ইতিহাস

জালূলার যুদ্ধ ও হুলওয়ান বিজয়

ভূমিকা :

ইসলাম শান্তির ধর্ম। পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামের আগমন। যারা ইসলামী শরী‘আত ভিত্তিক জীবন পরিচালনা করতে চায়, তারা মানুষের জীবন শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে পরিচালিত হউক এটাই চায়। আরবের পথহারা মানুষগুলো যখন ইসলামের ছায়াতলে আগমন করল, তখন তারা সমাজ, রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলেন। তারা কেবল সিরিয়া, ইয়ারমূক, কাদেসিয়া বা মাদায়েনে শান্তি ও জনগণের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করে ক্ষান্ত হ’লেন না, বরং পৃথিবীর যেখানেই অশান্তি বিরাজ করছিল সেখানেই শান্তির বাণী নিয়ে হাযির হয়েছিলেন। সে উদ্দেশ্যে সেনাপতি সা‘দ (রাঃ)-এর নেতৃত্বে পরিচালনাধীন মুসলিম বাহিনী কাদেসিয়া ও পারস্যের রাজধানী মাদায়েনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার পর জালূলা ও হুলওয়ানে শান্তি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।

জালূলা শহরটি সা‘দিয়া থেকে ৮ কিলোমিটার উত্তরে এবং ইরাকের দিয়ালা নদীর কাছাকাছি বা‘কূবা শহর থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ১৬ হিজরীর ছফর মাসে মুসলিম বাহিনী জালূলার পথে রওয়ানা হন। এ যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ছিলেন সেনাপতি সা‘দ বিন আবী ওয়াক্কাছ (রাঃ)। তবে এ যুদ্ধে সরাসরি নেতৃত্ব দেন হাশেম বিন উতবা (রাঃ)। আর অগ্রবর্তী বাহিনীতে ছিলেন প্রখ্যাত সেনাপতি কা‘কা‘ বিন আমর।

মুসলিম সেনা দল :

এ যুদ্ধে প্রধান সেনাপতি হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন সা‘দ বিন আবী ওয়াক্কাছ (রাঃ)-এর ভাতিজা হাশেম বিন উতবা। অগ্রগামী বাহিনীর সেনানায়ক ছিলেন বিখ্যাত বীর কা‘কা‘ বিন আমর। ডান বা দক্ষিণ বাহুর সেনাপতি ছিলেন সা‘দ বিন মালেক। অপরদিকে উত্তর বা বাম বাহুর দায়িত্বে ছিলেন তার ভাই ওমর বিন মালেক। আর পিছন থেকে সৈন্যদের হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্বে ছিলেন আমর বিন মুররাহ।[1]

পারস্য সেনা দল :

পারস্য সম্রাট ইয়াযদাজিরদ মাদায়েনে মুসলিম সৈন্যদের উপস্থিতি জানতে পেরে সপরিবারে হুলওয়ান চলে যান। সেখানে যাওয়ার পথে পারসিকদের বিপুল সংখ্যক সৈন্য সমবেত করে তাদের নেতা হিসাবে নির্বাচন করেন মেহরানকে। মেহরান তার সৈন্যদের নিয়ে জালূলায় শিবির স্থাপন করেন। অতঃপর চারদিকে অনেক গভীর ও প্রশস্ত পরিখা খনন করেন। সাথে সাথে পরিখার পাশে কাঁটা পুঁতে রাখেন, যাতে মুসলিম সৈন্যদের পায়ে এবং তাদের ঘোড়ার পায়ে বিদ্ধ হয়। এরপর তারা রসদ-পত্র জমা করে বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান গ্রহণ করে।[2]

ঘটনা প্রবাহ :

সার্বিক অবস্থান পর্যবেক্ষণ করে সেনাপতি সা‘দ বিন আবী ওয়াক্কাছ (রাঃ) খলীফা ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ)-এর নিকট করণীয় জানতে চেয়ে পত্র লিখলেন। উত্তরে ওমর (রাঃ) লিখলেন যে, সা‘দ (রাঃ) যেন তার ভাতিজা হাশেম বিন উতবাকে আমীরের দায়িত্ব প্রদান করে হুলওয়ানের উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেন। এছাড়া তিনি সৈন্যদের বিন্যস্ত করণসহ সার্বিক বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দিয়ে সা‘দ (রাঃ)-এর নিকট পত্র লিখলেন। সেনাপতি সা‘দ (রাঃ) ওমর (রাঃ)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী তার ভাতিজা হাশেম বিন উতবার নেতৃত্বে ১২ হাযার সৈন্যের এক শক্তিশালী বাহিনী প্রেরণ করলেন। যাদের মধ্যে ছিলেন আনছার ও মুহাজির ছাহাবীগণ, অন্যান্য নেতৃ পর্যায়ের লোকেরা ও আরবের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।[3]

হাশেম বিন উতবা ১২ হাযার সৈন্য নিয়ে রওয়ানা হ’লেন জালূলার পথে। অগ্নি পূজকরা জালূলার চারদিকে পরিখা খনন করায় হাশেম বিন উতবা শহরে প্রবেশ করতে পারলেন না। ফলে তিনি জালূলা অবরোধ করলেন।[4] ঐতিহাসিক ত্বাবারী বলেন, অনারবরা মাদায়েন থেকে পলায়ন করে জালূলায় অবস্থান নিল। তারা পরস্পরে বলল, হে পারসিকগণ! তোমরা যদি আজকে বিভক্ত হয়ে যাও, তাহ’লে আর কখনও ঐক্যবদ্ধ হ’তে পারবে না। আর এ স্থান আমাদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করেছিল। অতএব তোমরা এসো আমরা আরবদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুদ্ধ করি। যদি আমরা বিজয়ী হই, তাহ’লে আমাদের উদ্দেশ্য পূরণ হবে। আর যদি পরাস্ত হই, তাহ’লে আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সম্পন্ন হবে এবং আমরা জাতির কাছে ওযর পেশ করতে পারব। অতঃপর তারা মেহরান রাযীর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শহরের চার দিকে পরিখা  খনন করল।[5]

হাশেম বিন উতবা তাদেরকে দীর্ঘ সময় ধরে অবরোধ করে রাখলেন। এ সময় মুসলমানগণ তাদের সাথে জালূলায় আশিবারের বেশি সংঘর্ষে লিপ্ত হন। প্রত্যেক বারই আল্লাহ তা‘আলা মুসলমানদেরকে তাদের উপর বিজয় দান করেন।[6] তারা মুসলমানদের উপর দফায় দফায় হামলা করছিল। পারস্য সম্রাট কিসরা হুলয়ান থেকে দলে দলে সৈন্য পাঠিয়ে তাদেরকে সাহায্য করছিলেন। অপরদিকে সা‘দ  বিন আবী ওয়াক্কাছ (রাঃ) দলে দলে মাদায়েন থেকে সৈন্য পাঠিয়ে তার ভাতিজাকে সাহায্য করছিলেন। হাশেম বিন উতবা একাধিক বার লোকদের মাঝে দাঁড়িয়ে তাদের উৎসাহিত করে বক্তব্য দিলেন। তিনি তাদেরকে আল্লাহর প্রতি ভরসা করার উপদেশ দিয়ে বললেন, তোমরা আল্লাহর কাছে একটা সুন্দর পরীক্ষা দাও, তিনি তোমাদেরকে পূর্ণ পুরস্কার ও গণীমত দিবেন। তোমরা আল্লাহকে খুশী করার জন্য কাজ কর।[7]

অপরদিকে পারসিক সৈন্যরা পরস্পরে অঙ্গীকার করেছিল এবং আগুনের নামে কসম করেছিল যে, আরবদের ধ্বংস না করা পর্যন্ত তারা পলায়ন করবে না। অবশেষে সত্য-মিথ্যার চূড়ান্ত পরীক্ষার দিন ঘনিয়ে এল। উভয় দলের মধ্যে এমন ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হ’ল যে, কাদেসিয়ায় হারীরের দিনও এত ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ হয়নি। উভয় পক্ষের তীর শেষ হয়ে গেল। বর্মগুলো ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। উভয় পক্ষের সৈন্যরা তখন কেবল তরবারী ও ত্বাবারযীনের (কুড়াল জাতীয় এক প্রকার অস্ত্র) উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ল। এর মধ্যে যোহর ছালাতের সময় হয়ে গেল। মুসলমানগণ ইশারায় যোহর ছালাত আদায় করলেন। অপরদিকে পারসিক সৈন্যরা পালাবদল করল। অর্থাৎ সামনের ক্লান্ত সৈন্যরা পশ্চাতে চলে গেল এবং পশ্চাতের সৈন্যরা সামনের কাতারে চলে আসল। এ অবস্থা দেখে মুসলমান সৈন্যগণের মনে ভয়ের সঞ্চার হ’ল। তখন কা‘কা‘ বিন আমর বললেন, হে মুসলমানগণ! পারসিক সৈন্যদের পালা বদল দেখে তোমরা কি অস্থির হয়ে পড়েছ? তারা বলল, হ্যাঁ, কেন নয়? আমরা সবাই ক্লান্ত-শ্রান্ত আর তারা উজ্জীবিত। তখন তিনি বললেন, আমরা তাদের উপর হামলা করব এবং তাদের পরাস্ত করতে আন্তরিক হব। আমরা হামলা চালাতে থাকব যতক্ষণ না আল্লাহ আমাদের ও তাদের মধ্যে ফায়ছালা করে দেন। তোমরা তাদের উপর একে একে হামলা করবে। অতঃপর আমরা সবাই একত্রে হামলা করব। অতঃপর তিনি প্রথমে হামলা করলেন এবং মুসলিম সৈন্যরাও তাঁর সাথে পারসিকদের উপর হামলায় ঝাঁপিয়ে পড়ল। কা‘কা‘ বিন আমর অশ্বারোহী ও শক্তিশালী বীরদের সাথে নিয়ে পারসিকদের উপর এমন প্রচন্ড হামলা করলেন যে, তিনি সাথীদের নিয়ে শহরের প্রবেশ মুখে পৌঁছতে সক্ষম হ’লেন। এর মধ্যে আল্লাহ তা‘আলা ঝড় পাঠালেন যা পুরো এলাকাকে অন্ধকার করে তুলল। এ সময় তাদের ঘোড়াগুলো পরিখার মধ্যে পড়ে গেল এবং তারা গর্ত থেকে ওঠার মত কোন পথও পেল না। ফলে তাদের খননকৃত গর্তে তারা নিজেরাই পতিত হ’ল। মুসলমানদের কাছে এ সংবাদ পৌঁ’ছতে দেরী হ’ল না। এ সময় পারসিকরা পরস্পর বলাবলি করল যে, আমরা কি দ্বিতীয়বার তাদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হব না-কি এভাবে মরে যাব? যখন মুসলমানগণ দ্বিতীয়বার হামলার প্রস্ত্ততি নিলেন, তখন পারসিক সৈন্যরা বের হয়ে আসল এবং পরিখার চার দিকে তীর নিক্ষেপ শুরু করল, যাতে মুসলমানদের অশ্বারোহী বাহিনী সামনে অগ্রসর হ’তে না পারে। মুসলমানগণ কৌশলে সামনে অগ্রসর হওয়া থেকে বিরত থাকলেন যাতে পারসিক বাহিনী বাইরে বের হয়ে আসে। অতঃপর পারসিকরা বাইরে এসে যুদ্ধে লিপ্ত হ’ল।[8]

এ দিন যারা বীরত্ব প্রদর্শন করেছিলেন তাদের প্রথম সারিতে ছিলেন তুলায়হা আসাদী, আমর বিন মা‘দীকারিব যুবায়দী, ক্বায়েস বিন মাকশূহ ও হুজর বিন আদী। এর মধ্যে অন্ধকার ঘনিয়ে আসল। কা‘কা‘ বিন আমর তাঁর সাথীদের নিয়ে পরিখার গেটে পৌঁছে গেলেন। রাতের অন্ধকারে কা‘কা‘ বিন আমর কি করছিলেন তার সাথীরাও তা বুঝতে পারছিলেন না এবং তিনি নিজেও কাউকে কিছু জানাননি। এরই মধ্যে একজন আহবানকারী বলে উঠল, হে মুসলমানগণ! তোমরা কোথায়? এই যে তোমাদের নেতা পরিখার সম্মুখে। এ ঘোষণা শুনে অগ্নিপূজকরা পলায়ন করল। মুসলমান সৈন্যগণ কা‘কা‘র নেতৃত্বে তাদের উপর প্রচন্ড হামলা করল। এরই মধ্যে তিনি শহরের প্রবেশ দ্বার পরিখার সম্মুখভাগ দখল করে নিলেন। মুসলমান সৈন্যগণ ব্যাপকভাবে আক্রমণ করলে পারসিক সৈন্যরা পালাতে শুরু করল। তখন মুসলিম সৈন্যগণ বিভিন্ন স্থানে ওঁত পেতে থেকে পারসিকদেরকে হত্যা করতে থাকলেন। এদিন এক লক্ষ পারসিক সৈন্য নিহত হয়। ভূপৃষ্ঠ লাশে ভরে যাওয়া এবং যমীন আচ্ছাদিত হওয়ার এ যুদ্ধকে জালূলা ( (جَلُوْلاَء -এর যুদ্ধ বলা হয়।[9] ‘জালূলা’ অর্থ  আচ্ছাদিত করা।

কেউ কেউ বলেন, যেহেতু পারসিক সৈন্যরা শহরের চারদিকে পরিখা খনন করে তার পাড়ে কাঁটা বিছিয়ে দিয়েছিল আর মুসলমান সৈন্যগণ শহরের চারদিকে ঘুরেও প্রবেশ করতে পারেনি, এজন্য এ যুদ্ধকে জালূলা বলে। আবার কেউ মনে করেন যে, এ যুদ্ধের ভয়াবহতার জন্য এ যুদ্ধের নাম জালূলা রাখা হয়েছে।[10]

ইবনুল আছীর বলেন, মুশরিক বাহিনী পরাস্ত হয়ে ডানে-বামে পলায়ন শুরু করে এবং নিজেদের পাতানো কাঁটাতারে জড়িয়ে ধ্বংস হ’তে থাকে। তাদের ঘোড়ার পায়ে বিদ্ধ হয় তাদের পাতানো কাঁটা। অপরদিকে পদাতিক বাহিনীর পায়ে সেগুলো বিদ্ধ হয়ে তারা যখমী হ’তে থাকে। মুসলমানগণ তাদের উপর হামলা করলে হাতে গোনা কয়েকজন ব্যতীত সকলে নিহত হয়।[11]

এদিন মুসলিম সৈন্যগণ বহু সম্পদ, অস্ত্র-সস্ত্র, স্বর্ণ ও রৌপ্য গণীমত হিসাবে লাভ করেন। যার পরিমাণ প্রায় মাদায়েনে প্রাপ্ত সম্পদের সমান। শা‘বী বলেন, জালূলার দিন ত্রিশ লাখ দিরহাম মুসলমান সৈন্যগণ গণীমত হিসাবে লাভ করেন। যার খুমুস (এক-পঞ্চমাংশ) বের হয় ছয় লক্ষ দিরহাম। এ দিনে অশ্বারোহী বাহিনীর প্রত্যেকে ১২ হাযার দিরহাম ভাগে পেয়েছিলেন। কেউ কেউ বলেন, তারা প্রত্যেকে ভাগে পেয়েছিলেন নয় হাযার দিরহাম ও নয়টি করে গবাদি পশু।[12]

সালমান ফারেসী (রাঃ) সৈন্যদের মাঝে গণীমতের মাল সমূহ বণ্টন করে দেন। অতঃপর সা‘দ বিন আবী ওয়াক্কাছ, যিয়াদ বিন আবু সুফিয়ান, কাযাঈ বিন আমর ও আবু মুকারি্রন আসওয়াদের মাধ্যমে গণীমতের এক-পঞ্চমাংশ (মাল, দাস-দাসী ও গবাদি পশু) খলীফা ওমর (রাঃ)-এর নিকট পাঠিয়ে দেন। তারা ওমর (রাঃ)-এর নিকট আসলে তিনি যিয়াদ বিন আবু সুফিয়ানকে যুদ্ধের ঘটনা সমন্ধে জিজ্ঞেস করেন। যিয়াদ ছিলেন বড় বাগ্মী। যিয়াদের বর্ণনা শুনে ওমর (রাঃ) খুব খুশি হ’লেন এবং তিনি চাইলেন যে তার মুখ থেকে মুসলমানদেরকে যুদ্ধের ঘটনা শুনাবেন। তিনি যিয়াদকে বললেন, তুমি আমাকে যেভাবে যুদ্ধের ঘটনা শুনালে, এভাবে লোকদেরকে শুনাতে পারবে? সে বলল, হে আমীরুল মুমিনীন! অবশ্যই পারব। কারণ পৃথিবীর বুকে এমন কোন মানুষ নেই যাকে আপনার চেয়ে বেশী ভয় করি। তাহ’লে অন্যদের সামনে জালূলার যুদ্ধের ঘটনা বর্ণনা করতে পারব না কেন? অতঃপর তিনি লোকদের সামনে দাঁড়িয়ে যুদ্ধের ঘটনা বর্ণনা করলেন। তিনি বাগ্মীতার সাথে এও বর্ণনা করলেন যে, তারা কতজন পারসিক সৈন্যকে হত্যা করেছেন, কত সম্পদ গণীমতের মাল হিসাবে লাভ করেছে। তখন ওমর (রাঃ) বললেন, এতো খুবই শুদ্ধভাষী বক্তা। তখন যিয়াদ বললেন, আমাদের সৈন্যরা তাদের কর্মকান্ডের মাধ্যমে আমাদের যবান খুলে দিয়েছে। এরপর ওমর (রাঃ) কসম করে বললেন, এ সম্পদ গুদাম ঘরে প্রবেশের পূর্বে বণ্টন হয়ে যাবে। আব্দুল্লাহ বিন আরকাম ও আব্দুর রহমান বিন আওফ (রাঃ) এ সম্পদগুলো মসজিদে রেখে রাতে পাহারা দিলেন। সকাল হ’লে ওমর (রাঃ) ফজর ছালাত সমাপ্ত করে সূর্য উদিত হওয়ার পর সম্পদগুলোর সামনে আসলেন। তিনি সেগুলোর উপর থেকে পর্দা সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। তিনি সেখানে ইয়াকূত, যাবারযাদ (গোমেদ, পীতবর্ণের মতি) হলুদ স্বর্ণ ও সাদা রৌপ্য দেখে কান্না শুরু করলেন। তখন আব্দুর রহমান বিন আউফ (রাঃ) তাকে বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আপনাকে কিসে কাঁদাল? আল্লাহর কসম! এটাতো আনন্দ ও আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সময়। তখন ওমর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমাকে অন্য কিছু কাঁদায়নি। আল্লাহর কসম! আল্লাহ যখনই কোন কওমকে এরূপ সম্পদ দান করেছেন, তখনই তারা পরস্পরে হিংসা-বিদ্বেষে লিপ্ত হয়েছে। আর যখনই তারা পরস্পরে হিংসায় লিপ্ত হয়, তখনই আল্লাহ তাদের মধ্যে যুদ্ধ চাপিয়ে দেন। অতঃপর কাদেসিয়ার সম্পদগুলোর ন্যায় জালূলার সম্পদগুলো বণ্টন করে দেওয়া হ’ল।[13]

ওমর (রাঃ) সেনাপতি সা‘দ বিন আবী ওয়াক্কাছ (রাঃ)-এর নিকট পত্র লিখলেন যে, আল্লাহ যদি তোমাকে জালূলার বিজয় দান করেন, তাহ’লে কা‘কা‘ বিন আমরকে পলায়নকারী লোকদের পিছনে পাঠিয়ে দিবে। অতঃপর সে হুলওয়ানে অবতরণ করবে। যাতে সে মুসলমানদের রক্ষার কারণ হয়ে যায় এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য সাওয়াদ (سَوَاد )-অঞ্চলকে রক্ষা করেন। আল্লাহ যখন জালূলাবাসীকে পরাস্ত করলেন, তখন হাশেম বিন উতবা সেখানে অবস্থান করলেন এবং কা‘কা‘ বিন আমর শত্রুদের অনুসরণ করে পলায়নকারী পারসিক যোদ্ধাদের সাথে মিলিত হ’লেন। তিনি সেখানে পারসিক সেনাপতি মেহরান সহ বহু লোককে হত্যা ও বহু লোককে বন্দি করলেন। ফায়রুযান (الْفَيْرُزَانُ ) তাদেরকে মুক্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হ’ল। সম্রাট ইয়াযদাজিরদ (يَزْدَجِرْدُ ) মুসলমানদের উপস্থিতি, জালূলার পরাজয় ও সেনাপতি মেহরানের হত্যার সংবাদ শুনতে পেয়ে খেসরুশানূম-এর নেতৃত্বে একদল অশ্বারোহী সৈন্যকে দায়িত্ব দিয়ে তিনি হুলওয়ান থেকে রায়-এর দিকে পলায়ন করলেন। কা‘কা‘ বিন আমর যখন শীরীন প্রাসাদের উপকণ্ঠে উপনীত হ’লেন, তখন খেসরুশানূম ও হুলওয়ানের দিহকানরা (অঞ্চল প্রধানরা) যুদ্ধের জন্য বের হয়ে আসল। কা‘কা‘ প্রাসাদের উপরে তাদেরকে হত্যা করলেন এবং খেসরুশানূম পলায়ন করল। অতঃপর হুলওয়ান মুসলমানদের অধিকারে চলে আসল।[14]

মুসলমানগণ সেখানেও বহু গণীমতের মাল লাভ করলেন। অনেককে বন্দী করলেন। কা‘কা‘ বিন আমর পারসিকদেরকে ইসলাম গ্রহণ করার আহবান জানালেন। এতে তারা অস্বীকৃতি জানাল। ফলে তিনি তাদের উপর জিযিয়া আরোপ করলেন। তিনি সেখানে অবস্থান করতে থাকলেন। এরই মধ্যে সা‘দ (রাঃ) মাদায়েন থেকে কূফায় চলে গেলেন।[15]

আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি জালূলার ময়দানে উপস্থিত হয়েছিলাম। অতঃপর চল্লিশ হাযার দিরহামের বিনিময়ে কিছু গণীমতের সম্পদ ক্রয় করলাম। এরপর সেগুলো নিয়ে আমার পিতা ওমর (রাঃ)-এর নিকট আসলাম। তিনি দেখে বললেন, এগুলো কি? আমি বললাম, চল্লিশ হাযার দিরহামের বিনিময়ে গণীমতের কিছু সম্পদ ক্রয় করেছি। তখন তিনি বললেন, হে ছাফিয়া! আব্দুল্লাহ যা নিয়ে এসেছে, তা সংরক্ষণ কর। আমি তোমাকে দৃঢ়তার সাথে বলছি, তুমি এগুলোর কিছু বের করবে না। সে বলল, হে আমীরুল মুমিনীন! যদিও তা অপবিত্র হয়? তিনি বললেন, সেটা তোমার ব্যাপার। অতঃপর আব্দুল্লাহ বিন ওমরকে বললেন, হে আব্দুল্লাহ! যদি আমাকে জাহান্নামে (আগুনে) টেনে নিয়ে যাওয়া হয়, তাহ’লে কি তুমি ফিদইয়া দিয়ে আমাকে রক্ষা করবে? আমি বললাম, হ্যাঁ। যদিও আমার সাধ্যের মধ্যের সব কিছু দিয়ে হয়। তিনি বললেন, আমি যেন তোমাকে জালূলার দিনে প্রত্যক্ষ করছি আর তুমি বায়‘আত গ্রহণ করছ এবং লোকেরা বলছে, তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছাহাবী ও আমীরুল মুমিনীন ওমর (রাঃ)-এর পুত্র আব্দুল্লাহ। তিনি তার পরিবারের মধ্যে তাকে বেশী স্নেহ করেন। আর তুমি তো এমনটাই যেমন লোকেরা বলছে। আর তারা তোমাকে এক দিরহাম কম দেওয়া থেকে একশ’ দিরহাম বেশী দেওয়াতে বেশী খুশি হবে। কারণ আমি বণ্টনকারী। তবে আমি তোমাকে এক কুরায়েশী লোকের তুলনায় অতিরিক্ত লাভ দিব। আমি তোমাকে দিরহামের বিনিময়ে দিরহামই লাভ দিব। এরপর সাত দিন চলে গেল। তিনি ব্যবসায়ীদের ডেকে চল্লিশ হাযার দিরহামের মাল, চার লক্ষ দিরহামে বিক্রয় করে আমাকে আশি হাযার দিরহাম ফেরৎ দিলেন। বাকী তিন লাখ বিশ হাযার দিরহাম সা‘দ (রাঃ)-এর নিকট পাঠিয়ে বলে দিলেন, এ সম্পদগুলো যেন কাদেসিয়ায় অংশগ্রহণকারীদের মাঝে বিতরণ করে দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে কেউ মারা গেলে সেটা যেন তার ওয়ারিছদের মাঝে বিতরণ করা হয়।[16]

মুছেল ও তিকরিতের পথে মুসলিম বাহিনী :

সা‘দ বিন আবী ওয়াক্কাছ (রাঃ) যখন জানতে পারলেন যে, মুছেলের অধিবাসীরা সেনাপতি আন্তাকের الْأَنْطَاق) ) নেতৃত্বে তিকরিতে সমবেত হচ্ছে, তখন তিনি খলীফা ওমর (রাঃ)-এর কাছে সংবাদ জানিয়ে পত্র লিখলেন। ওমর (রাঃ) পত্রে নির্দেশনা দিয়ে বললেন, তুমি আন্তাকের বিরুদ্ধে আব্দুল্লাহ বিন মু‘তাম্মকে পাঠিয়ে দিবে। যার অগ্রভাগে থাকবে বিরঈ ইবনুল আফকাল আনাযী (رِبْعِيُّ بْنُ الْأَفْكَلِ ) এবং অশ্বারোহী বাহিনীর প্রধান হিসাবে থাকবে আরফাজাহ বিন হারছামাহ বারেকী।[17] এছাড়া দক্ষিণ বাহুর নেতৃত্ব দিবে হারেছ বিন হাসসান যুহলী, বাম বাহুর নেতৃত্ব দিবে ফুরাত বিন হাইয়ান এবং মূল লোকদেরকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব থাকবে হানী বিন কায়েসের উপর।[18]

আব্দুল্লাহ বিন মু‘তাম্ম তার সৈন্যদের পাঁচভাগে ভাগ করে চারভাগ সৈন্য নিয়ে তিকরিতের পথে রওয়ানা হ’লেন। তিনি তিকরিতে গিয়ে আন্তাকের মুখোমুখি অবস্থান নিলেন। তিনি সেখানে গিয়ে জানতে পারলেন যে, সেখানে রোমের একটি সৈন্যদল তাদের বিরুদ্ধে সমবেত হয়েছে। আরো সমবেত হয়েছে শাহারেজার (الشَّهَارِجَة) একটি দল। এছাড়া সমবেত হয়েছে আরবের ইয়াদ, তাগলীব ও নামির গোত্রের খ্রিষ্টানরা। তিনি লক্ষ্য করলেন যে, তারা সবাই মিলে তিকরিত শহর ঘিরে রেখেছে। আব্দুল্লাহ তার সৈন্যদের নিয়ে তাদের অবরোধ করলেন। এ অবরোধ চল্লিশ দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকল। এই চল্লিশ দিনে মুসলমানগণ তাদের সাথে চবিবশবার যুদ্ধে লিপ্ত হ’লেন। বারবারই মুসলমানগণ তাদের উপর বিজয়ী হ’লেন এবং তাদেরকে ধরাশায়ী করলেন। এ অবস্থা দেখে রোম থেকে আগত সৈন্যরা মাল-সামান নিয়ে জাহায যোগে পলায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল। আব্দুল্লাহ সুকৌশলে আরব থেকে আসা ইয়াদ, তাগলীব ও নামির গোত্রের সৈন্যদের সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে দলে ভিড়ানোর চেষ্টা করলেন। এ তিন গোত্রের সৈন্যরা ইসলাম গ্রহণের বিনিময়ে তাদের নিরাপত্তা চেয়ে আব্দুল্লাহর কাছে পত্র লিখল এবং তারা এটাও বলল যে, তারা মুসলমানদের সাথে থাকবে।

আব্দুল্লাহ তাদের কাছে পত্র লিখে জানালেন যে, তোমরা যদি সত্যবাদী হও, তাহ’লে তোমরা ইসলাম গ্রহণ কর এবং সাক্ষ্য দাও যে, ‘আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল’। সাথে সাথে আল্লাহর পক্ষ থেকে যে শরী‘আত এসেছে তা মেনে নাও’। তারা উত্তরে লিখল যে, আমরা ইসলাম গ্রহণ করলাম। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, দূতেরা এসে জানাল যে, তারা ইসলাম গ্রহণ করেছে। তখন তিনি লিখলেন যে, তোমরা যদি সত্যবাদী হও, তাহ’লে আমরা যখন রাতে তাকবীর ধ্বনি দিয়ে শহরে হামলা করব, তখন তোমরাও তাকবীর ধ্বনি দিয়ে জাহাযের প্রবেশদ্বার বন্ধ করে দিবে এবং তাদেরকে জাহাযে আরোহণ করা থেকে বিরত রাখবে। আর তাদের যাদেরকে সামনে পাবে তাদের হত্যা করবে’। এরপর আব্দুল্লাহ ও তাঁর সাথীরা হামলা করার প্রস্ত্ততি নিলেন। একজনের তাকবীর ধ্বনি শুনে তারা সকলে তাকবীর ধ্বনি দিয়ে শহরে হামলা করলেন। অপর প্রান্ত থেকে আরবের নতুন মুসলমানগণ তাকবীর ধ্বনি দিলেন। এতে শহরবাসী দিশেহারা হয়ে পড়ল। তারা দাজলা নদীর নিকটস্থ ফটক দিয়ে বের হ’তে শুরু করল। ইয়াদ, নামির ও তাগলীব গোত্রের নওমুসলিমগণ তাদের মুখোমুখি হ’ল এবং রোম থেকে আসা বহু সৈন্যকে হত্যা করতে সক্ষম হ’ল। অন্যদিকে আব্দুল্লাহ তাঁর সাথীদের নিয়ে শহরের অপর ফটক দিয়ে প্রবেশ করে শহরে অবস্থানকারী সকল যোদ্ধাকে হত্যা করলেন। আরবের ইয়াদ, তাগলীব ও নামির গোত্রের লোকেরা ব্যতীত কেউ ইসলাম গ্রহণ করল না।[19]

ওমর (রাঃ) সা‘দ বিন আবী ওয়াক্কাছ (রাঃ)-এর কাছে লিখেছিলেন যে, মুসলমান সৈন্যগণ তিকরিতের উপর বিজয় লাভ করলে যেন রিবঈ বিন আফকালকে পূর্ব নিনাওয়ার দুর্গ ও মুছেলে অবস্থিত পাশ্চাৎ দুর্গ দখলের জন্য দ্রুত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আব্দুল্লাহ বীরযোদ্ধাদের একটি দল ও ইয়াদ, তাগলীব ও নামির গোত্রের নওমুসলিমদের সাথে নিয়ে দ্রুত দুর্গদ্বয় দখলের জন্য রওয়ানা হ’লেন। দুর্গের অধিবাসীরা মুসলিম সৈন্যদের উপস্থিতি দেখে সন্ধির প্রস্তাব দিল। মুসলিম সৈন্যরা তাদের উপর জিযিয়া ধার্য করে তাদের নিরাপত্তা দানের প্রতিশ্রুতি দিলেন। সেখানে তারা অনেক গণীমত লাভ করলেন। প্রত্যেক অশ্বারোহী সৈন্য তিন হাযার দিরহাম এবং পদাতিক বাহিনীর প্রত্যেক সৈনিক এক হাযার দিরহাম ভাগে পেলেন। বাকী এক-পঞ্চমাংশ ফুরাত বিন হাইয়ানের দায়িত্বে ওমর (রাঃ)-এর কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হ’ল। রিবঈ বিন আফকালকে মুছেলের গভর্ণর নিযুক্ত করা হ’ল এবং আরফাজাহ বিন হারছামাহকে জিযিয়া আদায়ের দায়িত্ব প্রদান করা হ’ল।[20]

উপসংহার :

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘সত্য সমাগত, মিথ্যা অপসৃত। নিশ্চয়ই মিথ্যা অপসৃত হওয়ার বিষয়’ (ইসরা ১৭/৮১)। সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী। মুসলিম সৈন্যগণ যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছেন, তাদের উপরই বিজয় লাভ করেছেন। তাদের পরাজিত হওয়ার ইতিহাস খুবই বিরল। খুব কম যুদ্ধে মুসলমানদের সৈন্য সংখ্যা বেশী ছিল। তার পরেও তারা বিজয় লাভ করেছেন। কারণ তারা ছিলেন সত্য ও ন্যায়ের প্রতীক। তারা যুদ্ধ করতেন ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য। সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে অশান্তি দূর করে জনগণের নিরাপত্তা ও

তাদের শান্তি নিশ্চিত করার জন্য। বদর, ওহোদ, মুতা ইত্যাদি তারই সাক্ষ্য বহন করে। এছাড়া নাহাওয়ান্দ, ইয়ারমূক, কাদেসিয়া, মাদায়েন ইত্যাদি যুদ্ধগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, মুসলমানগণ যুদ্ধ এড়ানোর জন্য কাফির-মুশরিকদেরকে একাধিকবার সন্ধির আহবান জানিয়েছেন। কিন্তু তারা কোন মতেই সে আহবানে সাড়া দেয়নি। জনগণের নিরাপত্তা দানে সম্মত হয়নি। তারা যখন মুসলমানদের বিরুদ্ধে সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়েছে, কেবল তখনই তারা আত্মরক্ষার জন্য যুদ্ধ  করতে বাধ্য হয়েছেন। সকল মানুষের অধিকার আছে আত্মরক্ষা করার।

বর্তমান কালেও যেকোন সমস্যার সমাধানের জন্য মুসলমানদেরকে ফিরে যেতে হবে রাসূল (ছাঃ)-এর রেখে যাওয়া শান্তির মিশনে। চরমপন্থা অবলম্বন করে যেমন শান্তি কায়েম করা সম্ভব নয়, তেমনি শৈথিল্যের পথ গ্রহণ করেও ইসলাম টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে আমাদেরকে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করতে হবে। যা নবী-রাসূলগণের পথ। অতএব আসুন, আমরা শান্তির বাণী সকলের কাছে পৌঁছে দেই। সকলের মাঝে সৃষ্টি করি নৈতিকতা, জাগ্রত করি মানবতা বোধ। মুসলিম ও অমুসলিম সকলেই বাস করুক শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে। ইসলামী জিহাদ চিরদিন সে পথেই পরিচালিত হয়েছে। আল্লাহ আমাদের হেফাযত করুন-আমীন!

আব্দুর রহীম

 


[1]. ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ৭/৬৩।

[2]. আল-বিদায়াহ ৭/৬৩।

[3]. তারীখে ত্বাবারী ৪/২৫; আল-বিদায়াহ ৭/৬৯; ইবনুল জাওযী, আল-মুন্তাযাম, ৪/২১৩, ইবনুল আছীর, আল-কামিল ২/৩৪৬; শামসুদ্দীন যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিল নুবালা ২/৪৩১।

[4]. তদেব।

[5]. ত্বাবারী ৪/২৪; তাজারুবুল উমাম ওয়া তা‘আকাবুল হুমাম ১/৩৬২।

[6]. ত্বাবারী ৪/২৫।

[7]. ত্বাবারী ৪/২৫; আল-বিদায়াহ ৭/৬৯।

[8]. ত্বাবারী ৪/২৫; আল-বিদায়াহ ৭/৬৯; আল-কামিল ২/৩৪৬; আল-মুন্তাযাম ৪/২১৩; তাজারুবুল উমাম ১/৩৬৩

[9]. তদেব

[10]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২/৪৩১

[11]. আল-কামিল ২/৮৪৬

[12]. আল-বিদায়াহ ৭/৭০

[13]. সোলায়মান হুমায়রী, আল-ইকতেফা ২/৫২৯; ত্বাবারী ৪/৩০; আল-মুন্তাযাম ৪/২১৪; আল-বিদায়াহ ৭/৭০; ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩৫৬৮৭

[14]. আল-মুন্তাযাম ৪/২১৫; আল-বিদায়াহ ৭/৭৯; আল-ইকতেফা ২/৫২৯; ত্বাবারী ৪/৩০

[15]. আল-বিদায়াহ ৭/৭১

[16]. মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩৩৭৭৯; আল-মুন্তাযাম ৪/২১৪

[17]. আল-বিদায়াহ ৭/৭১; আল-কামিল ২/৩৪৮

[18]. আল-বিদায়াহ ৭/৭২

[19]. আল-বিদায়াহ ৭/৭২

[20]. আল-বিদায়াহ ৭/৭২; আল-কামিল ২/৩৪৯

মন্তব্য করুন

Back to top button