দিল্লিতে মসজিদে আগুন দেয় পুলিশ : ওয়াশিংটন পোস্ট

গত রোববার বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরোধী ও সমর্থকদের
মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তারপর থেকেই টানা কয়েকদিন ধরে সহিংসতায় উত্তাল হয়ে
উঠেছে উত্তর-পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন স্থান। বিক্ষোভ-সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৩৪
জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও দুই শতাধিক মানুষ।
দিল্লিতে কমপক্ষে তিনটি মসজিদে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। অপরদিকে বহু
বাড়ি-ঘর এবং দোকান-পাটেও হামলা ও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। এদিকে, দিল্লির
সহিংসতায় দুর্বৃত্তদের সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,
সহিংসতা বন্ধের চেষ্টা না করে উন্মত্ত জনতার সঙ্গে যোগ দিয়ে জয় শ্রী রাম
বলে স্লোগান দিচ্ছিল পুলিশ। একই সঙ্গে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে তারা।
গত কয়েকদিন ধরে এই দাঙ্গা পরিস্থিতি চললেও এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অবশেষে বুধবার তিনি এ বিষয়ে বিবৃতিতে দিয়ে
সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান তিনি। লোকজনকে শান্তি ও ভ্রাতৃত্ববোধ বজায়
রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী মোদি।
মোদির রাজনৈতিক জীবনে এনিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সাম্প্রদায়িক সহিংসতার
ঘটনা ঘটল। এর আগে ২০০২ সালে মোদি যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সে সময়
তিনদিন ধরে দাঙ্গা পরিস্থিতিতে এক হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। নিহতদের
অধিকাংশই ছিল মুসলিম। কিন্তু আদালত থেকে নিয়োগকৃত একটি প্যানেল সহিংসতায়
সম্পৃক্ততার অভিযোগ থেকে মোদিকে নিস্তার দিয়েছিল।
গত বছরের ডিসেম্বরে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস করে মোদি সরকার।
তারপর থেকেই এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাসের
পর থেকেই মুসলিমদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। সমালোচকদের দাবি, এই আইন
ভারতের সংবিধানবিরোধী। এই আইনের কারণে মুসলিমরা আতঙ্কে আছেন যে, মোদির
ভারতে তাদের হয়তো দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে দেখা হবে।