আল্লাহ যা জানেন, মানুষ সেটা জানে না
মানুষকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন খুব অদ্ভুতভাবে। সে চায় সবাই তার মতো হোক। সে তার পছন্দের কথাগুলো অন্যের মুখ থেকে শুনতে চায়। চায় সবাই বাকি সব ফেলে অন্যরা শুধু তার পছন্দের কাজগুলো করুক।
কেউ বলে, সরকারের অন্যায় নিয়ে কিছু বলেন না কেন?
কেউ বলে মিডিয়া বানান না কেন?
কেউ গোস্বা – বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে – কিছু করছি না কেন?
কেউ বলে, গরীব মানুষ না খেয়ে আছে–আর আপনারা মানুষকে আম খাওয়াচ্ছেন কেন?
কেউ গোস্বা বড়লোকদের সাথে এত মাখামাখি কেন?
কেউ বলে, সুদ সুদ করো–টাকা রাখব কই? বিনিয়োগ করার জায়গা দাও না কেন?
কেউ মন খারাপ করে, ভাই, চাকরি নেই। চাকরি দেন না কেন?
কেউ বলে, এত দামী বই কেন?
কেউ বলে, মুজাহিদদের ব্যাপারে চুপ থাকেন, নিজের জিহাদ করার মুরোদ নাই, যারা করছে খালি তাদের বদনামি করেন কেন?
কেউ বলে, নীরিহ মানুষ মরলে কনডেম করেন না কেন?
কেউ বলে, কাফের মারলে এত কষ্ট লাগে কেন? সারা দুনিয়াতে মুসলিম মরে তখন কনডেম করেন না কেন?
কেউ বলে, সবকিছুতে ইসলাম টানেন কেন?
কেউ বলে, আহলে হাদীসদের নিয়ে কিছু বলেন না কেন?
কেউ বলে, তাবলীগিদের দোষ লুকান কেন?
কেউ বলে, নুমান আলী খানের তাফসির ছাপান কেন?
কেউ বলে, শিক্ষিত মুসলিমদের জন্য লেখেন না কেন?
কেউ বলে, দান করে ছবি তোলেন কেন?
কেউ বলে, ইসলাম নিয়ে ব্যবসা করেন কেন?
কত মানুষ। কত আপত্তি।
সবাই ইসলামের দোহাই দিয়ে বলে, আমি শুধু উপরেরটা দেখে বলছি। যা দেখা যায় তার ভিত্তিতে বলছি।
কয়জন ঘরের খবর জানে?
কয়জন বলে আচ্ছা আপনার সংসার চলে কীভাবে?
কয়জন জানতে চায়, আচ্ছা আপনাদের পুলিশ ধরে না, মারে না?
খুব কষ্ট লাগে। খুব।
মানুষ চায় আমরা যেন রিয়া করি। আমরা যেন মানুষদের খুশি করার জন্য কাজ করি। আমরা যেন সব কিছু মানুষকে জানিয়ে প্রমাণ করে দিই আমরা কত মহান। আমরা কত ভালো।
কিন্তু আমরা দাঁত চেপে সহ্য করি। চোখে পানি নিয়ে সহ্য করি। কারণ, আল্লাহ যা জানেন মানুষ সেটা জানে না।
আমাদের কোনো নিয়াত, কোনো ইচ্ছা, কোনো কাজ যেন মানুষকে খুশি করার জন্য না হয়। হবে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।
কারণ, মানুষকে কখনও খুশি করা যায় না।
কারণ, আল্লাহকে খুশি করতে অর্ধেকটা খেজুর দিলেও সেটা জাহান্নাম থেকে বাঁচায়।
নিশ্চয় আমাদের সব ইবাদাত, আমাদের সব আত্মত্যাগ, আমাদের জীবন, আমাদের মৃত্যু — একমাত্র আল্লাহর জন্য।
– শরীফ আবু হায়াত অপু