সমাজ/সংস্কৃতি/সভ্যতা

মুসলিমদের সঙ্গে পশ্চিমাদের আচরণ

(লেখার সময়কাল: ২০১২ সাল)

আমরা বিশ্বাস করি পাশ্চাত্যে অনেক ভালো লোকও আছেন। তবে সমকালীন বাস্তবতা সামনে রাখলে মনে হয় এই পশ্চিমারা ভণ্ডামি ও দ্বৈতনীতির সমার্থক। মুসলিমপ্রধান দেশ আর মুসলিমমাত্রেই তাদের বৈষম্যের শিকার। পারমাণবিক বোমা মুসলিম দেশ বা মুসলমানের হাতে থাকলে তা পৃথিবীর নিরাপত্তার জন্য হুমকি। একই জিনিসের বিপুল মজুদ গড়লেও পশ্চিমা ও তাদের সমর্থনপুষ্ট রাষ্ট্র ইসরাইল কোনো সমস্যা নয়। ইহুদিদের শান্তি ও নিরাপত্তার প্রশ্নে তারা আপোসহীন। এরাই আবার ফিলিস্তিনি মুসলমানের স্বাধিকার ও আত্মরক্ষার প্রশ্নে চরম উদাসীন। মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতার বুলি তাদের মুখে লেগেই থাকে। অথচ মুসলমানের মানবাধিকারের বেলায় তাদের ভূমিকা নীরব দর্শকের। পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে কোনো সাদা চামড়ার লোক আক্রান্ত হলে তারা শোরগোল শুরু করে। মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতার নিত্যনতুন সবক শোনায়। পক্ষান্তরে চীন, ফিলিপাইন ও মায়ানমারে নিজভূমে পরবাসী মুসলিমরা যখন নিজেদের মানবাধিকার পেতে লড়াই করেন তখন এরা মুখে কুলুপ এঁটে থাকে। তাদের সুরে সুর মিলিয়ে ইসলাম ও মুসলমানের বিরুদ্ধে কেউ বাক্যোচ্চারণ করলে তারা বাকস্বাধীনতার দোহাই দিয়ে প্রতিবাদ পর্যন্ত জানায় না। অথচ তারা যখন ব্যক্তিগত স্বাধীনতা হরণ করে বোরকা নিষিদ্ধ করে তখন মানবাধিকার বা ধর্ম পালনের অধিকার লঙ্ঘন হয় না।

পশ্চিমাদের সর্বশেষ ভণ্ডামি আর দ্বিমুখী নীতি পরিষ্কার চোখে ভাসল পাকিস্তানের দুই মুসলিম নারী মালালা ও ড. আফিয়ার ক্ষেত্রে। দেশ-ধর্ম-ভাষা এক হলেও এদের সঙ্গে পশ্চিমাদের আচরণে আকাশ সমান ফারাক। পশ্চিমাদের কৃপাধন্য মালালার জন্য অপেক্ষা যখন নোবেল পুরস্কারের, ভাগ্যবিড়ম্বিত ড. আফিয়ার নিদারুণ অপেক্ষা তখন মৃত্যুর। মালালার বেলায় পশ্চিমাদের ভালোমানুষি অবিশ্বাস্য। পক্ষান্তরে ড. আফিয়ার ক্ষেত্রে তাদের পাশবিকতা চরম নিন্দনীয় এবং সর্বোত অগ্রহণযোগ্য।

মালালা ইউসুফজাইয়ের জন্ম ১২ জুলাই, ১৯৯৭। তালেবান প্রভাবিত পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকায় পশ্চিমাধারার নারীশিক্ষার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারিত হলে মালালা নিজের শিক্ষার অধিকারে সোচ্চার হয়। ২০০৯ সালের ৩ জানুয়ারি থেকে মালালা বিবিসির উর্দু ব্লগে লিখতে শুরু করে। তালেবান অধিকৃত সোয়াতে নারীর জীবনযাত্রা কেমন সে সম্পর্কে লিখতে থাকে। Life under the Taleban (তালেবানের অধীনে জীবন) নিয়ে ২০০৯ সালে বিবিসি উর্দু সার্ভিসের জন্য একটি ডায়েরি লিখে সবার নজরে আসে। মার্কিন দূত তার সঙ্গে দেখা করেন। একটি আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কারের জন্যও মনোনীত হয় সে। টিভিতে তার সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়। সাক্ষাৎকারে সে তার পাশে দাঁড়ানোয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভূয়সী প্রশংসা করে।

গত ৯ অক্টোবর সোয়াত উপত্যকার প্রধান শহর মিঙ্গোরার স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে মালালা হামলার শিকার হয়। তথাকথিত তালেবান গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করে। তালেবানরা যে আদর্শের ধারক বলে দাবি করে থাকেন তাতে করে তাদের হাতে শিক্ষার জন্য কোনো নারী হামলার শিকার হতে পারে না। ইসলাম নারী শিক্ষাকে শুধু উৎসাহিতই করে না; একে যথাযথ গুরুত্বও প্রদান করে। তাই তালেবান বা যারাই এ হামলা করুক ইসলাম এমন হামলা সমর্থন করে না। তাছাড়া সাধারণ অবস্থায় তো বটেই যুদ্ধাবস্থায়ও এমনকি শত্রুপক্ষের কোনো নারীর ওপর হামলা করতে নিষেধ করা হয়েছে। পাকিস্তানের জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রধান মাওলানা ফযলুর রহমান একে ইসলাম ও পখতুন সংস্কৃতিবিরোধী আখ্যায়িত করেছেন। সেহেতু মালালার ওপর হামলার পর থেকেই পাকিস্তানের সর্বশ্রেণীর মুসলিম নাগরিক তার পাশে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমান তার সুস্থতার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছে। তাকে পশ্চিমারা অভূতপূর্ব গুরুত্ব প্রদান করে। সারা বিশ্বের মিডিয়া তাকে আকাশে নিয়ে তোলে। পশ্চিমা ও তাদের দোসরদের মিডিয়ার কল্যাণে সহসাই পাকিস্তানের এক সাধারণ মেয়ে বনে যায় সুপার হিরোইন। সারাবিশ্বের পশ্চিমাপন্থীরা তার জন্য মায়াকান্না জুড়ে দেয়। মুদ্রার উল্টোপীঠে পশ্চিমাদের মোড়ল আমেরিকাই মালালার স্বদেশী ড. আফিয়া সিদ্দিকীর মতো একজন বিরল মেধাবী নারীকে বিনা দোষে জেলে বছরের পর আটক রেখেছে। তার ওপর চালানো হয়েছে অমানুষিক নির্যাতন। ন্যূনতম মানবাধিকার পর্যন্ত দেয়া হয় নি তাকে।

ড. আফিয়া আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্নায়ু বিজ্ঞানী। অসামান্য ধীসম্পন্ন পিএইচডি ডিগ্রিধারী এ মহিলার প্রায় ১৪৪টি সম্মানসূচক অন্যান্য ডিগ্রি ও সার্টিফিকেট রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ব্রন্ডেইস ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। তিনি হাফিজে কুরআন ও আলিমা। ব্যক্তিগত জীবনে পবিত্র কুরআন ও হাদিসে পারদর্শিনী এ মহিলা অত্যন্ত দীনদার ও পরহেজগার। ইসলামি আদর্শ, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল। ১৯৭২ সালের ২ মার্চ ড. আফিয়া সিদ্দিকার জন্ম করাচির এক বনেদী দীনদার পরিবারে। উচ্চশিক্ষা লাভ করে ২০০২ সাল পর্যন্ত তিনি আমেরিকায়ই বসবাস করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকালে তাকে যারা চিনতেন তাদের সবাই বলেছেন, আফিয়া অত্যন্ত ভদ্র ও বিনয়ী মহিলা। ইসলামের প্রতি তাঁর ছিল বিশেষ দরদ।

আল কায়দার সঙ্গে যোগাযোগের কথিত অভিযোগে ২০০৩ সালে ড. আফিয়াকে তার তিন সন্তান আহমদ, সুলায়মান ও মরিয়মসহ করাচির রাস্তা থেকে অপহরণ করে। পাকিস্তানের কোনো কারাগারে না রেখে এবং পাকিস্তানি আদালতে উপস্থাপন না করে পাঁচ বছর ধরে তাকে আফগানিস্তানের বাগরাম সামরিক ঘাঁটিতে বন্দি করে রাখা হয়। এরপর চলে তার ওপর অমানুষিক শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন। বাগরামের কুখ্যাত মার্কিন কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ব্যক্তিরা বলেছেন, ‘নির্যাতনের সময় একজন নারীবন্দির আর্তচিত্কার অন্য বন্দিদের সহ্য করাও ছিল কষ্টকর। ওই নারীর ওপর নির্যাতন বন্ধ করতে অন্য বন্দিরা অনশন পর্যন্ত করেছিল। পাকিস্তানের তত্কালীন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের সম্মতিক্রমে এফবিআই এ বিজ্ঞানীকে অপহরণ করার সুযোগ পায়।

২০০৮ সালে তাকে স্থানান্তরিত করা হয় নিউইয়র্কের এক গোপন কারাগারে। বর্তমানে তিনি পুরুষদের সঙ্গে ওই কারাগারেই আটক রয়েছেন। অব্যাহত নির্যাতনের ধকল সইতে না পেরে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। প্রথম থেকেই তিন সন্তানকে তার থেকে পৃথক রাখা হয়। এখনও তিনি জানেন না তার সন্তানরা কোথায় আছেন? আদৌ তারা বেঁচে আছেন কিনা। নিউইয়র্কের একটি আদালত সম্প্রতি মার্কিন গোয়েন্দা ও সামরিক কর্মকর্তাদের হত্যা চেষ্টার দায়ে পাকিস্তানের এ মহিলা বিজ্ঞানীকে ৮৬ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। অথচ এ মামলার বিবরণ পড়লে যে কেউ বুঝবেন এটি একটি সম্পূর্ণ সাজানো নাটক। খোদ ব্রিটেনের দি ইন্ডিপেনডেন্ট পত্রিকার প্রখ্যাত সাংবাদিক রবার্ট ফিস্ক একে অবিশ্বাস্য বলে আখ্যায়িত করেছেন। [সূত্র : দৈনিক আমার দেশ]

সবচে দুঃখজনক ব্যাপার হলো, মালালার পাশে পাকিস্তান সরকার দাঁড়ালেও ড. আফিয়ার মতো বিরল কৃতিত্বের নাগরিকের পাশে দাঁড়ায়নি। পাকিস্তানের তেহরিকে ইনসাফ পার্টির চেয়ারম্যান বিশ্বকাপজয়ী সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান ভবিষ্যতে এর বিচার করা হবে মর্মে হুঁশিয়ার করেছেন। মালালার ওপর হামলার পর তাকে নিয়ে মিডিয়ার মাতামাতির সময়ও পূর্বোক্ত মাওলানা ফযলুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে ড. আফিয়াকে মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আমেরিকার ওপর চাপ সৃষ্টির দাবি জানান। [সূত্র : ইন্টারনেট] প্রসঙ্গত, ড. আফিয়ার মতো বিশ্বের সকল নির্যাতিত মুসলিমের ক্ষেত্রেই মুসলিম নেতৃবৃন্দের ভূমিকা দুঃখজনক এবং হতাশাব্যঞ্জক। [আল্লাহ তাদের ক্ষমা করুন এবং উম্মাহচেতনা দান করুন।]

শুধু ড. আফিয়া কেন খোদ মালালার শহরেও তো মার্কিন ড্রোন হামলায় রোজ কত শিশুকে প্রাণ হারাতে হয়েছে। আহত হয়ে মালালার চেয়ে কত মায়াবী চেহারার মেয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। যে যুক্তরাজ্য সরকার আজ মালালাকে বিশেষ চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে পরম পুণ্যবানের পরিচয় দিচ্ছে, মালালাকে সেদেশের নাগরিকত্ব ও তার পিতাকে দূতাবাসে চাকরি দিয়ে মহানুভবতা দেখাচ্ছে, সে যুক্তরাজ্যই তো তার বন্ধুরাষ্ট্র আমেরিকার সঙ্গে ইরাক ও আফগানে অসংখ্য শিশুকে পঙ্গু করছে। অসংখ্য নিরপরাধ নারীকে বিধবা ও মাকে সন্তানহারা করছে। আর এরাই তো পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রের জন্য কলংক ইসরাইলকে সমর্থন ও পরোক্ষ সাহায্য করে আসছে গাজা উপত্যকায় শত মালালার জীবনহরণে। গাজার নিষ্পাপ ফুলের মতো শিশুদের নিহত ও মারাত্মক আহত দেহ দেখে যখন বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ের রক্ত আর চোখের অশ্রু ঝরল তখনও এরা এ ঘৃণ্য কাজের যথাযথ প্রতিবাদ জানায় নি।

মালালার ওপর হামলার ক্ষত না শুকাতেই জাতিসংঘ বিশ্বমালালা দিবস ঘোষণা করে। অথচ বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের মুরুব্বি হিসেবে এ করিৎকর্মা জাতিসংঘই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত চরম নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কোনো সক্রিয় কিংবা ন্যায়সঙ্গত ভূমিকা পালন করছে না। আরেক পশ্চিমা মুরুব্বি ফ্রান্স আজ স্বপ্রণোদিত হয়ে মালালাকে নোবেল পুরস্কার দেবার দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করছে। অথচ কদিন আগে এরাই কিনা মালালার মাথায় যে ওড়না বা হিজাব শোভা পায় তা নিষিদ্ধ করেছে আইন করে। মালালা যেখানে নারীর শিক্ষার দাবিতে এত আলোচিত ও প্রশংসিত, ফ্রান্সে তো তার সধর্মীয় বোনদেরই শিক্ষার পথ রুদ্ধ করা হয়েছে নারীর অবশ্য পালনীয় হিজাব কেড়ে নিয়ে।

এই হলো বর্তমান বিশ্বমুসলিমের সঙ্গে পশ্চিমাদের দুমুখো আচরণের কিছু চিত্র। প্রসঙ্গত, আসলে ইরাক-আফগানে ইঙ্গ-মার্কিন খ্রিস্টান, তিব্বত ও মায়ানমারে চীন-বার্মিস বৌদ্ধ এবং কাশ্মীরে হিন্দু-শিখ ভারতীয়রা মুসলিমদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। মুসলিমের বিরুদ্ধে দেখা যাচ্ছে আর সব জাতি-ধর্ম একাট্টা। এ জন্যই শায়খ ছাওরী রহ. বলেছেন,

«الْكُفْرُ مِلَّةٌ، وَالْإِسْلَامُ مِلَّةٌ»

‘অমুসলিমরা সব এক জাতি আর মুসলিমরা এক জাতি।’ [ইবনু আবি শায়বা : ১০২৩৪] বাংলা ভাষায় একটি প্রবাদ এমন : ‘সব রসুনের মূল একই জায়গায়।’

বলা হয় ইতিহাসের সবচে বড় শিক্ষা হলো, ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না। মুসলিম হিসেবে আমরাও যেন এর ব্যতিক্রম হতে চাই না। আমরা প্রায়শই নিজেদের শত্রু-মিত্র নির্ণয় করতে ভুল করি। আল্লাহ আমাদের চৌদ্দশ বছর আগে বলে দিয়েছেন যে, বিজাতিরা আমাদের ওপর কখনো সন্তুষ্ট হবে না যাবৎ না আমরা নিজেদের স্বকীয়তা বিসর্জন দিয়ে সর্বোতভাবে তাদের মতো হয়ে যাই। তথাপি আমরা বারবার শত্রুদেরই বন্ধু ভেবে ভুল করে আসছি। বন্ধুকে বন্ধুর অধিকার দিতে পারি নি। আল্লাহ বলেন,

﴿ وَلَن تَرۡضَىٰ عَنكَ ٱلۡيَهُودُ وَلَا ٱلنَّصَٰرَىٰ حَتَّىٰ تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمۡۗ قُلۡ إِنَّ هُدَى ٱللَّهِ هُوَ ٱلۡهُدَىٰۗ وَلَئِنِ ٱتَّبَعۡتَ أَهۡوَآءَهُم بَعۡدَ ٱلَّذِي جَآءَكَ مِنَ ٱلۡعِلۡمِ مَا لَكَ مِنَ ٱللَّهِ مِن وَلِيّٖ وَلَا نَصِيرٍ ١٢٠ ﴾ [البقرة: ١٢٠]

‘আর ইয়াহূদী ও নাসারারা কখনো তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না তুমি তাদের মিল্লাতের অনুসরণ কর। বল, ‘নিশ্চয় আল্লাহর হিদায়াতই হিদায়াত’ আর যদি তুমি তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ কর তোমার কাছে যে জ্ঞান এসেছে তার পর, তাহলে আল্লাহর বিপরীতে তোমার কোনো অভিভাবক ও সাহায্যকারী থাকবে না।’ {সূরা আল-বাকারা, আয়াত : ১২০}

আমাদের রব আল্লাহ তাই আমাদের সতর্ক করে বলে দিয়েছেন,

﴿ ۞يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَتَّخِذُواْ ٱلۡيَهُودَ وَٱلنَّصَٰرَىٰٓ أَوۡلِيَآءَۘ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلِيَآءُ بَعۡضٖۚ وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمۡ فَإِنَّهُۥ مِنۡهُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّٰلِمِينَ ٥١ ﴾ [المائ‍دة: ٥١]

‘হে মুমিনগণ, ইয়াহূদী ও নাসারাদেরকে তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। আর তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে নিশ্চয় তাদেরই একজন। নিশ্চয় আল্লাহ যালিম কওমকে হিদায়াত দেন না।’ {সূরা আল-মায়িদা, আয়াত : ৫১}

আল্লাহ সকল মুসলিমকে নিজেদের শত্রু-মিত্র সঠিকভাবে নির্ণয় করে চলবার তাওফীক দান করুন। শত্রুদের শত্রুতা থেকে সজাগ এবং মিত্রদের প্রতি সহানুভূতিশীল হবার তাওফীক দিন। আমীন।

– আলী হাসান তৈয়ব
সম্পাদনা : ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী

মন্তব্য করুন

Back to top button