সচেতনতা

বিয়ের ছবি ও ভিডিও

একটি বিতর্কিত বিষয়

তবে তার থেকেও বেশি আত্মসম্মান আর আত্মমর্যাদার-

ফেইসবুক ঘুরতেই চোখে পড়লো বিয়ের ছবি আর ভিডিও। সেই ভিডিওর একটি অংশে চোখে পড়লো বিয়ের কনেকে পার্লারে সাজানোর ফুটেজ- সাজিয়ে দিচ্ছেন একজন পুরুষ বিউটিশিয়ান।

সেজে-গুজে কনে বিয়ের স্টেজে উঠবে। শখানেক মানুষের আসরে বসে মিষ্টি করে তাকে হাসতে হবে- অচেনা মানুষের সাথে হেসে ছবি তুলতে হবে। যে যার পার্সোনাল গ্যাজেটে তুলে নিচ্ছে কনের সুন্দর সুন্দর ছবি। কে জানে কতবার এই ছবিতে চোখ বুলাবে সে, না জানে কতদিন এই ছবি সঙ্গগ্রহে থাকবে। সাথে আছে প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার, লাইট্ম্যান- শিখিয়ে দেয়া হচ্ছে পোজ, আর পট পট করে তুলে নেয়া হচ্ছে ছবি।

এত জাকজমক অনুষ্ঠান শেষে কনে বেশে তুমি কেবল একজনের হবে- যে তোমার সবচেয়ে কাছের, অনেকাংশেই তোমার মা-বাবা থেকেও কাছের।

শখানেক পরিচিত অপরিচিত মানুষ ছাপিয়ে কিছুদিন পর হাজারো মানুষের ঘরে যাবে এই ছবি- ইচ্ছাকৃত কি অনিচ্ছাকৃত।

মেয়ে তোমার নারী সত্ত্বা জেগে উঠে যদি তোমাকে বলা হয় বিয়ের পর তোমার অভিভাবক তোমার স্বামী, তুমি ক্রোধের আগুনে জ্বলে ওঠো যদি তোমার স্বামী তোমার অনেক ‘বন্ধু’দের সাথে মেলামেশা পছন্দ না করে, আরো অনেক কিছুতেই আজকাল তোমার ‘নারীসত্ত্বা’ বড্ড দগদগে হয়ে উঠে, কিন্তু উপরের ঘটনাগুলো তোমার ‘নারীত্ব’কে যে কিভাবে অপমানিত করে তা তোমার বোধশক্তি আর চোখ এড়িয়ে যায়।

আজকাল পার্লারে পুরুষ দিয়ে সাজগুজের চর্চা ভালোই বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা যার যার চয়েস- অবশ্যই। কিন্তু একজন অপরিচিত পুরুষকে দিয়ে তোমার হবু-আপন পুরুষের জন্য নিজেকে রাঙ্গিয়ে কী লাভ ? তুমি এর মধ্য দিয়ে লজ্জা, হায়া অনেক কিছুই তো হারাচ্ছো, তা বুঝো না।

[যারা নারী কর্মীদের দিয়ে সাজাচ্ছে, তাদের নিয়ে কোন আপত্তি নেই]

এই এক জায়গাতে এসে মার খেয়ে যাচ্ছে বহুজন। বিয়ের স্টেজে সেজেগুজে বসে অফিসের কলিগ, বস, ভাইদের বন্ধু, বয় বেয়ারা- সবার সামনে নিজেকে উপস্থাপন একজন নারীকে কম হীন করে না- তা একজন নারী যেভাবে উপলব্ধি করতে পারে, কোন পুরুষ তা পারেনা। লাইভ শো শেষে স্টিল ফটোর মাধ্যমে এই আমোদ উপভোগ করে আরো হাজারো পুরুষ।

তুমি জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাও তোমার স্বামী অন্য মেয়েদের ছবি নিয়ে ঘাটাঘাটি করলে, তবে তোমার সৌন্দর্য উপভোগ করলেও তো অন্য মেয়ের বেলায় একই ক্ষতি !

এখন তো স্বামী-স্ত্রীর একান্ত এবং অতিরিক্ত আন্তরিক মুহুর্ত নিয়েও ব্যবসা হয়। এসব ছবি বা ভিডিওতে থাকে হাজারো লাইক। নতুন সম্পর্কে বাঁধা মানুষ দুটো যেন দু’জনের নয়, সবার, সবার জন্য বিলিয়ে দিতেই এই ভালোবাসা।

একজন মেয়ে যদি তার অতি সহজাত প্রবৃত্তি হারিয়ে ফেলে যেটা কিনা তাকে লাখো লোকের সামনে উন্মুক্ত হওয়া থেকে তাকে বিরত রাখে, তাহলে সে আর নারী নয়, বেশ পুরুষালী হয়ে ওঠে। এই প্রবৃত্তি তাকে সমাজ দেয়নি, ধর্মীয় বই-গুলোও দেয় নি, দিয়েছেন সৃষ্টিকর্তা। চাইলে সে এটাকে মুখের উপর অস্বীকার করতেই পারে, তবে এই অনুভব সে কোনদিন অস্বীকার করতে পারে না।

এখন সময়টা আমাদের পুরুষের সাথে পাল্লা দেয়া শেখালেও, আমরা আসলে ঠিক মত ‘নারী’ই হতে পারিনি !

[কারো অনুভূতিতে কষ্ট লাগলে ক্ষমা করবেন। অন্তরে ব্যথা নয়, অন্তর জাগানোই এর উদ্দেশ্য]

 

– Kitty Naba

ইসলামিক ইমেইল নিউজলেটার
নতুন পোস্ট প্রকাশিত হলে সরাসরি আপনার ই-মেইল ইনবক্সে পেতে সাবস্ক্রাইব করুন।
icon

মন্তব্য করুন

Back to top button