প্রথম আলো’র সোশাল এনজিনিয়ারিং
আনাসের পড়ার শখ খুব বেশি। ওকে ওর আব্বুজি, আমার ছোট ভাই, প্রথম আলো থেকে বের হওয়া কিশোর আলোর ঈদ সংখ্যা এনে দিয়েছে।
একটা কমিক্স আছে, পিশাচ নিয়ে। ছবিটা দেখে আনাস বেশ ভয় পেয়েছে। দ্য জিন এন্ড হিউম্যান সিকনেস বইটাতে মানুষকে জিন/ভুতের ভয় দেখানোটা শয়তানের একটা স্ট্র্যাটেজি হিসেবে উল্লেখ করেছে। জিনকে ভয় পাওয়াটা অনেক সময় শির্কের ঘরে চলে যায়। জিনেরা তখনই মানুষের ওপর জয়ী হয় যখন মানুষ তাকে ভয় পাওয়া শুরু করে। সারা পৃথিবীর হরর মুভি ইনডাস্ট্রি এত বুস্ট এমনি এমনি হয়নি।
পৃষ্ঠা ২৭, তোড়ায় বাঁধা অনেক ধাঁধা। অঙ্কের মজাতে লেখা আছে,
এ পৃথিবীতে তোমার প্রিয়তম মানুষটির নাম মনে মনে উচ্চারণ কর তিনবার। কারণ কঠিন এক পরীক্ষার অবতীর্ণ হতে যাচ্ছ তুমি! এ পরীক্ষা বলে দেবে ঠিক কত দ্রুত কাজ করে তোমার মস্তিষ্ক। পারলে একটা স্টপ ওয়াচ যোগাড় করো। এবার ক্যালকুলেটর ছাড়াই মাথা খাটিয়ে হিসাব করো…
কঠিন অঙ্ক পরীক্ষার সাথে প্রিয়তম মানুষের নাম স্মরণ করার সম্পর্ক কী–প্রশ্ন ছিল আনাসের এবং আনাসের মায়ের।
এই সম্পর্কটা বুঝতে হলে সোশাল এনজিনিয়ারিং বুঝতে হবে।
প্রথম আলো কেমন সোশাল এনজিনিয়ারিং করে, কীভাবে শির্কের চাষ করে শিশুমনে ওপরের দুটো ছোট্ট উদাহরণ।
প্রথম আলো যে সফল তার প্রমাণ আমাদের প্রজন্মটা। আমাদের বলা হলো কাকে কান নিয়েছে। আমরা বলি কাকের ফাঁসি চাই। তারপর আমাদের বিরানি খেতে দেওয়া হয় এবং কাকের ফাঁসি চাওয়ার আন্দলোন করতে রাস্তা ছেড়ে দেওয়া হয়।
আমরা আন্দোলন করে কাকের ফাঁসি নিয়ে ঘরে ফিরি।
এই কাকের তালিকায় আব্দুল কাদের মোল্লা যেমন থাকেন, মাহমুদুর রহমান যেমন থাকেন, ডাঃ জাকির নায়েকের পীস টিভিও থাকে।
এই দেশে সোশাল এনজিনিয়ারিং টা প্রথম আলো করবে, সময় টিভি করবে, একাত্তর টিভি করবে। মানুষকে ঘুম থেকে জাগানোর মতো কাউকে সহ্য করা হবে না।
আপনি-আমি কী করতে পারি?
প্রথম আলো কিনবেন না। বাসায় কিনতে দেবেন না। বাবা-মাকে বোঝান। কাজ না হলে বলুন বাসায় হয় প্রথম আলো থাকবে নয়ত আপনি।
বই পড়ুন। ভালো বই। প্রচুর পড়ুন। আল্লাহর কুরআন পড়ুন, হাদীস পড়ুন। ভিন্ন মতের লেখকদের বই-ও পড়তে পারেন। কিছু লেখার জন্য অনেক পড়া লাগে। মতিউর রহমান, মাহফুজ আনামেরা অনেক পড়েছে, এখন লিখছে।
নিজেকে প্রস্তুত করুন। রাস্তা অন্ধকার কেন এই গোস্বা করে আর কতকাল? প্রথম আলো যে কালো ছড়িয়েছে তা শুধু অভিযোগে শেষ হবে না। আমরা যাকে আলো বলে বিশ্বাস করি সেটা ছড়াতে হবে আমাদের-ই।
ইসলাম নিয়ে পড়ুন। ইসলাম নিয়ে মনগড়া কথা বলবেন না। নিজের মতো ব্যাখ্যা বানাবেন না। শিখুন-পড়ুন-প্রস্তুতি নিন। প্রস্তুতি ছাড়া মাঠে নেমে নিজে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন, অন্যদের ক্ষতি করবেন।
সবচেয়ে বড় জিনিস–আল্লাহর কাছে সাহায্য চান। সক্ষমতা চান। মেধা চান। সহ্যশক্তি চান। সারা পৃথিবীর সব শয়তানের সব কূটচাল মোকাবেলায় আল্লাহ-ই যথেষ্ট।
– শরীফ আবু হায়াত অপু