সংবাদ

বৃটেনে মসজিদে হামলা করতে এসে মুগ্ধ হয়ে ফিরে গেলেন ইসলাম বিদ্বেষীরা

বৃটেনে মসজিদে হামলা করতে আসা একদল ইসলাম বিদ্বেষীকে চা-বিস্কুট দিয়ে আপ্যায়ন করলেন মুসল্লিরা। ফলে হামলার পরিবর্তে মুসলমানদের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়ে ফিরে গেলেন তারা। সম্প্রতি বৃটেনের ইয়র্ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

লন্ডনে বিপথগামী দুই মুসলিম যুবকের ছুরিকাঘাতে এক বৃটিশ সেনা নিহত হওয়ার ঘটনায় বৃটেনজুড়ে যখন উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে তখন মুসলমানদের এমন ভূমিকার প্রশংসা করেছে আন্তর্জাতিক মিডিয়া। এভাবে ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে ইসলাম বিদ্বেষীদের মন জয় করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিভিন্ন ধর্মের নেতারা।

জানা গেছে, গত ২৬ মে রোববার ইংলিশ ডিফেন্স লীগের (ইডিএল) সদস্যরা ইয়র্কের বুল লেন মসজিদ এলাকায় ইসলাম বিদ্বেষী বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন। তারা ফেসবুকের মাধ্যমে ইডিএল সদস্যদের মসজিদের সামনে সমবেত হওয়ার আহবান জানান। এতে স্থানীয় মুসল্লিরা উদ্বিগ্ন হয়ে মসজিদ প্রাঙ্গনে জড়ো হন। ইডিএল সদস্যদের একটি অংশ হামলার উদ্দেশে মসজিদের দিকে এগিয়ে গেলে মুসল্লিরা চা-বিস্কুট নিয়ে এগিয়ে যান। ইডিএল সদস্যরা হামলার পরিবর্তে চা-বিস্কুট গ্রহণ করেন। পরে মুসল্লিরা ইডিএল সদস্যদের একসাথে ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণের আহবান জানান। ইডিএল সদস্যরা প্রায় আধঘণ্টা মুসল্লিদের সাথে কথাবার্তা বলে খুশি মনে ফিরে যান।

এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ইয়র্কের আর্চবিশপ ড. জন সেন্টামু বলেন, মুসলমানদের এ উদ্যোগ ছিলো অত্যন্ত চমতকার। এ ধরণের সাংঘর্ষিক অবস্থা চা-বিস্কুট আপ্যায়নের মাধ্যমে মোকাবেলা করা ইয়র্ক এলাকার মানুষের ধারাবাহিক সংস্কৃতিরই একটি অংশ। মুসলমানরা এই সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়ে অত্যন্ত শান্তিপুর্ণভাবে সাম্ভাব্য সাংঘর্ষিক ঘটনা মোকাবেলা করে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। মসজিদ এলাকার স্থানীয় চার্চের পাদ্রি ফাদার টিম জন্সস ঘটনার খবর পেয়ে মসজিদে যান। তিনি বলেন, আমি জানতাম মুসলমানরা অত্যন্ত বুদ্ধিমান এবং তাদের মানসিক সাহস খুবই প্রবল। মসজিদের বাইরে যে ঘটনা ঘটলো তা থেকে পৃথিবীর মানুষের অনেক কিছুই শেখার রয়েছে।

স্থানীয় হুল রোড ওয়ার্ডের কাউন্সিলার নীল বার্নেস বলেন, এটি ছিলো ইয়র্কবাসীর জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত। তিনি বলেন, ইডিএল সদস্যদের ক্ষোভ ও ঘৃণা মুসলমানরা যেভাবে শান্তি ও ভালোবাসার উষ্ণতায় মোকাবেলা করলেন তা আমি কোনো দিন ভুলতে পারবোনা। তিনি বলেন, আক্রমণের উদ্দেশে আগতদের এভাবে চা-বিস্কুট দিয়ে আপ্যায়নের দৃশ্য আমার মন থেকে কোনো দিন মুছে যাবেনা। উল্লেখ্য, গত ২২ মে দুপুরে লন্ডনের উলইচ এলাকায় বিপথগামী দুই মুসলিম যুবকের ছুরিকাঘাতে এক বৃটিশ সেনা নিহত হন। এ ঘটনার পর বৃটেনজুড়ে ইসলাম বিরোধী উত্তেজনা দেখা দেয়।

ইসলাম বিরোধী ঘটনার তথ্য সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান ফেইথ ম্যাটারের দেয়া তথ্য মতে এ হত্যাকাণ্ডের পর এক সপ্তাহে বৃটেনের বিভিন্ন জায়গায় ১৬২টি ঘটনা ঘটেছে।

– নয়াদিগন্ত

মন্তব্য করুন

Back to top button