পরিবার ও দাম্পত্য

পরিবারের ব্যয়ভার বহন কেবল আল্লাহর জন্যই

এক ব্যক্তি প্রতিদিন একটি দোকান থেকে ছয়টা রুটি কিনে নিয়ে যায়। একদিন দোকানি কৌতুহল থেকে তাকে জিজ্ঞেস করেন–ভাই আপনি প্রতিদিন ছয়টা রুটিই নেন, এগুলো দিয়ে কী করেন?

তিনি বলেন, ‘দু’টো দিয়ে দেনা শোধ দিই, দু’টো ধার দিই, একটা ফেলে দিই, আরেকটি নিজে খাই। দোকানী যারপরনাই কৌতুহলী হয়ে ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তিনি বলেনঃ “দেনা শোধ দিই মানে বাবা-মাকে খাওয়াই, তারা একসময় আমাকে খাইয়েছে; ধার দিই মানে ছেলে-মেয়েকে খাওয়াই, ওরা বৃদ্ধ বয়সে ফেরত দেবে; ফেলে দিই মানে ওটা বৌকে খাওয়াই, সে আমাকে কোনো দিন খাওয়ায়নি আর কোনো দিন খাওয়াবেও না, আরেকটি তো নিজে খাই”।

কেবল ‘আমল করা’ আর আল্লাহর জন্য ‘আমল করা’র মধ্যে মধ্যে অনেক তফাত আছে।
যেমন ধরুন এই পরিবারের সদস্যদের ব্যায়ভার বহন করা একটি কাজ। এটি কিন্তু ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই করে থাকে। আপনিও করেন। কিন্তু কেন করেন? উত্তর হতে পারে–‘আরে ভাই এটা কোনো প্রশ্ন হলো না কি, আমার পরিবারের ব্যায়ভার আমি বহন করবে না তো কে করবে?’ কিংবা উত্তর হতে পারে উল্লিখিত গল্পের ব্যক্তির মতো।

কিন্তু আবু মাস’ঊদ আল বদরী রা. এর বর্ণনায় রসূলুল্লাহ সা. বলেছেন “নিসন্দেহে কোনো মুসলিম যখন তার পরিবারের জন্য খরচ করে তা সাদাকা হিসেবে গন্য হবে যদি সে তাকে (ইবাদাত) মনে করে”। (বুখারী ও মুসলিম)

পকেটের পয়সা সবারই যাবে, এতে কিন্তু কারোই মাফ নেই। কিন্তু কারটা নিছক খরচ হবে আর কারটা ইবাদাত হিসেবে গৃহীত হবে তা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে নিয়তের উপর। নিয়ত যদি ঠিক থাকে তাহলে বৌয়ের রুটিটাও আর ফেলে দেওয়ার খাতায় উঠবে না।

আপনি যখন পরিবারের জন্য বাজার থেকে মাছটা কিনেন, গোস্তটা কিনেন শাক-সবজি কিনেন, যখন তাদের জন্য জামা-কাপড় কিনে দেন, ডাক্তারের ফী দেন, ওষুধ কিনেন, পড়ালেখার জন্য খাতা পেন্সিল কিনে আনেন কখনো কি মনের মধ্যে ইবাদাতের অনুভুতি থাকে?

কখনো সচেতনভাবে অস্ফুট আওয়াজে ঠোট নাড়িয়ে কেবল আল্লাহকে শুনিয়ে বলেছেন, “ও আল্লাহ এই খরচ আমি কেবল তোমার সন্তুষ্টির জন্য করছি, তুমি কবুল করো”।

হয়তো বলিনি, হয়তো মনেই হয়নি, হয়তো ভেবেই দেখা হয়ে ওঠেনি এভাবে।

পেছনে যতো পয়সা জলে গেছে তা তো গেছেই। আজ থেকে আর নয়। আসুন আমরা এক্ষুনি একটি সাধারণ নিয়ত করে নিই যে পরিবারের ব্যায়ভার আমরা কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করবো।

আর সব সময় মনে না থাকলেও মাঝে মধ্যে কেনা-কাটার সময় সচেতনভাবে একটু বলিঃ “ইন্নামা নুত’ইমুকুম লিওয়াজহিল্লাহ, লা- নুরীদু মিনকুম জাযাআন ওয়া লা- শুকুরান। আমরা কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই তোমাদেরকে খাওয়াই; তোমাদের থেকে না এর কোনো প্রতিদান চাই, না কোনো কৃতজ্ঞতা চাই”… (আল কুরআন ৭৬ : ০৯)

৫টি মন্তব্য

    1. সম্ভবত আপনি বিষয়টি ঠিক বুঝতে পারেননি। এখানে তুচ্ছ করার উদ্দেশ্যে লেখা হয়নি। শুধু বোঝানো হয়েছে, আমরা যা কিছু করি না কেনো তা যেনো আল্লাহর জন্যই করি।

  1. আমার মেয়ে আল্লাহর রহমতে জন্ম গ্রহণ করেছে ১২/০৮/২০১৫ তারিখ রাত ৯টায় । আজ প্রায় ৩ মাস হতে চললো কিন্তু এখনো আকিকা করতে পারিনি … সাত দিন তো অতিবাহিত হয়ে গেছে এক্ষেত্রে আমি কি গুনাহগার হবো………. ইনশাআল্লাহ ডিসেম্বর/১৫ আকিকা করার নিয়ত করেছি। দয়া করে জানাবেন

মন্তব্য করুন

Back to top button