সংবাদ

ভারতে তাজমহল চত্বরে জুমার নামাজ বন্ধের দাবি

ভারতে ঐতিহাসিক তাজমহল চত্বরে জুমার নামাজ বন্ধের দাবি জানিয়েছে ‘অখিল ভারত ইতিহাস সংকলন সমিতি’। এ সমিতি ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএস-এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান। তাদের দাবি, তাজমহলে নামাজ আদায় বন্ধ করা না হলে সেখানে হিন্দুদেরও পূজা অর্চনার সুযোগ দিতে হবে। শিব চালিশা পাঠ করতে দিতে হবে। সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন দাবি জানিয়েছেন ‘অখিল ভারত ইতিহাস সংকলন সমিতি’র সম্পাদক বালমুকুন্দ পাণ্ড।

বালমুকুন্দ পাণ্ড বলেন, এটি প্রমাণিত যে তাজমহল শিব মন্দির ছিল। একজন হিন্দু রাজা এটি তৈরি করেছিলেন। তাজমহল ভালবাসার নিদর্শন নয়। মমতাজের মৃত্যুর চার মাসের মধ্যে শাহজাহান দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন। তাজমহল সম্পর্কে সমস্ত প্রমাণাদি সংগ্রহ করে সবার সামনে তা তুলে ধরা হবে।

তিনি বলেন, আরএসএস সব প্রাচীন স্থাপনার তালিকা তৈরি করছে যেসব স্থাপনা ভেঙ্গে মুসলিম শাসকরা মসজিদ বা অন্য কোনও স্থাপন নির্মাণ করেছিল।

সম্প্রতি বিজেপি বিধায়ক জগন প্রসাদ গর্গ তাজমহলকে শিব মন্দির বলে দাবি করেছেন। মুঘলরা সেই মন্দির ধ্বংস করে তাজমহল তৈরি করেছিল বলে তার দাবি। এর আগে বিজেপি এমপি বিনয় কাটিয়ার তাজমহলকে তেজো মহালয় ও শিব মন্দির বলে দাবি করেছেন।

উত্তর প্রদেশের বিজেপি বিধায়ক সঙ্গীত সোম তাজমহলকে ভারতীয় সংস্কৃতির কলঙ্ক ও তা বিশ্বাসঘাতকদের তৈরি বলে মন্তব্য করেছেন।

এসব ঘটনার মধ্যে গত সোমবার তাজমহল চত্বরে রাষ্ট্রীয় স্বাভিমান দল ও হিন্দু যুব বাহিনী নামে দুটি সংগঠনের সদস্যরা ‘শিব চালিশা’ পাঠ করলে সেখানে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে মোতায়েন থাকা সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের (সিআইএসএফ) সদস্যরা তাদের কিছু সময়ের জন্য আটক রাখে। পরে অবশ্য তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তাজমহল পরিদর্শন করে একে ভারতের অমূল্য রত্ন এবং এখানকার শ্রমিকদের রক্ত ও ঘামের বিনিময়ে তা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। এর একদিনের মাথায় শুক্রবার আরএসএস-এর ইতিহাস শাখার পক্ষ থেকে তাজমহল চত্বরে জুমার নামাজ বন্ধের দাবি এলো।

১টি মন্তব্য

  1. মজার বিষয় হল অক্টোবর অর্থ অষ্টম মাস হলেও ক্যালেন্ডারে এটি দশম মাস হিসেবে ধরা হয়।
    ক্যালেন্ডারের প্রথম প্রচলন হয় প্রাচীন “রোমান ক্যালেন্ডার” থেকে। সেসময় দশ মাসে এক বছর হিসেব করা হত। প্রথম মাস মার্চ থেকে শুরু হয়ে ডিসেম্বরে শেষ হত।
    সে হিসেবে মার্চ, এপ্রিল, মে, জুনের পর পঞ্চম মাসকে কুইন্টিলিস (ল্যাটিন Quintus অর্থ পঞ্চম), ষষ্ঠ মাসকে সেক্সটিলিস (ল্যাটিন sex অর্থ ছয়), সপ্তম মাসকে সেপ্টেম্বর (ল্যাটিন Septem অর্থ সাত), অষ্টম মাসকে অক্টোবর (ল্যাটিন octo অর্থ আট), নবম মাসকে নভেম্বর (ল্যাটিন novem অর্থ নয়) আর দশম মাস ডিসেম্বর (ল্যাটিন decem অর্থ দশ) বলা হত।
    পরবর্তিতে রোমান শাসক নুমা এসে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি নামের দুটো মাস আরো যোগ করে দেন। আর মার্চের পরিবর্তে জানুয়ারি থেকে বছরের শুরু করেন।
    ফলে যে ডিসেম্বর ছিল দশম মাস, সেটি চলে যায় বারতম মাসের জায়গায়। কিন্তু মাসগুলোর নাম আর পাল্টানো হয় না।
    এরপর জুলিয়াস সিজার যখন ক্ষমতায় আসেন, তিনি নতুন ক্যালেন্ডার তৈরি করেন যেটি “জুলিয়ান ক্যালেন্ডার” নামে পরিচিত। তিনি নুমার রোমান ক্যলেন্ডারের সপ্তম মাস কুইন্টিলিস মাসকে নিজের নামে নামকরন করেন “জুলাই”।
    এরপরের রোমান শাসক অগাস্টাস নুমার রোমান ক্যলেন্ডারের অষ্টম মাস সেক্সটিলিস মাসকে নিজের নামে নামকরন করেন “অগাস্ট”।
    পরবর্তিতে পোপ গ্রেগরি মধ্যযুগের শুরুতে এসে জুলিয়ান ক্যালেন্ডার পরিবর্তন করে নতুন ক্যালেন্ডার চালু করেন, যা গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার নামে পরিচিত। আজ আমরা যে ক্যালেন্ডার ব্যবহার করি, সেটিই গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার।
    প্রাচীন কাল থেকেই অক্টোবর বিভিন্ন উৎসবের মাস। হিন্দুধর্মের বিভিন্ন বড় বড় পূজা এই মাসেই হয়। ইহুদীদেরও অনেক ধর্মিয় উৎসব এই মাসে হয়।
    অক্টোবরকে আগে বলা হত উইন্টারফেলিথ। অক্টোবর মাস শেষ হওয়া মানে ফসল কাটার মৌসুমের দিন শেষ এবং শীতকালের শুরু।
    অক্টোবর মাসের শেষের দিকে পশ্চিম ইউরোপের বসবাসরত কেল্টিক জাতিরা একটি বিশেষ উৎসব পালন করত, যার নাম ছিল “কেল্টিক ফসল উৎসব”।
    তাদের বিশ্বাস ছিল, অক্টোবর মাসের শেষদিন মৃতের দেবতা “সামান” সব মৃত অাত্মাদের পৃথিবীতে দিয়ে পাঠায়।
    তাই তারা নিজেরাও ভুতের মুখোশ পরে আত্মা সেজে থাকতো যেন ঐ আত্মাগুলো তাদেরকেও আত্মা ভেবে ভুল করে ও ক্ষতি না করে। এসময় তারা আত্মাদের খুশি করতে সবাইকে মিষ্টি বিলিয়ে দিত।
    এদিন তারা আরেকটি কাজ করত। কুমড়া কেটে বিকৃত মুখাকৃতি বানিয়ে এর মধ্যে একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে দিত। আত্মাগুলো যে কষ্টে আছে সেটি বুঝাতে এটি তারা করত।
    এই কেল্টিকরা ছিল প্রাচীন প্যাগাম ধর্মের অনুসারি। পশ্চিমা সমাজে প্যাগানদের অনেক ধর্মীয় আচরণ পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে খ্রিস্ট সমাজে ঢুকে যায়।
    কেল্টিকদের এই প্রাচীন কেল্টিক ফসল উৎসবই পরবর্তিতে নতুন নাম নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে প্রবেশ করে, যার নাম দেওয়া হয় হ্যালোইন উৎসব।
    তাদের ঐ কুমড়াকে নাম দেওয়া হয় the Jack-O-Lantern, আর মিষ্টি বিতরনের বদলে শুরু হয় চকোলেট বিতরনের সিস্টেম। ভুতের মুখোশ পরে আত্মা সাজার প্রথাটিও ঠিক থাকে।
    সেই থেকে প্রতি একত্রিশ অক্টোবর হ্যালোইন উৎসব পালিত হয়ে আসছে। এখন তারা এটিকে খ্রিস্টান ধর্মিয় উৎসব হিসেবে দাবী করে।
    মূলত হ্যালোইন উৎসব বড় ধরণের ব্যবসা ছাড়া আর কিছু না। এদিন শুধু আমেরিকাতেই ছয় বিলিয়ন ডলার (আট চল্লিশ হাজার কোটি টাকা) টাকার ব্যবসা হয় কার্ড, মুখোশ, চকোলেট, কস্টিউম আর হ্যালোইন পার্টি করতে।
    আর দুদিন বাদেই একত্রিশ অক্টোবর, সেই হ্যালোইনের দিন। পশ্চিমাদের অন্ধ অনুকরন করতে গিয়ে না বুঝেই আমাদের দেশেও ইদানিং এই হ্যালোইন উৎসব চালু হয়েছে অনেক জায়গায়।
    কিন্তু প্যাগানদের এই ধর্মিয় উৎসব পালন করা ইসলাম ধর্মীয় দিক থেকে সম্পুর্ন নিষেধ। বরং প্যাগানদের বাতিল, কুসংস্কারচ্ছন্ন, মিথ্যা বিশ্বাস থেকে মানুষকে সত্যের পথে আনার জন্যই রাসুল (সা) সারাজীবন সংগ্রাম করে গিয়েছেন। সেসময়কার আরব মুশরিকরাও ছিল এই প্যাগান ধর্মের অনুসারী। সংগৃহীত

মন্তব্য করুন

Back to top button