ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধের বিধান (৩)
পূর্বের অংশ পড়ুন: ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধের বিধান (2)
৫. ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি কবরের আযাবের সম্মুখীন হবে :
কেউ যদি ঋণগ্রস্ত অবস্থায় মারা যায় এবং মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে সেই ঋণ পরিশোধ না করা হয়, তাহ’লে সে কবরে শাস্তির সম্মুখীন হবে। জাবের ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে আমরা তার গোসল ও কাফন সম্পন্ন করলাম। অতঃপর রাসূল (ছাঃ) তার জানাযা পড়ার জন্য আসলেন। আমরা বললাম, আপনি তার জানাযা পড়বেন? রাসূল (ছাঃ) তার দিকে দু’পা আগালেন। তারপর বললেন, তার কি কোন ঋণ আছে? আমরা বললাম, দুই দীনার। তখন তিনি ফিরে গেলেন। তারপর আবু ক্বাতাদা (রাঃ) ঐ দু’দীনারের দায়িত্ব গ্রহণ করলেন এবং বললেন, আল্লাহ কি এর মাধ্যমে ঋণদাতার হক পূরণ করলেন এবং মাইয়েত কি এখন উক্ত ঋণের দায় থেকে মুক্ত হ’ল? উত্তরে রাসূল (ছাঃ) বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর তিনি তার জানাযার ছালাত আদায় করলেন। অতঃপর একদিন পর তিনি আবূ ক্বাতাদাহকে জিজ্ঞেস করলেন যে, দীনার দু’টি কি পরিশোধ করা হয়েছে? তিনি বললেন, তিনি তো গতকাল মারা গেছেন মাত্র। পরের দিন তিনি আবার তার নিকটে গেলে তিনি জানালেন যে, দীনার দু’টি পরিশোধ করা হয়েছে। একথা শুনে রাসূল (ছাঃ) বললেন, الآنَ بَرَدَتْ عَلَيْهِ جِلْدُهُ، ‘এখন তার চামড়া ঠান্ডা হ’ল’।[1] এতে বুঝা যায় যে, কেবল দায়িত্ব নিলেই মাইয়েতের আযাব দূর হবে না, যতক্ষণ না তার ঋণ পরিশোধ করা হয়।[2]
ঋণ সম্পর্কিত কতিপয় জ্ঞাতব্য বিষয়
ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির যাকাতের হুকুম :
ঋণ করা সম্পদ যেহেতু ব্যক্তির মূল সম্পদ নয়, সেহেতু ঋণ পরিশোধের আগে এই সম্পদের উপর যাকাত ফরয নয়। সুতরাং ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি যাকাত আদায়ের পূর্বে তার ঋণ পরিশোধ করবে এবং অবশিষ্ট সম্পদ নিছাব পরিমাণ হ’লে তার যাকাত আদায় করবে। ওছমান (রাঃ) বলেন, هَذَا شَهْرُ زَكَاتِكُمْ فَمَنْ كَانَ عَلَيْهِ دَيْنٌ فَلْيُؤَدِّ دَيْنَهُ حَتَّى تَحْصُلَ أَمْوَالُكُمْ فَتُؤَدُّوْنَ مِنْهُ الزَّكَاةَ، ‘এটি (রামাযান) যাকাতের মাস। অতএব যদি কারো উপর ঋণ থাকে তাহ’লে সে যেন প্রথমে ঋণ পরিশোধ করে। এরপর অবশিষ্ট সম্পদ নিছাব পরিমাণ হ’লে সে তার যাকাত আদায় করবে’।[3] আর যদি ঋণ পরিশোধ না করে তার নিকট গচ্ছিত রাখে, তাহ’লে যাকাতযোগ্য সব সম্পদের উপরেই যাকাত আদায় করা ফরয। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيْهمْ بِهَا، ‘তাদের সম্পদ হ’তে ছাদাক্বাহ্ (যাকাত) গ্রহণ করবে। যার দ্বারা তুমি তাদেরকে পবিত্র করবে এবং পরিশুদ্ধ করবে’ (তওবা ৯/১০৩)।
প্রদানকৃত ঋণের যাকাত :
কোন ব্যক্তি কাউকে ঋণ প্রদান করলে এবং তা এক চান্দ্র বছর অতিক্রম করলে উক্ত টাকার যাকাত আদায় করতে হবে কি-না? এ ব্যাপারে ওলামায়ে কেরামের মধ্যে মতভেদ পরিলক্ষিত হয়। তবে ছহীহ মত হ’ল, যদি প্রদানকৃত ঋণের টাকা সহজে পাওয়ার নিশ্চিত সম্ভাবনা থাকে, তাহ’লে তার যাকাত আদায় করতে হবে। আর যদি সহজে পাওয়ার নিশ্চিত সম্ভাবনা না থাকে, তবে তা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত যাকাত আদায় করতে হবে না। এমন সম্পদ অনেক বছর পরে হাতে আসলে পাওয়ার পরে মাত্র এক বছরের যাকাত আদায় করতে হবে।[4]
ঋণ রেখে মারা গেলে করণীয় :
কোন ব্যক্তি যদি ঋণ রেখে মারা যায়, তাহ’লে মৃতের সকল সম্পদ বিক্রি করে হ’লেও পরিবারকে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। কারণ ঋণ পরিশোধ ব্যতীত মৃত্যুবরণ করলে হাশরের মাঠে নিজ নেকী থেকে ঋণের দাবী পূরণ করতে হবে।[5] আল্লাহ তা‘আলা মীরাছের আলোচনা শেষে বলেন, مِنْ بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوْصِيْ بِهَا أَوْ دَيْنٍ، ‘মৃতের অছিয়ত পূরণ করার পর এবং তার ঋণ পরিশোধের পর (নিসা ৪/১১)। যদিও নিজ সম্পত্তি থেকে পিতা-মাতার ঋণ পরিশোধ করা সন্তানের জন্য বাধ্যতামূলক নয়।[6] তথাপি ঋণ পরিশোধ করা পিতা-মাতার খেদমতের অংশ ও অশেষ ছওয়াবের কাজ হওয়ায় সন্তান নিজ দায়িত্বে তা পরিশোধ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, نَفْسُ الْمُؤْمِنِ مُعَلَّقَةٌ بِدَيْنِهِ حَتَّى يُقْضَى عَنْهُ ‘মুমিনের আত্মা ঝুলন্ত অবস্থায় রাখা হয় তার ঋণের কারণে, যতক্ষণ না তার পক্ষ হ’তে ঋণ পরিশোধ করা হয়’।[7] আর যদি ঋণগ্রস্ত মাইয়েতের কিছুই না থাকে এবং তার স্ত্রী-সন্তানরাও যদি সক্ষম না হয়, সমাজ, সংগঠন বা সরকার সে দায়িত্ব বহন করবে’।[8] তাহ’লে এক্ষেত্রে সূদ না দিয়ে কেবল মূল অংশ দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে (বাক্বারাহ ২/২৭৮-২৭৯)। অতএব প্রত্যেকের উচিত যথাসম্ভব ঋণ গ্রহণ থেকে বেঁচে থাকা। যা পরিশোধ করতে না পারলে ইহকালে পরিবারের জন্য এবং পরকালে নিজের জন্য কঠিন বোঝা হয়ে দেখা দিবে।
ঋণগ্রস্ত অবস্থায় কুরবানীর বিধান :
কুরবানী সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। সামর্থ্য থাকা অবস্থায় কুরবানী পরিত্যাগ করা মাকরূহ। কুরবানী হ’ল ইসলামের একটি শি‘য়ার বা মহান নিদর্শন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,مَنْ كَانَ لَهُ سَعَةٌ، وَلَمْ يُضَحِّ، فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا ‘যে কুরবানী করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানী করল না, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে’।[9] অন্যত্র তিনি বলেছেন,إِذَا رَأَيْتُمْ هِلَالَ ذِي الْحِجَّةِ، وَأَرَادَ أَحَدُكُمْ أَنْ يُضَحِّيَ، فَلْيُمْسِكْ عَنْ شَعْرِهِ وَأَظْفَارِهِ ‘তোমাদের মাঝে যে কুরবানী করতে চায়, যিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখার পর সে যেন তার কোন চুল ও নখ না কাটে’।[10]
ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেন, এই হাদীছে প্রমাণ আছে যে, কুরবানী দেওয়া ওয়াজিব নয়। এই হাদীছে রাসূল (ছাঃ)-এর বাণী ‘যে কুরবানী করতে চায়’ দ্বারা সেটা প্রমাণিত হয়। যদি কুরবানী করা ওয়াজিব হ’ত তাহ’লে এভাবে বলা হ’ত ‘তাহ’লে সে যেন কুরবানী না দেয়া পর্যন্ত নিজের চুল প্রভৃতি স্পর্শ না করে’।[11] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁর উম্মতের মাঝে যারা কুরবানী করেনি তাদের পক্ষ থেকে কুরবানী করেছেন।[12] সুতরাং এটি ওয়াজিব নয় যে, যেকোন মূল্যে প্রত্যেককে কুরবানী করতেই হবে। লোকেরা যাতে এটাকে ওয়াজিব মনে না করে, সেজন্য সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হযরত আবুবকর ছিদ্দীক, ওমর ফারূক, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর ও আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) প্রমুখ ছাহাবীগণ কখনো কখনো কুরবানী করতেন না।[13]
সুতরাং বোঝা গেল, কুরবানী দেওয়া ওয়াজিব নয়; বরং সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। অপরদিকে ঋণ পরিশোধ করা ওয়াজিব। আর উছূলে ফিক্বহের মূলনীতি হ’ল সুন্নাতের উপর ওয়াজিব প্রাধান্য পাবে। অতএব ঋণ থাকলে আগে সেটা পরিশোধ করতে হবে। শায়খ উছায়মীন (রহঃ) বলেন,أما العاجز الذي ليس عنده إلا مؤنة أهله أو المدين، فإنه لا تلزمه الأضحية، بل إن كان عليه دين ينبغي له أن يبدأ بالدين قبل الأضحية ‘ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি অথবা পরিবারের ভরণ-পোষণের ব্যয়ভার বহনে অক্ষম ব্যক্তির উপর কুরবানী অবশ্যক নয়; বরং তার উপর যদি ঋণ থাকে, তাহ’লে কুরবানীর পূর্বে সেই ঋণ পরিশোধ করা যরূরী’।[14] তবে দাতার সম্মতিতে ঋণ দেরীতে পরিশোধ করে কুরবানী দেওয়ায় কোন বাধা নেই। ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ (রহঃ) বলেন,وَيُضَحِّي الْمَدِيْنُ إذَا لَمْ يُطَالَبْ بِالْوَفَاءِ وَيَتَدَيَّنُ وَيُضَحِّي إذَا كَانَ لَهُ وَفَاءٌ….إنْ كَانَ لَهُ وَفَاءٌ فَاسْتَدَانَ مَا يُضَحِّي بِهِ فَحَسَنٌ وَلَا يَجِبُ عَلَيْهِ أَنْ يَفْعَلَ ذَلِكَ ‘দাতা যদি পরিশোধের তাগাদা না দেয়, তাহ’লে ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিও কুরবানী দিতে পারে। আর সাময়িক অসচ্ছল ব্যক্তি যদি ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা রাখেন, তাহ’লে তিনিও ঋণ করে কুরবানী দিতে পারেন। তবে পরিশোধ করার সামর্থ্য থাকলেও ঋণ করে কুরবানী না করাই উত্তম। কেননা এটা অবশ্যক নয় যে, তাকে কুরবানী করতেই হবে’।[15]
ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির যাকাতুল ফিৎর :
স্বাধীন-ক্রীতদাস, ছোট-বড় সকল পুরুষ ও নারীর উপর মাথা পিছু এক ছা‘ সমপরিমাণ যাকাতুল ফিৎর আদায় করা ফরয।[16] এই যাকাত ফরয হওয়ার জন্য নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া শর্ত নয়। যেহেতু যাকাতুল ফিৎর ব্যক্তির উপর ফরয; ব্যক্তির সম্পদের উপরে নয়। কারণ সকল প্রকার যাকাতের মূল উৎস হ’ল সম্পদ। পক্ষান্তরে ছাদাক্বাতুল ফিৎরের মূল উৎস হ’ল ব্যক্তি। সেই জন্য ধনী-গরীব নির্বিশেষে সকলকে এই পরিমাণে যাকাতুল ফিৎর আদায় করতে হয়।
ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির হজ্জের বিধান :
ঋণ পরিশোধ করলে যদি হজ্জের সামর্থ্য না থাকে, তবে তার উপর হজ্জ ফরয নয়। এমতাবস্থায় তার ঋণ পরিশোধ করা ফরয। আর যদি ঋণ পরিশোধ করেও হজ্জ করার সামর্থ্য থাকে, তাহ’লে ঋণ শোধ না করে হজ্জ করলেও হজ্জ হয়ে যাবে। অবশ্য ঋণ পরিশোধ করে হজ্জে যাওয়াই উত্তম। কেননা তা পরিশোধ ব্যতীত মৃত্যুবরণ করলে হাশরের মাঠে নিজের নেকী দিয়ে ঋণের দাবী পূরণ করতে হবে।[17]
ঋণ থেকে বাঁচার উপায় :
ঋণের বোঝা মানুষের দুনিয়া ও আখেরাতের জীবনে অন্ধকার ডেকে আনে। সেকারণ সাধ্যানুযায়ী ঋণ মুক্ত থাকা উচিত। ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) বলেন,إِيَّاكُمْ وَالدَّيْنَ، فَإِنَّ أَوَّلَهُ هَمٌّ وَآخِرَهُ حَرْبٌ، ‘তোমরা ঋণ থেকে বেঁচে থাক, কেননা ঋণের শুরু দুশ্চিন্তা দিয়ে এবং শেষ হয় সংঘাতের মাধ্যমে’।[18] এক্ষণে ঋণ থেকে বাঁচার কতিপয় উপায় নিম্নে বর্ণনা করা হ’ল-
১. অল্পে তুষ্ট থাকা :
সুখী জীবন লাভের প্রধান উপায় দু’টি- তাক্বদীরের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস ও অল্পে তুষ্টি। অল্পে তুষ্ট ব্যক্তি কখনো হতাশ হয় না এবং অধিক পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা তাকে দুনিয়ার প্রতি আসক্ত করতে পারে না। তাই ঋণ থেকে বাঁচার অন্যতম উপায় হ’ল আল্লাহ প্রদত্ত নে‘মতে তুষ্ট থাকা। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, وَارْضَ بِمَا قَسَمَ اللهُ لَكَ تَكُنْ أَغْنَى النَّاسِ، ‘আল্লাহ তোমার তাক্বদীরে যতটুকু বণ্টন করেছেন, তার প্রতি তুষ্ট থাক, তাহ’লে মানুষের মাঝে সবচেয়ে বড় ধনী হ’তে পারবে’।[19] তিনি আরো বলেন,لَيْسَ الغِنَى عَنْ كَثْرَةِ العَرَضِ، وَلَكِنَّ الغِنَى غِنَى النَّفْسِ، ‘পার্থিব সম্পদের আধিক্য হ’লে ধনী হওয়া যায় না, বরং মনের ধনীই প্রকৃত ধনী’।[20] অন্যত্র তিনি বলেন, قَدْ أَفْلَحَ مَنْ أَسْلَمَ، وَرُزِقَ كَفَافًا، وَقَنَّعَهُ اللهُ بِمَا آتَاهُ ‘ঐ ব্যক্তি সফল হয়েছে, যে ইসলাম গ্রহণ করেছে, তাকে প্রয়োজন মাফিক রিযিক দেওয়া হয়েছে এবং আল্লাহ তাকে যা দিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট রেখেছেন’।[21] অল্পে তুষ্ট হৃদয় মানুষকে সবসময় ঋণমুক্ত জীবনের দিকে আহবান জানায়।
২. উঁচু শ্রেণীর লোকদের দিকে না তাকানো :
ঋণ থেকে বাঁচার আরেকটি উপায় হ’ল উঁচু শ্রেণীর লোকদের দিকে না তাকিয়ে সবসময় নীচু শ্রেণীর লোকদের দিকে তাকানো। কারণ আজকের সমাজে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষ উচ্চাভিলাষী লোকদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ঋণ করে থাকে। সেজন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,انْظُرُوْا إِلَى مَنْ هُوَ أَسْفَلَ مِنْكُمْ، وَلَا تَنْظُرُوْا إِلَى مَنْ هُوَ فَوْقَكُمْ، فَإِنَّهُ أَجْدَرُ أَنْ لَا تَزْدَرُوْا نِعْمَةَ اللهِ عَلَيْكُمْ، ‘তোমরা নিজেদের অপেক্ষা নিমণ পর্যায়ের লোকদের দিকে তাকাও। এমন ব্যক্তির দিকে তাকাবে না, যে তোমাদের চেয়ে উচ্চ পর্যায়ের। যদি এই নীতি অবলম্বন কর, তাহ’লে আল্লাহর নে‘মত তোমাদের কাছে ক্ষুদ্র মনে হবে না’।[22]
তবে দুনিয়াবী কোন জেŠলুস দেখে মুগ্ধ হওয়া অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু সেই পার্থিব চাকচিক্যে নিজেকে ডুবিয়ে দেওয়া ও আত্মনিয়োগ করা মানুষকে আখেরাত বিমুখ করে দেয়। সেজন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) দুনিয়াবী কোন কিছু দেখে বিমুগ্ধ হ’লে বলতেন, لَبَّيْكَ إنَّ العَيشَ عَيشُ الآخِرَةِ ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার দরবারে হাযির! আখেরাতের জীবনই তো প্রকৃত জীবন’।[23] শায়খ উছায়মীন (রহঃ) বলেন, ‘এর কারণ হ’ল মানুষের হৃদয় সব সময় দুনিয়াবী সৌন্দর্যের দিকে ঝুঁকে থাকে এবং পার্থিব মোহ তাকে আল্লাহর আনুগত্য থেকে বিমুখ করে রাখে। তাই রাসূল (ছাঃ) এই বাক্যটি পাঠ করতেন, যাতে তাঁর হৃদয় আখেরাতমুখী হয়।
একটু ভেবে দেখুন- যার নিকটে দুনিয়াবী এই বর্ণাঢ্য জীবনোপকরণ দেখতে পাচ্ছেন, এই আয়েশী জীবন একদিন তার কাছ থেকে বিদায় নিবে অথবা সেই ব্যক্তি তার দুনিয়াবী ভোগ্য সামগ্রী থেকে চির বিদায় নিয়ে কবরে চলে যাবে। কারণ দুনিয়াবী জীবন ক্ষণস্থায়ী এবং আখেরাতের জীবন চিরস্থায়ী। তবুও দুনিয়াবী সৌন্দর্য এবং কারো গাড়ী-বাড়ী, রঙমহল ও বিলাসী জীবন যদি আপনাকে মুগ্ধ করে এবং এর প্রতি আপনাকে আগ্রহী করে তোলে, তাহ’লে আপনি রাসূল (ছাঃ)-এর শেখানো এই বাক্যটি পাঠ করে মনকে শুনিয়ে দিন ‘লাববাইক! ইন্নাল আয়শা আয়শুল আখেরাহ’। দেখবেন মহান আল্লাহ এই বাক্যের মাধ্যমে আপনার হৃদয়কে দুনিয়া বিমুখ করে দিয়েছেন এবং আপনার মনটাও পরিতৃপ্তি দ্বারা ভরপুর হয়ে গেছে’।[24] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর শিখানো এই পদ্ধতি কিছুটা হ’লেও আমাদেরকে দুনিয়া বিমুখ হ’তে প্রণোদনা যোগাবে এবং ঋণ করার প্রবণতা থেকে রক্ষা করবে।
৩. বেশী বেশী দান করা :
সচ্ছলতা লাভের অন্যতম বড় উপায় হ’ল সাধ্যমত বেশী বেশী দান-ছাদাক্বাহ করা। কারণ দানের মাধ্যমে আল্লাহ বান্দার সম্পদ বৃদ্ধি করে তাতে বরকত দান করেন এবং তার অভাব দূর করে দেন। আবূ কাবশা আল-আনমারী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছেন যে, তিনি বলেছেন, ‘আমি তিনটি বিষয়ে শপথ করছি এবং সেগুলোর ব্যাপারে তোমাদেরকে বলছি। তোমরা এগুলো মনে রাখবে। তিনি বলেন,
مَا نَقَصَ مَالُ عَبْدٍ مِنْ صَدَقَةٍ، وَلَا ظُلِمَ عَبْدٌ مَظْلِمَةً فَصَبَرَ عَلَيْهَا إِلَّا زَادَهُ اللهُ عِزًّا، وَلَا فَتَحَ عَبْدٌ بَابَ مَسْأَلَةٍ إِلَّا فَتَحَ اللهُ عَلَيْهِ بَابَ فَقْرٍ-
(১) দান-ছাদাক্বাহ করলে কোন বান্দার সম্পদ হ্রাস পায় না। (২) কোন বান্দার উপর যুলুম করা হ’লে সে যদি তাতে ধৈর্য ধারণ করে, তাহ’লে আল্লাহ তা‘আলা অবশ্যই তার সম্মান বাড়িয়ে দেন। (৩) কোন বান্দা ভিক্ষার দরজা খুললে অবশ্যই আল্লাহ তা‘আলা তার অভাবের দরজা খুলে দেন’।[25] ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেন,أَعَزُّ الْأَشْيَاءِ ثَلَاثَةٌ: الْجُوْدُ مِنْ قِلَّةٍ، وَالْوَرَعُ فِيْ خَلْوَةٍ، وَكَلِمَةُ الْحَقِّ عِنْدَ مَنْ يُرْجَى أَوْ يُخَافُ، ‘তিনটি বিষয় সবচেয়ে দামী। ক. অল্প থাকা সত্ত্বেও দান করা। খ. নির্জনে আল্লাহকে ভয় করা। গ. কারো কাছে কিছু পাওয়ার বা হারানোর আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও তার সামনে হক্ব কথা বলা’।[26]
সুতরাং দানের মাধ্যমে কখনো সম্পদ কমে যায় না। বরং এর মাধ্যমে আমাদের সম্পদ বরকতমন্ডিত হয়। আল্লাহ বলেন, قُلْ إِنَّ رَبِّيْ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ وَيَقْدِرُ لَهُ وَمَا أَنْفَقْتُمْ مِنْ شَيْءٍ فَهُوَ يُخْلِفُهُ وَهُوَ خَيْرُ الرَّازِقِيْنَ، ‘বল, নিশ্চয়ই আমার রব তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিযিক প্রশস্ত করেন এবং সংকুচিত করেন। তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় কর, তিনি তার প্রতিদান দিবেন এবং তিনিই উত্তম রিযিকদাতা’ (সাবা ৩৪/৩৯)।
৪. ঋণ থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাওয়া :
ঋণ থেকে পরিত্রাণ লাভের সবচেয়ে বড় উপায় হ’ল ঋণ থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা এবং ঋণ থেকে মুক্তি লাভের দো‘আ করা। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) স্বয়ং ঋণ থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইতেন। আয়েশা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) প্রত্যেক ছালাতে আল্লাহর কাছে গুনাহ এবং ঋণ হ’তে পানাহ চাইতেন। একজন প্রশ্নকারী বলল, (হে আল্লাহর রাসূল)! আপনি ঋণ হ’তে এত বেশী বেশী পানাহ চান কেন? তিনি জবাবে বলেন,إِنَّ الرَّجُلَ إِذَا غَرِمَ حَدَّثَ فَكَذَبَ، وَوَعَدَ فَأَخْلَفَ ‘মানুষ ঋণগ্রস্ত হ’লে যখন কথা বলে মিথ্যা বলে এবং ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে’।[27]
একদিন এক ক্রীতদাস আলী (রাঃ)-এর কাছে এসে বলল, আমি আমার মনিবের সাথে সম্পদের লিখিত চুক্তির মূল্য পরিশোধ করতে পারছি না, আমাকে সাহায্য করুন। উত্তরে আলী (রাঃ) বললেন, আমি কি তোমাকে এমন কিছু বাক্য শিখিয়ে দেব, যা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাকে শিখিয়েছেন? এই দো‘আর মাধ্যমে যদি তোমার উপর পাহাড়সম ঋণের বোঝাও থাকে, আল্লাহ তা পরিশোধের ব্যবস্থা করে দিবেন। তুমি পড়,اللَّهُمَّ اكْفِنِيْ بِحَلَالِكَ عَنْ حَرَامِكَ وَأَغْنِنِيْ بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ، ‘আল্ল-হুম্মাক্ফিনী বিহালা-লিকা ‘আন্ হারা-মিকা, ওয়া আগ্নিনী বিফায্লিকা ‘আম্মান্ সিওয়াক’ (অর্থ- হে আল্লাহ! তুমি আমাকে হালাল [জিনিসের] সাহায্যে হারাম থেকে বাঁচিয়ে রাখ এবং তুমি তোমার রহমতের মাধ্যমে আমাকে পরমুখাপেক্ষী হ’তে রক্ষা করো)।[28]
আনাস (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে প্রায়ই বলতে শুনতাম,اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الهَمِّ وَالحَزَنِ، وَالعَجْزِ وَالكَسَلِ، وَالبُخْلِ وَالجُبْنِ، وَضَلَعِ الدَّيْنِ، وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ ‘আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিনাল হাম্মি, ওয়াল হাযানি, ওয়াল ‘আজযি, ওয়াল কাসালি, ওয়াল বুখলি, ওয়াল জুবনি, ওয়া যলাইদ্ দাইনি, ওয়া গলাবাতির্ রিজাল’ (হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে, অস্বস্তি, দুশ্চিন্তা, অক্ষমতা, অলসতা, কৃপণতা, ভীরুতা, ঋণের বোঝা এবং মানুষের জবরদস্তি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি)।[29]
ঋণ খেলাপিরা সাবধান :
আমাদের সমাজের একশ্রেণীর প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ ব্যাংক থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করছেন না। সরকারও তাদের ব্যাপারে শিথিলতা প্রদর্শন করছেন। ফলে ঋণদুর্বৃত্তদের অপকর্মের খেসারত গুণতে হচ্ছে গোটা জাতিকে। বলা চলে, দেশের ব্যাংকিং খাতে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে, যার জন্য দায়ী কিছু বড় ব্যবসায়ী। তারা ব্যাংক থেকে নানা কৌশলে ঋণ নিচ্ছেন। কিন্তু আর ফেরত দিচ্ছেন না। আর এ বড় ঋণখেলাপির কারণে সামগ্রিকভাবে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পাহাড় জমে গেছে। মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে গত মার্চ শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ১০ হাযার ৮৭৪ কোটি টাকা। তিন মাস আগে অর্থাৎ ডিসেম্বরে এ ঋণ ছিল ৯৩ হাযার ৯১১ কোটি টাকা।
চলতি বছরের শুরুতে অর্থমন্ত্রী ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুযোগ দেয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মার্চ শেষে দেশের ব্যাংক খাতের ঋণ বিতরণ ৯ লাখ ৩৩ হাযার ৭২৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে মোট ঋণের ১১ দশমিক ৮৭ শতাংশই খেলাপি।
ব্যাংক-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেসরকারী ব্যাংকগুলোর পরিচালকেরা নিজেদের মধ্যে ঋণ আদান-প্রদান করছেন। যে উদ্দেশ্যে এসব ঋণ নেয়া হচ্ছে, তার যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না। ঋণের অর্থ পাচারও হচ্ছে। এর সাথে জড়িয়ে পড়েছেন ব্যাংকের কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও। ফলে খেলাপি ঋণের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, মূলতঃ দু’টি কারণে খেলাপি ঋণ বেড়ে গেছে। একটি খেলাপিদের বিশেষ সুযোগ দেয়া এবং অপরটি দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেয়া।[30]
এভাবে বর্তমান বিশ্ববাযারের ঋণ খেলাপিরা হক্কুল ইবাদ বা বান্দার অধিকার নষ্ট করে চলেছেন। যথাযথ আইনের অনুশাসন এবং দ্বীন বিমুখীতাই এই লাগামহীন ঋণ খেলাপির মূল কারণ। আমাদের স্মরণ রাখা উচিত, হক্কুল ইবাদ নষ্টকারীকে আল্লাহ ক্ষমা করেন না। আর জনগণের সম্পদ লুট করার পরিণাম আরোও ভয়াবহ। দুনিয়াতে এই ঋণ পরিশোধ না করলে, আখেরাতে অবশ্যই তা পরিশোধ করতে হবে- নিজের নেকী প্রদান বা অন্যের গুনাহ গ্রহণের মাধ্যমে। তাই অচিরেই বান্দার অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে তওবাহ করা আবশ্যক এবং জীবনের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহকে ভয় করা অপরিহার্য। নইলে আল্লাহর কঠোর শাস্তি থেকে কেউ আমাদেরকে রক্ষা করতে পারবে না।
উপসংহার :
ঋণ একটি ভয়াবহ বিষয়। ঋণের কারণে শহীদ ব্যক্তিও জান্নাতে প্রবেশ করতে বাধাগ্রস্ত হয়। সেকারণ ব্যক্তিগত ও সামাজিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সদা সতর্ক থাকা যরূরী। কোন মুনাফার উদ্দেশ্য ছাড়া মুসলিমকে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে সাহায্য করা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। অপরদিকে ঋণ গ্রহণ ইসলামী শরী‘আতে অনুমোদিত হ’লেও, তা পরিশোধ করা ওয়াজিব। আর ঋণ পরিশোধ না করা আত্মসাৎ করার শামিল। অপরিশোধিত ঋণের কারণে ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি কবরে ও আখেরাতে শাস্তিপ্রাপ্ত হবে। কেননা ইচ্ছাকৃতভাবে দেনা শোধ না করা কবীরা গুনাহ এবং হক্কুল ইবাদ নষ্ট করার নামান্তর। সুফিয়ান ছাওরী (রহঃ) হক্কুল ইবাদ বা বান্দার অধিকার নষ্ট করার ভয়াবহতা বর্ণনা করে বলেন, ‘বান্দার সাথে সম্পর্কিত একটি পাপ নিয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করার চেয়ে আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত সত্তরটি পাপ নিয়ে তাঁর সাথে সাক্ষাত করা তোমার জন্য অধিকতর সহজ’।[31] ইসলামী শরী‘আত ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধ করার ক্ষেত্রে যেসব নীতিমালা প্রনয়ণ করেছে, সেই নীতিমালা অনুযায়ী একজন মুসলিম ঋণ গ্রহণ করবে এবং তা পরিশোধ করবে। তাই আমরা ঋণের মাধ্যমে যেমন মানব সেবায় এগিয়ে আসব, তেমনি কখনো ঋণগ্রস্ত হ’লে সেই ঋণ পরিশোধ করার আপ্রাণ চেষ্টা করব। মহান আল্লাহ আমাদেরকে ছোট-বড় সকল প্রকার ঋণের বোঝা থেকে মুক্ত রাখুন এবং ঋণমুক্ত অবস্থায় পূর্ণ মুমিন হিসাবে তাঁর সাথে সাক্ষাত লাভের তাওফীক্ব দান করুন-আমীন!
লেখক: আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
উৎস: মাসিক আত-তাহরীক
[4]. ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২৩০, ‘যাকাত’ অধ্যায়, ‘ঋণগ্রস্তের যাকাত’ অনুচ্ছেদ; উছায়মীন, ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম, মাসআলা নং ৩৫৭। গৃহীত: শরীফুল ইসলাম, দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম ‘যাকাত অধ্যায়’, পৃঃ ৫০।
[5]. বুখারী হা/২৪৪৯; মিশকাত হা/৫১২৬ ‘আদব’ অধ্যায়, ‘যুলুম’ অনুচ্ছেদ।
[6]. ইবনু তায়মিয়াহ, মিনহাজুস সুন্নাহ ৫/২৩২।
[7]. তিরমিযী হা/১০৭৮; মিশকাত হা/২৯১৫।
[8]. বুখারী হা/২২৯৮; মুসলিম হা/১৬১৯; মিশকাত হা/২৯১৩; ‘ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়-১১, ‘দেউলিয়া হওয়া এবং ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিকে অবকাশ দান’ অনুচ্ছেদ-৯; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ১০/৩৩।
[9]. ইবনু মাজাহ হা/৩১২৩; দারাকুৎনী হা/৪৭৬২; আহমাদ হা/৮২৭৩; হাকেম হা/৭৫৬৫, সনদ ছহীহ।
[10]. মুসলিম হা/১৯৭৭; তিরমিযী হা/১৫২৩; নাসাঈ হা/৪৩৬১; ইবনু মাজাহ হা/৩১৪৯; দারাকুৎনী হা/৪৭৪৫।
[11]. বায়হাকী ফিস সুনান ৭/২৬৩; ফিকহুল উযহিয়াহ্ পৃঃ ১২-১৩।
[12]. মুসলিম হা/১৯৬৭; মিশকাত হা/১৪৫৪।
[13]. মির‘আতুল মাফাতীহ ৫/৭২-৭৩।
[14]. আশ-শারহুল মুমতে‘ ৭/৪২২-৪২৩।
[15]. মাজমূ‘উল ফাতাওয়া ২৬/৩০৫।
[16]. বুখারী হা/১৫০৩, ১৫০৬; মুসলিম হা/৯৮৬, ৯৮৫; মিশকাত হা/১৮১৫-১৬।
[17]. বুখারী হা/২৪৪৯; মিশকাত হা/৫১২৬ ‘আদব’ অধ্যায়, ‘যুলুম’ অনুচ্ছেদ।
[18]. মুয়াত্ত্বা মালেক, কিতাবুল ক্বাযা ফিল বুয়ূ‘ ১/২৯, হা/১২৬; আত-তালখীছুল হাবীর ৩/১০৪।
[19]. তিরমিযী হা/২৩০৫; মিশকাত হা/৫১৭১, সনদ হাসান।
[20]. বুখারী হা/৬৪৪৬; তিরমিযী হা/২৩৭৩; মিশকাত হা/৫১৭০।
[21]. মুসলিম হা/১০৫৪; তিরমিযী হা/২৩৪৮; মিশকাত হা/৫১৬৫।
[22]. তিরমিযী হা/২৫১৩; ইবনু মাজাহ হা/৪১৪২, সনদ ছহীহ।
[23]. মুসনাদে শাফেঈ (সিন্ধী) হা/৭৯৭; আত-তালখীছুল হাবীর হা/১০০৪; আশ-শারহুল মুমতে‘ ৭/৭০; (ثَبَتَ عَنْ رَسُولِ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أنه إذَا رَأَى شَيْئًا يُعْجِبُهُ قَالَ “لَبَّيْكَ إنَّ الْعَيْشَ عَيْشُ الْآخِرَةِ) হাকেম হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন।
[24]. উছায়মীন, শারহু মুক্বাদ্দামাতিল মাজমূ‘, (কায়রো: দারু ইবনিল জাওযী, ২০০৪), পৃঃ ১০১।
[25]. তিরমিযী হা/২৩২৫; মিশকাত হা/ ৫২৮৭, সনদ ছহীহ।
[26]. ইবনু রজব হাম্বলী, জামে‘উল ‘উলূম ওয়াল হিকাম ১/৪০৮।
[27]. বুখারী হা/২৩৯৭।
[28]. তিরমিযী হা/৩৫৬৩; আহমাদ হা/১৩১৯; হাকেম হা/১৯৭৩; ছহীহাহ্ হা/২৬৬; ছহীহুত তারগীব হা/১৮২০; ছহীহুল জামে‘ হা/২৬২৫; মিশকাত হা/২৪৪৯, সনদ হাসান।
[29]. বুখারী হা/৫৪২৫; মিশকাত হা/২৪৫৮।
[30]. দৈনিক নয়া দিগন্ত, ২৩ মার্চ, ২০২০।
[31]. কুরতুবী, আত-তাযকিরাহ, পৃঃ ৭২৬।