ইশ! আল্লাহ যদি একজন ফেরেশতা পাঠয়ে বলে দিতেন, ইসলামই সত্য, আর সব মিথ্যা!
কখনো হয়তো আপনার খুব ইচ্ছা হয় ইশ! আল্লাহ যদি একজন ফেরেশতাকে পাঠিয়ে দিতেন যে এসে সারা পৃথিবীতে বলে যেতো “ইসলাম সত্য, বাকি সব মিথ্যা!” তাহলেই তো সব অমুসলিমেরা মুসলিম হয়ে যেতো!
অমুসলিম ভাইবোনেরাও হয়তো যৌক্তিক কারণেই দাবি করেন কেন একটা মিরাকল দেখিয়ে সব ল্যাঠা চুকিয়ে দেওয়া হয় না।
বিশ্বাস করুন, মিরাকল দেখানো হয়েছিলো। সকলের চোখের সামনে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত করে দেখানো হয়েছিলো। যাদের ঈমান আনার ইচ্ছা ছিলো না, তারা এরপরেও ঈমান আনেনি। বলেছিলো “এ তো সুস্পষ্ট জাদু!”
খুব ভালো করে জেনে রাখুন। ইসলামের সত্যতা মিরাকলের উপর নির্ভরশীল নয়। বরং আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা’আহর আকীদাহ হলো, কোনো ব্যক্তি যদি পানির উপর দাঁড়িয়ে দাবি করে ‘ইসলাম মিথ্যা, কুফর সত্য’ তাহলে তাকে অমান্য করতে হবে।
কম বলা হয়ে গেলো। বরং কোনো ব্যক্তি যদি আকাশে উড়ে উড়ে বলতে থাকে ইসলাম ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করতে, তাহলে তাকেও অমান্য করতে হবে।
দাজ্জাল এসে বৃষ্টি ঝরাবে, খাবার দেবে, পানি দেবে, জীবন দেবে, মরণ দেবে। আজ যদি আপনারা মিরাকলকে ইসলামের সত্যতার প্রমাণ ধরে নেন, তাহলে দাজ্জালকে সেজদা না করে যাবেন কোথায়?
তাওহীদ, রিসালাত, আখিরাতের দাওয়াত দিতে দিতে দিতে দিতে নবী রাসূলগণ রক্তাক্ত হয়ে গিয়েছিলেন। শান্তি বর্ষিত হোক তাঁদের উপর। তারপর হয়তো একটা দুটা মু’জিযা দেখানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে। এতেও কম মানুষই ঈমান এনেছিলো।
সামূদ জাতির জন্য পাহাড় থেকে উটনী বের করে দেখানো হয়েছে। তারা সাময়িকভাবে শান্ত হলেও সেই জাতিরই নয়জন ব্যক্তিই তো আল্লাহর হুকুম অমান্য করে সেই উটনীকে হত্যা করে। বাকি পুরো জাতি নির্লিপ্ত হয়ে বসে থাকে। কারণ সেই উটনীকে পানি পান করাতে গিয়ে তাদের একটু কম পানি পান করা লাগছিলো।
তারা কি পারতো না সহ্য করে নিতে? হত্যা করার সময় কি তাদের মাথায় আসলো না যে, যেই আল্লাহ অলৌকিকভাবে একটি উটনী এনেছেন, তিনি তাঁর হুকুম অমান্যকারীদের চাইলেই আযাব দিতে পারেন? কিন্তু না। তারা উটনীটি হত্যা করলো এবং আল্লাহর আযাবে ধ্বংস হলো।
আর আজ বিজ্ঞানের যুগ। আজ আপনার সামনে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হোক বা পাহাড়ের ভেতর থেকে উটনী বেরিয়ে আসুক। মানুষ কি বলবে না “এটা তো সুস্পষ্ট বিজ্ঞান”? ঘটনার চুলচেরা বিশ্লেষণ করে কি ইউটিউবে ছাড়া হবে না “Fake miracle exposed” নামে কোনো ভিডিও?
মু’জিযা, কারামাত অবশ্যই ইসলামের সত্যতার দলীল। কিন্তু একমাত্র দলীল নয়। প্রাথমিক দলীলও নয়। বরং আল্লাহ কুরআনে তাওহীদ, রিসালাত, আখিরাত সম্পর্কে জানিয়েছেন। এসব নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে বলেছেন।
সৃষ্টিজগতের শৃঙ্খলা নিয়ে যথাযথভাবে ভাবলেই যে কেউ বুঝবে যে আল্লাহ আছেন, এবং একজনই আছেন। যে কেউই বুঝবে নবী রাসূল আগমনের প্রয়োজনীয়তা। মৃত ভূমি থেকে বৃষ্টির পর তৃণ গজানো দেখে বুঝবে আখিরাতের পুনরুত্থান বাস্তব।
এ সব বোঝার পর আপনি বুঝবেন আপনি এক সর্বজ্ঞানী স্রষ্টার দ্বারা প্রতিপালিত হচ্ছেন। তখন তাঁর দেওয়া “চোরের হাত কাটার বিধান”কে আর বর্বর মনে হবে না। “পুরুষের চার বিয়ের অনুমতি”কে আর নৃশংস মনে হবে না। কারণ আল্লাহর দেওয়া বিধানের পেছনে অবশ্যই থাকবে প্রজ্ঞা, যা আপনি জানতেও পারেন, নাও জানতে পারেন।
মিরাকল যদি দেখতেই চান, তাঁর বিধানগুলো মেনে দেখুন। সালাত আদায় করেই দেখুন মন্দ কাজ থেকে দূরে সরে আসছেন কিনা। দান সদকা করেই দেখুন না অভাব দূর হয়ে যায় কিনা। দুআ করেই দেখুন তো তিন প্রকারের এক প্রকারে তা কবুল হয় কিনা।
#HujurHoye