টিপস

জাল টাকা চেনার সহজ উপায়

২০১১ সন থেকে প্রচলিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি সম্বলিত নতুন ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকা মূল্যমানের আসল নোটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি, নোটের মূল্যমান ও উভয় পিঠের অধিকাংশ লেখা ও ডিজাইনের বিভিন্ন অংশ হাতের আঙ্গুলের স্পর্শে অসমতল বা উঁচু-নিচু অনুভূত হবে। অমসৃণ মুদ্রণের এই বৈশিষ্ট্য ফটোকপি বা অফসেটে ছাপা জালনোটে থাকবেনা অথবা অসমতল ছাপার রঙ নখের সামান্য আচরেই উঠে যাবে।

জলছাপ, রঙ পরিবর্তনশীল হলোগ্রাফিক সূতা :

সব মূল্যমানের আসল নোট আলোর বিপরীতে ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগো ও মূল্যমান সম্বলিত নিরাপত্তা সূতা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ও প্রতিকৃতির নিচে অতি উজ্জ্বল ইলেক্ট্রোটাইপ জলছাপে প্রতিটি নোটের মূল্যমান জলছাপ হিসেবে দেখা যাবে। এছাড়াও প্রতিটি নোটের জলছাপের বামপাশে বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগো উজ্জ্বলতর ইলেক্ট্রোটাইপ জলছাপ লক্ষ্যণীয় হবে। সরাসরি তাকালে রঙ পরিবর্তনশীল হলোগ্রাফিক সূতায় বাংলাদেশ ব্যাংকে লোগো ও অংকে মূল্যমান লেখা রূপালী দেখাবে। কিন্তু পাশ থেকে দেখলে বা ৯০ ডিগ্রিতে নোট ঘুরালে তা কালো দেখাবে। ফটোকপি বা অফসেটে ছাপা জালনোটের সূতা নখের আঁচড়ে উঠে যাবে।

রঙ পরিবর্তনশীল কালিতে ছাপা মূল্যমান :

আসল নোটের যে দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি রয়েছে সেদিকে উপরের ডানদিকের কোনায় (ঙঢ়ঃরপধষষু ঠধৎরধনষব ওহশ – ঙঠও) অংশে ১০০০ ও ১০০ টাকা নোটের ক্ষেত্রে নোটের মূল্যমান লেখাটি সরাসরি তাকালে সোনালী এবং তির্যকভাবে তাকালে সবুজ রং দেখা যাবে যা ৫০০ টাকা নোটের ক্ষেত্রে সরাসরি তাকালে লালচে এবং তির্যকভাবে তাকালে সবুজ রং দেখা যাবে। ফটোকপি বা অফসেটে ছাপা জালনোটের ক্ষেত্রে এ রঙের পরিবর্তন লক্ষ্যণীয় হবে না।

ইরিডিসেন্ট স্ট্রাইপ :

১০০০ টাকার আসল নোটের পিছনের বাম অংশে ইরিডিসেন্ট ব্যান্ড ; নোটটি নাড়াচাড়া করলে এর রং পরিবর্তন লক্ষ্যণীয় হয়। ফটোকপি বা অফসেট ছাপা জালনোটের ক্ষেত্রে এ রঙের পরিবর্তন লক্ষ্যণীয় হবে না।

সহজে লক্ষ্যণীয় নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য ছাড়াও আরও বেশ কিছু নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন মূল্যমানের আসল নোটে রয়েছে, যা বিশদ পরীক্ষায় লক্ষ্যণীয়, যেমন লেটেন্ট ইমেজ, মাইক্রোটেকস্ট, ইউভি ফ্লোরোসেন্টস ইত্যাদি।

হাতে পাওয়া কোন নোটের যথার্থতা সম্পর্কে সন্দেহ হলে এবং সহজে লক্ষ্যণীয় নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যগুলো যাচাইয়ে নিরসন না হলে বিশদতর পরীক্ষার জন্য কোন ব্যাংক শাখায় যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।

নিম্নের লিং থেকে ১ টাকা হতে ১০০০ টাকা পর্যন্ত যত নোট রয়েছে তার নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যসহ সকল ছবি দেখতে পাবেন। ফলে জাল টাকা চিনতে আর সমস্যা হবে না।

http:/www.bangladesh-bank.org/currency/index.php


জাল টাকার নোট চেনার ৯টি সহজ উপায়:

১. জাল টাকার প্রথম শর্ত হচ্ছে এই নোটগুলো নতুন চকচকে থাকবে। কারণ জাল টাকার নোটগুলো সাধরণ কাগজের তৈরি তাই পুরাতন হয়ে গেলে সেই নোট নাজেহাল হয়ে যায়।

২. জাল টাকার নোট তৈরি করা হয় সাধারণ মেশিন দিয়ে তাই এই নোটগুলো সামান্য ঝাপসা দেখায়। আসল নোটের মত ঝকঝকে এবং স্পষ্ট তৈরি করা সম্ভব হয় না জাল নোট ব্যাবসায়ীদের পক্ষে। সেটা নতুন হোক আর পুরাতন হোক।

৩. বাংলাদেশ ব্যাংক নোট তৈরি হয় উন্নত মানের কাগজ দিয়ে। আর জাল নোট তৈরি হয় সাধারণ কাগজ দিয়ে। তাই জাল নোট হাতের মধ্যে নিয়ে মুষ্টিবদ্ধ করে কিছুক্ষণ পর ছেরে দিলে এই নোট সাধারণ কাগজের মতো ভাঁজ হয়ে থাকবে। আর আসল নোট ভাঁজ হবে না। যদিও সামান্য ভাঁজ হবে তবুও তা জাল নোটের ক্ষেত্রে তুলনামূলক বেশি।

৪. এবার আসুন আসল কথায় আপনি এই মূহুর্তে নতুন (একটি ১০০০ টাকা, ৫০০ টাকা ও একটি ১০০ টাকা) মূল্যের নোট এবং পুরাতন পাঁচশত টাকার নোট হাতে নিন। আর এই বর্ণনার সাথে মিলিয়ে নিন।

৫. উপরে বর্ণিত প্রথম তিনটি নোট সোজা করে ধরুন এবার লক্ষ্য করুণ নোটের বাম পাশে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত একটি সরল রেখা আছে। একটু ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন ওটা কোন রেখা নয়। সেখানে স্পষ্টভাবে ইংরেজিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ‘‘Bangladesh Bank’’ কথাটা লেখা আছে।

৬. পুরাতন ৫০০ টাকার নোটে বাম পার্শের নিচে সুন্দর নকশা করে লেখা আছে “৫০০” মূলত সেখানে “Bangladesh Bank’’ কথাটা লেখা আছে হালকা ও ভারি রং দিয়ে।

৭. টাকা সবসময় দুটি অংশ দিয়ে তৈরি হয়। টাকার দুই পার্শে দুদটো নোট জোড়া লাগানো থাকে এবং এটা হরিনের চামড়া দিয়ে তৈরি বলে পানিতে ভেজালেও খুব তারাতারি ভেঙ্গে যাবে না। আর জাল নোট পানিতে ভেজানোর সাথে সাথেই তা ভেঙ্গে যাবে।

৮. আসল নোট সবসময় খসখসে হবে।

৯. উপরের সবগুলো উপায়ে যদি আসল ও জাল/নকল নোট সনাক্ত করতে কেউ ব্যর্থ হয় তবে তার জন্য সর্বশেষ উপায় “আল্ট্রা ভায়োলেট লাইট”। এই লাইটের মাথ্যমে সনাক্ত করা খুবই সহজ। আসল নোটে এই লাইটের আলো ধরলে নোটের উপর রেডিয়ামের প্রলেপ জ্বল জ্বল করে উঠবে। জাল নোটে তা হয় না।

মন্তব্য করুন

Back to top button