কবিগুরুর অর্থকষ্টে জর্জরিত দিনগুলো
ড. গুলশান আরা
শুনতে খটকা লাগলেও সত্যি জমিদার রবীন্দ্রনাথও জীবনের কোন এক সময়ে ঋণগ্রস্ত হয়েছেন, টাকার প্রয়োজনে হাত পেতেছেন অন্যের কাছে। মহৎ কিছু কাজ সম্পাদন করতেই তার এই দুরবস্থা।
অন্য জমিদাররা যেখানে লক্ষ মুখ দিয়ে অক্ষমের বক্ষ হতে রক্ত শুষে পান করছে- সেখানে দরিদ্র প্রজার জন্য রবীন্দ্রনাথ ছিলেন উদ্বিগ্ন। প্রতিনিয়ত চিন্তা করতেন কি করে দরিদ্র প্রজাকে অর্থনৈতিক মুক্তি দেয়া যায়। রবীন্দ্রনাথ কৃষকদের চাষাবাদ প্রক্রিয়ায় সহযোগিতার জন্য ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করেন। অত্যন্ত সহজ শর্তে এই ক্ষুদ্র ঋণ পরিকল্পনা গৃহীত হয়। কেননা এ সময় কৃষকরা মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সূদে ঋণ নিয়ে মরণদশায় পড়ে। এ প্রসঙ্গে সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী লিখেছেন- রবীন্দ্রনাথ জমিদার হিসাবে মহাজনের কবল থেকে প্রজাকে রক্ষা করার জন্য আজীবন কী করে এসেছেন তা আমি সম্পূর্ণ জানি। কেননা তার জমিদারী সেরেস্তায় আমিও কিছুদিন আমলাগিরি করেছি। আর আমাদের একটা বড় কর্তব্য ছিল, সাহাদের হাত থেকে শেখদের বাঁচানো।
কৃষকদের বাঁচাতে ১৯০৬ সালে রবীন্দ্রনাথ পতিসরে একটি কৃষি ব্যাংক স্থাপন করেন। বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকে অনেক টাকা ঋণ করে তিনি এ কাজটি আরম্ভ করেন। পরবর্তীতে ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কারের সমস্ত টাকা বিশ্বভারতীকে দিয়ে দেন। বিশ্বভারতী নোবেল পুরস্কারের এক লক্ষ আশি হাযার টাকা বিনিয়োগ করলেন পতিসর কৃষি ব্যাংকে, ৮% সূদে। ফলে কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ নেবার চাহিদা বেড়ে গেল। কিন্তু ‘রুরাল ইন ডেটেওনস অ্যাক্ট’ প্রবর্তন হবার ফলে প্রজাদের ধার দেয়া টাকা আর ফেরত নেয়া গেল না। রবীন্দ্রনাথের নোবেল প্রাইজের টাকা, তার বন্ধুদের কাছ থেকে ধার করা টাকা, স্থানীয় আমানতকারীদের টাকা- সব নিয়ে কৃষি ব্যাংকের ভরাডুবি হয়ে গেল।
কৃষকদের অর্থনৈতিক অবস্থার স্থবিরতা দূর করার জন্য রবীন্দ্রনাথ বলেন্দ্রনাথ ও সুরেন্দ্রনাথের সহযোগিতায় শিলাইদহে পাটের ব্যবস্থা শুরু করেন। তিনি এই ব্যবসাকে প্রাতিষ্ঠানিক্ব রূপ দিতে নামকরণ করলেন ‘টেগোর অ্যান্ড কোং’। যাদের কাজ হল পাট গাঁট বেঁধে কলতায় রফতানী করা এবং আখ মাড়াই, কল ভাড়া দেয়া। ওরা মোকামে বসে পাটের গাঁট বানিয়ে কলকাতায় চালান দেন, মারোয়াড়ি ব্যবসাদার তা কিনে নেয়। বেশ লাভ হতে লাগল।
কিন্তু বারবার এমন শুভক্ষণ আসেনি বিশ্বকবির জীবনে। যতবার ব্যবসা করতে গেছেন, প্রথমে কিছুদিন একটু সোনালী রেখা দেখতে পাওয়ার পরই ক্ষতি শুরু হয়েছে। সুরেন্দ্রের সঙ্গে যৌথ ব্যবসায় নেমে কোন এক মারোয়াড়ির কাছ থেকে ঋণ করতে হয়েছিল পঞ্চাশ হাযার টাকা। যথাসময়ে অনাদায়ে সেই মহাজন কবি ও তার ভ্রাতুষ্পুত্রকে জেল খাটাবার উপক্রম করেছিল। তারকনাথ পালিতের কাছ থেকে পঞ্চাশ হাযার টাকা নিয়ে সেই মারোয়াড়ির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। কিন্তু এটা তো ঋণ; এ বাবদে রবীন্দ্রনাথকে নিজের অংশেই মাসিক সূদ দিতে হয় একশ পঁয়ত্রিশ টাকা তের আনা চার পাই। প্রতি মাসে সেই অর্থ জোগাড়ের দুশ্চিন্তাও মাথায় রাখতে হয়।
রবীন্দ্রনাথ কিছুটা ঝোঁকের মাথায় শান্তি নিকেতনে আশ্রম-বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন। তার ছেলে রথীন্দ্রনাথ এ বিষয়ে জানাচ্ছেন- শান্তি নিকেতনে শিক্ষা নিয়ে বাবা যে পরীক্ষণের পত্তন করেছিলেন তার জন্যে তাকে যে কী পরিমাণ বেগ পেতে হয়েছিল, সে কথা খুব কম লোকেই জানতো বা বুঝতো।
বিদ্যালয়ের কাজ তো শুরু হল, কিন্তু ছাত্র সংগ্রহ করা- সে এক দুঃসাধ্য ব্যাপার। যেসব ছাত্র এলো তাদের অনেকে ছিল যাকে বলে বাপে-তাড়ানো, মায়ে-খেদানো দুরন্ত ছেলে। বেশকিছু লোকের মনে বিদ্যালয়ের প্রতি ছিল অসীম অবজ্ঞা। বিদ্যালয়ে বাবা যে সমস্ত নতুন প্রথা-পদ্ধতি প্রবর্তিত করলেন, তা নিয়ে তারা হাসাহাসি করতেন। এ বিদ্যালয় যে কেবল দুরন্ত ছেলেদের শায়েস্তা করার সংশোধনাগার নয়, এই বোধ জাগ্রত হয়েছিল অনেক পরে। তার উপর ছিল বিদ্যালয়ের প্রতি ইংরেজ সরকারের বিরাগ ও সন্দেহ। তাদের ধারণা হয়েছিল, এই প্রতিষ্ঠান স্বদেশী ও রাজদ্রোহ প্রচারের কেন্দ্র। এই ধারণার বশবর্তী হয়ে তারা কোন কোন রাজকর্মচারীর কাছে গোপন-সার্কুলার পাঠিয়ে সাবধান করে দিয়েছিলেন। তারা যেন শান্তি নিকেতন বিদ্যালয়ে ছেলে না পাঠান। বৈষয়িক দিক থেকে বিবেচনা করলে বলা চলে যে, এই রকম প্রচেষ্টায় নামতে যাওয়া তখনকার অবস্থায় বাবার পক্ষে নিতান্তই অবিবেচনার কাজ হয়েছিল। সে সময় নিজের পরিবার প্রতিপালনের দিক থেকেই তার আয় যথেষ্ট ছিল না, তাছাড়া কুষ্টিয়ার ব্যবসা ফেল পড়ায় বাজারে তখন প্রচুর দেনা। বিষয়-সম্পত্তি, এমনকি আমার মার গহনা পর্যন্ত বিক্রি করে তাকে বিদ্যালয়ের খরচ নির্বাহ করতে হয়েছে। বিয়ের সময়ে যৌতুক স্বরূপ তিনি যে সোনার লকেট, ঘড়ি ও চেন পেয়েছিলেন, সেটিও জনৈক বন্ধুর কাছে বিক্রি করতে হয়।
এসব না করে তো উপায় ছিল না- বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলে পিছিয়ে আসার পথ বন্ধ। বিনা বেতনে ছাত্রদের পড়ানো, তাদের আহার-বাসস্থানের ব্যবস্থা ঠিক রাখা সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষকদের প্রতিমাসে বেতন দিতেই হবে। মাসের শেষে রবীন্দ্রনাথকে তাই দারুণ উৎকণ্ঠার মধ্যে কাটাতে হয়। শিক্ষকদের বেতন দিতে না পারলে অসন্তোষের সৃষ্টি হতে পারে। ছাত্রদের প্রতিদিনের খাদ্য সরবরাহ যদি ঠিকমত না হয়- তাহলে কী হবে! আরো টুকিটাকি খরচ থাকে, মাঝে মধ্যে বড় ধরনের খরচও এসে পড়ে।
ভর্তির সময় অভিভাবকদের জানানো হয়েছিল যে, এই আদর্শ বিদ্যালয়টি অবৈতনিক যেমন প্রাচীনকালে গুরুর আশ্রমে শিষ্য-ছাত্রদের কোন খরচ দিতে হত না। এখন হঠাৎ অভিভাবকদের কাছে টাকা চাওয়া যায় কীভাবে? হিসেব করে দেখা গেছে- প্রতিটি ছাত্রের জন্য মাসে অন্তত পনেরো টাকা খরচ পড়েই। বছরে একশ আশি টাকা। রবীন্দ্রনাথ ভেবেছিলেন তার এই শুভ উদ্দেশ্য দেখে বন্ধু ও শুভার্থীরা স্বেচ্ছায় সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসবেন। যদি দেশের একেকজন ধনী ব্যক্তি একেকটি ছাত্রের জন্য বছরে একশ আশি টাকা দিতেন তাহলে কোন সমস্যা থাকতো না। কয়েকজনের কাছে আবেদন করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। ত্রিপুরার মহারাজা মাসিক পঞ্চাশ টাকা পাঠান, দু-একজন কখনও কিছু সাহায্য করেন, তা সিন্ধুতে বিন্দুর মতন।
এক সময় হঠাৎ খুব টাকার টানাটানি পড়েছিল, শান্তি নিকেতনের ছাত্রদের খেতে না পাওয়ার মতো অবস্থা। শিক্ষকদের বেতন দেয়া যাচ্ছিল না। রবীন্দ্রনাথ সে সময় হন্যে হয়ে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করছিলেন- প্রিয়ংবদা কী করে যেন তার প্রিয় কবির অত দুশ্চিন্তার কথা শুনে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে ঋণ দিয়েছিলেন দশ হাযার টাকা। রবীন্দ্রনাথ প্রতিমাসে কিছু কিছু টাকা শোধ করছেন। কোন রমণীর কাছে যদি অর্থঋণ থাকে, কোন অধমর্ণ পুরুষ কি তার সঙ্গে মধুর ভাবের কথা বলতে পারে! কবির এই সঙ্কটের কথা জেনে প্রিয়ংবদা আরো পাঁচশ টাকা পাঠালেন শান্তি নিকেতনের জন্য, এটা ঋণ নয়- দান।
টাকা টাকা টাকা। সব সময় টাকার চিন্তা। কবিপুত্র রথী জানাচ্ছেন সেই দুঃসময়ের কথা- বিদ্যালয়ের আয়তন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অর্থকষ্ট বৃদ্ধি পেতে লাগল। বাবা তার বন্ধু লোকেন পালিতের বাবা স্যার তারকনাথ পালিতের কাছে হাত পাতলেন, কিছু ঋণ পাবার উদ্দেশ্যে। পালিত মহাশয়ের জীবৎকালে এই ঋণ পরিশোধ করা যায়নি। মৃত্যুকালে তার যাবতীয় সম্পত্তি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে দান করেন, ফলে বাবাকে দেওয়া এই ঋণের টাকাটাও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাপ্য হল। এই ঋণ নিয়ে বাবার দুশ্চিন্তার অন্ত ছিল না। ১৯১৬-১৭ সালে আমেরিকায় বাবার যে বক্তৃতা সফর হয় তার ফলে অর্থাগম হয়েছিল প্রচুর। এই সফরের ব্যাপারে বাবার ক্লান্তি ছিল না। তার ধারণা হয়েছিল, এ থেকে যে টাকা আসবে তা দিয়ে শান্তি নিকেতনকে তিনি মনের মতন গড়ে তুলতে পারবেন। সব ধার শোধ হয়ে যাবে এবং আর কখনো কারো কাছে হাত পাততে হবে না। কিন্তু দুর্ভাগ্য এবারও তার আশা-আকাঙ্খা ভূমিসাৎ করেছিল। যে সংস্থা এই বক্তৃতা সফরের ব্যবস্থা করেছিলেন সফরের শেষদিকে নিজেকে দেউলিয়া বলে ঘোষণা করলেন। বাবার পাওনা হয়েছিল বেশ কয়েক লক্ষ টাকা। পিয়ার্গণ সাহেব বহু কষ্টে কুড়িয়ে বাড়িয়ে যা পেয়েছিলেন, তা কয়েক হাযারের বেশি হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের দেনা শোধ করতেই এই টাকাটা খরচ হয়ে গিয়েছিল। উদ্ধৃত্ত আর কিছু ছিল না। ইউরোপে যখন বাবার বইয়ের খুবই কাটতি তখন আশা করা গিয়েছিল, লক্ষ্মী ঠাকরুন এবার হয়তো মুখ তুলে চাইবেন। কিন্তু এমনি কপাল যখন তার নাম বিশ্ববিখ্যাত হল, জগৎজোড়া খ্যাতি জুটল ঠিক সেই সময়ে লাগল প্রথম মহাযুদ্ধ। সুতরাং রয়্যালিটির টাকা সব আর হাতে এলো না।
বাবাকে প্রায়ই বেরোতো হতো ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে। ১৯২০ সালে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অর্থ সংগ্রহের চেষ্টায় তিনি আমেরিকায় গেছেন আমি তার সঙ্গে ছিলাম। …শুনেছিলাম বেশ কয়েক লক্ষ ডলার নিয়ে আমরা দেশে ফিরতে পারব। শেষ পর্যন্ত যা হাতে এলো তা কয়েক হাযার ডলার মাত্র।…
বাবা যখন দেশে ফিরলেন, মন তার ভেঙে গেছে। পরে শুনেছিলাম একেবারে শেষ মুহূর্তে ওয়াল স্ট্রিটের কুবেরের ভান্ডারে কুলুপ পড়েছিল ইংরেজ সরকারের হস্তক্ষেপের ফলে। ব্রিটিশ সরকার নাকি এমন আভাস দিয়েছিলেন যে, ভারতের বেসরকারী একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য আমেরিকা যদি টাকা ঢালে তাহলে তা তাদের বিরক্তির কারণ হবে।… প্রতিষ্ঠানের জন্য বাবাকে বাধ্য হয়ে এখান থেকে ওখান থেকে টাকা চাইতে হয়েছে। কিন্তু সব সময় যে টাকা পেয়েছেন এমন নয়।
শেষ পর্যন্ত মহাত্মাজীই সর্বপ্রথম উপলব্ধি করলেন বাবার মতো কবি মানুষের পক্ষে বিশ্ব ভারতীর জন্য অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে দেশে-বিদেশে ঘুরে বেড়ানো, কি গভীর দুঃখের বিষয়। ১৯৩৬ সালে বাবা গেছেন দিলী, উদ্দেশ্য শান্তি নিকেতনের ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়ে চিত্রাঙ্গদা নৃত্যনাট্য অভিনয় করিয়ে বিশ্বভারতীয় সাহায্যার্থে টাকা তোলা। সে সময় গান্ধিজীও দিলীতে ছিলেন। তিনি আমাদের কয়েকজনকে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, বিশ্বভারতীর তহবিলে এমন কী ঘাটতি, যার জন্যে এই পরিণত বয়সে বাবাকে এত কষ্ট সইতে হচ্ছে। বাবা দিলী ছাড়বার আগে মহাত্মাজী তার হাতে বিশ্বভারতীর ঋণ শোধের জন্য যত টাকার দরকার সেই অঙ্কের একটা চেক তুলে দিলেন। টাকাটা কোন ভক্তের কাছ থেকে সংগ্রহ করা। চেক বাবার হাতে দিয়ে গান্ধিজী বললেন, যেন আর টাকার ধান্দায় বাবাকে ঘুরে বেড়াতে না হয়।
অভাব, সংসারের চিন্তা বারংবার মন কেড়ে নিলেও তারই মধ্যে লিখতে হয়। ভারতী, বঙ্গদর্শন, তত্ত্ববোধিনী, সঙ্গীত, প্রবেশিকা ইত্যাদি পত্রিকায় লেখা দিতে হয় নিয়মিত। এর মধ্যে বঙ্গদর্শনের অনেকগুলি পৃষ্ঠা ভরানোর দায়িত্ব তার। শুধু দায়িত্ব নয়, কাগজ-কলম তাকে চুম্বকের মত টানে।
কলকাতার কোলাহল থেকে শান্তি নিকেতনে ফিরে যাবার সিদ্ধান্ত নিলেন কবি। ত্রিপুরার রাজা রাধাকিশোর বিলেত থেকে আনা মোটরে করে রবীন্দ্রনাথকে বেনারস পর্যন্ত এবং শের শাহের গ্র্যান্ড ট্যাঙ্করোড যাবার নিমন্ত্রণ জানালেন, রবীন্দ্রনাথ রাজি হলেন না। বললেন, শান্তি নিকেতনে নতুন স্কুল বাড়ি নির্মাণ করতে হচ্ছে, নিজে তদারকি করতে চাই।
রাখিবন্ধন, কলকাতার কংগ্রেসের অধিবেশন সব তার কাছে পানসে ঠেকছে। মনে হচ্ছে, কলকাতার চেয়ে শান্তি নিকেতনই তার নিজস্ব আশ্রয়। একটি প্রিয় সম্বোধন যা শোনার জন্য তার কান সর্বদা উৎকর্ণ তা হল গুরুদেব। শান্তি নিকেতনে সবাই তাকে গুরুদেব বলে। তিনি জননেতা হতে চান না, কিন্তু বাকি জীবন তিনি গুরুদেব হয়ে থাকতে চান, শুনতে চান প্রিয় ডাক-গুরুদেব। যে ডাক শোনার মোহে তার এত অর্থকষ্ট, শারীরিক কষ্ট সহ্য করা।
\সংকলিত\