নির্বাচিত ফেসবুক স্ট্যাটাস

আপনার পরিবার থেকে শুরু করুন

আপনার পরিবার দিয়ে শুরু করুন। দেখেন সেইখানে আপনি সফল কিনা। আপনি সমাজ সেবক, সমাজ সংস্কারক, রাষ্ট্রপ্রধান, ভালো বন্ধু, ইসলাম প্রচারক যাই হইতে চান সেইটার আগে দেখুন আপনি পরিবারে কতখানি সফল। আপনি সফল সন্তান কিনা, ভাই হিসাবে কতটা সফল, স্বামী হিসাবে আপনি কতটা পারফেক্ট। পরিবারে সফল হইলে আপনি সব যায়গায় সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পারবেন।

পরিবারে রাজনীতি, অর্থনীতি, আইন আদালত, শান্তি শৃংখলা বজায় রাখা সবই থাকে। পরিবারের দক্ষ প্রধান , দেশের একজন দক্ষ প্রধান হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। তাই পরিবারকে দিয়ে নিজের দক্ষতা অর্জন করা যায়। আপনি পরিবারের একজন অযোগ্য ব্যাক্তি হয়ে কোনদিন দেশ গঠনে অবদান রাখতে পারবেন না।

অনেক পরিবারে বউ শাশুড়ী, ননদ ভাবী, স্বামী স্ত্রী দ্বন্দ্ব দেখা যায়। এইসব পরিবারের পুরুষের অযোগ্যতায় এসব সমস্যার উদ্ভব হয়। অনেক নেতা, ইসলামিক ব্যাক্তিত্বের পরিবারেও এসব সমস্যা দেখা যায়। যে নিজের ঘর ট্যাকেল দিতে পারে না, তিনি কিভাবে সমাজকে, দেশকে ট্যাকেল করবেন?

অনেকে পরিবারে অর্থের সুষম বণ্টন করতে পারেন না। দেখা যায় বেহুদা কাজে টাকা খরচ করে পরিবারের সদস্যদের কষ্ট দেয়। বউয়ের বায়নায় অধিক খরচ করে অসুস্থ মা’কে ভালো ডাক্তার দেখাইতে পারে না। আবার কেউ পরকীয়া করে স্ত্রীকে বঞ্চিত করে। বোনদের দরকারের কথা ভাবতেই চায় না। এই ব্যাক্তি দেশের ক্ষমতায় আসলে তো দেশের অর্থনীতির ১২ টা বাজিয়ে দিবেন। ভারতের সাথে পরকীয়া করে দেশের অর্থনীতি ভারতের হাতে তুলে দেবে।

আপনি বউকে পেটান অথবা বউয়ের কথা শুনে মা বোনের সাথে খারাপ আচরণ করেন। এগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন। দেশের ক্ষমতায় আসলে আপনি দেশের জনগণকে পেটাবেন। মন চাইলে ক্রস ফায়ার মারবেন।
আপনার পরিবারের সদস্যদের মাঝে কোন বন্ডিং নাই। মায়ের সাথে, বোনের সাথে স্ত্রীর দ্বন্দ্ব চলে। এসব সুন্দরভাবে সমাধান করতে পারেন না। একজনের প্রতি অন্যের টান, মহব্বত, ভালোবাসা সৃষ্টি করতে পারেন নাই। সেই আপনি দেশের ক্ষমতায় আসলে কি করবেন? দেশে বিভেদের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হবে, সামপ্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনাও ঘটবে।

এইগুলো আমার ব্যাক্তিগত চিন্তাধারা। ভিতরে এভাবে ভাবনাগুলো কাজ করে। সব কিছু হয়তো নিজে মেইনটেইন করতে পারি না, তবে পরিবারের শান্তি বজায় রাখা আমার কাছে মুখ্য একটা বিষয়। পরিবারের শান্তি ঠিক রাখতে আমি দৃষ্টি প্রখর রাখি। আমি এমন রাজনীতি ঢুকায় রাখি মা আর বউ দু’জন মিলে কুল পায় না কিভাবে একজন অন্যজনকে সেইভ করবে! একজন অন্যজনের প্রেমে হাবুডুবু খাইতে থাকে।

ছোটখাটো বিষয়। এই ধরেন মা’কে যেয়ে বললাম, মা এই দেখেন আমার মেজাজ কিন্তু ও বেশি খারাপ করে দিচ্ছে! আপনি লাই দিয়ে মাথায় তুলছেন। আপনার সাহসে আমাকে মানতে চায় না! আজ আবার কি বলে জানেন?
কি?

বলে, আমাকে দেখে নাকি বিয়েতে রাজি হয় নাই। আমাকে দেখে পছন্দ হইছিলো না! আপনাকে দেখে সে এই বিয়েতে রাজি হইছে! মানে বুচ্ছেন? আপনার হুমকি দিয়ে আমাকে দমিয়ে রাখতে চায়। একটু শাসন কইরেন, নাইলে কখন কি করে ফেলবো ঠিক নাই!

মা শুনে চোখ গরম করে ফেলে। খবরদার ওরে কিছু বলবি না! ছোট মানুষ, না বুঝে বলছে। আমি যেনো না শুনি কিছু বলছিস ওরে!

উপলব্ধি করি মায়ের ভিতরের আনন্দ।

-হ, দুই বাচ্চার মা এখনো ছোট মানুষ!

-দুই বাচ্চা হইছে তাই কি! তুই জানিস ওর বয়স কত?

হাঁসি ভিতরে লুকায় রেখে বললাম, আমার এসব জানার দরকার নেই। আপনি ঠিক করেন। বলে এবার বউয়ের কাছে আসলাম।

রুমে ঢুকেই বললাম, এসব কিন্তু ভালো লাগে না!

বউ তো অবাক! কি হইছে?

-তুমি কি আমার মা’কে তাবিজ করছো?

বউ হেঁসে দিলো। কেনো?

-একদম হাসবানা। আমারে বলে খবরদার বউয়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করবি না! ছোট মানুষ! এইটা কোন ধরনের শাশুড়ী! আমার নিজের মা তোমার দলে যায় কিভাবে!

বউয়ের চোখ মুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। উপলব্ধি করি, মায়ের প্রতি তার ভালোবাসা উপচেঁ পড়ছে।

রাতে একটা শান্তির ঘুম দিলাম ভালোবাসায় মাখামাখি আমার শান্ত পরিবারে।

– কমরেড মাহমুদ

মন্তব্য করুন

Back to top button