সিডরের আট বছর পরে

সম্প্রতি খবরে প্রকাশ হয়েছে যে ২০০৭ সালে ইসলামি ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে যে ১৩ কোটি ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় এক হাজার ৪৬ কোটি টাকা এসেছিল তা দান করেছিলেন প্রয়াত সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ, যিনি গত জানুয়ারি মাসে মারা গেছেন। টেলিভিশন ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সিডরে আক্রান্তদের দুর্দশা ও ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্য দেখে মর্মাহত হন তিনি। তাই এ দান। এ দানের সাথে শর্তও ছিল যে দাতার নাম কেউ জানবে না, সরকারও না। আইডিবি কথা রেখেছে। তিনি মারা যাবার পরেই তার নাম প্রকাশ করা হয়েছে।
এক হাজার ৪৬ কোটি টাকা আসলে কত টাকা এটা নিয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। কিছু মানুষের এ ধরণের সমস্যা থাকে—তারা বেশী বড় অঙ্ক নিয়ে চিন্তা করতে পারে না। সম্ভবত আমি তাদের মধ্যে একজন। এই বিশাল অঙ্কের টাকা দিয়ে সিডর উপদ্রুত এলাকাতে মানুষজন নিশ্চয়ই অনেক উপকার পেয়েছে। সরকার নিশ্চয়ই অনেককে ঘর বানিয়ে দিয়েছে, ভেসে যাওয়া পুকুরগুলো সংষ্কার করে দিয়েছে, রাস্তা ঘাট ঠিক করে দিয়েছে। এত টাকা—নিশ্চয়ই ভালো কিছু হয়েছে। আল্লাহ জানেন, আইডিবি জানে, সরকার-ও জানে; তবে আমি জানি না।
গতবারের খুলনাতে কম্বল দেওয়ার সময় দেখা কিছু দৃশ্য চোখে ভাসে। দানের অঙ্কটার সাথে যায় না এমন কিছু দৃশ্য:
১. পোকামাকড় না, মানুষের ঘরবাড়ি:
২. এক পাশে বাঁধ। বাঁধের দেয়ালে খড়ের ছাদ।
৩. সে ঘরের দেয়াল চটের তৈরি।
৪. চিংড়ির ঘেরে নোনা হয়ে যাওয়া পানি। সেই পানির মধ্যেই মানুষ থাকে।
৫. রাস্তা-ঘাটের অবস্থাও তথৈবচ।
৬. একটা মাদ্রাসার দৃশ্য। মিষ্টি পানির উৎসতে গোঁড়ালি ডোবে না।
৭. মাদ্রাসার ভেতরের দৃশ্য। মাটির মেঝেতে সারের বস্তার চট বেছানো। নদীর বাতাস হুহু করে ঢোকে দৃশ্যমান ফাঁক-ফোকর দিয়ে।
আল্লাহ যেন বাদশাহ আব্দুল্লাহর দান কবুল করে নেন। তবে সেই দানের ভাগ যাদের দরকার তারা কতটা পেয়েছেন আল্লাহই জানেন।
__________
– শরীফ আবু হায়াত অপু