আরাকানে নির্বিচারে মুসলিম হত্যা
মায়ানমারের আকিয়াব শহরের রামব্রী গ্রামের এক রাখাইন শিক্ষিকা কর্তৃক ছাত্র পিটানোকে কেন্দ্র করে অভিভাবক ও শিক্ষকদের গালিগালাজ ও উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে এক শিক্ষিকা মারা যান। এর সূত্র ধরে আকিয়াব শহর থেকে গাড়ি যোগে তাবলীগ জামা‘আতের একটি দল ইয়াঙ্গুন যাওয়ার পথে ৩ জুন টংগু নামক স্থানে পৌঁছলে রাখাইন যুবকরা গাড়ির হেলপারসহ তাবলীগ জামা‘আতের ১০ সাথীকে পিটিয়ে হত্যা করে। নির্মম এ হত্যাকান্ডের বিচারের দাবীতে ৫ জুন মুসলমানরা ইয়াঙ্গুন শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এ ঘটনায় মুসলিম অধ্যুষিত পুরো আরাকান রাজ্যে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় ইয়াঙ্গুনে শীর্ষ মুসলিম নেতারা বৈঠক করে। ৮ জুন শুক্রবার জুম‘আর ছালাতে মুসলমানদের জমায়েত করে শান্ত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। উক্ত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ৮ জুন পুরো আরাকানে জুম‘আর ছালাতে মুছল্লীরা সমবেত হতে থাকে। মংডু শহরের মারকায মসজিদে জুম‘আর ছালাত চলাকালে মংডু বৌদ্ধদের ইউনাইটেড হোটেল থেকে মসজিদের মুছল্লীদের উপর পাথর নিক্ষেপ করা হয়। এতে বিক্ষুব্ধ মুসলমানদের সাথে রাখাইন ও সরকারী নাসাকা বাহিনীর সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। নাসাকার গুলীতে কয়েকজন মুসলিম নিহত হ’লে পুরো আরাকানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। দাঙ্গা সামাল দিতে সেখানে সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। জারী করা হয়েছে সান্ধ্য আইন। প্রতিনিয়ত এ দাঙ্গা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। এ পর্যন্ত দাঙ্গায় চার শতাধিক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। যাদের অধিকাংশই মুসলিম।
সরকারের লেলিয়ে দেয়া বাহিনীর হাতে সেখানে প্রতিনিয়ত খুন হচ্ছে মুসলিম রোহিঙ্গা যুবক-যুবতী, আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। রাখাইন যুবকদের হাতে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে মুসলিম যুবতীরা। দেশটির নাসাকা ও রাখাইন যুবকরা মিলে রোহিঙ্গা মুসলিম নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। রাতের অন্ধকারে তারা একযোগে চালাচ্ছে লুটতরাজ, মসজিদ ও বসতভিটাতে অগ্নিসংযোগ। অনেক রোহিঙ্গা মুসলিম সহায়-সম্পদ হারিয়ে পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিয়েছে। মুসলমানদের রক্তস্রোতে ভাসছে পুরো আরাকান রাজ্য। অসহায় শিশু, কিশোর, ধর্ষিতা, মযলুম মানুষের আর্তনাদে সেখানকার আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।