নারী নগ্ন হলেই কি জনপ্রিয় হয়ে যায়?
সুমাইয়া আবেদীন জুহি
বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে উলঙ্গ হওয়ার ধুম পড়েছে। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির একাধিক তরুণী বিশ্বকাপের সমর্থনে শরীরের ৮০ ভাগ নগ্ন রেখে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়ে বিভিন্ন দলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
অবাক করার ব্যাপার হচ্ছে নগ্ন ছবির সংবাদ পরিবেশনের স্টাইল পাঠকের কাছে ভাল, সাহসী উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। মিডিয়া এইসব অশ্লীলতা ফলাও করে প্রচার করায় তাতে একজন নারী হিসেবে যথেষ্ট লজ্জা পাচ্ছি।
অশ্লীলতাকে এভাবে প্রমোট করা কোনোভাবেই রুচিশীল সাংবাদিকতার পর্যায়ে পড়ে না। নগ্নতা কোনোভাবেই জনপ্রিয়তার মাপকাঠি হতে পারে না। বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থা, সংস্কৃতি, পারিবারিক মূল্যবোধের সঙ্গে এগুলো যায় না।
বিশ্বকাপকে ঘিরে ভার্সিটি পড়ুয়া গুটিকয়েক নোংরা মানসিকতার মেয়েদের কারণে মুসলিম অধ্যুষিত দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিত বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হবার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে।
দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, জনপ্রিয় নিউজ মিডিয়াগুলো বিশ্বকাপের খেলার খবরে যতটা না আগ্রহী তার চেয়ে বেশি আগ্রহী নারী দর্শকদের যৌন আবেদন সংক্রান্ত খবর পরিবেশনে।
বিশ্বকাপকে ঘিরে অশ্লীল উলঙ্গপনার মাঝে সামাজিক যোগাযোগের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুকে শুরু হয়েছে অসামাজিক সব কার্যকলাপ। বিকৃত মানসিকতার কিছু পুরুষ মেয়েদের নাম দিয়ে ফেইক আইডি খুলে লিখছে, 'আমি অমুক দলের সাপোর্টার। দল জিতলে ১০টা ছেলের সঙ্গে…করবো।
একদিকে বিশ্বকাপকে ঘিরে অশ্লীল বেহায়াপনা আরেকদিকে একশ্রেণীর বিকৃত মানসিকতার ফেইক আইডির নোংরামি দুটো ব্যাপারই কিন্তু একই সূত্রে গাঁথা। অর্থাৎ সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য একশ্রেণীর তরুণীরা নিজেকে উলঙ্গ করছে আর সে উলঙ্গপনার সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে এক শ্রেণীর বিকৃত মানসিকতার পুরুষ।
বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী, সংসদের বাইরের সবচেয়ে বড় দলটির প্রধানও নারী।
কিন্তু, বাংলাদেশে বিশ্বকাপের উন্মাদনাকে যেভাবে অশ্লীলতার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাতে সবাই নীরব। এই অদ্ভুত নীরবতার দায় কি এড়াতে পারবেন আমাদের দেশের শীর্ষ স্থানীয় নেত্রীরা?
(শীর্ষ নিউজ ডটকম)