ব্রুনাইয়ে ব্যভিচারের শাস্তি পাথর মেরে হত্যা

ব্রুনাইয়ের সুলতান কঠোর ইসলামী আইন প্রবর্তন করলেন। সুলতান হাসানাল বোলকিয়াহ বিশ্বের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের একজন। মঙ্গলবার নতুন শরীয়াহ্ পেনাল কোডের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়ার প্রাক্কালে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাওয়া এ আইনগুলো ৬ মাসের মধ্যে তার সালতানাতে কার্যকর করা হবে। নতুন আইনের মধ্যে রয়েছে, ব্যভিচারের জন্য পাথর বর্ষণ করে হত্যা, চুরির দায়ে অঙ্গচ্ছেদ এবং গর্ভপাত থেকে শুরু করে মদ্যপানের জন্য বেত্রাঘাতের বিধান। এ আইনগুলো শুধু মুসলমানদের প্রতি কার্যকর হবে। ৬৭ বছর বয়সী সুলতান তার বক্তব্যে বলেন, আল্লাহ্র অনুগ্রহে এ আইন পাসের মাধ্যমে আল্লাহ্র প্রতি আমাদের কর্তব্য সম্পন্ন হচ্ছে। সুলতানের পরিবার ৬ শতক ধরে তেলসমৃদ্ধ দেশ ব্রুনাইকে শাসন করে আসছেন। ব্রুনাইয়ের জনসংখ্যা চার লাখের মতো। সুলতান ১৯৯৬ সালে শরীয়াহ্ আইন অনুযায়ী শাস্তির বিধান প্রণয়নের ঘোষণা দেন। ব্রুনাইয়ের দক্ষিণ-পূর্ব মুসলিম প্রতিবেশী দেশ ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার তুলনায় দেশটির আইন বেশ কঠোর। এখানে মদ্যপান এবং ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ। এছাড়া, অন্য ধর্মের উপরও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ব্রুনাইয়ের প্রচলিত বিচার ব্যবস্থা দু’ভাগে বিভক্ত। এখানে ফৌজদারি আদালত বৃটিশ আইনের উপর প্রতিষ্ঠিত। উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত দেশটি বৃটিশদের অধীন ছিল। আর শরীয়াহ্ভিত্তিক আদালত ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়গুলো যেমন বিয়ে ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত মামলাগুলো পরিচালনা করে থাকে। ব্রুনাইয়ের জনসংখ্যার ৭০ ভাগ জাতিগত মালয় মুসলিম। প্রায় ১৫ ভাগ চীনা বংশোদ্ভূত আর বাকিরা আদিবাসী। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ব্রুনাইয়ের জীবনযাত্রার মান অপেক্ষাকৃত অনেক উন্নত। দেশটিতে স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা ব্যবস্থা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। দু’বছর আগে ফোর্বস ম্যাগাজিনের হিসাব অনুযায়ী, রাজপরিবারের সম্পদের মূল্য ছিল ২০০০ কোটি ডলার। গতবছর ব্রুনাইয়ের সরকার ধর্মীয় শিক্ষা সকল মুসলিমের জন্য বাধ্যতামূলক করার ঘোষণা দেন এবং শুক্রবার জুমার নামাজের সময় সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নিয়ম চালু করেন।
মানবজমিন