এসে জামা‘আতে যোগদান করলে তিনি অবশ্যই পূর্ণ নেকী পাবেন।

ইসলামিক ইমেইল নিউজলেটার
নতুন পোস্ট প্রকাশিত হলে সরাসরি আপনার ই-মেইল ইনবক্সে পেতে সাবস্ক্রাইব করুন।
icon

৯টি মন্তব্য

  1. আসসালামু আলাইকু, হাদিস এর রেফারেন্সগুলি কিভাবে খুজতে হবে । আপনাদের সাইড থেকে ডাউনলোড করা মুসলিম শরিফের থেকে তো হাদিস নাম্বারের মিল পাচ্ছি না। যেমন ঘরে নামাজের আজানের রেফারেন্স এর মুসলিম শরিফের হাদিস নং দেয়া আছে তার সাথে মুসলিম শরিফের হাদিস মিলছে। দয়াকরে জানাবেন আশাক।

    1. প্রশ্নের উত্তরে বিস্তারিত বলা হয়েছে। ভিত্তিহীনভাবে মিথ্যাচারের অভিযোগ না করে আপনার কাছে এর চেয়ে ভালো বা বিশুদ্ধ উত্তর থাকলে কমেন্টে জানাতে পারেন।

    1. ঝড় তুফান আর মহামারী কি এক জিনিস ❓ কিসের দলিল ভিত্তিক কথা হল এখানে ❗ দলীল হল ঝড় তুফানের শীতের আর প্রয়োগ করছেন মহামারীর। সাহাবীরা কি এই হাদিস পাননি❓ তারা কি মহামারি’র সময় জুমার সালাত জামাত ছেড়ে দিয়েছেন❓ জামাতে অন্য নামাজ ছেড়ে দিয়েছিলেন কি❓কিসের ভেতর কি পান্তা ভাতে ঘি।

  2. বুখারী হাদিস ৯০১,৬৩২ এই ধরনের কোন হাদিস তো নেই,দয়া করে হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা দিবেন না।

    বুখারী হা/৯০১ : আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বাজারে বিক্রি হচ্ছিল এমন একটি রেশমী জুব্বা নিয়ে উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি এটি কিনে নিন। ঈদের সময় এবং প্রতিনিধি দলের সংগে সাক্ষাতকালে এটি দিয়ে নিজেকে সজ্জিত করবেন। তথন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ এটি তো তার পোষাক, যার (আখিরাতে) কল্যাণের কোন অংশ নেই। এ ঘটনার পর উমর (রাঃ) আল্লাহর যত দিন ইচ্ছা ততদিন অতিবহিত করলেন।

    তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নিকট একটি রেশমী জুব্বা পাঠালেন, উমর (রাঃ) তা গ্রহন করেন এবং সেটি নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি তো বলেছিলেন, এটা তার পোষাক যার (আখিরাতে) কল্যাণের কোন অংশ নাই। অথচ আপনি এ জু্ব্বা আমার নিকট পাঠিয়েছেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি এটি বিক্রি করে দাও এবং বিক্রয়লব্ধ অর্থে তোমার প্রয়োজন মিটাও।

      1. ভাই ই ফা বা এই কত নাম্বার হাদিস? সব রেফারেন্স দিবেন please ….কারন লোকজনের সাথে এইসব নিয়া ফেতনা হয় যখন এক প্রকাশনী দেখা হয়। আপনারা অন্তত ই ফা বা এর রেফারেন্স দিবেন।

        আর আমাকে একটু ই ফা বা এর রেফারেন্স দিবেন please….

    1. গ্রন্থ:সহীহ বুখারী (ইফাঃ) / হাদিস নাম্বার: 855

      ১১/ জুমু’আ (كتاب الجمعة) / ৫৬৮. বৃষ্টির কারণে জুমু’আর সালাতে হাযির না হওয়ার অবকাশ ।

      ৮৫৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি তাঁর মুয়ায্‌যিনকে এক বর্ষণ মুখর দিনে বললেন, যখন তুমি (আযানে) ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ বলবে, তখন ‘হাইয়া আলাস সালাহ’ বলবে না, বলবে, ‘সাল্‌লু ফী বুয়ুতিকুম’- তোমরা নিজ নিজ বাসগৃহে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় কর। তা লোকেরা অপছন্দ করল। তখন তিনি বললেনঃ আমার চাইতে উত্তম ব্যাক্তই (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা করেছেন। জুমু’আহ নিঃসন্দেহে জরুরী। আমি অপছন্দ করি যে, তোমাদেরকে মাটি ও কাদার মধ্য দিয়ে যাতায়াত করার অসুবিধায় ফেলি।

      Narrated Muhammad bin Seereen: On a rainy day Ibn Abbas said to his Mu'adh-dhin, "After saying, 'Ash-hadu anna Muhammadan Rasulullah' (I testify that Muhammad is Allah's Messenger (ﷺ)), do not say 'Haiya 'Alas-Salat' (come for the prayer) but say 'Pray in your houses'." (The man did so). But the people disliked it. IbnAbbas said, “It was done by one who was much better than I (i.e. the Prophet (p.b.u.h) ). No doubt, the Jumua prayer is compulsory but I dislike to put you to task by bringing you out walking in mud and slush.”
      حدثنا مسدد، قال حدثنا إسماعيل، قال أخبرني عبد الحميد، صاحب الزيادي قال حدثنا عبد الله بن الحارث ابن عم، محمد بن سيرين قال ابن عباس لمؤذنه في يوم مطير إذا قلت أشهد أن محمدا رسول الله‏.‏ فلا تقل حى على الصلاة‏.‏ قل صلوا في بيوتكم‏.‏ فكأن الناس استنكروا، قال فعله من هو خير مني، إن الجمعة عزمة، وإني كرهت أن أخرجكم، فتمشون في الطين والدحض‏.‏

      حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَبْدُ الْحَمِيدِ، صَاحِبُ الزِّيَادِيِّ قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْحَارِثِ ابْنُ عَمِّ، مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ لِمُؤَذِّنِهِ فِي يَوْمٍ مَطِيرٍ إِذَا قُلْتَ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ‏.‏ فَلاَ تَقُلْ حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ‏.‏ قُلْ صَلُّوا فِي بُيُوتِكُمْ‏.‏ فَكَأَنَّ النَّاسَ اسْتَنْكَرُوا، قَالَ فَعَلَهُ مَنْ هُوَ خَيْرٌ مِنِّي، إِنَّ الْجُمُعَةَ عَزْمَةٌ، وَإِنِّي كَرِهْتُ أَنْ أُخْرِجَكُمْ، فَتَمْشُونَ فِي الطِّينِ وَالدَّحْضِ‏.‏

      হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

মন্তব্য করুন

Back to top button