সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ

“আমার মা” লেখায় প্রথম-আলো’র ইসলাম বিদ্বেষী চক্রান্ত!

প্রথম-আলো’র ভয়ংকর ইসলাম বিদ্বেষী চক্রান্ত দেখে হতবাক হয়ে যাই বারবার। সুক্ষ্মভাবে তারা কিভাবে ইসলামকে সরাবার ব্যাবস্থা করছে তা আমাদের জানা উচিৎ।

মা দিবস’ উপলক্ষে তারা “আমার মা” শিরোনামে একটি লেখা ছেপেছে। লেখাটি মূলত লিখেছেন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালাম। তার নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত। চমৎকার একটি স্মৃতিকথা। একজন সফল, শিক্ষিত এবং অনুকরণীয় মানুষের শৈশবের কথা। সেই শৈশবের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা মহিয়সী একজন মায়ের কথা। দারিদ্রের সাথে সংগ্রাম করে পড়ালেখার জন্য কষ্টের কথা, অনেক টানাপোড়নের মাঝেও পরিবারের ছোট ছোট সুখ দুঃখের কথা। সবকিছুর পেছনে কিভাবে একজন মা তার মুখের হাসিটুকু ধরে রেখে সবচেয়ে বেশি কষ্ট করে যান, তার কথা।

খুব ভালো একটি লেখা। কিন্তু ঐ যে কথায় বলে না, শয়তান যখন কোন ভালো কাজ করে, তখন তা খারাপের জন্য করে। ‘অঞ্জলী সরকার’ নামে একজন এটি অনুবাদ করেছেন। তবে প্রকাশের পর এর দায় নিশ্চয় কেবলমাত্র অনুবাদকের একার না। অনেক পর্যায়ের সম্পাদকেরা দেখার পরই তা ছাপার অক্ষরে প্রকাশ পায়। তারা লিখে দিয়েছেন ‘ইংরেজি থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ’। এই ‘সংক্ষেপিত’ শব্দ দিয়ে বেশ বড়সড় একটি দায় তারা নিজেদের কাঁধ থেকে নামানোর চেষ্টা করেছেন।

প্রথম আলো চক্রের দুর্ভাগ্য, ইন্টারনেটের বদৌলতে এপিজে আবদুল কালামের মূল লেখাটি আপনার আমার হাতের কাছেই। প্রথম প্যারাগ্রাফটি তারা প্রায় পুরোপুরি অনুবাদ করেছে। তবে সতর্কতার সাথে একটি ইংরেজি বাক্য বাদ দিয়ে দিয়েছে, যার অনুবাদ আমিই করছি। আবদুল কালামের কথাগুলো ছিলো এমন-

“স্যারের বাসায় পড়ে বাড়ী ফিরতে ফিরতে সাড়ে পাঁচটা বেজে যেতো। তখন দেখতাম বাবা আমাকে ফযরের নামাযে নিয়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। নামাযের পর আরবী স্কুলে কোরআন শরীফ পড়তে যেতাম। এরপর তিন কিলোমিটার দুরের রেলস্টেশনে যেতাম খবরের কাগজ আনার জন্য।”

এখানে প্রথম আলো লিখেছে-
“পড়া শেষে সাড়ে পাঁচটার দিকে বাড়ি ফিরতাম। তারপর তিন কিলোমিটার দূরের রেলস্টেশনে যেতাম খবরের কাগজ আনতে।”

দুই বাক্যের মাঝখানে নামায এবং কোরআন শরীফ পড়তে যাওয়ার স্মৃতিগুলো হাওয়ায় উড়ে গেছে। অথচ এমনকি ‘নামায’ শব্দটি আবদুল কালাম তার লেখায় সরাসরি ব্যাবহার করেছে। প্রার্থনা কিংবা ‘প্রে’ করার কথা বলেননি। তবে তা প্রথম আলো আলগোছে সরিয়ে নিয়েছে।
 
একটি লেখার মূল সারাংশ থাকে তার উপসংহারে। আবদুল কালামের লেখার শেষ দুটি বাক্য হলো-

“আমার মা প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়তেন। ঐসময় তাকে অত্যন্ত পবিত্র দেখাতো। যখনই আমি তাকে নামায পড়তে দেখতাম, আমি অনুপ্রাণিত হতাম, আলোড়িত হতাম।”

এখানে এসে তারা এপিজে আবদুল কালামের লেখা এই উপসংহার বেমালুম গায়েব করে দিয়েছে।

এই হলো তাদের ‘সংক্ষেপিত’ অনুবাদের নমুনা। এই নামাযের বিষয়গুলো ছাড়া অন্যান্য সবকিছুই মোটামুটিভাবে প্রথম আলোর ‘সংক্ষেপিত’ অনুবাদে এসেছে। ভারতের মতো হিন্দু রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট তাঁর লেখার মাঝে এবং শেষে গুরুত্ব দিয়ে তার মায়ের নামায পড়ার কথা বলেছেন। পুরো লেখাটি পড়লে পরিস্কার দেখা যায় তিনি তার মা’কে একজন নিবেদিতপ্রাণ মুসলিম নারী হিসেবে দেখেছেন। সেখানে বাংলাদেশের নামধারী মুসলিমরা মূল লেখকের চেয়ে অনেক বেশি প্রগতিশীল হয়ে উঠছে আজকাল।

চিন্তাভাবনা করে মনে হলো, ঠিকই আছে। মাহফুজ আনাম-মতিউর রহমান এর লোকজন তো এটাই চায়। এরা চায় আমাদের জীবনযাপন থেকে ইসলামের বিষয়গুলো ‘সংক্ষেপিত’ হয়ে যাক। এমনকি এ উদ্দেশ্য পূরণের জন্য নিজেদের বুদ্ধিবৃত্তিক সততাকে বলি দেয়াও কোন ধর্তব্য বিষয় না।

– ইলোরা জামান

—————-
মূল ইংরেজি লেখা:
http:/www.abdulkalam.com/kalam/jsp/display_content.jsp?menuid=22&menuname=Dr.Kalam%F6s%20Page&linkid=130&linkname=Profile&content=896&starts=0

মন্তব্য করুন

Back to top button