হজ্জ ও ওমরাহ

হজ্জ : ফযীলত ও উপকারিতা

হজ্জের পরিচয় :

حج (হজ্জ)-এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে কোন স্থানের সংকল্প করা। শারঈ পরিভাষায় নির্দিষ্ট ইবাদত তথা তাওয়াফ, সাঈ প্রভৃতির জন্য হজ্জের মাস সমূহে (শাওয়াল, যুলকা‘দাহ, যুলহিজ্জা) আল্লাহ তা‘আলার নিকট সম্মানিত ও পবিত্র ঘর যিয়ারতের ইচ্ছা পোষণ করা।

হজ্জের গুরুত্ব :

হজ্জ ইসলামের পাঁচটি রুকনের মধ্যে অন্যতম। যা জ্ঞানবান, প্রাপ্তবয়স্ক ও সামর্থ্যবান মুসলমানের উপরে জীবনে একবার ফরয। আল্লাহ তা‘আলা কুরআনুল কারীমে বলেন,

وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيْلاً وَمَنْ كَفَرَ فَإِنَّ اللهَ غَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِيْنَ

‘মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঐ গৃহের হজ্জ করা তার জন্য ফরয। আর কেউ প্রত্যাখ্যান করলে, সে জেনে রাখুক, নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বজগতের মুখাপেক্ষী নন’ (আলে ইমরান ৯৭)। অন্যত্র আল্লাহ বলেন, وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ  ‘তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ ও ওমরা পূর্ণ কর’ (বাক্বারাহ ১৯৬)

হাদীছেও হজ্জ ফরয হওয়া সম্পর্কে সুস্পষ্ট বিধান বর্ণিত হয়েছে। যেমন-

(1) عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بُنِيَ الْإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ شَهَادَةِ أَنْ لاَّ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأنَّ مُحّمَّدًا رَّسُوْلُ اللهِ وَإِقَامِ الصَّلاَةِ وَإِيْتَاءِ الزَّكَاةِ وَالْحَجِّ وَصَوْمِ رَمَضَانَ-

(১) আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত। ১. একথার সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন প্রকৃত উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) তাঁর রাসূল, ২. ছালাত কায়েম করা, ৩. যাকাত প্রদান করা, ৪. হজ্জ করা এবং ৫. রামাযান মাসের ছিয়াম পালন করা’।[1]

(২) ওমর ইবনু খাত্ত্বাব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত প্রসিদ্ধ হাদীছে জিবরীলে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

 أَنْ تَشْهَدَ أَنْ لاَّ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللهِ وَتُقِيْمَ الصَّلاَةَ وَتُؤْتِيَ الزَّكَاةَ وَتَصُوْمَ رَمَضَانَ وَتَحُجَّ الْبَيْتَ إِنِ اسْتَطَعْتَ إِلَيْهِ سَبِيْلاً

‘ইসলাম হচ্ছে তোমার এ কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্যিকার উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর রাসূল, ছালাত কায়েম করা, যাকাত প্রদান করা, রামাযান মাসের ছিয়াম পালন করা ও বায়তুল্লাহর হজ্জ করা যদি সেখানে পৌঁছার সামর্থ্য থাকে’।[2]

(3) عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ خَطَبَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ النَّاسَ فَقَالَ إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ قَدْ فَرَضَ عَلَيْكُمْ الْحَجَّ فَقَالَ رَجُلٌ فِي كُلِّ عَامٍ، فَسَكَتَ عَنْهُ حَتَّى أَعَادَهُ ثَلاَثًا فَقَالَ لَوْ قُلْتُ نَعَمْ لَوَجَبَتْ وَلَوْ وَجَبَتْ مَا قُمْتُمْ بِهَا

(৩) আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদের সামনে খুৎবা দিলেন। তিনি বললেন, ‘হে লোক সকল! তোমাদের উপর হজ্জ ফরয করা হয়েছে। (সুতরাং তোমরা হজ্জ কর)। জনৈক ছাহাবী জিজ্ঞেস করল, প্রত্যেক বছর (ফরয)? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) চুপ থাকলেন। এমনকি লোকটি তিনবার জিজ্ঞেস করল। অতঃপর রাসূল (ছাঃ) বললেন, আমি যদি হ্যাঁ বলতাম, তাহ’লে (তোমাদের উপর প্রত্যেক বছর হজ্জ পালন করা) ফরয হয়ে যেত। আর ফরয হয়ে গেলে তোমরা তা পালনে সক্ষম হ’তে না’।[3]

উল্লিখিত আয়াত ও হাদীছের ভিত্তিতে ওলামায়ে কেরাম সামর্থ্যবান প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের উপরে জীবনে একবার হজ্জ ফরয বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন। আর একের অধিক হ’ল নফল বা অতিরিক্ত।[4]

হজ্জ ফরয হওয়ার শর্তাবলী :

হজ্জ ফরয হওয়ার জন্য পাঁচটি শর্ত বিদ্যমান থাকা আবশ্যক। ১. ইসলাম ২. জ্ঞান ৩. প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া ৪. স্বাধীন হওয়া ৫. শক্তি-সামর্থ্য থাকা।

১. ইসলাম : ইসলাম গ্রহণ ব্যতীত কোন কাফির ব্যক্তির উপর হজ্জের বিধান প্রযোজ্য নয়। সুতরাং কেউ যদি কুফরী অবস্থায় হজ্জ সম্পন্ন করে এবং ইসলাম গ্রহণের পর যদি তার উপর হজ্জ ফরয হয়, তাহ’লে কুফরী অবস্থায় কৃত হজ্জ দ্বারা হজ্জের ফরযিয়াত আদায় হবে না।

২. জ্ঞান : প্রত্যেক প্রকারের ইবাদতের ন্যায় হজ্জের জন্যও জ্ঞান সম্পন্ন হওয়া শর্ত। কোন মস্তিষ্ক বিকৃত বা পাগল ব্যক্তির জন্য হজ্জ ফরয নয় এবং তাকে হজ্জের জন্য আদেশও দেয়া যাবে না। যেমন হাদীছে এসেছে, নবী করীম (ছাঃ) বলেন, رُفِعَ الْقَلَمُ عَنْ ثَلاَثٍ عَنِ النَّائِمِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ وَعَنِ الصَّغِيْرِ حَتَّى يَكْبُرَ وَعَنْ الْمَجْنُوْنِ حَتَّى يَعْقِلَ أَوْ يُفِيْقَ- ‘তিন ব্যক্তির উপর থেকে কলম তুলে নেওয়া হয়েছে। ঘুমন্ত ব্যক্তির থেকে যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়। অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির উপর থেকে যে পর্যন্ত না সে বালেগ বা প্রাপ্তবয়স্ক হয়। আর পাগল ব্যক্তির থেকে যতক্ষণ না সে জ্ঞান ফিরে পায় বা বোধ শক্তি সম্পন্ন হয়’।[5]

৩. প্রাপ্তবয়স্ক : পূর্বোক্ত হাদীছে এ কথাও স্পষ্ট হয়েছে যে, শিশু বা অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির উপর থেকেও কলম উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ সে শরী‘আতের বিধান পালনের নির্দেশ প্রাপ্ত নয়। এজন্য সে হজ্জের ব্যাপারে আদিষ্টও নয়। যদি কোন অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি স্বীয় পিতা-মাতা বা নিকটাত্মীদের সাথে হজ্জ করে তাহ’লে তার হজ্জ নফল হবে এবং নেকী পিতা-মাতা বা যে নিকটাত্মীয় হজ্জ করিয়েছে তাদের হবে। যেমন আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হ’তে বর্ণনা করেন,

لَقِيَ رَكْبًا بِالرَّوْحَاءِ فَقَالَ مَنِ الْقَوْمُ قَالُوا الْمُسْلِمُوْنَ، فَقَالُوْا مَنْ أَنْتَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ فَرَفَعَتْ إِلَيْهِ امْرَأَةٌ صَبِيًّا فَقَالَتْ أَلِهَذَا حَجٌّ قَالَ نَعَمْ وَلَكِ أَجْرٌ

অর্থাৎ তিনি রওহা নামক স্থানে একটি কাফেলার সাক্ষাৎ পেলেন। তখন তারা বলল, কাদের কাফেলা? তারা বললেন, মুসলমানদের কাফেলা। তখন তারা বলল, আপনি কে? তিনি বললেন, আল্লাহর রাসূল। তখন এক মহিলা তার বাচ্চা উচু করে ধরে বলল, এর উপর কি হজ্জ আছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ এবং ছওয়াব তোমার জন্য’।[6] অনুরূপ সায়েব ইবনু ইয়াযীদ বলেন, حُجَّ بِيْ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا ابْنُ سَبْعِ سِنِيْنَ  অর্থাৎ আমাকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে হজ্জ করানো হ’ল, সে সময়ে আমি ছিলাম সাত বছর বয়সের বালক।[7] এ উভয় হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য হজ্জ করার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর যদি তার উপর হজ্জ ফরয হয় এবং ফরযিয়াতের শর্তসমূহ পাওয়া যায়, তাহ’লে তাকে আবার হজ্জ করতে হবে। যেমন ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন,

احْفَظُوْا عَنِّيْ، وَلاَ تَقُوْلُوْا : قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : أَيُّمَا عَبْدٍ حَجَّ بِهِ أَهْلُهُ، ثُمَّ أُعْتِقَ فَعَلَيْهِ الْحَجُّ، وَأَيُّمَا صَبِيٍّ حَجَّ بِهِ أَهْلُهُ صَبِيًّا، ثُمَّ أَدْرَكَ فَعَلَيْهِ حَجَّةُ الرَّجُلِ،

‘(হে লোক সকল!) তোমরা আমার নিকট থেকে এ বিষয়টি জেনে নাও। আর এটা ভেব না যে, ইবনু আববাস বলেছেন (বরং এটা নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন)। যে গোলামকে তার মনীব হজ্জ করাবে অতঃপর আযাদ করে দিবে (হজ্জের শর্তসমূহ পাওয়া গেলে) তার উপরে হজ্জ ফরয হবে। আর যে বাচ্চাকে শৈশবে তার পরিবার হজ্জ করাবে অতঃপর সে বালেগ হওয়ার পর (হজ্জের শর্তসমূহ পাওয়া গেলে) তার উপর হজ্জ ফরয হবে।[8] ইমাম বায়হাক্বীও হাদীছটি নবী করীম (ছাঃ) থেকে মারফূ‘ সূত্রে স্বীয় গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন।[9]

৪. স্বাধীন হওয়া : ক্রীতদাসের উপর হজ্জ ফরয নয়। কিন্তু তার মনিব তাকে হজ্জ করালে নফল হিসাবে তার হজ্জ হয়ে যাবে এবং স্বাধীন হওয়ার পর হজ্জ ওয়াজিব হওয়ার শর্তসমূহ পাওয়া গেলে তাকে ফরয হজ্জ আদায় করতে হবে। যেভাবে ইবনু আববাস (রাঃ) বর্ণিত উপরোক্ত হাদীছে সবিস্তার উল্লেখ আছে।[10]

সামর্থ্য বা সক্ষমতা অর্জিত হ’লে হজ্জ জলদি ফরয হয় :

যে মুসলমানের মধ্যে উল্লিখিত সকল শর্ত পাওয়া যাবে, শারঈ পরিভাষায় সে সক্ষম ও সামর্থ্যবান বলে পরিগণিত হবে এবং তার উপর হজ্জ ফরয হবে। সে হজ্জ পালনে টালবাহানা করবে না; বরং সক্ষম হওয়ার পর ঐ মৌসুমে দ্রুত হজ্জ সমাপন করার নিয়ত করবে। আর এর জন্য প্রয়োজনীয় কাজ-কাম (প্রস্ত্ততি) আরম্ভ করবে এবং হজ্জের ব্যাপারে কোন অলসতা করবে না। এ মর্মে ইবনু আববাস (রাঃ)-এর প্রতি রাসূলের নির্দেশ হচ্ছে, ‘তুমি ফরয হজ্জ আদায়ের ব্যাপারে দ্রুত কর। কেননা তোমাদের মধ্যে কেউ জানেন না যে, আগামী দিন তার সামনে কি প্রতিবন্ধকতা এসে যাবে’।[16]

এজন্য সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য কোন প্রকার অজুহাত ও ওযর বাদ দিয়ে ফরয হজ্জ সমাপনে দ্রুত করা উচিত। আর ছেলে-মেয়ের বিবাহ, বাড়ী নির্মাণ, কারখানা ও ফ্যাক্টরী প্রতিষ্ঠা ও অন্যান্য পার্থিব কাজের বাহানায় ঐ ফরয আদায়ের ব্যাপারে বিলম্ব করা উচিত নয়। কেননা ভবিষ্যত অবস্থা ও পরিস্থিতি এবং মানুষের নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস কবে বন্ধ হয়ে যাবে এটা কারো জানা নেই।

উল্লেখ্য, হজ্জ সমাপনের ক্ষেত্রে সঊদী সরকার ইসলামী বিশ্বের মুসলমানদের জন্য এমন নীতিমালা ও ব্যবস্থাপনা রেখেছেন, যাতে তারা এই ফরয কাজ অতি সহজে সুসম্পন্ন করতে পারে। ঐ নীতিমালার অধীনে প্রত্যেক দেশের মুসলিম অধিবাসীদের জন্য বার্ষিক কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং নির্দিষ্ট সংখ্যক লোককে হজ্জ করার অনুমতি দেওয়া হয়। এ নীতিমালার আলোকে কেউ যদি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ্জের অনুমতি না পায়, তাহ’লে সে অক্ষম বা অসমর্থদের অন্তর্ভুক্ত  হবে এবং অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত তার হজ্জের ফরযিয়াত স্থগিত থাকবে। (والله أعلم)

হজ্জের ফযীলত :

হজ্জের ফযীলতের ব্যাপারে বিভিন্ন হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। যেমন-

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ رضى الله عنه أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ الْعُمْرَةُ إِلَى الْعُمْرَةِ كَفَّارَةٌ لِمَا بَيْنَهُمَا، وَالْحَجُّ الْمَبْرُورُ لَيْسَ لَهُ جَزَاءٌ إِلاَّ الْجَنَّةُ.

(১) আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘এক ওমরা পরবর্তী ওমরা পর্যন্ত গোনাহের (ছগীরাহ) কাফফারাহ এবং কবুল হজ্জের প্রতিদান জান্নাত ব্যতীত কিছইু নয়’।[17] অর্থাৎ হজ্জের বিনিময় হচ্ছে জান্নাত।

কবুল হজ্জ দ্বারা উদ্দেশ্য এমন হজ্জ, যা সুন্নাত মুতাবেক সম্পন্ন হয়, যাতে পাপাচার ও গোনাহ থেকে মুক্ত থাকা হয়।[18] কবুল হজ্জের আলামত সম্পর্কে বিদ্বানগণ বলেছেন যে, হজ্জের পর লোকটি উত্তম আচার-ব্যবহারের দিকে ধাবিত হয়ে যায়। সে যদি খারাপ থাকে তাহ’লে সৎ কর্মশীল হয়ে যায়, সৎ কর্মশীল থাকলে আরো অধিকতর সৎকর্মশীল হয়ে যায়।[19] আর হজ্জকারী যদি নিজের পূর্বের কাজের উপর বিদ্যমান থাকে তাহ’লে তা হজ্জ কবুল না হওয়ার ইঙ্গিত বহন করে।

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ رضى الله عنه قَالَ قَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم مَنْ حَجَّ هَذَا الْبَيْتَ، فَلَمْ يَرْفُثْ، وَلَمْ يَفْسُقْ، رَجَعَ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ-

(২) আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজ্জ করল এবং হজ্জের সময় অনর্থক কথা ও পাপ কাজ করল না সে হজ্জ থেকে প্রত্যাবর্তন করে সেদিনের ন্যায় (নিষ্পাপ অবস্থায়), যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিল’।[20]

(৩) আমর ইবনুল আছ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে সম্বোধন করে বললেন, أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ الإِسْلاَمَ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ وَأَنَّ الْهِجْرَةَ تَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهَا وَأَنَّ الْحَجَّ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ ‘হে আমর! তুমি কি জান যে, ইসলাম গ্রহণের দিন (পূর্বের) গোনাহ সমূহ মিটিয়ে দেয়? আর হিজরত পূর্বের পাপ মোচন করে দেয়, হজ্জ পূর্বের গোনাহ ধ্বসিয়ে করে দেয়’।[21]

عن عائشة رَضِيَ اللهُ عنها، قَالَت : قُلْتُ يَا رسول الله، نَرَى الجِهَادَ أفْضَلَ العَمَلِ، أفَلاَ نُجَاهِدُ؟ فَقَالَ لَكُنَّ أفْضَلُ الجِهَادِ : حَجٌّ مَبْرُوْرٌ-

(৪) উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমরা জিহাদকে সর্বোত্তম আমল মনে করি। তাহ’লে আমরা (মহিলারা) কি জিহাদ করব না? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, না, তোমাদের জন্য উত্তম জিহাদ হচ্ছে, মাবরূর (কবুল) হজ্জ’।[22] অপর একটি বর্ণনায় এসেছে,

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ عَلَى النِّسَاءِ جِهَادٌ، قَالَ نَعَمْ عَلَيْهِنَّ جِهَادٌ لاَ قِتَالَ فِيْهِ الْحَجُّ وَالْعُمْرَةُ-

(৫) আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! মহিলাদের উপর কি জিহাদ আছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তাদের উপর জিহাদ আছে। তবে তাতে যুদ্ধ নেই। সেটা হ’ল হজ্জ ও ওমরা’।[23]

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رضى الله عنه سُئِلَ النَّبيُّ صلى الله عليه وسلم أيُّ العَمَلِ أفْضَلُ؟ قَالَ إيْمَانٌ بِاللهِ وَرَسُوْلِهِ، قِيْلَ ثُمَّ مَاذَا؟ قَالَ الجِهَادُ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ، قِيْلَ ثُمَّ مَاذَا؟ قَالَ حَجٌّ مَبْرُوْرٌ-

(৬) আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হ’ল কোন আমল সর্বোত্তম? রাসূল (ছাঃ) বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনা। বলা হ’ল, এরপর কি? তিনি বললেন, আল্লাহর  রাস্তায় জিহাদ করা। জিজ্ঞেস করা হ’ল, তারপর কি? তিনি বললেন, মাবরূর হজ্জ (কবুল হজ্জ)।[24]

হজ্জের উপকারিতা :

হজ্জ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে অন্যতম। এটা ইসলামের বড় ইবাদত হওয়া ছাড়াও এর বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে।  কুরআনুল কারীমে এ ব্যাপারে ইঙ্গিত করা হয়েছে। আল্লাহর বাণী, لِيَشْهَدُوْا مَنَافِعَ لَهُمْ ‘যাতে তারা তাদের কল্যাণময় স্থানগুলিতে উপস্থিত হ’তে পারে’ (হজ্জ ২৮)

এ আয়াতে বহুবচনের শব্দ ব্যবহার করে ধর্মীয়, দৈহিক, আর্থিক, সাংস্কৃতিক, দাওয়াতী, ইলমী (জ্ঞানগত) ও একতা-সংহতির উপকারিতাকে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

১. দ্বীনী (ধর্মীয়) উপকারিতা :

ক. মুখলিছ (একনিষ্ঠ) হাজী গোনাহ থেকে পাক-ছাফ বা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে যায়, যা পূর্বোক্ত হাদীছে উল্লিখিত হয়েছে।

খ. মক্কায় অবস্থানের সময় মসজিদে হারামে ছালাত আদায় করার সৌভাগ্য হয়। যেখানে ছালাত আদায়ে অন্যান্য মসজিদের চেয়ে ১ লক্ষ গুণ ছওয়াব বেশী হয়।

গ. মক্কায় অবস্থানকালে কা‘বার তওয়াফ করতে থাকার সৌভাগ্য হয়। তওয়াফ এমন ইবাদত, যা ঐ জায়গা ব্যতীত অন্যত্র আদায় করা সম্ভব হয় না।

ঘ. অন্তরে গোনাহের যে মরিচা পড়ে, তা আল্লাহর ঘর দর্শন ও তার পার্শ্বে কিছু দিন অতিবাহিত করার মাধ্যমে পরিষ্কার হয়ে যায় এবং মানুষের মাঝে উত্তম কাজের আগ্রহ অত্যধিক বৃদ্ধি পায়।

ঙ. হজ্জের সময় প্রতি পদক্ষেপে পৃথিবীর সমগ্র মানবতার মহান তাওহীদবাদী ও কা‘বার পুনঃনির্মাণকারী ইবরাহীম (আঃ), তাঁর পরিজন হাজেরা ও পুত্র ইসমাঈল (আঃ)-এর পবিত্র জীবনের চিত্র অন্তরে চিত্রিত হয়। যা দ্বীনের উপর অটল থাকতে সহায়ক হয় এবং মানুষের মাঝে দীপ্তিমান জীবনের মশালবাহী বা দিকনির্দেশক হওয়ার জাযবাহ তৈরী করে।

চ. হজ্জের সময় মক্কা মুকাররমা ও মদীনা মুনাওয়ারার কিছু ঐতিহাসিক স্থান দর্শনের সুযোগ হয়, যাতে ইসলামের সূচনা লগ্নের ইতিহাস স্মৃতির ফলকে বদ্ধমূল হয়ে যায়। এর ফলে ঈমানে সজীবতা, আস্থা এবং নিশ্চিত বিশ্বাসে দৃঢ়তা পয়দা হয়।

ছ. কা‘বা ঘর ও অন্যান্য পবিত্র নিদর্শন এবং হজ্জের বিশাল জমায়েত-সমাবেশ দেখে ইসলামের সত্যতা অন্তরে বদ্ধমূল হয়ে যায়। হজ্জের এই ধর্মীয় উপকারিতা ছাড়াও অন্যান্য বহু উপকারিতা রয়েছে।

(২) দৈহিক উপকারিতা :

হজ্জের সফরে এবং হজ্জ চলাকালীন সময়ে হাজীদেরকে শারীরিক পরিশ্রমও করতে হয়। অনেক আরাম প্রিয় ও সওয়ারীতে অভ্যস্ত লোকদেরকেও অধিকাংশ সময় পদব্রজে চলতে হয়। যা তার দৈহিক সুস্থতার উপরে সুপ্রভাব ফেলে। তদ্রূপ মক্কায় অবস্থানকালে যমযমের পানি পান করাতেও স্বাস্থ্য ভাল হয়ে যায়। আল্লাহর রহমতে বহু দুরারোগ্য ব্যাধি উপশম হয়ে যায়। যেরূপ বিভিন্ন ঘটনা থেকে জানা যায়।

(৩) আর্থিক উপকারিতা :

হজ্জের দৃঢ় নিয়তকারী কোন ব্যক্তি যদি হজ্জ চলাকালীন সময়ে অবসরে কোন ব্যবসা করতে চায় এবং ইসলামী নিয়ম-কানূন মুতাবেক ব্যবসা করে, তাহ’লে ইসলাম সেক্ষেত্রে অনুমতি দিয়েছে। যেমন পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে, لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَبْتَغُوْا فَضْلًا مِنْ رَبِّكُمْ ‘তোমাদের প্রতিপালকের অনুগ্রহ সন্ধান করাতে তোমাদের কোন পাপ নেই’ (বাক্বারাহ ১৯৮)। এখানে فَضْل (অনুগ্রহ) দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে অর্থনৈতিক উপকারিতা। সূরা হজ্জের ২৭ ও ২৮ নং আয়াতে হজ্জ সম্পর্কিত বিধান ঘোষণার সাথে ইবরাহীম (আঃ)-এর নিকট তার উপকারিতা ও লাভজনক দিকও উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন এরশাদ হয়েছে,

وَأَذِّنْ فِي النَّاسِ بِالْحَجِّ يَأْتُوْكَ رِجَالاً وَعَلَى كُلِّ ضَامِرٍ يَأْتِيْنَ مِنْ كُلِّ فَجٍّ عَمِيْقٍ، لِيَشْهَدُوْا مَنَافِعَ لَهُمْ وَيَذْكُرُوا اسْمَ اللهِ فِيْ أَيَّامٍ مَعْلُوْمَاتٍ عَلَى مَا رَزَقَهُمْ مِنْ بَهِيْمَةِ الْأَنْعَامِ  

‘আর মানুষের নিকট হজ্জের ঘোষণা কর, তারা তোমার নিকট আসবে পদব্রজে ও সর্বপ্রকার ক্ষীণকায় উষ্ট্রের পিঠে, তারা আসবে দূর দূরান্তের পথ অতিক্রম করে। যাতে তারা তাদের কল্যাণময় স্থানগুলিতে উপস্থিত হ’তে পারে এবং তিনি তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু হ’তে যা রিযিক দান করেছেন তার উপর নির্দিষ্ট দিনগুলিতে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারে’ (হজ্জ ২৭-২৮)

উপকারের তালিকায় মুফাসসিরগণ দ্বীনি ও আর্থিক উপকারিতা উভয়ই উল্লেখ করেছেন যে, ব্যবসা-বাণিজ্য ও কারবার দ্বারা দুনিয়াবী সচ্ছলতা অর্জিত হ’তে পারে।

(৪) সাংস্কৃতিক উপকারিতা :

হজ্জ যেহেতু বিশ্বের অদ্বিতীয়, অনন্য ও বিশাল জনসমাবেশ, যাতে দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোক এসে মক্কায় সমবেত হয়। কেউ আরব, কেউ অনারব, কেউ প্রাচ্য, কেউ পাশ্চাত্য থেকে আগমন করে। কেউ কালো, কেউ সাদা, কোন দেশের অধিবাসী দীর্ঘকায় শক্তিশালী, কোন দেশের নাগরিক খর্বকায় ও দুর্বল। এ সমস্ত লোকের বর্ণ-গোত্র, ভাষা ও সাংস্কৃতি ভিন্নতর হওয়া সত্ত্বেও একই কেন্দ্রে সমবেত হয়। এ অবস্থায় লোকেরা একে অপরের তাহযীব-তামাদ্দুন, সভ্যতা-সংস্কৃতি, তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ, রীতি-নীতি, আকার-আকৃতি, অভ্যাস-প্রকৃতি, খাদ্য-পানীয় প্রভৃতি সম্পর্কে  জানার সুযোগ পায়। এ সময় সুচতুর হজ্জকারী ইচ্ছা করলে অন্যদের স্বভাব-প্রকৃতি, রীতি-পদ্ধতি, সভ্যতা-সংস্কৃতিতে নিজেকে ভূষিত করতে পারে। আর অন্যের উত্তম গুণাবলী গ্রহণ করে নিজেকে আরো সুন্দর ও পরোপকারী মানুষে পরিণত করতে পারে।

(৫) ঐক্য-সংহতির উপকারিতা :

হজ্জের বিশাল সমাবেশে ভিন্ন বর্ণ-গোত্র, স্বতন্ত্র ভাষা, পৃথক সভ্যতা-সংস্কৃতির মানুষ একত্রিত হয়। যা মূলত ইসলামী ভ্রাতৃত্ব ও সাম্যের সুস্পষ্ট ও শক্তিশালী প্রকাশ। একজন  হাজী ইউরোপের কোন উন্নত দেশের, কেউ আফ্রিকার পশ্চাদপদ দেশের, কেউবা এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশের নাগরিক। সবাই এক সাথে কা‘বা ঘরের তাওয়াফ করে, ছাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করে, আরাফায় একত্রে অবস্থান, মুযদালিফার উদ্দেশ্যে এক সাথে যাত্রা, এক সাথে মিনায় অবস্থান ও কংকর নিক্ষেপ এবং হজ্জের সকল রুকন মিলে মিশে পালন করে। মসজিদে হারামে একে অপরের সাথে মিলে ছালাত আদায় করে। হজ্জের সমস্ত কর্মকান্ড ও ইবাদত আদায়ের ক্ষেত্রে কারো উপরে কারো মর্যাদা ও প্রাধান্য নেই। সবাই পরস্পরের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখে এবং একে অপরকে সম্মান ও সেবা করার প্রবল আগ্রহ সৃষ্টি হয়। এটা এমনই একতা বা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ফায়েদা যা কেবল হজ্জের সমাবেশকালে অর্জিত হয়।

(৬) ইসলামী (জ্ঞানগত) ও দাওয়াতী উপকারিতা :

হজ্জের ইলমী ও দাওয়াতী বহু উপকারিতা সুস্পষ্টরূপে প্রমাণিত। বিশেষত বিদ্বানগণের জন্য হজ্জের এ বিশাল সমাবেশ কোন শিক্ষা সম্মেলন ও সেমিনার অপেক্ষা কোন অংশে কম নয়। এখানে সারা পৃথিবীর বিদ্বানগণ একত্রিত হন। একে অপরের সাথে সাক্ষাৎ করে ধর্মীয় বিষয় ও ফিক্বহী মাসআলা সম্পর্কে পারস্পরিক চিন্তাধারা আদান-প্রদান করতে পারেন এবং একে অপরের নিকট থেকে ইলমী উপকার লাভ করতে পারেন। যে যুগে বর্তমান সময়ের মত গ্রন্থ মুদ্রণ ও প্রকাশের ব্যাপকতা ছিল না এবং শিক্ষা-দীক্ষারও আরামদায়ক মাধ্যম বিদ্যমান ছিল না, তখন দুনিয়ার বিদ্বানগণের জন্য হজ্জের মৌসুমই সমবেত হওয়ার ও সাক্ষাতের মাধ্যম ছিল। ইতিহাসের পাতায় ১০টি এমন ঘটনা পাওয়া যায়, যাতে ঐ ধরনের শিক্ষা সমাবেশের বর্ণনা রয়েছে।

ইলমী উপকারিতার সাথে সাথে হজ্জের দাওয়াতী ফায়েদাও সুস্পষ্টরূপে প্রমাণিত। হজ্জের সময় হাজীগণের ধর্মীয় বিষয় এমন অনেক বিষয়ের জ্ঞান লাভ হয়, যে বিষয়ে তাদের জ্ঞান ছিল না। এ সময়ে সঊদী সরকার হাজীদের মাঝে দাওয়াত-তাবলীগ এবং তাদেরকে ধর্মীয় বিষয়ে দিক নির্দেশনা দান করার জন্য তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করে। সকল দেশ ও এলাকার বিভিন্ন ভাষার বিদ্বান ও মুবাল্লিগগণের দল জায়গায় জায়গায় দিক নির্দেশনার জন্য প্রস্ত্তত থাকেন। বিশেষ করে মুসলমানদের আক্বীদা ও আমল সংশোধনের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়। যদি কোন হাজী একনিষ্ঠতার সাথে ঐসব প্রোগ্রাম থেকে উপকার লাভের ইচ্ছা করে এবং হজ্জের সফরকে পিকনিক এবং পর্যটন ও প্রমোদ বিহারের প্রোগ্রাম হিসাবে গ্রহণ না করে নিজেকে সংশোধনের চেষ্টা করে তাহ’লে নিঃসন্দেহে সে অতি বড় উপকার লাভ করতে পারবে।

এছাড়াও (উপরে বর্ণিত উপকারিতা ছাড়াও) হজ্জের আরো নানা ধরনের উপকারিতা-ফায়েদা ও লাভ রয়েছে, যা দূরদর্শীদের দৃষ্টির অন্তরালে নয়।

আব্দুল মান্নান সালাফী
সম্পাদক, মাসিক আস-সিরাজ, নেপাল।
অনুবাদ : ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম


 

[1]. বুখারী হা/৮; মুসলিম হা/১১৩; মিশকাত হা/২।
[2]. মুসলিম, মিশকাত হা/২।
[3]. মুসলিম হা/৩২৫৭; নাসাঈ হা/২৬৩১; মিশকাত হা/২৫০৫।
[4]. আবুদাউদ, নাসাঈ, আহমাদ, মিশকাত হা/২৫২০।
[5]. নাসাঈ হা/৩৩৭৮।
[6]. মুসলিম হা/২৩৭৭।
[7]. বুখারী হা/১৭২৫।
[8]. মুছন্নাফ ইবনু আবী শায়বা, হা/১৫১০৫; সনদ ছহীহ; ইরওয়াউল গালীল হা/৯৮৬-এর অধীনে।
[9]. বায়হাক্বী, ৪/৩২৫ পৃঃ।
[10]. ইমাম তিরমিযীও বলেছেন, কৃতদাস স্বাধীন হওয়ার পূর্বে হজ্জ করলে এবং স্বাধীন হওয়ার পর হজ্জ ফরয হওয়ার শর্তাবলী পাওয়া গেলে তাকে পুনরায় হজ্জ করতে হবে। সুফিয়ান ছাওরী, শাফেঈ, আহমাদ ও ইসহাক (রহঃ) এ মতই পোষণ করেছেন। দ্রঃ তিরমিযী হা/৮৪৮-এর অধীনে।
[11]. তিরমিযী হা/৮৫২; সনদ ছহীহ; ইবনু মাজাহ হা/২৯০৬; মিশকাত হা/২৫২৮।
[12]. বুখারী হা/১৮৫২, ১৫১৩; মুসলিম হা/১১৪৯, ১৩৫৭; মিশকাত হা/১৯৫৫, ২৫১১।
[13]. বুখারী হা/১৭২২, ১৮৬২।
[14]. ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/২৫২৯; ছহীহ ইবনু হিববান হা/২৭২০; সিলসিলা ছহীহাহ ৩০৬৫নং হাদীছের অধীনে।
[15]. ইবনু তায়মিয়াহ, শারহুল ওমদাহ ফী বয়ানে মনাসিকিল হজ্জ ওয়াল ওমরা, ১/১৮২।
[16]. আহমাদ ১/১৪; আবু দাঊদ ১/৩২৫; ইবনু মাজাহ ২/১৪৭।
[17]. বুখারী হা/১৬৫০; মুসলিম হা/১৩৪৯; মিশকাত হা/২৫০৮।
[18]. রিয়াযুছ ছালেহীন হা/১২৮১-এর ব্যাখ্যা।
[19]. ফাতহুল বারী ৩/৪৪৬, হা/১৫১৯-এর ব্যাখ্যা।
[20]. বুখারী হা/১৫২১; মুসলিম হা/৩২৯১।
[21]. মুসলিম হা/৩২১।
[22]. বুখারী হা/১৫২০।
[23]. ইবনু মাজাহ হা/২৯০১; মিশকাত হা/২৫৩৪।
[24]. বুখারী হা/২২; মুসলিম হা/২৪৮; মিশকাত হা/২৫০৬।

মন্তব্য করুন

Back to top button