সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ

মানবতা ভাসছে নাফ নদীতে!

গত ২৫শে আগষ্ট’১৭ শুক্রবার থেকে আরাকানে পুনরায় রোহিঙ্গা নিধন শুরু হয়েছে। সীমান্তবর্তী নাফ নদীতে নিহত রোহিঙ্গাদের শত শত লাশ ভাসছে। ঈদুল আযহার এক সপ্তাহ আগে থেকে শুরু হওয়ায় এবারের এই নিধনযজ্ঞের প্রতি বাংলাদেশ সহ মুসলিম বিশ্বের প্রায় সর্বত্র ব্যাপক সহানুভূতি সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি ২০১২ ও ২০১৬-তে রোহিঙ্গা বিতাড়নের প্রতি বাংলাদেশ সরকার যতনা অনাগ্রহী ছিল, এবার তার বিপরীত আচরণ দেখা যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেরীতে হ’লেও গত ১১ই সেপ্টেম্বর সোমবার কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে গিয়েছেন এবং তাদের পক্ষে জোরালো বক্তব্য রেখেছেন। যা ইতিপূর্বে কখনোই দেখা যায়নি। আমরা তাঁর এই ভূমিকাকে স্বাগত জানাই এবং ভবিষ্যতে তাঁকে এই শক্ত ভূমিকায় দৃঢ় রাখার জন্য আল্লাহর নিকটে প্রার্থনা করি।

কুয়ালালামপুরে আন্তর্জাতিক গণ-আদালতে (পারমানেন্ট পিপলস ট্রাইব্যুনাল-পিপিটি) গত ১৯শে সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার মিয়ানমারের একজন বৌদ্ধ মানবাধিকারকর্মী বৃটেন প্রবাসী ড. মং জার্নি যবানবন্দী দিয়ে বলেছেন, জেনারেল জিয়াউর রহমানের সরকার ১৯৭৮ সালে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় রোহিঙ্গাদের ফেরত না নিলে অস্ত্র সরবরাহের হুমকি দিয়েছিল। এর চারদিন পরেই জেনারেল নে উইনের সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। কিন্তু বাংলাদেশের দেওয়া ঐ হুমকিকে অবমাননাকর ভেবে চার বছর পর ১৯৮২ সালে তারা রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয় এবং তাদেরকে রাষ্ট্রহীন করে। যা আজও অব্যাহত রয়েছে।

ড. মং বলেন, ‘আমার বাড়ী মিয়ানমারের মান্দালয় এলাকায়। জার্মানীতে হিটলার বলেছিলেন, ইহূদীরা জার্মান নয়। কিন্তু ইহূদী হিসাবেই তাদের হত্যা করা হয়েছিল। সেদিক থেকে রোহিঙ্গাদের অবস্থা আরও শোচনীয়। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তাদের রোহিঙ্গা পরিচয়ে হত্যা করতেও রাযী নয়’। তিনি বলেন, ১৯৪৮-১৯৬২ সাল পর্যন্ত মিয়ানমারে একটা উদারনৈতিক গণতন্ত্র ছিল। কিন্তু নে উইন ১৯৬২-তে সামরিক অভ্যুত্থান করে ক্ষমতা নেওয়ার পরই রোহিঙ্গাদের দুর্দশা চূড়ান্ত হয়। সেই থেকে রোহিঙ্গারা Slow genocide বা ‘মন্থর গণহত্যা’র শিকার। গত ১৮ থেকে ২১শে সেপ্টেম্বর প্রত্যক্ষদর্শীদের যবানবন্দী, বিভিন্ন প্রামাণ্য দলীল ও সাক্ষ্য গ্রহণের ভিত্তিতে গত ২২শে সেপ্টেম্বর শুক্রবার মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ মিলনায়তনে জনাকীর্ণ আদালতে সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর দায়ে রাষ্ট্র হিসেবে মিয়ানমারকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণা করা হয়। সেখানে ১৭টি সুফারিশ করা হয়েছে। যেমন (১) মিয়ানমার সরকারের ওপর আশু অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারী করতে হবে। (২) অং সান সু চির ঘোষিত যাচাইকরণ প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গাসহ সব গোষ্ঠীকে পূর্ণ নাগরিকত্ব দিতে হবে। (৩) মিয়ানমারকে অবশ্যই রোহিঙ্গা মুসলিম, কাচিন খ্রিষ্টান ও অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের প্রতি তার বৈষম্যমূলক নীতি পরিহার করতে হবে। ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন বাতিলসহ ২০০৮ সালের সংবিধানে সংশোধনী আনতে হবে। (৪) মিয়ানমার সরকারের কর্মকর্তাদের ওপর টার্গেটেড নিষেধাজ্ঞা জারী করতে হবে। (৫) মিয়ানামার সরকার এবং আসিয়ান প্রতিনিধিরা রাখাইনের সব সশস্ত্র গ্রুপকে নিয়ে রাখাইন সীমান্ত বরাবর অঞ্চলের বেসামরিকীকরণ এবং একটি অস্ত্রবিরতির প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা শুরু করবেন। (৬) জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থাকে রাখাইনের ঘটনা তদন্তের অনুমতি দিতে হবে। (৭) মিয়ানমারের পার্লামেন্টে সামরিক প্রতিনিধিদের কোটা বাতিল করতে হবে। (৮) সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশকে পূর্ণ বেসামরিক নিয়ন্ত্রণে আনতে সংবিধানে নিশ্চয়তা থাকতে হবে। (৯) মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের দায়মুক্তি বন্ধ করে দোষী ব্যক্তিদের বিচার শুরু করতে হবে। (১০) বাস্ত্তচ্যুত ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসন এবং তাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানে একটি স্বাধীন বেসরকারী কমিশন গঠন করতে হবে। (১১) একটি ফেডারেল কাঠামোর আওতায় বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী যে তাদের নিজেদের স্বায়ত্তশাসন নিজেরাই নিশ্চিত করার সামর্থ্য রাখে, সেটা স্বীকার করতে হবে। (১২) মিয়ানমার ও তার প্রতিবেশী দেশগুলির ধর্মীয় ও মানবাধিকার সংগঠন এবং সাংবাদিকদের রোহিঙ্গা সহ কাচিন ও অন্যান্য গোষ্ঠীগুলির এলাকায় প্রবেশাধিকার দিতে হবে। (১৩) বাংলাদেশ সরকারকে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসাসহ রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী পরিচয়পত্র দেওয়ার আহবান জানাচ্ছি। যাতে তারা নির্বিচারে গ্রেফতার হওয়া থেকে রক্ষা পায়। (১৪) অভিবাসন সংকটের দায়ভার আসিয়ান দেশগুলিকে নিতে হবে এবং আসিয়ান সনদ অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের সীমান্ত খুলে দিতে হবে। (১৫) বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া এবং অন্যান্য জাতি যারা রোহিঙ্গাদের স্বাগত জানিয়েছে, তাদের আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা দিতে ইইউ, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও চীনের মতো সম্পদশালী দেশগুলিকে এগিয়ে আসতে হবে। (১৬) দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। সেই সাথে মানব পাচারকারীদের হাত থেকে বাঁচতে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য গণমাধ্যমকে উৎসাহিত করতে হবে। (১৭) সমস্যার কারণ চিহ্নিত করতে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বেসরকারী কমিশন গঠন করতে হবে’। রায় ঘোষণার পর পিপিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট গিয়ানি তোগেনি বলেন, পূর্ব তিমুর ও শ্রীলঙ্কার তামিলদের ক্ষেত্রে পিপিটির তরফে যে ট্রাইব্যুনাল করা হয়েছিল, সেগুলির রায়ের সুফল তাঁরা পরে অনুধাবন করেছেন। দেরীতে হ’লেও এখানেও ফল মিলবে বলে আমরা আশাবাদী।

আগে থেকে বাংলাদেশে অবস্থানরত চার লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে এবারে যুক্ত হয়েছে আরও সোয়া চার লাখ। ফলে সংকট ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান চালাচ্ছে, যার সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে হিটলারের নাৎসি বাহিনীর ইহূদী নিধনের তুলনা করা যায়। অথচ এখন কেউ মুসলিম নিধনকারী বৌদ্ধদের ‘জঙ্গী’ বলছে না। মোদী যুগে ভারতে একজন মুসলিমের জীবনের চাইতে গরুর জীবনের মূল্য বেশী। এরপরেও হিন্দুত্ববাদীরা জঙ্গী নয়। জঙ্গী ও সন্ত্রাসী তকমাটি কেবল মুসলমানদের ক্ষেত্রেই সুপরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অন্যেরা বোমা মেরে শেষ করলেও দোষ নেই। মুসলমানরা ঢিল মারলেও জঙ্গী। এজন্যই কবি বলেছেন, ہم آه بہى كرتے ہيں تو ہو جاتا ہے بدنام + وه قتل بہى كرتے ہيں تو چرچا نہيں ہوتا ‘আমরা আহ্ করলেও বদনাম হয়। আর তারা হত্যা করলেও প্রচার হয় না’। অনেক মুসলমান ছিলেন। অথচ মিয়ানমারের বর্তমান প্রধান সেনাপতি জেনারেল মিন অং হেইং এবং অং সান সুচি উভয়েই জাতিগত ঘৃণার প্রকাশ ঘটাতে গিয়ে কার্যত বার্মার রাজনৈতিক ইতিহাসকেই অস্বীকার করলেন। পৃথিবীতে সম্ভবতঃ এমন কোন ভূখন্ড পাওয়া যাবে না, যেখানে বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ, ভাষা ও জাতিগোষ্ঠীর লোকেরা সহাবস্থান করছে না। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরাই কেবল তাদের হীন স্বার্থে এগুলোকে ইস্যু করে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে ফায়েদা লুটে থাকে। বার্মার স্বাধীনতা সংগ্রামকালে যে শ্লোগানটি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল, তা ছিল ‘বার্মা ফর বার্মিজ’। অর্থাৎ বার্মার সকল অধিবাসীদের জন্যই বার্মা। ১৯৩৬ সালে রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ে তোলা একটি ঐতিহাসিক ছবিতে দেখা যায় যে, বার্মার স্বাধীনতা এসেছিল যাদের হাত ধরে, সেই অল বার্মা স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন রোহিঙ্গা নেতা আব্দুর রশীদ। যার পাশে বসে আছেন সাধারণ সম্পাদক সুচির পিতা অং সান। তার বাম পাশে আছেন বার্মা মুসলিম লীগের সভাপতি আব্দুর রাযযাক। এই রোহিঙ্গা নেতা আব্দুর রাযযাক-ই ছিলেন আজকের মিয়ানমারের সংবিধানের খসড়া প্রণয়নকারী। বার্মার জাতির পিতা ও সুচির পিতা জেনারেল অং সানের গঠিত বার্মার স্বাধীনতা-পূর্ব অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রীসভার শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ছিলেন আব্দুর রাযযাক। ১৯৪৭-এর ১৯শে জুলাই জেনারেল অং সানের সাথে যে ৬ জন মন্ত্রী নিহত হন তাদের মধ্যে আব্দুর রাযযাক ছিলেন অন্যতম। বার্মা আজও রাষ্ট্রীয়ভাবে ১৯শে জুলাইকে ‘শহীদ দিবস’ হিসাবে পালন করে থাকে। কেবল আব্দুর রাযযাক-ই নন, সুচির পিতা জেনারেল অং সানের সবচেয়ে ঘনিষ্ট রাজনৈতিক সহযোগীদের মধ্যে আরও

বার্মার সেদিনের সেই ঐক্যচেতনাকে প্রথম দ্বিধাবিভক্ত করতে চেষ্টা চালায় বার্মার তৎকালীন বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসকবৃন্দ। সেদিন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বর্বর দৃষ্টিভঙ্গী সৃষ্টির মূলে ইসরাঈলী গোয়েন্দা বাহিনীর একটি ঘৃণ্য ভূমিকা ছিল। তারা যে শ্লোগানটি চালু করার চেষ্টা চালায় তা ছিল ‘বার্মা ফর বার্মিজ বুডঢিষ্টস’। অর্থাৎ বার্মা শুধু বার্মার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য। এর ফলে বার্মায় শত শত বছর ধরে বসবাসকারী মুসলমান রোহিঙ্গাদের বহিরাগত প্রমাণের অপচেষ্টা চালানো হয়। সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তের সে ধারাবাহিকতায়ই যে বার্মার সেনাবাহিনী ও এক শ্রেণীর উগ্র বৌদ্ধ ধর্মনেতাদের দ্বারা রোহিঙ্গা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, একথা বলার অপেক্ষা রাখেনা। যারা আজও বার্মিজ সেনাবাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ করছে ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। গণতন্ত্রের নামে এইসব ভেটোধারীরা সারা বিশ্বের স্বাধীন মানুষের টুটি চেপে ধরে রেখেছে।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের প্রথম ও প্রধান শর্ত হ’ল মিয়ানমারে তাদের স্ব স্ব ভিটেমাটিতে ফেরত নেওয়া ও তাদের নাগরিকত্ব পুনর্বহাল করা। ২২শে সেপ্টেম্বর’১৭ শুক্রবার সকালে জাতিসংঘের ৭২তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে যে ৫টি প্রস্তাব রেখেছেন, তা অত্যন্ত প্রশংসার্হ। সারা দেশ তার সঙ্গে একমত। প্রস্তাবগুলি হ’ল : (১) অনতিবিলম্বে এবং চিরতরে মিয়ানমারে সহিংসতা ও ‘জাতিগত নিধন’ নিঃশর্তে বন্ধ করা। (২) অনতিবিলম্বে মিয়ানমারে জাতিসংঘের মহাসচিবের নিজস্ব একটি অনুসন্ধানী দল প্রেরণ করা। (৩) জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সব সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান এবং এ লক্ষ্যে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সুরক্ষা বলয় সমূহ (Safe zones) গড়ে তোলা। (৪) রাখাইন রাজ্য হ’তে যোরপূর্বক বিতাড়িত সকল রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে তাদের নিজ ঘরবাড়িতে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা। (৫) কফি আনান কমিশনের সুফারিশমালার নিঃশর্ত, পূর্ণ এবং দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা’। বিশ্বসভার দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের দিকে। অতএব এখনই সুযোগ ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানো। যদি তাতে সুফল না আসে, তাহ’লে ১৯৭১ সালে নিপীড়িত বাংলাদেশীদের স্বাধীনতার পক্ষে ভারতের যে ভূমিকা ছিল, বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের স্বাধীনতার পক্ষে বাংলাদেশকে সেই ভূমিকা পালন করতে হবে। এজন্য ’৭১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে যেভাবে সারা বিশ্ব ঘুরে বেড়িয়েছিলেন, সেটি সরকারের মনে রাখা কর্তব্য।

এখানে শরণার্থীদের বিষয়ে আমাদের একটি প্রস্তাব রয়েছে। জেলখানার মত এক জায়গায় বন্দী না রেখে তাদেরকে স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও রূযী-রোযগারের সুযোগ দেওয়া উচিৎ। এ বিষয়ে আফ্রিকার দারিদ্র্যপীড়িত দেশ উগান্ডা সর্বোত্তম দৃষ্টান্ত হ’তে পারে। বর্তমানে সেখানে ৯ লক্ষ ৪০ হাযার শরণার্থী রয়েছে। সে দেশ থেকে কোন শরণার্থীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। বেশ কয়েকটি কারণে উগান্ডার শরণার্থী নীতি বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ভালো বলে মনে করা হয়। শরণার্থীরা উগান্ডায় এলে তাদের শরণার্থী শিবিরে রাখা হয় না। তার বদলে একখন্ড জমি দেওয়া হয়। যে জমিতে তারা বসবাস করতে পারবে এবং কৃষিকাজ করে নিজেদের খাবার নিজেরাই উৎপন্ন করে নিতে পারবে। উগান্ডায় শরণার্থীরা প্রবেশ করলে তাদের প্রত্যেককে একটি করে আইডি কার্ড দেওয়া হয়। এতে তারা আইনগতভাবে স্বীকৃতি লাভ করে। এ কার্ড ব্যবহার করে তারা উগান্ডার ভেতরের যে কোনো স্থানে নিজেদের ইচ্ছামতো যাতায়াত করতে পারে। যেকোন চাকরী করতে পারে, ব্যবসা করতে পারে, নিজেদের সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করাতে পারে। উগান্ডাতে খোদ প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকেই শরণার্থীদের খোঁজখবর রাখা হয়। শরণার্থীরা চাইলেই প্রধানমন্ত্রীর দফতরে ফোন করতে পারে তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা জানিয়ে’। সরকার বিষয়টি বিবেচনা করলে বাধিত হব।

পরিশেষে দেশবাসী এবং বিশ্বের সর্বত্র ঈমানদার মুসলমানগণের প্রতি আমাদের আবেদন, নিয়মিত কুনূতে নাযেলা পাঠ করুন। যেন আল্লাহ পাক স্বীয় গায়েবী মদদে মিয়ানমার সহ বিশ্বের সর্বত্র নির্যাতিত মুসলমানদের রক্ষা করেন।- আমীন!

ইসলামিক ইমেইল নিউজলেটার
নতুন পোস্ট প্রকাশিত হলে সরাসরি আপনার ই-মেইল ইনবক্সে পেতে সাবস্ক্রাইব করুন।
icon

মন্তব্য করুন

Back to top button