কুরআনের কথা

পড়ো তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন —আল-আলাক্ব (পর্ব-১)

পড়ো তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। যিনি মানুষকে এক ঝুলন্ত গঠন থেকে সৃষ্টি করেছেন। পড়ো! তোমার প্রতিপালক বড়ই মহানুভব। তিনি কলমের মাধ্যমে শিখিয়েছেন। তিনি মানবজাতিকে শিখিয়েছেন, যা তারা জানত না।
অথচ মানুষ এমনভাবে প্রকাশ্যে অবাধ্যতা করে, যেন সে নিজেই স্বয়ংসম্পূর্ণ। যেখানে কিনা সে তোমার প্রভুর কাছে একদিন ফিরে যাবেই।
তুমি কি তাকে দেখেছ, যে আমার বান্দাকে নামাজ পড়তে মানা করে? সে কি নিজে সঠিক পথে আছে? সে কি আল্লাহর প্রতি সাবধান হতে বলে? সে কি নিজে অস্বীকার করে না? মুখ ফিরিয়ে নেয় না? সে কি জানে না যে, আল্লাহ সব দেখেন?
খবরদার! সে যদি এসব বন্ধ না করে, তাহলে আমরা তার মাথার সামনের চুলের ঝুঁটি ধরে তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাবো। মিথ্যাবাদী, পাপী মাথার সামনের ঝুঁটি। ডাকুক সে তার সাঙ্গপাঙ্গদের। আমি জাহান্নামের পাহারাদারদের ডাকবো।
না! ওর কথামত চলবে না। আমাকে সিজদা করো। আমার আরও কাছে এসো। —আল-আলাক্ব

পড়ো

কুর‘আনের প্রথম যেই শব্দটি মানবজাতির কাছে পাঠানো হয়েছে, তা হলো ‘পড়ো’। সৃষ্টিকর্তা মানবজাতিকে শেষবারের মতো তাঁর বাণী পাঠানোর সময় কেন ‘পড়ো’ শব্দটি দিয়ে শুরু করলেন, তা আমাদের বোঝা দরকার। নিশ্চয়ই এর মধ্যে এক বিরাট শিক্ষার বিষয় রয়েছে।

আল্লাহ تعالى শুরু করতে পারতেন তাঁর تعالى পরিচয় দিয়ে, যেমন “তিনি আল্লাহ, এক অদ্বিতীয়”। অথবা ‘নামাজ পড়ো’, ‘সিজদা করো’ এধরনের ধর্মীয় নির্দেশ দিয়ে। কিন্তু তা না করে তিনি تعالى শুরু করেছেন ‘পড়ো’ দিয়ে।  আজকে মুসলিম জাতির দুরবস্থার দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, একটি মূল কারণ হচ্ছে না পড়া। আমরা বেশিরভাগই ইসলাম শিখি শুনে। পড়ে নয়। লোকমুখে প্রচলিত নানা বিশ্বাস, ধারনা আজকে আমাদের কাছে ইসলাম হয়ে গেছে। “অমুকে বলেছে তমুক সুরা লিখে ঝুলিয়ে রাখলে নাকি দুর্ঘটনা হয় না। শুনেছি অমুক সময়ে তমুক নামাজ পড়লে নাকি ব্যবসা ভালো যায়, স্বাস্থ্য ভালো হয়। শুনেছি তমুক মাজারের মাটিতে নাকি বরকত আছে। ওখানে গিয়ে দুআ করলে দুআ কবুল হয়। আমার বাপ-দাদাকে দেখেছি অমুক করতে, নিশ্চয়ই সেটা সঠিক। তারা কি সারাজীবন ভুল করেছেন নাকি?” —এই হচ্ছে আজকে মুসলিম জাতির একটা বিরাট অংশের মানসিকতা। প্রচলিত ধ্যান-ধারনা বিশ্বাসকে পড়ে যাচাই করে দেখার মানসিকতা ও প্রয়োজনীয়তার বড়ই অভাব।

একজন মুসলিমের প্রথম কাজ হচ্ছে কুর‘আন পড়া। যেই বইয়ে আল্লাহর تعالى নিজের কথা লেখা আছে, যেই বই পড়তে তিনি تعالى নিজে বার বার বলেছেন, সেই বই না পড়ে কীভাবে আমরা তাকে تعالى বোঝার, তাঁর تعالى কাছে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারি? আল্লাহ تعالى মানুষকে কুর‘আন পাঠিয়েছেন পড়ার জন্য, আলমারির উপরে তুলে রাখার জন্য নয়। অনেকে মনে করেন, কেউ কুর‘আন নিজে থেকে পড়লে সে ভুল বুঝবে। “কুর‘আন নিজে না পড়ে বরং অমুক ইমাম, ওস্তাদ যা বলেন, তাই শোনো।” —এই ধারনার ফলাফল হয়েছে ভয়াবহ। গত হাজার বছরে বেশ কয়েকজন স্বার্থান্বেষী ইমাম, ওস্তাদ, শায়খ নিজেদের ব্যক্তিগত এবং দলীয় উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করার জন্য ইসলামের বিকৃত বাণী প্রচার করে বহু মুসলিমকে বিভ্রান্ত করে গেছে। মুসলিমরা আল্লাহর تعالى বাণী নিজেরা না পড়ে, এই সব নেতাদের কথাকে চ্যালেঞ্জ না করে, অন্ধভাবে মেনে নিয়ে, ছোট-বড় শিরকের মতো গুনাহ থেকে শুরু করে অন্য মুসলিমদের হত্যা করার মতো জঘন্য কাজও করে গেছে এবং এখনও করে যাচ্ছে। এই ভয়ংকর সমস্যার মূল কারণ হচ্ছে মুসলিমরা নিজেরা কুর‘আন পড়ে ইসলাম শেখে না, তারা মানুষের মুখের কথা শুনে শেখে, তারপর যা ভালো লাগে তাই করে।

শুধু মুসলিমরাই নয়, ইহুদি, খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীরাও নিজেরা তাওরাত, ইঞ্জিল না পড়ে বরং তাদের ধর্মীয় পুরোহিতরা যা বলত তাই মেনে নিত। এই সুযোগে সেই ধর্মের বাহকেরা নিজেদের ইচ্ছেমত তাদের ধর্মকে বিকৃত করে গেছে। তারা এমন সব শিক্ষা দিয়ে গেছে, যা তাদের ধর্ম গ্রন্থগুলোতেই লেখা নেই। তারা এই কাজ করতে পেরেছে, কারণ আমজনতা ধর্মীয় গ্রন্থগুলো নিজেরা পড়ত না, বরং তাদের পড়াকে ভয় দেখিয়ে নিরুৎসাহিত করা হতো। সপ্তাহে একদিন গির্জায়, সিনাগগে গিয়ে যা শুনে আসতো, তাই বিশ্বাস করতো। আর এভাবেই তারা ইতিহাসের বৃহত্তম মগজ ধোলাইয়ের শিকার হয়েছে।

অন্ধকারে ডুবে যেতে থাকা একটি জাতির ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য তার মধ্যে প্রথম যে পরিবর্তন আনা দরকার, তা হচ্ছে ‘পড়া’। সেই জাতির মানুষগুলোর মধ্যে যদি পড়ার অভ্যাস প্রচলন করা যায়, তাদেরকে যদি ইসলামের জ্ঞান এবং বিজ্ঞানের শিক্ষায় শিক্ষিত করা যায়, তাহলে সেই জাতি উন্নতি করতে বাধ্য। আমরা যদি আজকে পিছিয়ে থাকা মুসলিম জাতিগুলো দিকে তাকাই, একটি ব্যাপার আমরা লক্ষ্য করবো: সেই জাতির মুসলিমরা পড়ে না, বরং তারা মানুষের কথা শোনে, তারপর যা করতে তাদের ভালো লাগে, সেটাই করে।

পড়ো তোমার প্রভুর নামে

কু’রআন কোনো মেটাফিজিক্স বা ফিলসফির উপর বই নয় যে, এখানে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা মানুষের অনুমান এবং যুক্তির উপর নির্ভর করে তত্ত্বর পর তত্ত্বর লেখা আছে। যার ভূমিকাতে লেখক আগেভাগেই বলে দেন, “অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য দুঃখিত। সহৃদয় পাঠক ভুলগুলো জানালে বাধিত হবো।” কুর‘আন হচ্ছে একমাত্র বই, যাতে দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, “এটা এমন এক বই, যাতে কোনো ভুল-ভ্রান্তি নেই।” এটি একমাত্র বই যার লেখক পৃথিবীর কেউ নন। তিনি সকল জ্ঞানের অধিকারী, সর্বোচ্চ ক্ষমতাবান সত্তা। তাঁর কথা কোনো তত্ত্ব নয়, কোনো অনুমান নয়। তাঁর কথা হচ্ছে অকাট্য সত্য। পৃথিবীতে আর কোনো বই নেই যা দাবি করতে পারে যে, তা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুধুই সৃষ্টিকর্তার বাণী। কুর‘আন একমাত্র এই সম্মানের দাবিদার। বাইবেল, তাওরাত, বেদ কোনোটাই দাবি করে না যে, সেটি আগাগোড়া পুরোটাই সৃষ্টিকর্তার বাণী। বরং সেগুলোর মধ্যে যে মানুষের কথা রয়েছে, সেটা তার অনুসারীরাই স্বীকার করে।

কুর‘আন পড়ার সময় মনে রাখতে হবে কার কথা পড়ছি। কোনো পিএইচডি করা লেখকের কথা পড়ছি না যে, তার কথা পছন্দ হলে মানবো, না হলে মানবো না। তার কোনো কথা যুক্তিযুক্ত মনে না হলে তাকে চ্যালেঞ্জ করবো। পড়ার সময় ভাববো যে, হতে পারে লেখক আমার অবস্থা বোঝেন না। বুঝলে এমন কথা বলতেন না। —কুর‘আন পড়ার সময় মনে রাখতে হবে যে, এই বইয়ে যে বাণী লেখা আছে, সেগুলো এমন একজনের কাছ থেকে এসেছে, যিনি সব জানেন। তাঁর تعالى বাণী নিয়ে কোনো ধরণের সন্দেহ, সংশয় থাকার প্রশ্নই ওঠে না। আমি পড়বো, আর মানবো। কোনো যুক্তি-তর্কে যাবো না। এরকম না হয়ে ওরকম কি হতে পারত না — এধরনের চিন্তা প্রশ্রয় দেবো না। মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তার বাণীকে প্রশ্ন করার সাহস পাই কীভাবে আমি? একটা মাছি বানানোর ক্ষমতাও আমার নেই, এতই দুর্বল আমি। আর আমি কিনা সৃষ্টিকর্তার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করি?

‘ইক্বরা’ বা পড়ো শব্দটির দুটো অর্থ হয়: নিজে পড়ো এবং অন্যকে পড়ে শোনাও। যেমন, কুর‘আনের অন্য জায়গায় আল্লাহ تعالى একই শব্দ ব্যবহার করে বলেন[৭]

যখন কুর‘আন পড়ে শোনানো হয়, তখন চুপ করে মনোযোগ দিয়ে শোনো, যেন তোমরা রহমত পেতে পারো। — আল-‘আরাফ ২০৪।

যখন তুমি কুর‘আন পড়ে শোনাও, তখন তোমার এবং আখিরাতে অবিশ্বাসীদের মধ্যে এক অদৃশ্য দেওয়াল তুলে দেওয়া হয়। —আল-ইসরা ৪৫।

সুতরাং আল্লাহ تعالى যখন রাসুলকে عليه السلام আদেশ করেছিলেন ‘পড়ো তোমার প্রভুর নামে’ —তিনি تعالى তাকে বলেছিলেন যে, মানুষের কাছে বিশ্বজগতের প্রতিপালকের বাণী পৌঁছে দিতে। এটা কোনো অনুরোধ নয়, বরং তার প্রভুর تعالى নির্দেশ, যা তাকে মানতেই হবে। একইসাথে তিনি যেন মানুষের কাছে পরিষ্কার করে দেন যে, যা প্রচার করা হচ্ছে তা তার নিজের বা কোনো মনিষীর বাণী নয়, বরং সরাসরি সৃষ্টিকর্তার বাণী। মানুষ যেন যথাযথ সম্মানের সাথে এই বাণীকে গ্রহণ করে। সর্বশক্তিমানকে অবমাননা করার ধৃষ্টতা যেন দেখাতে না যায়।[৭]

কুর‘আনের এই আয়াতে আদেশ এসেছে: আমরা যেন নিজেরা কুর‘আন পড়ি এবং অন্যদেরকেও পড়ে শোনাই। এই এক আয়াতে নিজের আত্মশুদ্ধি এবং দাওয়াহ, দুটো কাজেরই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

‘পড়ো তোমার প্রভুর নামে’ — আমাদেরকে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে পড়তে শুরু করার আদেশ করে।[২০] এটার একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, আমরা আল্লাহর تعالى নাম নিয়ে যা পড়তে পারি, তা আমাদের জন্য নিঃসন্দেহে কল্যাণকর। আর যা আমরা আল্লাহর تعالى নাম নিয়ে পড়ি না, তা আমাদের জন্য কল্যাণকর নয়। কেউ বিসমিল্লাহ বলে রগরগে উপন্যাস, প্রেমের কবিতা, ফেইসবুক, টিভি, ভিডিও গেম খেলতে যাবে না। মোবাইলে, কম্পিউটারে বসে কোনো অশ্লীল কিছু দেখার আগে বিসমিল্লাহ বলবে না। বিসমিল্লাহ বলে এমন বিজ্ঞান নিয়ে পড়বে না, যেখানে শেখানো হয় কীভাবে শক্তিশালী মারণাস্ত্র বানিয়ে মানুষকে ধ্বংস করতে হয়, নকল ওষুধ বানিয়ে মানুষের সর্বনাশ করতে হয়, খাবারে ভেজাল মিশিয়ে ব্যবসায় লাভ করা যায়। মানুষ যদি কখনও কিছু পড়তে যাওয়ার আগে বিসমিল্লাহ বলতে ইতস্ত করে, তার বিবেকে বাঁধে, তাহলে সে যা পড়ছে তা তার জন্য কল্যাণকর হতে পারে না। বিসমিল্লাহ হচ্ছে মানুষের কোনো কাজ কল্যাণকর, নাকি ক্ষতিকর, তা যাচাই করার সহজ লিটমাস টেস্ট।

যিনি সৃষ্টি করেছেন

কেউ কি কিছু সৃষ্টি করতে পারে? বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন মৌলিক পদার্থ তৈরি করে বলেন, “আমরা অমুক ‘সৃষ্টি’ করেছি।” শিল্পীরা নতুন কোনো শিল্প বানিয়ে বলেন, “আমার নতুন সৃষ্টি”। কিন্তু আসলে আমরা কেউ সৃষ্টি করতে পারি না। মহাবিশ্বে ইতিমধ্যেই যা আছে, তার একের সাথে অন্যকে মিশিয়ে নতুন কিছু একটা বানাই মাত্র। শুন্য থেকে সৃষ্টি করার ক্ষমতা আমাদের কারও নেই। আছে একমাত্র আল্লাহর تعالى

আল্লাহ تعالى কী সৃষ্টি করেছেন, তা যদি আমরা গভীরভাবে চিন্তা করি, তাহলে আমাদের চিন্তাভাবনার দুনিয়া বদলে যেতে বাধ্য। যারা পৃথিবী ঘুরে দেখেছেন, তারা উপলব্ধি করেছেন এই পৃথিবীটা আসলে কত বড়। এই পৃথিবীর আকৃতির তুলনায় আমরা হচ্ছি অনেকটা একটা বিরাট ফুটবল মাঠে পড়ে থাকা এক কণা ধুলোর সমান। আর এই পৃথিবীটা আমাদের সৌরজগতের তুলনায় এতই ক্ষুদ্র যে, সৌরজগত যদি একটা বিরাট ফুটবল মাঠ হয়, তাহলে পৃথিবীটা হবে একটা ছোট মার্বেলের সমান। আর আমাদের সৌরজগত যেই ছায়াপথে আছে, সেটা এত প্রকাণ্ড আকৃতির যে, সেটাকে একটা ফুটবল মাঠ কল্পনা করলে আমাদের সৌরজগত তার তুলনায় হয়ে যাবে একটা ধূলিকণার সমান। এরকম হাজার কোটি ধূলিকণার মতো সৌরজগত আমাদের ছায়াপথে ঘুরছে।

এখন পর্যন্ত আমরা মহাবিশ্বের যতখানি দেখতে পেরেছি, তা এত বিশাল আকৃতির যে, মহাবিশ্ব যদি একটা ফুটবল মাঠ হয়, তাহলে আমাদের ছায়াপথ হবে একটা ধূলিকণা। এরকম কোটি কোটি ধূলিকণা তুল্য ছায়াপথ মহাবিশ্বে রয়েছে।  মহাবিশ্বের সব কিছুই মানুষের কল্পনার সীমার বাইরে প্রকাণ্ড সব আকৃতি। পৃথিবী ছেড়ে মহাশূন্যে বের হলেই আমরা এমন বিশাল সব আকৃতি এবং অনন্ত শূন্যতার মধ্যে গিয়ে পড়ি যে, সব কিছুই তখন মানুষের চিন্তার সীমার বাইরে চলে যায়।

আল্লাহর تعالى সৃষ্টি উপরের দিকে যেমন বিশাল, তেমনই ভেতরের দিকেও বিশাল। আমাদের দেহকে যদি আমরা মহাবিশ্বের মতো প্রকাণ্ড একটা কিছু চিন্তা করি, তাহলে আমাদের দেহে কোটি কোটি কোষ রয়েছে, যেই কোষগুলো একেকটা ছায়াপথের মতই প্রকাণ্ড। এই প্রতিটি কোষের মধ্যে কোটি কোটি অণু ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই প্রতিটি অণু সৌরজগতের মতোই বিশাল। এই প্রতিটি অণুকে একটা ফুটবল মাঠ কল্পনা করলে এর মধ্যে ধূলিকণার সমান ক্ষুদ্র পরমাণু রয়েছে। এই পরমাণু অনেকটা পৃথিবীর মতোই বিরাট আকৃতির, কারণ এই পরমাণুর ভেতরে রয়েছে অত্যন্ত ক্ষুদ্র মৌলিক কণিকা।

একদিকে আমাদের উপরে যেমন বিশাল মহাকাশে কোটি কোটি তারা, কোটি কোটি কোটি গ্রহ নিয়ে এক প্রকাণ্ড জগত, অন্যদিকে আমাদের প্রত্যেকের ভেতরেরও কোটি কোটি কোষ, প্রতিটি কোষের ভেতরে কোটি কোটি অণু, পরমাণু নিয়ে এক বিশাল জগত। —“পড়ো তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেন।” আমরা এমন এক প্রভুর নামে পড়ি, যিনি একদিকে অনন্ত নক্ষত্র বীথি সৃষ্টি করেছেন এবং একইসাথে আমাদের প্রত্যেকের ভেতরে এক অনন্ত জগত সৃষ্টি করেছেন। এই সব কিছু তিনি تعالى নিজে ডিজাইন করেছেন। প্রতিমুহূর্তে তিনি تعالى নিজে সবকিছুর পরিচালনা করেন।

আর কোনো ধর্মের অনুসারীরা এমন একজন মহান সৃষ্টিকর্তার উপাসনা করে না। অন্যেরা সবাই উপাসনা করে এমন সব কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তার এবং সৃষ্টিকর্তাদের, যাদেরকে তারা সীমিত ক্ষমতা দেয়। যারা তাদের দায়িত্ব অধীনস্থদের উপর দিয়ে দেয়। যাদেরকে সরাসরি ডাকা যায় না, বরং সেই অধীনস্থদের মাধ্যমে ডাকতে হয়। একমাত্র ইসলাম আমাদেরকে সর্বজ্ঞানী, সর্বশক্তিমান একমাত্র সৃষ্টিকর্তার সাথে সরাসরি সম্পর্কের সম্মান দিয়েছে।

[১] বাইয়িনাহ এর কু’রআনের তাফসীর। [২] ম্যাসেজ অফ দা কু’রআন — মুহাম্মাদ আসাদ। [৩] তাফহিমুল কু’রআন — মাওলানা মাওদুদি। [৪] মা’রিফুল কু’রআন — মুফতি শাফি উসমানী। [৫] মুহাম্মাদ মোহার আলি — A Word for Word Meaning of The Quran [৬] সৈয়দ কুতব — In the Shade of the Quran [৭] তাদাব্বুরে কু’রআন – আমিন আহসান ইসলাহি। [৮] তাফসিরে তাওযীহুল কু’রআন — মুফতি তাক্বি উসমানী। [৯] বায়ান আল কু’রআন — ড: ইসরার আহমেদ। [১০] তাফসীর উল কু’রআন — মাওলানা আব্দুল মাজিদ দারিয়াবাদি [১১] কু’রআন তাফসীর — আব্দুর রাহিম আস-সারানবি [১২] আত-তাবারি-এর তাফসীরের অনুবাদ। [১৩] তাফসির ইবন আব্বাস। [১৪] তাফসির আল কুরতুবি। [১৫] তাফসির আল জালালাইন। [১৬] লুঘাতুল কুরআন — গুলাম আহমেদ পারভেজ। [১৭] তাফসীর আহসানুল বায়ান — ইসলামিক সেন্টার, আল-মাজমাআহ, সউদি আরব [১৮] কু’রআনুল কারীম – বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসীর — বাদশাহ ফাহাদ কু’রআন মুদ্রণ কমপ্লেক্স। [১৯] তাফসির আল-কাবির। [২০] তাফসির আল-কাশ্‌শাফ।

ইসলামিক ইমেইল নিউজলেটার
নতুন পোস্ট প্রকাশিত হলে সরাসরি আপনার ই-মেইল ইনবক্সে পেতে সাবস্ক্রাইব করুন।
icon

মন্তব্য করুন

Back to top button