আমাদের এই যুগে খেলার মাঠ হতে পারে উৎকৃষ্ট সাদাকায়ে জারিয়া
আমার মেজ ছেলে উমারকে আল্লাহ রহমানুর রাহীম অনেকখানি মমত্ববোধ এবং বিবেচনাবোধ দিয়েছেন। একটা উদাহরণ দিই।
বাচ্চাদের ওর মা নিয়ে গিয়েছিল জাপান গার্ডেন সিটিতে কারো একজনের বাসায়। ওখানে নীচে সামান্য একটু ফাঁকা জায়গা আছে, যদিও কংক্রিট ঢালাই করা। বাচ্চারা বেশ খেলা-ধূলা করল সেদিন বিকেলে।
রাতে উমার ওর মাকে বলল, “মা, জাপান গার্ডেন সিটিতে কী বাসা ভাড়া অনেক? আমরা কী ওখানে বাসা ভাড়া নিতে পারি? তাহলে প্রতিদিনই খেলতে পারতাম।”
একজন বাবা হিসেবে কথাটা আমাকে যতটা না কষ্ট দেয় তারচে বেশি কষ্ট দেয় এই সমাজের মানুষ হিসেবে।
যাদের বাবাদের সামর্থ্য নেই সেই বাচ্চারা কবুতরের খোপে বন্দী হয়ে বড় হবে।
আমরা এমন এক শহর বানালাম যেখানে বাচ্চাদের ঘাস দেখার সুযোগ নেই, আকাশ দেখার সুযোগ নেই। একটু জোড়ে দৌড়াতে গেলেই গাড়ির সাথে ধাক্কা লাগার ভয় থাকে।
সরকারী মাঠগুলো সব হাউজিং এর দখলে। এখন সবখানে বড় বড় দালান।
এই শহরপ্রণেতারা শুধু লোভের বশে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে পঙ্গু করে ফেলেছে।
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাদাকায়ে জারিয়ার কথা বলে গেছেন বারবার। অর্থাৎ এমন কিছু দান করে যাওয়া যা মানুষের মৃত্যুর পরে থেকে যাবে।
শুধু মাসজিদ বা মাদ্রাসা নয় – রাস্তা, খাল, পানির কূপ, ফলদানকারী বা ছায়াদানকারী গাছ, মুসাফিরখানা – অনেক কিছুই হতে পারে সাদাকায়ে জারিয়ার উৎস। যা কিছু সাধারণ মানুষকে উপকার দেবে সেটাই সাদাকায়ের জারিয়া।
আমাদের এই যুগে খেলার মাঠ হতে পারে উৎকৃষ্ট সাদাকায়ে জারিয়া।
কেউ যদি থাকেন যার ঢাকা শহরে এক বা একাধিক বাড়ি আছে এবং সাথে বাড়ি করা হয়নি এমন খালি প্লট আছে – তাদের কাছে অনুরোধ – একটা প্লটও যদি বাচ্চাদের খেলার জন্য ওয়াকফ করে দেয়া যায় – এর কী পরিমাণ প্রতিদান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা দেবেন – আপনি ভাবতেই পারবেন না।
– Sharif Abu Hayat Opu