অর্থনীতি/ব্যবসা-বাণিজ্য

ইসলামী অর্থব্যবস্থা বাস্তবায়নে আমাদের করনীয়

সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া অর্থনৈতিক মন্দা আরও একবার পুঁজিবাদী অর্থনীতির অন্তর্নিহিত গলদগুলি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। পুঁজিবাদী বিশ্বের মোড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার হাযার হাযার কোটি ডলারের সরকারী সাহায্য দিয়ে কোন রকমে সংকট উত্তরণে চেষ্টা করেছে। ইউরোপীয় দেশগুলো তাদের পদাংক অনুসরন করতে বাধ্য হয়েছে নিজের গরজেই। যতদিন না আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নে আমরা সচেষ্ট হব ততদিন বারবার এই দুর্দিন মোকাবেলা করতে হবে।

পুঁজিবাদী অর্থনীতির অভিশাপ চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেও আমাদের হুঁশ হয় না। কারণ আমরা গড্ডালিকা প্রবাহে ভেসে চলেছি। ব্যাপক হারে শ্রমিক ছাঁটাই, বহু ব্যাংকের লালবাতি জ্বালানো, ঋনদানকারী প্রতিষ্ঠানের দেউলিয়া ঘোষণা, উৎপাদন হ্রাস, বিত্তশালীদের বিত্তের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি অথচ মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের জনগণের জীবন যাপনে দুর্বিষহ নাভিশ্বাস সবই পুঁজিবাদী অর্থনীতির প্রত্যক্ষ কুফল। ত্বরিত মুনাফা, সামাজিক প্রয়োজন উপেক্ষা করে মুষ্টিমেয় লোকের লোভ-লালসা চরিতার্থ করা, সবার উপরে ত্রেডিট কার্ড কালচার (Credit Card Culture) বা আয়হীন ভোগের অপসংস্কৃতি পুঁজিবাদেরই অন্তর্নিহিত দুর্বলতার প্রকাশ। এর ফলে ধস নেমেছে অর্থনীতিতে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কোটি কোটি বনী আদম, বিপর্যস্ত হয়েছে বহু দেশের জাতীয় অর্থনীতি দেউলিয়া হয়েছে শত শত শিল্প-কারখানা। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে না পারলে গোটা বিশ্বমানবতাই নতুন বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে। এজন্য আজ আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে  এবং আশ্রয় নিতে হবে মহান রাব্বুল আলামীন প্রদত্ত ইসলামী জীবনাদর্শের নিকটে। একমাত্র এতেই অন্তর্নিহিত রয়েছে সার্বজনীন কল্যাণ ও মুক্তি।

ইসলামী অর্থব্যবস্থা বাস্তবায়ন যরূরী কেন?

এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ইসলামী জীবন ব্যবস্থাই হচ্ছে একটি পূর্ণাঙ্গ ও কল্যাণধর্মী জীবনাদর্শ। অর্থনীতি তারই একটি অংশ। পুঁজিবাদ ও সমাজতন্ত্রে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে বিচ্ছিন্ন একটি সত্তা হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। ফলে এই দুই মানব রচিত মতবাদ তাদেরই রচিত রাষ্ট্র, সমাজ ও অন্যান্য বিষয়ের সাথে সাংঘর্ষিক অবস্থায় পৌঁছেছে। পক্ষান্তরে ইসলামী অর্থনীতি ইসলামী জীবনাদর্শের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। জীবনের অন্যান্য দিকগুলির সাথে এর কোন সংঘর্ষ নেই; বরং রয়েছে একই লক্ষ্যে পৌঁছানোর মত অনুকূল কর্মকাণ্ড। ইসলামী অর্থব্যবস্থায় সার্বিক মানব কল্যাণ নিশ্চিত করে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান দূর করে ইহকালীন সাফল্যের সাথে পরকালীন মুক্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত করে।

ইসলামী অর্থনীতির যে লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মকৌশল সে সবই মানব কল্যাণ তথা শান্তি ও সমৃদ্ধির উদ্দেশ্যে সচেষ্ট। পুঁজিবাদের অর্থনৈতিক কর্মকৌশল মুষ্টিমেয় ধনীদের স্বার্থ রক্ষা করে, বৃহৎ জনগোষ্ঠির স্বার্থ সেখানে উপেক্ষিত। সেই স্বার্থ রক্ষার জন্য সরকারকেই শেষ অবধি তৎপর হ’তে হয়। সমাজতন্ত্র একদা যে পথে চলেছিল আজ  তা থেকে বহুদূর সরে এসেছে। অর্থনৈতিক কর্মকৌশল ও লক্ষ্যের দিক থেকে সমাজতন্ত্র লোকচক্ষুর প্রায় অগোচরে পুঁজিবাদের সাথে মিশে গেছে। বহুকাল আগে সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছিল যে, একদা সমাতন্ত্র তার অস্তিত্ব রক্ষায় ব্যর্থ হয়ে পুঁজিবাদের সাথেই মিশে যাবে। একে বলা হয় Convergence Theory। বাস্তবে শেষ অবধি হয়েছেও তাই। সাবেক সোভিয়েত রাশিয়া ও গণচীনের দিকে তাকালে দেখা যাবে তারা আজ পাশ্চাত্যের জন্য দুয়ার খুলে দিয়েছে। কোটিপতি হবার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। ইসলামের অবস্থান এরই বিপরীতে। সেখানে বৈধ পন্থায় ধনী হ’তে বাধা নেই, আবার মানুষের মৌলিক প্রয়োজন পূরণের জন্য বাধ্যবাধকতা ও সরকারের দায়বদ্ধতার অন্ত নেই। এজন্যই ইসলামী অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন যরূরী।

কিভাবে ইসলামী অর্থব্যব্স্থা বাস্তবায়ন সম্ভব?

ইসলামী অর্থনীতির দু’টি দিক রয়েছে। একটি আমর বিল মারূফ অপরটি নাহি আনিল মুনকার। দু’টি দিকই একসঙ্গে বাস্তবায়ন করতে হবে। আমর বিল মারূফ এর মধ্যে রয়েছে বৈধ উপায়ে উপার্জন ও বৈধ্য পথেই তা ব্যয়, যাকাত ব্যবস্থার বাস্তবায়ন, ইসলামী অর্থনীতির বাস্তবায়ন, ইসলামী বিনিয়োগ ব্যবস্থার প্রসার, ইসলামী অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠান স্থাপন, স্বনির্ভর বা স্বউদ্যেগ কর্মসংস্থান ইত্যাদি। নাহি আনিল মুনকার-এর মধ্যে রয়েছে সূদের উচ্ছেদ, সকল দূর্নীতির মূল উৎপাটন এবং অবৈধ উপায়ে আয় ও ব্যয় রহিতকরণ। এই দুই ধরনের পদক্ষেপ সুষম ও সমন্বিতভাবে গ্রহণ করতে পারলে ইসলামী অর্থব্যবস্থার সুফল প্রাপ্তি সম্ভব। এজন্য চাই দীর্ঘমেয়াদী কর্মপরিকল্পনা এবং একদল সৎ, যোগ্য ও নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। বস্ততঃপক্ষে সৎকর্মশীল যোগ্য মানুষ ছাড়া কোন আদর্শ বা কর্মপদ্ধতিই বাস্তাবায়িত হওয়া অসম্ভব। বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একথা সমানভাবে প্রযোজ্য।

দুঃখের বিষয়, বাংলাদেশে সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শের যেমন পরীক্ষা হয়েছে তেমনি পরীক্ষা চলেছে পুঁজিবাদী মতাদর্শের। দুর্ভাগ্যজনক হ’লেও সত্য, আমরা উন্নত বিশ্বের শোষণের শিকার, তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার গিনিপিগ। উন্নতির নামে যে মুলো আমাদের নাকের ডগায় ঝুলিয়ে রাখে, গাধার মত আমরা সেদিকে ছুটি। স্বকীয়তা হারিয়ে, নিজেদের সম্পদ ও সম্ভাবনার মূল্যায়ন না করেই আমরা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ  ও এডিবির পরামর্শ গিলে ফেলি। একবার এই ট্যাবলেট গিললে এথেকে আর ছাড়া পাবার কোন উপায় নেই। বিশ্বব্যাংকের পরামর্শ মেনে কেউ নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেনি। বরং এককালের সমৃদ্ধ ও স্বনির্ভর অর্থনীতির দেশগুলো ক্রমে ক্রমে দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। কৃষিপন্য রপ্তানিকারক দেশ সেই পণ্যের অমাদানীকারক হয়েছে, বাণিজ্যে গড়পড়তা উদ্বৃত্ত দেশ বাণিজ্যে ঘাটতি দেশে পরিণত হয়েছে। এ থেকে পরিত্রাণ পতে হ’লে আমাদের নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে হবে এবং সেক্ষেত্রে ইসলামী অর্থব্যবস্থার নীতিমালা ও কর্মকৌশলের  কোন বিকল্প নেই।

এই মুহূর্তে যা করণীয়:

দেশের জনগণকে পরমুখাপেক্ষিতা হ’তে বাঁচাতে হ’লে এবং ঋণের ফাঁদে পা রাখা হ’তে নিবৃত্ত হ’তে হ’লে স্বনির্ভরতার কোন বিকল্প নেই। রাসূলুল্লাহ্ (ছা:) ভিক্ষা করতে নিষেধ করে কুঠার দিয়ে কাঠ কেটে জীবন ধারণ করতে শিক্ষা দিয়েছিলেন। আজ আমরা সেই শিক্ষা বিস্মৃত হয়েছি। কুঠার কিনতে স্বল্প পুঁজির প্রয়োজন। সেই পুঁজিও আমরা সংগ্রহ করতে পারছি না। সেই সুযোগ নব্য কুসীদজীবি এনজিও মহাজনরা আমাদের দুয়ারে এসে দাঁড়িয়েছে। এদেরকে হটাতে হবে। এজন্য আমাদেরকে গড়ে তুলতে হবে ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদোক্তা শ্রেণী (Small and Medium Enterprise)। আমাদের স্বল্প আয় হ’তেই সঞ্চয় করার চেষ্টা করতে হবে। নিয়মিতভাবে সঞ্চয় করলে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ই প্রয়োজনীয় পুঁজির যোগান দিতে পারবে। সেই পুঁজিই ‘মুদারাবা’ পদ্ধতিতে কাজে লাগানো যায় এবং এভাবেই ক্ষুদ্র উদ্যেক্তারা স্বনির্ভর কর্মসূচীর বাস্তবায়ন করতে পারব। এই পথ ধরেই ক্রমে তারা হয়ে উঠতে পারবে মাঝারী উদ্যেক্তা শ্রেণী। এদের প্রয়োজন পূরণ করেই গড়ে উঠবে পরিবহন কর্মী, এসএমই কর্মী, সংশ্লিষ্ট নানা কাজের কর্মী। ধীরে ধীরে একটা কর্মপ্রবাহ শুরু হবে যা অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য খুবই যরূরী। পুঁজি যদি নিজেদেরই হয় এবং তার জন্য কাউকে সূদ না দিতে হয় তাহ’লে লাভের কোন অংশ কোথাও যাবে না। বর্তমানে সূদী এনজিওগুলো এই পথেই চুষে নিচ্ছে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের। ফলে তাদের স্বনির্ভরতা অর্জন শুধু কাগজে শ্লোগানই রয়ে যাচ্ছে, বাস্তবায়িত হচ্ছে না। ভয়ের কথা, নিয়মিত সূদ পরিশোধ করতে হয় বলেই এক এনজিও হ’তে ঋণ নিয়ে অন্য এনজিওর কিস্তির সূদ পরিশোধ করতে চেষ্টা করে ঋণ গ্রহীতারা। এর ফলে তার মোট ঋণের পরিমাণ ক্রমেই বৃদ্ধি পায়, নিজের পায়ে আর দাঁড়নো হয় না। পক্ষান্তরে লাভ-লোকসানের অংশীদারিত্ব (মুশারাকা) বা শ্রম ও পুঁজির সংমিশ্রণে মুনাফার আংশিদারিত্ব (মুদারাবা) পদ্ধতিতে উদ্যোক্তা নিজের পায়ে দাঁড়াবার বা স্বনির্ভর হবার চেষ্টাই শুধু দেখবে না, অচিরেই তা বাস্তবেও রূপ নেবে। এজন্যই আমরা ক্রেডিট বা ঋণের বিরুদ্ধে, ইনভেস্টমেন্ট বা বিনিয়োগের স্বপক্ষে। আজ  প্রয়োজন সূদনির্ভর এনজিওগুলোর বিলোপ এবং ইসলামী পদ্ধতিতে বিনিয়োগ, উৎপাদন ও কর্মসংস্থানমূলক সংস্থার প্রসার। গোটা দেশের সর্বত্র এই ধরনের প্রতিষ্ঠান যত গড়ে উঠেবে ততই মঙ্গল। তবে এজন্য চাই একদল যোগ্য নিবেদিত প্রাণ ও ইসলামীর আদর্শের অনুসারী যুবগোষ্ঠি।

এরই পাশাপাশি ইতিপূর্বে যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলোর প্রতিও নযর দিতে হবে। অর্থাৎ বৈধ উপায়ে উপার্জন বৈধ পথেই তা ব্যয়, যাকাত ব্যবস্থা বাস্তবায়ন, ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন ও প্রচুর সাংখ্যক ইসলামী অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠান স্থাপন সময়ের দাবী। এ জন্য চাই ব্যপক জনসমর্থন। এদেশের জনগণের সর্ববৃহৎ অংশ মুসলিম। তাদের ঈমান-আক্বীদা অবশ্যই শরী’আত সম্মত। কিন্তু বাস্তব প্রয়োগের ক্ষেত্রে নানা কারণেই তারা শরী’আতের পাবন্দী নয়। এর প্রধান কারণ, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এসব বিষয়ে জানা ও বাস্তবে তা অনুশীলনের সুযোগ নেই। এজন্যই সূদ হারাম জানার পরও সূদ গ্রহণ ও প্রদান হ’তে যেমন আমরা অনেকেই বিরত নেই, তেমনি ব্যবসায়িক লেনদেনে হালাল-হারাম বা শরী’আতের নিরিখে বৈধ-অবৈধের সীমা জানার পরও তা পালনে আমরা উদ্যোগী নই। রাষ্ট্র ব্যবস্থাও ইসলামী শরী’আত পালনে সহযোগী নয়। এজন্যাই যেমন সূদ উচ্ছেদ সম্ভব হচ্ছে না তেমনি ব্যবসায়িক অসাধুতা প্রবেশ করেছে সামাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। বাধ্যতামূলকভাবে রাষ্ট্র যাকাত আদায় করছে না, শ্রমিক আইন ইসলামী না হয়েও যেটুকু শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট তাও বাস্তবায়নে মালিকপক্ষকে বাধ্য করতে পারছে না সরকার। অর্থনৈতিক দুর্নীতির মূলোৎপাটন তো হয়নি বরং কালো টাকা, জুয়া ও মাদকদ্রব্যের ছোবলে দেশের অর্থনীতি ও যুবসমাজ বিপন্ন। এই অবস্থা হ’তে নিঃসন্দেহে সকলেই পরিত্রাণ চায়। একারণেই ইসলামী অর্থব্যবস্থা বাস্তবায়ন সময়ের দাবী। কিন্তু সব কাজ একযোগে করা সম্ভব নয়, বিশেষত রাষ্ট্রযন্ত্র যারা পরিচালনা করছেন ইসলামী জীবন বিধান বাস্তবায়ন তাদের ঘোষিত লক্ষ্য নয়। সেজন্যই আমাদেরই ধীরে ধীরে সুচিন্তিতভাবে কিছু মডেল পরিকল্পনা ও কর্মসূচী নিয়ে অগ্রসর হতে হবে। এসব কর্মসূচির সাফল্য জনগণকে অনপ্রাণিত ও উৎসাহিত করবে। আরও লোক তাতে অংশগ্রহন করবে। এভাবে জনতার সমর্থনপুষ্ট হয়ে ইসলামী অথনীতির কর্মকৌশল ও কর্মউদ্যোগ ছড়িয়ে পড়বে দেশব্যাপী। এ কর্মসূচীর জনগণের প্রাণের দাবী হয়ে দাঁড়াবে। এদেশের ইসলামী ব্যাংক সমূহ, অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠান ও বীমা ব্যবস্থার দিকে তাকালে এই সত্য খুব স্পষ্টভাবে ধরা পড়বে।

সাফল্যের কোন বিকল্প নেই। অভিজ্ঞতা অর্জনেরও কোন বিকল্প হ’তে পারে না। এজন্যই এ আলোচনায় ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তা শ্রেণী তৈরী, এদর জন্যই বিনিয়োগ ও মুদারাবা-মুশারাকা পদ্ধতিতে অর্থায়নের ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে। এই পথে সাফল্য অর্জনের পশাপাশি সূদ উচ্ছেদ হবে, ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়িত হবে, বৈধ পন্থায় আয় ও বৈধ পন্থায় তার ব্যয় নিশ্চিত হবে, স্বনির্ভরতা অর্জিত হবে। এক কথায় আমর বিল মারূফ ও নাহি আনিল মুনকারের দাবী বাস্তবায়িত হওয়ার পথ সুগম হবে। ক্রমে ইসলামী অর্থনীতি বাস্তবায়নের পথ প্রশস্ত হবে। আমাদের বাসনাও তাই। আমাদের রিযিক হালাল হোক,যে রিযিকের কারণে আল্লাহ্ রাব্বুল আমাদের দো’আ কবুল করবেন এবং ইহকালীন কল্যাণ লাভের সাথে সাথে পরকালীন কল্যাণ লাভও নিশ্চিত হবে।

ইসলামী অর্থনীতি বাস্তবায়নে এটিই একমাত্র কৌশল নয়। আমাদের আরও অনেক কিছু করনীয় রয়েছে, কিন্তু ধাপে ধাপে এগুনোই শ্রেয়। একসঙ্গে অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করলে কোনটিই সফল নাও হ’তে পারে। বিশেষত দেশের সরকারের যেখানে ইসলামী আদর্শ বাস্তবায়নের কোন কমিটমেন্ট নেই সেখানে পর্যায়ক্রমেই সুচিন্তিত পদক্ষেপ গ্রহণ বাঞ্ছনীয়। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে তাঁর দ্বীনের বাস্তবায়নের জন্য উপযুক্ত কৌশল ও পদক্ষেপ অবলম্বনের তাওফীক্ব দিন- আমীন!!

————–
রচনায় : শাহ মুহাম্মাদ হাবীবুর রহমান
প্রফেসর, অর্থনীতি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

মন্তব্য করুন

Back to top button