সংবাদ

সুইজারল্যান্ডে নিষিদ্ধ হলো নিকাব; নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলো বৃটিশ কলেজ

আন্দোলনে নিকাবের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলো বৃটিশ কলেজ

বার্মিংহাম: যুক্তরাজ্যের একটি কলেজ আন্দোলনের মুখে মুসলিম ছাত্রীদের নিকাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হয়েছে।

বার্মিংহাম মেট্রোপলিটন কলেজ নামের ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি এর আগে আদেশ জারি করেছিল, কলেজের ছাত্রছাত্রীরা কোনো ধরনের অবগুণ্ঠন, হ্যাট, টুপি এবং ঘোমটা পরে কলেজে আসতে পারবে না। সবাইকে যেন ঠিকঠাকভাবে চেনা যায় সেজন্যই এই আদেশ জারি করা হয়েছিল।

কিন্তু শিক্ষার্থীদের ব্যাপক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের মুখে তারা ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়।

এর আগে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নিয়মকানুন করার এখতিয়ারের স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। তার মতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে নিজেদের পোশাক কোড নিজেরাই ঠিক করে নিতে পারে।

কিন্তু উপ-প্রধানমন্ত্রী নিক ক্লেগ বলেছিলেন, ওই নিষেধাজ্ঞায় তিনি অস্বস্তি বোধ করছেন। বিশেষ করে মুসলিম নারী শিক্ষার্থীদের নিকাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞাটার ন্যায্যতা প্রতিপাদন করা কঠিন হয়ে পড়বে।

কলেজ কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে তাতে বলেছে, তারা তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে দেখবে। বিশেষ করে কারও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধে আঘাত হানে এমন কোনো নিয়ম হয়ে থাকলে তা বতিল করা হবে।

এই নিষেধাজ্ঞার পর এনইউএস ব্ল্যাক স্টুডেন্টস ক্যাম্পেইন অনলাইনে নয় হাজার লোকের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে তা প্রকাশ করে। আর শুক্রবার বার্মিংহামে আয়োজিত কয়েকশ’ শিক্ষার্থী একই আদেশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখালে কলেজ কর্তৃপক্ষ এই ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়।

সুইজারল্যান্ডে এই প্রথম নিষিদ্ধ হলো নিকাব

জেনেভা: সুইজারল্যান্ডের একটি রাজ্যে মুসলিম নারীদের নিকাব পরা নিষিদ্ধ করে একটি প্রস্তাব গণভোটে পাস হয়েছে। খবর এএফপি’র।

দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় টিসিনো রাজ্যে রবিবার ওই গণভোটে প্রকাশ্যে নিকাব পরা নিষিদ্ধ করার পক্ষে ভোট পড়েছে ৬৫ শতাংশ। দেশটির মুসলিম সম্প্রদায় এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ উদ্যোগের নিন্দা জানিয়েছে।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, রাজপথ কিংবা জনগণের জন্য উন্মুক্ত কোনো স্থানে কেউ মুখ ঢেকে রাখতে পারবে না। তবে উপসনালয়ে নিকাব পরা যাবে। এর আগে ফ্রান্স ও বেলজিয়ামে নিকাব নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

প্রস্তাবটি গণভোটে পাস হওয়ার পর এই প্রস্তাবের পক্ষে জোর প্রচারণাকারী একটি দলের প্রধান দম্ভ করে বলেছেন, ‘এখন এই দৃষ্টান্ত পুরো সুইজারল্যান্ড ও বিশ্বের অন্যত্র অনুসরণ করা হবে।’

সুইজার‌ল্যান্ডের ২৬টি রাজ্যের মধ্যে এই প্রথম কোনো রাজ্যে নেকাব নিষিদ্ধ করা হলো। টিসিনোর স্থানীয় সংবিধানে এখন নিকাব নিষিদ্ধ করা হবে এবং আইন অমান্যকারীদের জরিমানার বিধান রাখা হবে।

এই প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতিতে একে ‘ইসলামভীতির আরেকটি সামাজিক প্রকাশ’ বলে মন্তব্য করেছে সুইজারল্যান্ডের সেন্ট্রাল ইসলামিক কাউন্সিল। এতে মুসলমানদের জীবন আরও দুর্বিসহ হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছে সংগঠনটি।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যনাশনাল এক বিবৃতিতে ওই প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়ে দেশটিতে ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সুইজারল্যান্ডের সংসদ সদস্যদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছে।

সুইজারল্যান্ডের ৮০ লাখ বাসিন্দার মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা ৪ লাখ। টিসিনো রাজ্যে সবচেয়ে কম লোক বাস করে ৩ লাখ ৫০ হাজার। দেশটি মোট জনসংখ্যার ৫ ভাগ মুসলিম হলেও টিসিনোতে মুসলমানের সংখ্যা মাত্র ২ ভাগ।

RTNN 13-23/9/13

মন্তব্য করুন

Back to top button