ইভটিজিং : কারণ ও প্রতিকার
সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে ইভটিজিং বা নারী উত্ত্যক্তের ঘটনা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে আশংকাজনকহারে বেড়ে চলেছে ইভটিজিং ও ছাত্রী লাঞ্ছিত করার ঘটনা। Eve শব্দটির অর্থ নারী এবং Tease শব্দের অর্থ বিরক্ত করা, প্রশ্ন করে বিব্রত করা ইত্যাদি। সুতরাং Eveteasing শব্দের সমন্বিত অর্থ হ’ল নারী উত্ত্যক্ত করা, বিরক্ত করা ইত্যাদি।১
বখাটে, দুর্বৃত্তদের দুর্বিষহ উপদ্রব সহ্য করতে না পেরে ইতিমধ্যে অনেক তরুণী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। গত এক মাসেই দেশের বিভিন্ন স্থানে এ কারণে আত্মহত্যা করেছে অন্তত: ১৫ তরুণী। এভাবে প্রতিমাসেই ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে আত্মাহুতি দিচ্ছে তরুণীরা। এমনকি বখাটেদের উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে তরুণীদের বাবারাও আত্মাহুতি দিচ্ছেন। আবার অনেক তরুণী লোকলজ্জার কারণে চোখ বুজে নীরবে সহ্য করে যাচ্ছে বখাটেদের অত্যাচার। সমাজ ও জাতির জন্য ইতিমধ্যেই তা এক প্রকার অশনি সংকেত হিসাবে পরিগণিত হয়েছে। তরুণরা ক্রমাগতভাবে এ সকল অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। বিদেশী অপসংস্কৃতি এবং নীতি-নৈতিকতা বিবর্জিত শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে ইভটিজিং এবং নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে দেশের প্রায় প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনের মেয়েরা।
দেশে প্রতিবছরই নানাভাবে নারী নির্যাতন বাড়ছে। একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, ২০০৯ সালে দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪৪৬ জন নারী, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৬২ জনকে, ধর্ষিত হওয়ার পর আত্মহত্যা করেছে অন্ততঃ ৫ জন, যৌতুকের শিকার হয়েছে ২৮৫ জন, যৌতুকের কারণে স্বামীর হাতে খুন হয়েছে ১৯৪ জন, এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে ৬৩ জন, পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২৪২ জন নারী এবং পারিবারিক নির্যাতনের কারণে আত্মহত্যা করেছে ৯ জন। এ সময় ৭৮ জন গৃহপরিচারিকা নির্যাতনের শিকার হয়েছে। একই রিপোর্টে দেখা যায়, ১৯৯৮ সালে নারী নির্যাতন বা সহিংসতার শিকার হয়েছে ৫০২ জন নারী, ১৯৯৯ সালে ১৬৯০ জন, ২০০০ সালে ১৯৭৪ জন, ২০০১ সালে ৩১৪৯ জন, ২০০২ সালে ৫৭৯২ জন, ২০০৩ সালে ৫৬১৮ জন, ২০০৪ সালে ৫৯৮৬ জন, ২০০৫ সালে ১৪৮৮ জন, ২০০৬ সালে ৬০৫৪ জন এবং ২০০৭ সালে ৪৩৫৫ জন নারী নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়েছে।২ অর্থাৎ নারী নির্যাতনের হার প্রতিদিনই বাড়ছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে ইভটিজিং এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নারী নির্যাতন যে আরো অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে তা বলাই বাহুল্য। প্রতিনিয়ত পত্রিকাতে এরূপ কোন না কোন ঘটনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নিম্নে এ সম্পর্কিত সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার ফিরিস্তি পেশ করা হ’ল-
* ঢাকা যেলার দক্ষিণ বনশ্রী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীতে পাঠরত ১৪ বছর বয়সী উম্মে কুলছূম ইলোরা এলাকার রেজাউল করিম নামের এক যুবক উত্ত্যক্ত করায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
* দশম শ্রেণীতে পাঠরত মরিয়ম আক্তার পিংকিকে তারাইন উপযেলায় আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। কারণ সে স্থানীয় এক বখাটে যুবকের বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল।
* ২৭ মার্চ ঢাকার ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান, তার স্ত্রী রোকসানা মমতাজ এবং তাদের মেয়ে ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্রী ফৌজিয়া ফারিহা বর্ষা তার সহপাঠী আশরাফের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়। কারণ মেয়েটির পরিবার আশরাফকে চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করেছিল।
* ২৪ মার্চ গুলশানের কালাচাঁদপুরে নার্সারী ব্যবসায়ী সাদিকুর রহমান এবং স্ত্রী রোমানা নার্গিস তাদের মেয়েকে জনৈক বাবুলের সাথে বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানালে দুর্বৃত্তদের সহায়তায় রুবেল তাদের হত্যা করে।
* চট্টগ্রামের কলেজিয়েট স্কুলের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী শোমেন বিশ্বাস অনিক সহপাঠীর আঘাতে আহত হওয়ার পর ২৩ মার্চ মৃত্যুবরণ করে।
* ২২ মে পিরোজপুর যেলার নাজিরপুর উপযেলার বরইবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী সায়েমা আক্তার তুলি (১৫) ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে বিষপানে আত্মহত্যা করে। এ রকম অসংখ্য ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে। নিম্নে আমরা ইভটিজিং-এর কতিপয় কারণ আলোচনা করব:
সামাজিক অবক্ষয় :
হঠাৎ করেই ইভটিজিংয়ের মত ঘটনার জন্ম হয়নি। দীর্ঘদিনের সামাজিক অবক্ষয় ও পারিবারিক ভাঙ্গনের বিষময় ফলেই তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পিতা-মাতা উভয়েই কর্মজীবি হওয়ায় সন্তানরা তাদের সঙ্গ পাচ্ছে না। ফলে তারা বিভিন্ন খারাপ পরিবেশের সাথে সখ্য গড়ে তোলে। সঙ্গী হিসাবে পাচ্ছে অপরাধপ্রবণ শিশু-কিশোরদের। এভাবে সঙ্গদোষে আস্তে আস্তে তারা বিভিন্ন খারাপ কাজের সাথে জড়িয়ে পড়ে। যা শুরু হয় ইভটিজিং ও মাদক গ্রহণের মত ঘটনার মাধ্যমে। এরপর একসময় তা বড় আকার ধারণ করে। বাবা-মার নয়নের পুতলি হয়ে যায় বখাটে, সন্ত্রাসী, মাস্তান, দাঙ্গাবাজ প্রভৃতি। এজন্যই হাদীছে সৎ সঙ্গী নির্বাচনের জন্য অত্যধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিম্নোক্ত হাদীছটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
عَنْ أَبِىْ مُوْسَى، قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَثَلُ الْجَلِيْسِ الصَّالِحِ وَالسُّوْءِ، كَحَامِلِ الْمِسْكِ وَنَافِخِ الْكِيْرِ، فَحَامِلُ الْمِسْكِ إِمَّا أنْ يُّحْذِيَكَ وَإِمَّا أَنْ تَبْتَاعَ مِنْهُ، وَإِمَّا أَنْ تَجِدَ مِنْهُ رِيْحًا طَيِّبَةً، وَنَافِخُ الْكِيْرِ إِمَّا أنْ يُّحْرِقَ ثِيَابَكَ، وَإِمَّا أَنْ تَجِدَ مِنْهُ رِيْحًا خَبِيْثَةً.
আবূ মূসা আশ‘আরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘সৎ সঙ্গ ও অসৎ সঙ্গের দৃষ্টান্ত হচ্ছে সুগন্ধি বিক্রেতা ও কামারের হাপরে ফুঁ দানকারীর মতো। সুগন্ধি বিক্রেতা হয়ত তোমাকে এমনিতেই কিছু দিয়ে দেবে অথবা তুমি তার কাছ থেকে কিছু ক্রয় করবে অথবা তার সুঘ্রাণ তুমি পাবে। আর কামারের হাপরে ফুঁ দানকারী হয় তোমার কাপড় জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেবে নতুবা তার দুর্গন্ধ তো তুমি পাবেই’।৩
টিভি মিডিয়া :
বর্তমান সময়ে তরুণ-তরুণীদের কাছে টিভি সিরিয়াল বা অন্যান্য অনুষ্ঠান খুব জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেশী-বিদেশী টিভি চ্যানেলগুলো বিভিন্ন অশ্লীল গান-বাদ্য, নৃত্য-নাচ, নর-নারীর নগ্ন-অর্ধনগ্ন ছবি, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি পরিবেশন করছে। স্যাটেলাইট বা অন্যান্য টিভি চ্যানেলগুলোতে যেসব দৃশ্য প্রচার করা হচ্ছে তা কোন লজ্জাশীল মানুষ পরিবার নিয়ে দেখতে পারে না। বাংলাদেশসহ অধুনা বিশ্বের সর্বত্রই নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা ও যৌন চর্চার বিষয়বস্ত্ত সম্বলিত ছায়াছবি, নাটক প্রভৃতি প্রদর্শিত হচ্ছে। যা দেখে এ দেশের তরুণ ও যুবসমাজ ধ্বংসের মুখে পতিত হচ্ছে। অবশেষে তারা নারী উত্ত্যক্ত করা ছাড়াও বিভিন্ন অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে অবলীলায়। সামান্য কিছু টাকার জন্য নারীকে যেভাবে মিডিয়াতে ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে ভবিষ্যতে নারীর মর্যাদা থাকবে বলে মনে হচ্ছে না।
আজকে ইভটিজিং সহ প্রথম সারির সমস্যাগুলোর জন্য শতভাগ দায়ী এই টিভি, সিনেমা, ডিস এন্টেনা ও চলচ্চিত্রের অশ্লীল ছবি প্রদর্শন।
সাংস্কৃতিক আগ্রাসন :
সাংস্কৃতিক আগ্রাসন বিশেষ করে আকাশ সংস্কৃতিই এর পিছনে প্রধান ভূমিকা রাখছে। সংস্কৃতির নামে বেহায়াপনা, প্রগতির নামে অশ্লীলতা দেশ ও জাতিকে ক্রমশঃ চরম অবনতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যার সবচেয়ে শক্তিশালী বাহন হ’ল আকাশ সংস্কৃতি। টিভি, সিডি, ভিসিয়ার, সিনেমা, নাটক, আর ডিস এন্টেনার মাধ্যমে সমাজ জীবন প্রতিনিয়ত কলুষিত হচ্ছে। নগ্ন ছবি ধ্বংস করছে মানুষের ঈমান-আক্বীদা, চরিত্র ও মেধা। বাড়ীতে, বৈঠকখানায়, দোকানে, বাসে, রাস্তা-ঘাটে সর্বত্র চলছে লজ্জা-শরম বিধ্বংসী নৃত্যানুষ্ঠান ও সিনেমা, যা দেখে উঠতি বয়সী তরুণরা উত্তেজিত হচ্ছে এবং পরবর্তীতে তারা ইভটিজিং-এ উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।
তরুণীদের উচ্ছৃংখল চলাফেরা :
ইভটিজিংসহ অন্য যেসব ক্ষেত্রে তরুণীরা লাঞ্ছিত হচ্ছে তার পেছনে শুধু বখাটে বা অন্য কারণগুলোই সর্বাংশে দায়ী এমন নয়। সামাজিক অবক্ষয় ও অপসংস্কৃতি চর্চার সাথে সাথে তরুণীদের বেপরোয়া চলাফেরা এর অন্যতম কারণ। কুরআন মাজীদে নারীদের ভদ্র ও মার্জিতভাবে চলাফেরা করতে তাকীদ দেওয়ার পাশাপাশি অজ্ঞযুগের মত সাজসজ্জা করে নির্লজ্জের মত রাস্তায় চলাফেরা করতে বিশেষভাবে নিষেধ করা হয়েছে (আহযাব ৩৩/৩৩)। অথচ আমাদের দেশের মেয়েরা আধুনিকতা ও প্রগতির দোহাই পেড়ে কুরআনের হুকুমের অবমাননা করে বেহায়ার মত চলাফেরা করছে। আপত্তিকর পোষাক পরে বিশেষ করে পাতলা কাপড়, ওড়না ছাড়া পোষাক, হাত কাটা কামিজ, টাইটফিট পোষাক ইত্যাদি পরে বিভিন্ন রকমের প্রসাধনী মেখে সাজসজ্জা করে রাস্তাঘাটে, বাইরে, হাটে-বাজারে, মার্কেটে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যুবকদের মাঝে নিজেদের সৌন্দর্য প্রদর্শন করে যুবকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সুন্দরী প্রতিযোগিতা। এভাবে মেয়েরা পর পুরুষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে। ফলে পুরুষের নিকট তারা সহজলভ্য বস্ত্ততে পরিণত হয়েছে। আর তাদের এহেন সৌন্দর্য প্রদর্শনে আকৃষ্ট হয়ে এ দেশের একশ্রেণীর টগবগে যুবক উন্মাদের ন্যায় ইভটিজিং সহ নারীদের সাথে নানাবিধ অনৈতিক আচরণে লিপ্ত হচ্ছে।
রাজনৈতিক নেতাদের আশীর্বাদ :
শহর ও গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় রাজনৈতিক পাতি নেতাদের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে কিছু উচ্ছৃংখল যুবক এসকল অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। অবশেষে উক্ত অপরাধের কারণে যখন তারা পুলিশের নিকট ধরা পড়ছে ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের তদবিরে ছাড়া পাচ্ছে, তখন পুনরায় তারা আবারও ঐ একই অপরাধে যুক্ত হচ্ছে এই ভেবে যে, ধরা পড়লে আমাদের নেতা আমাদেরকে বের করে আনবেন।
নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার সুযোগ :
আমাদের দেশে প্রগতির নামে দিন দিন নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক্ষেত্রে মোক্ষম ভূমিকা পালন করছে কতিপয় এনজিও ও তথাকথিত কিছু নারীসংগঠন। নারী পুরুষের সমঅধিকারের ধোঁয়া তুলে কর্মক্ষেত্রে নারীর সমান সংখ্যক কোটা বাড়িয়ে পুরুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বসা, যুবক-যুবতী এক সাথে সুইমিং পোষাক পরে সাঁতার কাটা, ব্যায়াম করা, গেঞ্জী-হাফপ্যান্ট পরে ফুটবল খেলা ইত্যাদি কর্মকান্ড নারীদেরকে পুরুষের কাছে সহজলভ্য করে দিচ্ছে। বস্ত্ততঃ নারী স্বাধীনতার নামে নারী-পুরুষের এহেন অবাধ মেলামেশার সুযোগ দানের মাধ্যমে প্রকারান্তরে ইভটিজিং তথা নারীর সম্ভ্রমহানির পথকেই সুগম করে দেওয়া হচ্ছে।
সহশিক্ষা :
এদেশের নারী সমাজের জন্য আর এক মহা অভিশাপ হচ্ছে সহশিক্ষা। নারী-পুরুষের যৌবনের ভরাবসন্ত অতিবাহিত হয় তাদের শিক্ষা জীবনে। সহ শিক্ষার সুবাদে এদেশের হাযার হাযার তরুণ-তরুণী অবাধে মেলামেশা ও অবৈধ প্রেম বিনিময় করার সুযোগ পাচ্ছে। যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রূপ নিচ্ছে দৈহিক সম্পর্কে। আর যে ক্ষেত্রে তরুণেরা তরুণীদের সম্মতি আদায় করতে পারবে না বলে মনে করছে সেক্ষেত্রে ইভটিজিংয়ের মত সহজ পথ বেছে নিচ্ছে।
ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার অভাব :
ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা থেকে দূরে থাকার কারণে ইভটিজিং সহ মেয়েদের লাঞ্ছিত করার ঘটনা বেশী ঘটছে। ছোটবেলা থেকেই যদি সন্তানদেরকে নৈতিকতায় উজ্জীবিত করা যায়, তাহ’লে তাদের দ্বারা একটি সুষ্ঠু সমাজ আশা করা যায়। ধর্ম থেকে দূরে সরে গিয়ে অতি মাত্রায় আধুনিকতার ছোঁয়া লাগাতে গিয়েই সামাজিক এই অবক্ষয় সৃষ্টি হয়েছে।
প্রশাসনের নীরবতা :
সাম্প্রতিক সময়ে ইভটিজিং অতি মাত্রায় বেড়ে গেছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রশাসনের সামনেই ইভটিজিং-এর শিকার হচ্ছে তরুণীরা। অথচ প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। অনেক ক্ষেত্রে থানায় অভিযোগ করার পরেও দোষীরা গ্রেফতার হচ্ছে না। কোন কোন ক্ষেত্রে গ্রেফতার হ’লেও সুষ্ঠু বিচার হচ্ছে না। ফলে এ ধরনের অপরাধ ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবশ্য বর্তমানে প্রশাসন কিছুটা নড়েচড়ে উঠেছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে আরো তৎপর হ’তে হবে।
প্রতিরোধের উপায় :
বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিশারী মহানবী (ছাঃ)-এর আদর্শের যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান নারী উত্ত্যক্তের ঘটনা রোধ করা সম্ভব। একমাত্র তাঁর প্রবর্তিত সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই আমাদের দেশের নারী সমাজের ইয্যত-আব্রুর যথাযথ সংরক্ষণ এবং সমাজে নারীদের নিরাপদ ও সম্মানজনক অবস্থান সুনিশ্চিত হ’তে পারে। বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য শত শত নারী সংগঠন সৃষ্টি হয়েছে। নারী মুক্তির জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে অথচ দিন দিন নারী তার মর্যাদা হারাচ্ছে। এর একমাত্র কারণ নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় মহানবী (ছাঃ)-এর আদেশ-নিষেধ মেনে না চলা। নিম্নে ইভটিজিং প্রতিরোধে কতিপয় সুপারিশ পেশ করা হ’ল:
১. পর্দার বিধান মেনে চলতে হবে :
নারী উত্ত্যক্তের অন্যতম প্রধান কারণ হ’ল পর্দার বিধান পালন না করা। পর্দা নারীর ইয্যত, সম্মান ও নিরাপত্তার গ্যারান্টি। নারী যখন আল্লাহ প্রদত্ত পর্দার বিধান লঙ্ঘন করে পরপুরুষের সঙ্গে মেলামেশা করে, তখনই সে বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়। ধর্ষণ, অপহরণ, খুন, অঙ্গহানী, এসিড নিক্ষেপ, উত্ত্যক্ত করা ইত্যাদির প্রধানতম কারণ নারী ও পুরুষ কর্তৃক পর্দার বিধান লঙ্ঘন। নারীরা যতই খোলামেলাভাবে চলাফেরা বেশী করবে, ততই তাদের সম্মানহানি ঘটবে। সুতরাং নারীর মর্যাদা যথাযথভাবে রক্ষা করতে হ’লে রাসূল (ছাঃ) প্রদর্শিত পর্দা প্রথার পূর্ণ অনুশীলন এবং তা পুরোপুরি পালন করে মার্জিতভাবে চলাফেরা করতে হবে। এ ব্যাপারে আল্লাহ বলেন, وَقَرْنَ فِيْ بُيُوْتِكُنَّ وَلاَ تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُوْلَى ‘তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে; মূর্খতা যুগের মতো নিজেদের প্রদর্শন করবে না’ (আহযাব ৩৩/৩৩)।
নিতান্ত প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যেতে হ’লে সেক্ষেত্রে পিতা-মাতা, স্বামী বা অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে হিজাব পরিহিতা অবস্থায় বের হ’তে হবে। আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِيْنَ يُدْنِيْنَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلاَبِيْبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَنْ يُّعْرَفْنَ فَلاَ يُؤْذَيْنَ ‘হে নবী আপনি আপনার পত্মীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলে দিন তারা যেন তাদের শরীর চাদর দ্বারা আবৃত করে রাখে। এটি তাদের চেনার সহজ উপায়। ফলে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবে না’ (আহযাব ৩৩/৫৯)।
যদি কখনো অপরিচিতি কোন লোকের সাথে কথা বলার প্রয়োজন হয় তাহ’লে রুক্ষতা বজায় রাখতে হবে (আহযাব ৩৩/৩৩)। এমনভাবে মিষ্টি মিষ্টি, রসালো সুরে কথা বলা যাবে না, যাতে পুরুষের মনে কুধারণা সৃষ্টি হয়।
সুতরাং নারীকে পোষাক-পরিচ্ছদে, কথাবার্তায়, চলাফেরায় অত্যন্ত সংযত ও শালীন হ’তে হবে। কারণ নারীর প্রকৃতিতে চম্বুকধর্মী অম্লের প্রভাব বিদ্যমান আর পুরুষের প্রকৃতিতে খারের প্রভাব প্রবল। নারীর প্রতি আকর্ষিত হওয়া পুরুষের সহজাত প্রবৃত্তি। আগুনের পরশে যেমন মোম না গলে পারে না, তেমনি নারীর সংশ্রবে পুরুষ উদ্বেলিত না হয়ে পারে না। সম্প্রতি স্পেনের ইউনিভার্সিটি অফ ভ্যালেন্সিয়ার গবেষকরা জানিয়েছেন, কোন সুন্দরীর সঙ্গে মাত্র পাঁচ মিনিট সময় কাটালেই ঘটতে পারে যেকোন দুর্ঘটনা। সুন্দরী নারীর সঙ্গে মাত্র ৫ মিনিট সময় কাটালে পুরুষের শরীর থেকে কর্টিসল নামের একটি হরমোন নির্গত হয়। শরীরে কর্টিসল তৈরী হয় কোন শারীরিক বা মানসিক চাপের ফলে। আর এর সঙ্গে সঙ্গে তৈরী হয় হার্টের সমস্যাও। এমনকি ডায়াবেটিক ও উচ্চরক্তচাপেরও কারণ হয় কর্টিসলের হঠাৎ মাত্রা বৃদ্ধি।৪
সুতরাং নারীর অশালীন পোষাক পরে বাইরে নগ্নভাবে চলাফেরা সরকারীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। সঊদী আরব ও ইরানে এ বিধান চালু আছে বিধায় সেখানে আমাদের দেশের মত নারী উত্ত্যক্তের ঘটনা বিরল।
২. নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা বন্ধ করতে হবে :
নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার সুযোগ বিশ্বের উন্নত দেশ সমূহের মতো আমাদের দেশেও নারী উত্ত্যক্তের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার অন্যতম কারণ। অফিস-আদালতে, বিভিন্ন ক্লাবে, পার্টিতে, পার্কে, যানবাহনে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সমাজের সর্বক্ষেত্রে বর্তমানে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার সুযোগ দিন দিন অবারিত হচ্ছে। ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে ইভটিজিং ও নারী নির্যাতন। নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা বন্ধের লক্ষ্যে নারীদের জন্য পৃথক কর্মস্থল, আলাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, হাসপাতাল বা চিকিৎসা কেন্দ্রে নারীদের জন্য মহিলা ডাক্তার, পৃথক পরিবহন ব্যবস্থাসহ৫ সমাজের বিভিন্ন পেশার নারীদের জন্য স্বতন্ত্র্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য সমাজের অভিভাবক শ্রেণী এবং সরকারের যৌথ প্রয়াস অত্যাবশ্যক।
৩. নারীদের জন্য পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করতে হবে :
প্রাইমারী শিক্ষা থেকে শিক্ষার সকল স্তরে সহশিক্ষা বন্ধ করতে হবে। এজন্য চাহিদা মাফিক বালিকা বিদ্যালয়, মহিলা মাদরাসা, মহিলা কলেজ, মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে এক সাথে এত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা ব্যয়সাধ্য বিধায় পর্যায়ক্রমে এ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেয়েদের জন্য আলাদা শিফ্ট চালু করতে হবে। সাথে সাথে পর্যায়ক্রমে তাদের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষিকা নিয়োগ করতে হবে। যতদিন পর্যন্ত এ ব্যবস্থা চূড়ান্ত রূপ দেওয়া সম্ভব না হবে, ততদিন পর্যন্ত সরকারীভাবে শিক্ষার সকল স্তরে ইসলামী পরিবেশ ও পর্দার বিধান চালু করে উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। মহানবী (ছাঃ) নারী শিক্ষার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেছেন এবং তাঁর সময়েই নারীদের জন্য পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হয়েছিল।৬
আমেরিকা, রাশিয়া সহ পশ্চিমা বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে বর্তমানে মেয়েদের জন্য পৃথক শিক্ষাঙ্গন গড়ে তোলা হচ্ছে। ১৯৭৮ সালের হিসাব মতে, খোদ আমেরিকার মত ফ্রি সেক্সের দেশে সহশিক্ষার ভয়াবহ কুফলের কথা বিবেচনা করে ১৭০টি মহিলা কলেজ এবং রাশিয়াতে ১২০টি মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সুতরাং সহশিক্ষা বন্ধ এবং নারী-পুরুষের পৃথক পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান নারী উত্ত্যক্ত করার পরিবেশ বন্ধ করা সম্ভব।
৪. অশ্লীল সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে :
ভিসিআর, টিভি, স্যাটেলাইট, ভিডিও, সিডি, বিজ্ঞাপনে নারী-পুরুষের, যুবক-যুবতীদের একত্রে নাচ-গানের অনুষ্ঠান, অশালীন পোষাক পরিহিত চিত্র বা ছায়াছবি এবং যৌন উত্তেজনাধর্মী চলচ্চিত্র প্রদর্শন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। যৌন উত্তেজক গান, কবিতা, সাহিত্য, নভেল, নাটক বন্ধ করতে হবে। প্রাইমারী শিক্ষার পর থেকে জাতীয়, সামাজিক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে কোন অনুষ্ঠানে তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতী এবং মহিলা ও পুরুষদের একত্রে অনুষ্ঠান বন্ধ করে পৃথকভাবে করার সুন্দর এবং নিরাপদ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। রেডিও, টিভিতে শিক্ষামূলক, জাতিগঠনমূলক এবং নির্মল আনন্দদায়ক অনুষ্ঠান প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। তাহ’লে নারী জাতি তাদের হারানো সম্মান ফিরে পাবে ইনশাআল্লাহ।
৫. ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে :
প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য বিদ্যার্জন ফরয। মিশকাত হা/২১৮। এ শিক্ষা অবশ্যই ধর্মভিত্তিক ও নৈতিকতাপূর্ণ শিক্ষা হ’তে হবে। সুশিক্ষা যেমন জাতিকে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দেয়, তেমনি অশিক্ষা-কুশিক্ষা তাদেরকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়। একমাত্র ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা ও ইসলামী সমাজই পারে নারীর সম্মান, মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার গ্যারান্টি দিতে। ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত একজন যুবক জানে যে, নারী উত্ত্যক্ত তো দূরের কথা, গায়র মাহরাম কোন নারীর দিকে দৃষ্টি দেওয়াও পাপ। দেরীতে হ’লেও ধর্মীয় শিক্ষার যে প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তা অনেকেই অনুভব করতে শুরু করেছে। গত ১ ডিসেম্বর ২০০১ বিশ্ব এইডস দিবসে আলোচকবৃন্দ প্রায় সমস্বরেই বলেছেন, ‘এইডস থেকে বাঁচার জন্য ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলুন’। সুতরাং আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। ইসলামী আক্বীদা ও তাহযীব-তামাদ্দুন অনুযায়ী জীবন যাপনের প্রয়োজনীয়তা, ইসলামের প্রয়োজনীয় আহকাম ও ইবাদতের বিধিবিধান এবং ইসলামের অপরাধ দমন আইন প্রভৃতি বিষয় সম্বলিত সিলেবাস প্রণয়ন করে কুরআন ও ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
৬. কঠোর শাস্তি প্রয়োগ নিশ্চিতকরণ :
ইসলাম নারী নির্যাতন বন্ধের ব্যাপারে যেমন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, তেমনি প্রতিকারমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে। প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা সমূহের মধ্যে রয়েছে নারী নির্যাতনকারীকে কঠোর শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা। নারী নির্যাতন তথা উত্ত্যক্তকরণ, ধর্ষণ, খুন, ছিনতাই, অপহরণ, এসিড নিক্ষেপ, অঙ্গহানী, সম্মানহানী, মিথ্যা অপবাদ প্রদান ইত্যাদি অপরাধের জন্য ইসলামী শরী‘আত যে শাস্তির বিধান দিয়েছে, সে বিধান যথাযথভাবে কার্যকর করা।
পরিশেষে বলা যায় যে, ইভটিজিং বা নারী উত্ত্যক্তের যতগুলো কারণ রয়েছে তার অন্যতম প্রধান কারণ হ’ল তরুণ ও যুবকদের নৈতিক পদস্খলন এবং নারীদের উচ্ছৃঙ্খল চলাফেরা। তাই শুধুমাত্র আইন প্রয়োগের মাধ্যমে নৈতিক পতন রোধ করা সম্ভব নয়। এ সমস্যার সমাধান চাইলে অল্প বয়স থেকেই সন্তানদের ধর্মের ভিত্তিতে নৈতিকতার শিক্ষা দিতে হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে উল্লেখিত নৈতিকতা বিধ্বংসী উপাদানগুলো নিয়ন্ত্রণ করার সঙ্গে সঙ্গে অল্প বয়সেই সন্তানদের মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে এবং মুসলিম মনীষীদের জীবনীর সঙ্গে পরিচিত করতে হবে। বিশেষভাবে ১০-১৫ বছর বয়সের মধ্যেই রাসূল (ছাঃ) ও কুরআনে বর্ণিত ২৫ জন নবীর জীবনী সহ বিশিষ্ট ছাহাবী এবং মনীষীদের জীবনী পড়াতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ব্যবস্থা না থাকলে অভিভাবকদেরকেই সে উদ্যোগ নিতে হবে। মহৎ ব্যক্তিদের জীবনী মানুষকে পরিবর্তন করতে পারে। সুতরাং ইতিবাচক ও নিয়ন্ত্রণকারী একটি সামগ্রিক কর্মসূচীই আমাদের উক্ত সমস্যার সমাধান দিতে পারে। আল্লাহ আমাদের সহায় হৌন- আমীন!!
– হারুনুর রশীদ