জীবনের বাঁকে বাঁকে

নিজের পথ নিজে গড়ি

একবার স্কুলে এক বান্ধবী বলেছিল, ‘তোমাদের আর চিন্তা কি? তোমাদের মামাচাচার জোর আছে। তোমাদের চাকরি হয়ে যাবে। আমাদের কি হবে ভাব!’ আমার ‘মামাচাচা’ বিষয়ে কোন ধারণ ছিলনা। তাই ওকেই জিজ্ঞেস করলাম, ‘এটা কি বস্তু?’ সে যে ব্যাখ্যা দিল তাতে আমার মাথায় রক্ত চড়ে গেল। চূড়ান্তরকম মেজাজি ছিলাম। সে বয়সে তখনো মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করতে শিখিনি। ওর ঝুঁটি ধরে দুই গালে থাপড়ানোর প্রচন্ড ইচ্ছেটাকে দমন করার উদ্দেশ্যে কিচ্ছু না বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম। বেরোবার সময় দরজা বন্ধ করেছি এতটুকুই মনে আছে। বাবামা কোনদিন কোন মামাচাচার ওপর নির্ভর করতে শেখায়নি। তেমন কারো কথা কোনদিন বলেওনি। ওদের আমাদের কাছে কখনো কোন প্রত্যাশা ছিলনা। নিজেরা যতটুকু এসেছে স্বীয় পরিশ্রমে এগিয়েছে। এসব গল্পই ছিল আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস। সুতরাং, আমাকে যদি কেউ বলে কিংবা প্রস্তাব করে আমি কোন কাজের উপযুক্ত না হলেও কেবলমাত্র পরিচিতির কারণে আমাকে ঐ কাজ দেয়া হবে, আমি আপ্লুত হবার পরিবর্তে তাকে প্রত্যাখ্যান করব, এটাই স্বাভাবিক। অনেকক্ষণ পর যখন মাথা ঠাণ্ডা হল, রুমে ফিরে এসে দেখি ভেতরে লাইট ফ্যান কিছুই কাজ করছেনা। মিস্ত্রী দরজার পাশে সুইচবোর্ড খুলে ঠিক করছে। জানলাম, যাবার সময় রাগের মাথায় এত জোরে দরজা বন্ধ করেছি যে সুইচবোর্ড অকেজো হয়ে গিয়েছে! সেই প্রথম অনুভব করলাম, সংকল্প করলাম, নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সে আরেক যুদ্ধ। সে কাহিনী আরেকদিন হবে।

আজ হিসেব করি, তাহলে কি পরিচিতির কারণে কোনদিন কাজ পাইনি? অবশ্যই পেয়েছি এবং করেছি। আমি তখন অনার্সে পড়ি। সেকেন্ড ইয়ার। আমার বান্ধবী এক কোচিং সেন্টারে ইংরেজি পড়ানোর দায়িত্ব নিল। কয়েকটা ক্লাস নেয়ার পর নানাবিধ কারণে ওর পক্ষে আর ক্লাস নেয়া সম্ভব হচ্ছিলনা। কিন্তু বিকল্প কাউকে পাওয়া না গেলে কোচিং সেন্টার ওকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে রাজী না। তখন অনুরোধে ঢেঁকি গেলার মত ওর বাকী ক্লাসগুলো নিয়েছি। থার্ড ইয়ার। ভারতফেরত ছোট দুই ভাইকে এক ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি করাতে গেলাম। প্রিন্সিপালের সাথে ওদের বিষয়ে আলাপ করতে করতে উনি প্রস্তাব দিয়ে বসলেন, ‘আপনি স্কুলে যোগদান করুন’। বললাম, ‘আমি এখনো ছাত্রী। নানান জায়গায় ছোটবড় অনেক মানুষকে পড়িয়েছি। কিন্তু কোচিং সেন্টারে কিছুদিন পড়ানো ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ছাত্রছাত্রী পড়ানোর কোন অভিজ্ঞতা নেই। সবচেয়ে বড় কথা, আমি এখন চাকরী খুঁজছিনা’। কিন্তু তিনি নাছোড়বান্দা। বললেন, ‘আপনি অ্যাসিস্ট্যান্ট টিচার হিসেবে জয়েন করুন। কাজ শিখতে পারবেন। মূল দায়িত্ব আপনার ওপর নয়, সুতরাং প্রেশার কম থাকবে, ফলে লেখাপড়ার সমস্যা হবেনা। পরবর্তীতে পাশ করার পর আপনি ফুলটাইম টিচার হিসেবে যোগদান করতে পারবেন’। কি আর করা? কাজ শিখলাম কিছুদিন। পরে এই অভিজ্ঞতা অনেক কাজে লেগেছে। কিন্তু এর কোনটিতেই ‘কেবলমাত্র’ পরিচিতির কারণে আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। প্রথম ক্ষেত্রে আমি ইংরেজির ছাত্রী ছিলাম, বান্ধবী ছিল আমার সহপাঠী। সুতরাং, আমাদের উভয়ের কাজ পাবার ক্রাইটিরিয়া ছিল একই। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে আমি ছিলাম সহকারী এবং এই জাতীয় কাজে আমার পূর্বতন অভিজ্ঞতা ছিল।

অনার্সের তখনো রেজাল্ট বেরোয়নি। ভাইদের গৃহশিক্ষক শুনলাম নয়বার বিসিএস ফেইল। দশমবারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মাথায় ঢুকল বিসিএস কি বস্তু চেখে দেখতে হবে। ঘুষ এবং অন্যান্য বিবেচনায় পরিবারের কেউ সরকারী চাকরীর ব্যপারে রাজী না। বাবাকে আশ্বস্ত করলাম, চাকরী করবোনা, কেবল পরীক্ষা দিয়ে দেখতে চাই ইহা কি বস্তু। বাবা জানে আমি চ্যালেঞ্জ ভালবাসি। তাই আর না করলনা। চাকরী যেহেতু করবোনা, প্রস্তুতির ব্যপারে আন্তরিকতা ছিলনা। তদুপরি ফর্ম জমা দেয়ার জন্য আনুষ্ঠানিকভাব রেজাল্ট ঘোষণা হবার পূর্বে রেজাল্ট সংগ্রহ ইত্যাদি কাজে এখানে সেখানে দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে প্রকৃতপক্ষে প্রস্তুতির কথা মনে আনার সময় বের করাও ছিল মুশকিল। প্রিলিমিনারী পরীক্ষার আগের দিন একটি চটি বই জোগাড় হল, প্রশ্ন কেমন হয়ে থাকে দেখার সুযোগ হল। গাল দিয়ে কাঁধে ফোন ঠেকিয়ে বান্ধবীর সাথে কথা বলছি, এক হাতে ঘর ঝাড়ু দিচ্ছি, আরেক হাতে চটি বই। এই হল আমার প্রিলিমিনারীর প্রিপারেশন। আমার প্রভুর দয়া, প্রিলিতে টিকে গেলাম। রিটেনেও টিকলাম। মৌখিক, আমার রাব্বের প্রশংসা, আমার জন্য কখনই সমস্যা ছিলনা। ফলে চাকরী হয়ে গেল। অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পেলাম। কিন্তু জয়েন করলাম না। তবে বুঝলাম, কেউ যদি প্রথম শ্রেনী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে থাকে, তার জন্য বিসিএস পাশ করা কোন ব্যপার নয়।

বিসিএস দিতে গিয়ে একটা মজার অভিজ্ঞতা হল। সাইকোলজি রিটেন পরীক্ষার সময় আমার পেছনে এক লোকের সিট পড়ল। পরীক্ষা শুরু হবার আগে থেকেই দেখি তিনি সবার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছেন। আমরা বন্ধুরা পরীক্ষার হলে পরস্পরকে সাহায্য করতাম। ব্যাখ্যাটা কোন কবি কিংবা লেখকের কোন কবিতা বা উপন্যাস থেকে এসেছে সবাই সবাইকে জানিয়ে দিতাম। বিসিএস পরীক্ষার সময়ও আমরা আশেপাশের পরীক্ষার্থীদের সাহায্য করেছি। যেমন অংক পরীক্ষায় একটি প্রশ্ন ভুল ছিল। যারা মিলাতে গিয়ে সময় নষ্ট করছিল তাদের জানিয়েছি অংক মিলবেনা কারণ প্রশ্ন ভুল। কিন্তু এই লোক যখন বার বার বলতে লাগল, ‘আপনি একটু সাইড হয়ে বসেন, আপনার খাতা আমি দেখতে পাচ্ছিনা’, তখন মনে হল, ‘আপনি কি আমার সাথে কন্ট্র্যাক্টে পরীক্ষা দিতে এসেছেন নাকি? আরেকজনের খাতা দেখে লিখলে পরীক্ষা দেয়ার প্রয়োজন কি?’ আমি সাহায্য করায় বিশ্বাসী, কিন্তু অসদুপায় অবলম্বনের ঘোর বিরোধী। আমি আরো গ্যাঁট হয়ে বসলাম যেন ঐ লোক আমার খাতার কোণাও দেখতে না পায়। পরীক্ষার পরে তিনি ঘ্যান ঘ্যান করতে লাগলেন, ‘আপনি আপনার খাতা দেখালেন না’। কিছুই বললাম না।

কয়েক সপ্তাহ পর আমার এক চাচা জানাল কিভাবে যেন ঐ লোকের সাথে ওর পরিচয় হয়েছে। আমি ওর ভাতিজি জানতে পেরে ঐ লোক আমাকে বিয়ে করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘তুমি কি বললে?’ চাচা বলল, ‘আমি আঁতকে উঠে বললাম, ‘আমার ঘাড়ে কয়টা মাথা? আমি কিছুতেই ওকে আপনার কথা বলে পারবনা’। কিন্তু পরে মনে হল, আমি তোমার বিয়ের সুযোগ নষ্ট করলাম কিনা’। ওকে আশ্বস্ত করলাম, ‘তুমি ঠিক কাজটিই করেছ। আমি নিজে এই লোকের অসদুপায় অবলম্বনের সাক্ষী। তারপর আমি কিভাবে তাকে বিয়ে করার ব্যপারে আগ্রহী হতে পারি? যে এক ক্ষেত্রে অসৎ, সে অন্য ক্ষেত্রে সৎ হবে তা কি করে আশা করা যায়? সুতরাং, সে যদি পৃথিবীর শেষ জীবিত পুরুষ হত তবু আমি তাকে বিয়ে করতে রাজী হতাম না। অসৎ সংসর্গের চেয়ে একা থাকা ভাল’।

ক্যানাডায় চাকরী হয় মূলত নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে। ক্যানাডা গিয়ে আমি একটি কোর্স করি যেটিতে ক্যানাডিয়ান ওয়ার্কপ্লেস সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয় এবং ইন্টার্নশিপের সুযোগ থাকে। কোর্সের প্রথম পর্যায়ে ক্লাস হয়, দ্বিতীয় পর্যায়ে ইন্টার্নশিপ। সবার সৌহার্দ্যমূলক আচরণের কারণে ক্লাসের সবার মাঝে একটি সুন্দর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে সহপাঠীদের মাঝে যারা ইংরেজিতে দুর্বল ছিলেন, বিশেষ করে চাইনিজদের, ইংরেজি পড়াতাম। ইন্টার্নশিপে একটি বড় কোম্পানিতে কাজ করার সুযোগ পাই। ওদের একটি বিশেষ কাজ করে দেয়ার ফলে রেজুমিতে চমৎকার অভিজ্ঞতা সংযোজিত হল। তারপর বাসায় বাচ্চাদের সাথে থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম। একদিন এক বৃহৎ কোম্পানি থেকে ফোন এল। ওদের লোক প্রয়োজন। আমার এক চাইনিজ বান্ধবী আমার কথা বলেছে। জানালাম আমি চাকরী খুঁজছিনা। কিন্তু মহিলা নাছোড়বান্দা। বলল, ‘ইন্টার্ভিউয়ের জন্য এসো। তারপর বাকী কথা শুনব’। নেটওয়ার্কিং মূলত ইন্টার্ভিউ পর্যন্ত পৌঁছনোর জন্য। বাকী পথ আপনাকে নিজে চলতে হবে। আমি কোনকালেই চ্যালেঞ্জের মুখে পিছু হটতে পারিনি। গেলাম, ইন্টার্ভিউ দিতে। এক ঘণ্টার ইন্টার্ভিউ। তারপর আমি চাকরী করবোনা, মহিলা আমাকে ছাড়বেনা। এভাবে জবরদস্তি চাকরী মনে হয় দুনিয়ার আর কোথাও হয়না। করলাম কিছুদিন। তারপর দিলাম ছেড়ে। আবার কিছুদিন লেখাপড়া করলাম। বাচ্চাদের সাথে সময় কাটালাম। পিচ্চিটা যখন স্কুলে যাওয়া শুরু করল তখন আবার একই কোম্পানির একটি শাখা অফিসের জন্য অ্যাপ্লাই করলাম। বসা হবে মূল অফিসে। দু’শ জনের মাঝে শর্টলিস্টে এলাম আমি এবং এক ইঞ্জিনিয়ার। আমি বোরকা পরা, সে শ্বেতাঙ্গ পুরুষ। আমার প্রভুর অশেষ দয়া। চাকরীটা হল আমার। কারণ আমি কারো সুপারভিশন ব্যতীত এককভাবে এবং নির্ভুলভাবে কাজ করতে পারি। ওদের এক বছরের কাজ আমি সাত মাসে সম্পন্ন করে দিলাম। সবাই বলল, ‘এতে তোমার কি লাভ হল? তুমি পাঁচ মাসের বেতন থেকে বঞ্চিত হলে’। কিন্তু কার্যত ঠিক সে সময় মূল অফিসে একটি পজিশন খালি হল এবং ওরা আমাকে নিয়ে নিল।

মেধা এবং যোগ্যতার স্বল্পতা সত্ত্বেও আমার প্রভু আমাকে দুনিয়াজোড়া সেরা জায়গাগুলোতে কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন। সব জায়গায় সম্মানিত করেছেন। প্রতিটি জায়গায় বান্ধবী পরিবেষ্টিত পরিবেশ পেয়েছি। সালাত বা সাওম নিয়ে কোনদিন সমস্যা হয়নি। আমার প্রভুর প্রতি কৃতজ্ঞতার অন্ত নেই। তবে আমার অভিজ্ঞতা আমাকে একটি জিনিস শিখিয়েছে। আপনি যদি সৎ থাকার সংকল্প রাখেন, চেষ্টা করেন, আপনার প্রভু আপনাকে কোনোদিক থেকে রিজকের সংস্থান করে দেবেন তা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। কিন্তু অনেক মেধাবী এবং যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষকে দেখেছি নিরন্তর স্ট্রাগল করতে। এদের কেউ ছিল অহংকারী, কারো সততা সম্পর্কে ধারণা ছিল অস্পষ্ট, কেউ ছিল পরিশ্রম করতে অনিচ্ছুক এবং কেউ ছিল অসামাজিক। সুতরাং, কারুর দয়া কিংবা সুনজরের অপেক্ষায় অলস কিংবা অকর্মন্য হয়ে বসে থাকার চেয়ে নিজেকে গড়ে তোলাই শ্রেয় যেন আপনার যোগ্যতার চেয়ে আপনার মানসিকতাই আপনার সম্পদ হয়ে দাঁড়ায়।

– রেহনুমা বিনতে আনিস

ইসলামিক ইমেইল নিউজলেটার
নতুন পোস্ট প্রকাশিত হলে সরাসরি আপনার ই-মেইল ইনবক্সে পেতে সাবস্ক্রাইব করুন।
icon

৮টি মন্তব্য

  1. আপনার মেধার প্রশংসা না করে পারা যায় না। অসাধারণ মেধাবী আপনি আপু। বর্তমানে আপনি কি করছেন ? আল্লাহর ওপর ভরসা যে করে তার আর কোন চিন্তা করা লাগে না। লেখাটির মূল সারমর্ম এটাই।

    অনেক কিছু শিখলাম আপনার থেকে।
    যাযাকাল্লাহ খাইরান

    1. What are you trying to say us? Are you trying to say that Girls can do anything in their life can leave parents and family to work in a non-Muslim country? Do they provide a Halal place for muslim girl to work that is according to sunnah? Are you trying to say that girls should come out from their house by provoking islam and work with boys at the same place? Is it your Islamic belief? Are you trying to say that for profession a girl can sacrifice her religion? Where in Islam saying that a woman can work outside when she have her own family kids husband? Allah said you to go and work with men when your husband is capable of working? Why they publish this stories here. It will brainwash many Islamic minded girls. Is this site trying to promote the Jews agenda of bring out girls from their house and increase fitnah in this world? Is this site trying to promote the rules that is not even have any relation with Islam? Please stop brainwash people. Don’t try to make girls work with boys halal. Allah will ask you why you publish this stories here. Your story will increase fitnah and girls will go to work with boys after reading this story and it will increase fitnah maybe some of the girls will commit jina even and maybe a Muslim girl marry a non-Muslim colleague in future while working for a long time maybe while work with non-Muslims a Muslim start greet non-Muslims in their festivals and commit shirk. Will you gonna take the responsibility of a Muslim boy or girl if she commit sin while work in a non-Muslim country with non-Muslim colleagues. This story also going to increase the desire of Muslims boys and girls to achive this world with more passion and maybe lost their religious mind.

      1. দেখুন, লেখিকা একজন মহিলা বলে লেখাটা মেয়েদের জন্য নয়, ছেলে-মেয়ে একসাথে কাজ করতে হবে এটাও এখানে বলা হচ্ছে না, বলা উদ্দেশ্যও না। এখানে প্রচলিত একটা ধারনা নিয়ে কথা বলা হয়েছে “চাকরি পেতে মামা-খালু প্রয়োজন”। লেখিকা তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন এবং বুঝিয়েছেন যে ধারনাটি ভুল। লেখাটা একটু বেশি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

        1. দুঃখিত মানতে পারছি না৷কারণ এখানে লেখিকা মেয়ে বান্ধবীদের কথা উল্ল্যেখ্ করেছেন এখানে তিনি তার বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন কর্মজীবনের কথা বলেছেন এখানে শেতাঙ্গ পুরুষের সাথে একজন বোরকা পড়া নারীর কাজ পাওয়ার প্রতিযোগীতার কথা বর্ণনা করেছেন একজন নারীর বিদেশ সফর উল্ল্যেখ্ করেছেন যা পুরোটাই নারীদের কে পুরুষের সাথে অফিস আদালতে কাজ করতে উদ্ধুদ্ধ করবে | এখানে পুরুষদের জন্য নারীদের কে ঘর থেকে বেরিয়ে কাজ করার জন্য উদ্ধুদ্ধ করা ছারা অন্য কি্ছূ শিক্ষা দিচ্ছে না | লেখিকা বলেছেন বাচ্চা স্কুলে যাওয়া শুরু করার পর তিনি আবার চাকরি শুরু করেন ৷ বাচ্চা স্কুলে যাওয়া আরম্ভ করেছে মানে এই না যে মাকে পুনরায় চাকুরী শুরু করতে হবে। একজন স্কুলে যাওয়া বাচ্চা কতটাই বয়স হয়ে গেছে যে পুরো দিনে তাকে তার মা সাথে থাকার প্রয়োজন নেই | কোন মহিলা যার স্বামী কর্মক্ষম এবং আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল সেই মহিলা এই রচনাটি পড়লে তার দুধের শিশুকে ঘরে রেখে বাইরে চাকুরী তে যেতে দ্বিধা বোধ করবে না| পুরুষ দের অনুপ্ৰানিত করতে কি কোন পুরুষ লেখক খুজে পাওয়া যায়নি ? অনেক বড় বড় মুসলিম লেখক আছেন আমাদের সমাজে যাদের জীবনী সবাই কে অনুপ্রানিত করে তাহলে কেন একজন পুরুষ লেখকের জীবনী তুলে ধরলেন না ? এটা একটা ইসলামী সাইট্ আপনারা আপনাদের বিবেক বুদ্ধি দিয়ে বিচার করুন এই রচনা সমাজে কত ফিতনার সৃষ্টি করতে পারে |

          সবশেষ আপনাদের একটা পোষ্ট যাতে কুরআনের আয়াত বর্ণিত আছে তা বলে শেষ্ করতে চাই

          “আন-নূর 24:19″

          ” নিশ্চয় যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে, তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখেরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আর আল্লাহ্‌ জানেন, তোমরা জানো না। “

      2. “কেন একজন পুরুষ লেখকের জীবনী তুলে ধরলেন না” -এই প্রশ্নটাই ভুল। এই সাইটে হাজার হাজার লেখা প্রকাশিত আছে। যার ভেতর অল্প কিছু লেখিকার লেখা আছে। আসল কথা হলো সব লেখক/লেখিকার সাথে আপনি সব বিষয়ে একমত হতে পারবেন না। এখানে ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গির একটা ব্যাপার আছে। এখানে লেখিকার লেখার মতো আপনার বক্তব্যগুলোও উন্মুক্ত, যে কেউ এগুলো দেখতে পাবে। তাছাড়া এখন পর্যন্ত একমাত্র আপনিই এই লেখিকার সম্পর্কে নেগেটিভ মন্তব্য করেছেন।

        1. কারণ আমি এমন কিছু সহ্য করতে পারব না যা ইসলামের সাথে মোটেও যায় না | প্রশ্ন টা ভুল বললেন ঠিক আছে তাহলে দেখান কোথায় রাসুল (সাঃ) একসাথে মহিলা পুরুষের কাজ করবার অনুমতি দিয়েছেন | ইসলামিক সাইটে এইসব কীভাবে লিখা হয় ? আল্লাহ্ তায়ালা কে ভয় করি বলেই অন্যদের মত গা ভাষিয়ে দিতে পারব না কারণ যা ইসলামে স্বীকৃত নয় তাতে পজিটিভ মন্তব্য কী ভাবে দেই ? সবাই কে আল্লাহর কাছে যেতে হবে এবং আল্লাহর প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে আমি পজিটিভ মন্তব্য না দেবার কারন ব্যাখ্যা করব আপনারা সবাই যারা পজিটিভ মন্তব্য দিয়েছেন তারা কেন পজিটিভ মন্তব্য দিয়েছেন তার কারণ খুঁজে বের করুন | আল্লাহর ক্রোধ খুবই কঠিন | আল্লাহ প্রদত্ত রাস্তা ব্যতীত নিজের মনগড়া রাস্তায় চলা মানুষ কী মুসলিম না অন্য কিছু?

মন্তব্য করুন

Back to top button