পেঁয়াজ-রসুন কিংবা দুর্গন্ধযুক্ত বস্ত্ত খেয়ে মসজিদে গমন করা হারাম
কাঁচা পেঁয়াজ, কাঁচা রসুন, সিগারেট ও বিড়ি খেলে মুখে এমন দুর্গন্ধ হয় যে তার নিকটে অবস্থান করা দায় হয়ে পড়ে। মসজিদের পূত-পবিত্র পরিবেশ কলুষিত হয়, সৌন্দর্য বিঘ্নিত হয়। অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
يَا بَنِي آدَمَ خُذُوا زِينَتَكُمْ عِنْدَ كُلِّ مَسْجِدٍ–
‘হে বনু আদম! তোমরা প্রতি ছালাতের সময় তোমাদের সৌন্দর্যকে ধারণ কর’ (আ‘রাফ ৩১)। অর্থাৎ তোমরা পোশাক পরিধান কর ও শালীন পরিবেশ বজায় রাখ। কিন্তু দুর্গন্ধ পরিবেশকে কলুষিত করে তোলে।
হযরত জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,
مَنْ أَكَلَ ثُومًا أَوْ بَصَلاً فَلْيَعْتَزِلْنَا، أَوْ قَالَ: فَلْيَعْتَزِلْ مَسْجِدَنَا ، وَلْيَقْعُدْ فِى بَيْتِهِ–
‘যে ব্যক্তি রসুন কিংবা পেঁয়াজ খাবে, সে যেন আমাদের থেকে দূরে থাকে। অথবা তিনি বলেছেন, সে যেন আমাদের মসজিদ থেকে দূরে থাকে এবং নিজ বাড়ীতে বসে থাকে’।[1]
মুসলিম শরীফের বর্ণনায় এসেছে, مَنْ أَكَلَ الْبَصَلَ وَالثُّومَ وَالْكُرَّاثَ، فَلاَ يَقْرَبَنَّ مَسْجِدَنَا فَإِنَّ الْمَلاَئِكَةَ تَتَأَذَّى مِمَّا يَتَأَذَّى مِنْهُ بَنُو آدَمَ ‘যে ব্যক্তি পেঁয়াজ, রসুন ও কুর্রাছ[2] খাবে, সে যেন কখনই আমাদের মসজিদ পানে না আসে। কেননা বনী আদম যাতে কষ্ট পায় ফিরিশতারাও তাতে কষ্ট পায়’।[3]
হযরত ওমর (রাঃ) একদা জুম‘আর খুৎবায় বলেছিলেন, হে লোক সকল! তোমরা দু’টি গাছ খেয়ে থাক। আমি ঐ দু’টিকে কদর্য ছাড়া অন্য কিছু মনে করি না। সে দু’টি হচ্ছে পেঁয়াজ ও রসুন। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে দেখেছি, إِذَا وَجَدَ رِيحَهُمَا مِنَ الرَّجُلِ فِى الْمَسْجِدِ أَمَرَ بِهِ فَأُخْرِجَ إِلَى الْبَقِيعِ ‘কারো মুখ থেকে তিনি এ দু’টির গন্ধ পেলে তাকে মসজিদ থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দিতেন। ফলে তাকে বাক্বী গোরস্থানের দিকে বের করে দেওয়া হ’ত। সুতরাং কাউকে তা খেতে হলে সে যেন পাকিয়ে খায়’।[4]
অনেকেই কাজ-কর্ম শেষে হাত-মুখ ধুয়ে তা ঠান্ডা হওয়ার আগেই মসজিদে ঢুকে পড়ে। এদিকে ঘামের জন্য তার বগল ও মোযা দিয়ে বিশ্রী রকমের গন্ধ বের হতে থাকে। এ ধরনের লোকও উক্ত বিধানের আওতায় পড়বে। আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট হল ধূমপায়ীরা। তারা হারাম ধূমপান করতে করতে মুখে চরম দুর্গন্ধ জন্মিয়ে নেয়। এ অবস্থায় মসজিদে ঢুকে তারা আল্লাহর মুছল্লী বান্দা ও ফেরেশতাদের কষ্ট দেয়।
– মুহাম্মাদ ছালেহ আল-মুনাজ্জিদ