সব সময় আপনার পরিকল্পনা মতো কাজ হবে না
পড়াশোনা শেষ করে কী করবেন? – এই প্রশ্নটা করলে অধিকাংশ সময়ই কোনো জবাব পাই না। হতবিহবল একটা চাহনি পাই।
যেন বা প্রশ্নটা জীবনে প্রথম শোনা।
বোঝা যায় অন্য সব কিছুর মতো ‘জীবনের লক্ষ্য’ বা এইম ইন লাইফ রচনাটা মুখস্থ ও খাতায় বমি হয়ে গিয়েছে। এখন সেই দর্শনের আর কোনো অস্তিত্ব নেই।
পরিকল্পনার অভাব বাঙাল জাতে যত কম, অন্য কোথাও এতটা আছে কিনা জানি না।
অথচ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখুন। মক্কা থেকে মদীনা যাবেন – কত দিন ধরে কত নিঁখুত পরিকল্পনা।
কিংবা মক্কা বিজয়ের কথা ভাবুন। তাঁর গোপন পরিকল্পনা যেন ফাঁস না হয় সেজন্য তিনি কতটা সজাগ ছিলেন। রক্তপাত এড়াতে তিনি কতটা সচেষ্ট ছিলেন!
সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে ব্যবসার পরিকল্পনা না থাকা।
কত বড় বড় প্রতিষ্ঠান তাদের পরিকল্পনা ঠিক মতো বাস্তবায়ন করতে পারেনি বলে মুখ থুবড়ে গেছে!
আর আপনি ভাবছেন, ‘ছোট করে শুরু করি।’
শুরু কীভাবে করবেন? কোথা থেকে কিনবেন? কোথায় বিক্রি করবেন? মূলধন কোথায় পাবেন? মূলধনদাতাকে কী দেবেন? কত টাকা লাভ না থাকলেই নয় – এগুলো মৌলিক পরিকল্পনার অংশ।
এর সাথেই আছে কীভাবে মার্কেটিং এবং সেলস করবেন তার প্ল্যান।
পশ্চিমাদের মতো আমাদের জীবন শুধুই পরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করে নয়।
আমাদের, মুসলিমদের জীবনে দুটো অংশ –
১) পরিকল্পনা করা এবং সাধ্য মতো কাজ করে যাওয়া।
২) আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া এবং তার ওপর ভরসা করা যে তিনি আমার পরিকল্পনা হয় সফল করবেন নয়ত এরচে ভালো কিছু আমাকে দেবেন।
আমি আগামীকাল মারা যেতে পারি, সুতরাং আমার জীবনে কোনো কর্মপরিকল্পনা থাকবে না – এটা ইসলামের বিপরীত বুঝ।
এবার একটু ঠাণ্ডা মাথায় ভাবুন – আপনি পাঁচ বছর পরে বেঁচে থাকলে কোথায় থাকতে চান, কী করতে চান, নিজেকে কেমন অবস্থায় দেখতে চান।
উত্তর জানা থাকলে, আলহামদুলিল্লাহ। এরপর পরিকল্পনা করুন কীভাবে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাবেন। এরপর সে পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করে যান।
সবসময় আপনার পরিকল্পনা অনুসারে কাজ হবে না, কিন্তু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা যে পথ দিয়েই নিন না কেন, আপনার ইচ্ছা এবং পরিশ্রম থাকলে তিনি সত্যি সত্যি সেখানে নিয়ে যাবেন যেখানে যাওয়ার স্বপ্ন আপনি দেখবেন।