শিশুর খাৎনা (মুসলমানী)

প্রত্যেক মুসলিম শিশুর জন্য খাৎনা করা সুন্নাত। যেমন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
عن أبي هريرة قال قال رسولُ الله صلى الله عليه وسلم : الْفِطْرَةُ خَمْسٌ، الخِتَانُ والإِسْتِحْدَادُ وقَصُّ الشَّارِبِ وتَقْلِيْمُ الأَظْفَارِ ونَتْفُ الإِبِطِ، متفق عليه-
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেছেন যে, পাঁচটি বিষয় মানুষের স্বভাবজাত (১) খাৎনা করা (২) নাভির নীচের লোম ছাফ করা (৩) গোঁফ ছাটা (৪) নখ কাটা ও (৫) বগলের লোম ছাফ করা’।[1]
খাৎনা বিষয়ে জ্ঞাতব্য:
উপরোক্ত হাদীছে খাৎনা করাকে মানুষের ফিৎরাত বা স্বভাবজাত বলা হ’লেও এটি মূলতঃ নবীগণের সুন্নাত এবং নিঃসন্দেহে এটি চিরন্তন মানবীয় সভ্যতার পরিচায়ক। খাৎনা করায় যে স্বাস্থ্যগত উপকারিতা রয়েছে এবং এর মধ্যে যে অফুরন্ত কল্যাণ রয়েছে, সে বিষয়ে স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীগণ সকলে একমত। শিশুকালে খাৎনা করার কারণে বয়সকালে ঐ ব্যক্তি অসংখ্য অজানা রোগ থেকে বেঁচে যায়। হযরত ইবরাহীম (আঃ) ৮০ বছর বয়সে আল্লাহর নির্দেশে নিজের খাৎনা করেছিলেন।[2]
অতএব শিশুর আক্বীক্বা করা যেমন যরূরী, খাৎনা করা তার চেয়ে বেশী যরূরী। শিশুকালেই এ কর্তব্য সম্পন্ন করা আবশ্যক। খাৎনা হ’ল ফিৎরত এবং নবীগণের সুন্নাত। সাথে সাথে এটি স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য অনুসঙ্গ। এটি মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে পার্থক্যও বটে। উল্লেখ্য যে, কন্যা শিশুর খাৎনা করার কোন দলীল নেই।
করনীয় ও বর্জনীয়:
খাৎনা একটি ইবাদত। আল্লাহভীরু এবং অভিজ্ঞ মুসলিম খাৎনা কারীর মাধ্যমে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে এটি করানো কর্তব্য।
বর্জনীয়: খাৎনা উপলক্ষ্যে বাচ্চার হাতে ও কোমরে তাগা বা মাদুলী বাঁধা, গলায় তাবীয ঝুলানো, ঘর বন্ধ করা, বাপ-মায়ের না খেয়ে থাকা, ধামা বা কাঠার উপরে বাচ্চাকে বসানো ও পান দিয়ে তার চোখ ধরা, খাৎনার কাটা অংশ কাঁসার পাতিলে রাখা, খাৎনার পরে বাচ্চার হাতে কিছুদিন সর্বদা লোহা রাখা, খাৎনার কয়েক দিন পর বাচ্চার গোসলের দিন আনন্দ অনুষ্ঠান করে ছেলে-মেয়েদের নাচানাচি, রং মাখা-মাখি, কাদা মাখা-মাখি, মাইক বাজানো, গান-বাজনা ইত্যাদি কুসংস্কার ও কোনরূপ শিরক-বিদ‘আত করা যাবে না। একইভাবে ‘সুন্নাতে খাৎনা’র নামে কোন অনুষ্ঠান করা যাবে না বা একে উপঢৌকন নেওয়ার মাধ্যমে পরিণত করা যাবে না। তাতে সুন্নাত পালনের নেকী পাওয়া যাবে না। বরং বিদ‘আতের গোনাহ কামাই করতে হবে। অতএব পিতা-মাতা ও অভিভাবকগণ সাবধান!!
আলহামদুল্লিল্লাহ। এই লিখাটির জন্যই অনেকদিন অপেকক্ষা করছিলাম। ধন্ন্যবাদ আপনাকে।
যুবাইর।