নির্বাচিত ফেসবুক স্ট্যাটাস

পৃথিবীতে অ্যাবসোলুট বলতে খুব কম জিনিস আছে

পৃথিবীতে অ্যাবসোলুট বলতে খুব কম জিনিস আছে।
সলাতের ব্যাপারটাই ধরি, ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ। অথচ সলাত কায়িম করা – ওয়াক্ত মতো মাসজিদে গিয়ে জামাতের সাথে পড়া – বেশ কঠিন কাজ। ধর্মভীরু ক’জন মানুষ এ কাজটি করে?
আর, দুটো রাকাত সলাত পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়া?
কতটা কঠিন সেটা যারা চেষ্টা করেন তারা জানেন।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলাও কুরআনে তেমনটি বলেছেন – সলাত কায়িম করা কঠিন কাজ – কিন্তু যারা মু’মিন তাদের জন্য সহজ।
রাতের ঘুম বাদ দিয়ে তাহাজ্জুদ কষ্টের, শেষ রাতে আল্লাহর কাছে মাফ চাওয়া কষ্টের। কিন্তু তাও আল্লাহ এগুলো করার ব্যাপারে উৎসাহ দিয়েছেন।
কেন?
কারণ এতে প্রাপ্তি আছে, ভালাই আছে। এর কষ্টের চেয়ে কল্যাণটা বড়।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা যা কিছু হালাল করেছেন তাতে ক্ষতির চেয়ে লাভ বেশি বলেই হালাল করেছেন। যেগুলোর লাভ অনেক বেশি সেগুলোকে আমাদের জন্য বাধ্য করে দিয়েছেন। সুবহে সাদিকের সময়ে ঘুম থেকে উঠে মাসজিদে যাওয়াতে এমন আত্মিক উন্নতি আছে যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আর মানুষের জন্য এটা ঐচ্ছিক রাখেননি। বাধ্য করেছেন করতে।
যাকাতের ব্যাপারটাও তাই, আমার কষ্টের আয়ের টাকা থেকে শতকরা আড়াই শতাংশ দিতে হবে কারণ ব্যক্তির আয়েশের চেয়ে সমাজের কল্যাণ বড়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা জানেন অন্তত এতটুকু দিলে সমাজটা বসে যাবে না, ধসে যাবে না–গরীব মানুষরা কোনো মতে হলেও চলতে পারবে। তাই এটা ফরয।

এর উল্টোটাও ঠিক। আল্লাহ আযযা ওয়া জাললা যখন মদ হারাম করেছেন তখন বলেই নিয়েছেন এতে ভালো কিছু আছে তবে মন্দ বেশি। তাই হারাম।
সুদের ব্যাপারটাও তাই। পুঁজিপতিদের জন্য সুদ দারুণ কিন্তু সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠদের জন্য অভিশাপ। গরীব আরো গরীব হয়, ধনীরা আরো ধনী। আল্লাহ যে বৈষম্য সৃষ্টি করেছিলেন মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য সেই বৈষম্য সুদের প্রকোপে আরো বাড়ে। আল্লাহ সুদ হারাম করে দিলেন – এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণাসহ।

ইসলামের যে কোনো ব্যাপার নিয়ে চিন্তা করার সময় মাথায় রাখতে হবে ইসলাম কুয়োর ব্যাঙদের জন্য নয় – সব সময় এবং সবখানের মানুষদের জন্য।

দাসত্ব কিংবা চার বিয়ে, চুরির শাস্তিতে হাত কাটা কিংবা ব্যভিচারীকে পাথর মেরে হত্যা করা – ইসলামে হালালকৃত প্রতিটি বিধানে অকল্যাণের চেয়ে কল্যাণ বেশি। অপকারের চেয়ে উপকার বেশি।

ইসলামী বিধি-বিধানের প্রথম সৌন্দর্য এটা আল্লাহ আর-রাহমানুর রাহীমের পক্ষ থেকে আসা বিধায় এটি মানবীয় পক্ষপাতদুষ্টতা থেকে মুক্ত। প্রজ্ঞাময়।

দ্বিতীয় সৌন্দর্য – ইসলামী আইন আচমকা আসে না, প্রেক্ষাপট অনুযায়ী প্রয়োগকৃত হয়। দেশে দুর্ভিক্ষ চললে হাত কাটার আইন স্থগিত থাকে। এই আইন মানবিক – মানুষের অবস্থা বোঝে। মানুষ অপরাধ কেন করল সেই চিন্তা এই আইন করে।

কেউ যখন ইসলামে দাসত্ব নিয়ে কথা বলতে আসবে তার কথার জবাব দেওয়ার আগে ভাবুন – সে কেন এ কথা বলছে? বর্তমানে তো কোথাও ইসলামি শাসন নেই – দাসত্ব নেই। আছে মডার্ন করপোরেট স্লেভারি। তার বিরুদ্ধে না দাঁড়িয়ে সে যা নেই তার পেছনে কেন পড়েছে?

বুঝে নিন, এই মানুষগুলো সত্যসন্ধানী নয়। সে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করেছে সে সত্য খুঁজবে না, মানবে না বরং বিরোধীতা করবে। এদের ছেড়ে দিন। এদের ধরতে হবে এমন দারোগা-পুলিশি দায়িত্ব আল্লাহ আমাদের দেননি।

আর যখন সন্দেহ এসে মনে দানা বাঁধবে তখন নিজেকে বোঝান – সব জিনিস বুঝবেন এমনটা হবার নয়। ইসলাম মানে আত্মসমর্পণ। আমরা যতটুকু বুঝি তার ভিত্তিতে মেনে নিয়েছি আমাদের স্রষ্টা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আমাদের চেয়ে বেশী জানেন, বোঝেন। আমরা তাঁর ইচ্ছার সামনে নিজেদের ইচ্ছাকে খুশি মনে ছেড়ে দিয়েছি। এটাই ইসলাম।

ইসলামিক ইমেইল নিউজলেটার
নতুন পোস্ট প্রকাশিত হলে সরাসরি আপনার ই-মেইল ইনবক্সে পেতে সাবস্ক্রাইব করুন।
icon

মন্তব্য করুন

Back to top button