খলীফা হারূনুর রশীদের নিকটে প্রেরিত ইমাম মালেক (রহঃ)-এর ঐতিহাসিক চিঠি (২)
পূর্বের অংশ পড়ুন: খলীফা হারূনুর রশীদের নিকটে প্রেরিত ইমাম মালেক (রহঃ)-এর ঐতিহাসিক চিঠি (১)
আপনি সৎকর্মপরায়ণদের সাথে থাকুন। কারণ তারা আপনাকে মহান আল্লাহর নির্দেশ বাস্তবায়নে সহায়তা করবে। আমার কাছে নবী করীম (ছাঃ) থেকে এ মর্মে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন,مَا تَحَابَّ رَجُلَانِ فِي اللهِ إِلَّا كَانَ أَحَبُّهُمَا إِلَى اللهِ أَشَدَّهُمَا حُبًّا لِصَاحِبِهِ ‘আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যখন দু’জন ব্যক্তি পরস্পরকে ভালবাসে, তখন তাদের দু’জনের মধ্যে সেই আল্লাহর সর্বাধিক প্রিয়পাত্র হয়, যে তাদের মধ্যে তার বন্ধুকে বেশী ভালবাসে’।[1]
আপনি আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক অটুট রাখুন, যদিও তারা আপনার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে। তাদের মন্দ আচরণের বদলা নিবেন না। কেননা এক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করল,
يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ لِى ذَوِى أَرْحَامٍ أَصِلُ وَيَقْطَعُونِى وَأَعْفُو وَيَظْلِمُونَ وَأَحْسِنُ وَيُسِيئُونَ أَفَأُكَافِئُهُمْ؟ قَالَ لاَ إِذاً تَتْرُكُونَ جَمِيعاً وَلَكِنْ خُذْ بِالْفَضْلِ وَصِلْهُمْ فَإِنَّهُ لَنْ يَزَالَ مَعَكَ ظَهِيرٌ مِنَ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ مَا كُنْتَ عَلَى ذَلِكَ-
‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমার কিছু নিকটাত্মীয় আছে। আমি তাদের সাথে সদাচরণ করি, কিন্তু তারা আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে। তাদের আচরণকে আমি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখি, কিন্তু তারা আমার প্রতি যুলুম করে। তাদের প্রতি আমি সদাচরণ করি, কিন্তু তারা দুর্ব্যবহার করে। আমি কি তাদের এহেন আচরণের বদলা নেব? তিনি বললেন, না। তাহলে তোমরা উভয়েই (রহমত হতে) বঞ্চিত হবে। বরং তুমি তাদের সাথে মহানুভবতা প্রদর্শন কর এবং আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখ। কেননা এভাবে যতদিন তুমি তাদের সাথে সদাচরণ করতে থাকবে, ততদিন আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার উপর সাহায্যকারী ফেরেশতা নিয়োজিত থাকবেন’।[2]
নিরুপায় মিসকীন ও মুখাপেক্ষী আগন্তুকের প্রতি অনুগ্রহ করুন এবং তাদের যাবতীয় প্রয়োজনে সাধ্যমতো সহযোগিতা প্রদান করুন। কেননা ইবনু আববাস (রাঃ) সূত্রে আমার নিকট নবী (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে,كُلُّ مَعروفٍ صَدَقَةٌ ‘সকল সৎকর্মই হল ছাদাক্বা’।[3]
আরেকটি হাদীছে বর্ণিত হয়েছে,
قَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم: عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ صَدَقَةٌ قَالُوا فَإِنْ لَمْ يَجِدْ قَالَ: فَيَعْمَلُ بِيَدَيْهِ فَيَنْفَعُ نَفْسَهُ وَيَتَصَدَّقُ قَالُوا فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ أَوْ لَمْ يَفْعَلْ قَالَ: فَيُعِينُ ذَا الْحَاجَةِ الْمَلْهُوفَ قَالُوا فَإِنْ لَمْ يَفْعَلْ قَالَ: فَيَأْمُرُ بِالْخَيْرِ أَوْ قَالَ: بِالْمَعْرُوفِ قَالَ فَإِنْ لَمْ يَفْعَلْ قَالَ: فَيُمْسِكُ عَنِ الشَّرِّ، فَإِنَّهُ لَهُ صَدَقَةٌ-
‘রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘প্রত্যেক মুসলিমেরই ছাদাক্বা করা উচিৎ। উপস্থিত লোকজন বলল, যদি সে ছাদাক্বা করার মত কিছু না পায়। তিনি বললেন, তাহ’লে সে নিজের হাতে কাজ করবে। এতে সে নিজেও উপকৃত হবে এবং ছাদাক্বা করবে। তারা বলল, যদি সে সক্ষম না হয় অথবা কাজ না করে? তিনি বললেন, তাহলে সে যেন বিপন্ন মাযলূমের সাহায্য করে। লোকেরা বলল, সে যদি তা না করে? তিনি বললেন, তাহ’লে সে সৎ কাজের আদেশ করবে, অথবা বলেছেন, নেকীর কাজের নির্দেশ করবে। তারা বলল, তাও যদি সে না করে? তিনি বললেন, তাহলে সে খারাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকবে। কারণ এটাই তার জন্য ছাদাক্বা হবে’।[4]
ভিক্ষুকের প্রতি দয়া করবেন। তাকে কোন কিছু দিয়ে বা ভাল কথা বলে আপনার দুয়ার হতে বিদায় করবেন। পরিচিত-অপরিচিত কারো প্রতি দয়া প্রদর্শনে উদাসীন হবেন না। কেননা রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,لاَ تَزْهَدْ فِى الْمَعْرُوفِ وَلَوْ مُنْبَسِطٌ وَجْهُكَ إِلَى أَخِيكَ وَأَنْتَ تُكَلِّمُهُ وَأَفْرِغْ مِنْ دَلْوِكَ فِى إِنَاءِ الْمُسْتَسْقِى ‘কোন সৎকর্ম সম্পাদনে বিমুখতা প্রদর্শন করবে না। যদিও তোমার বন্ধুর সাথে প্রফুল্ল চেহারায় আলাপ করা অথবা স্বীয় বালতি থেকে পানিপ্রার্থীর জন্য পানি ঢেলে দিয়েও হয়’।[5]
কারো প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শনের দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করুন। কেননা আমার কাছে মহান আল্লাহর এ বাণী পৌঁছেছে যে, فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّينَ ‘অতএব দুর্ভোগ (ঐসব) মুছল্লীর জন্য…’ (মা‘ঊন ১০৭/৪)। মুনাফিক সেই, যে প্রদর্শনের জন্য ছালাত আদায় করে, কিন্তু ছুটে গেলে তার ধারে-কাছেও যায় না। وَيَمْنَعُونَ الْمَاعُونَ ‘এবং নিত্য ব্যবহার্য বস্ত্ত দানে বিরত থাকে’ (মাঊন ১০৭/৭)। মা‘ঊন হ’ল ঐ যাকাত, আল্লাহ যা ফরয করেছেন।
আপনি অবশ্যই রিয়া থেকে বিরত থাকবেন। কেননা আমি জানতে পেরেছি যে, রিয়াকারীর আমল আল্লাহর নিকটে পৌঁছে না। আর গায়রুল্লাহর উদ্দেশ্যে কৃত আমল তাঁর কাছে পরিশুদ্ধ হয় না। যাবতীয় আমল সর্বান্তকরণে আল্লাহর উদ্দেশ্যেই নিবেদন করুন। কেননা নবী (ছাঃ) থেকে আমার নিকট হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন, نَضَّرَ اللهُ امْرَأً سَمِعَ مِنَّا حَدِيثًا فَحَفِظَهُ حَتَّى يُبَلِّغَهُ غَيْرَهُ- ٍ ‘আল্লাহ ঐ ব্যক্তির মুখ উজ্জ্বল করুন, যে আমাদের নিকট থেকে কোন হাদীছ শুনে মুখস্থ করেছে এবং অপরের নিকট তা প্রচার করেছে’।[6]
যে কোন মুসলিমের অন্তর তিনটি বৈশিষ্ট্য থেকে মুক্ত হয় না। (ক) আল্লাহর ওয়াস্তে ইখলাছের সাথে আমল সম্পাদন করা (খ) ন্যায়পরায়ণ শাসকের জন্য গঠনমূলক সুপরামর্শ প্রদান করা (গ) মুসলমানদের সর্বসাধারণের জন্য কল্যাণকামিতা। কেননা তাদের দো‘আ তাদেরকে চতুষ্পার্শ থেকে পরিবেষ্টন করে রাখে।
আপনি অসৎ চরিত্র থেকে বিরত থাকবেন। কেননা তা আল্লাহর অবাধ্যতার দিকে আহবান জানায়। নবী করীম (ছাঃ) বলেন, إِنَّ مِنْ خِيَارِكُمْ أَحْسَنَكُمْ أَخْلاَقًا‘নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে সেই সর্বোত্তম, যার চরিত্র সর্বোত্তম’।[7]
নির্জনে-নিভৃতে আমল করার সময় আল্লাহর সামনে বিনয়ী হেŠন। মানুষের উপর যুলুম করবেন না। যুলুম করলে আল্লাহ আপনার উপর তাদেরকে বিজয়ী করবেন। কেননা কতিপয় আলেম ছাহাবী কর্তৃক নবী (ছাঃ) থেকে আমার নিকট এ মর্মে হাদীছ পেঁŠছেছে যে,اتَّقُوا الظُّلْمَ فَإِنَّ الظُّلْمَ ظُلُمَاتٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَاتَّقُوا الشُّحَّ فَإِنَّ الشُّحَّ أَهْلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ حَمَلَهُمْ عَلَى أَنْ سَفَكُوا دِمَاءَهُمْ وَاسْتَحَلُّوا مَحَارِمَهُمْ ‘তোমরা যুলুম থেকে বেঁচে থাক। কেননা যুলুম ক্বিয়ামতের দিন ঘন অন্ধকারের রূপ ধারণ করবে। আর তোমরা কৃপণতা থেকে বেঁচে থাক। কেননা কৃপণতা তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে ধ্বংস করেছে। এই যুলুম তাদেরকে মানুষের রক্তপাত ঘটানো এবং হারামকে হালাল করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছিল’।[8]
সীমালংঘন থেকে বেঁচে থাকুন। কেননা তা শাস্তিকে ত্বরান্বিত করে। আমার কাছে নবী করীম (ছাঃ)-এর হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন,إنَّ أعْجَلَ الخَيْرِ ثوابا صِلةُ الرَّحِمِ وإن أعْجَلَ الشَّرِّ عقوبةً البغيُ واليمينُ الغموسُ تَدَعُ الدِّيارَ بَلاقِع ‘কল্যাণের প্রতিদান হিসাবে দ্রুত নেকী দেয়া হয় আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার কারণে। দ্রুততম সময়ে যে পাপের শাস্তি দেয়া হয় তা হ’ল, সীমালংঘন। আর মিথ্যা কসমে অর্জিত উপার্জন গৃহসমূহকে জীবিকাশূন্য করে দেয়’।[9]
আপনি আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন কিছুর নামে কসম করবেন না। কেননা আমার কাছে নবী করীম (ছাঃ) থেকে এ মর্মে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন, لا تحلفوا بآبائكم لِيَحْلِفْ حالفٌ بالله أو لِيَسْكُتْ ‘তোমরা তোমাদের পিতৃপুরুষের নামে কসম করবে না। কেউ কসম করতে চাইলে সে যেন আল্লাহর নামে কসম করে অথবা চুপ থাকে’।[10] সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর কসম করবেন না। কেননা আল্লাহ বলেন,وَلاَ تَجْعَلُواْ اللهَ عُرْضَةً لِّأَيْمَانِكُمْ ‘তোমরা তোমাদের শপথসমূহকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করো না’ (বাক্বারাহ ২/২২৪)।
মানুষের প্রতি দয়া করুন, মহান আল্লাহ আপনার প্রতি দয়া করবেন। কেননা আমার কাছে নবী করীম (ছাঃ)-এর হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন, لاَ يَرْحَمُ اللهُ مَنْ لاَ يَرْحَمُ النَّاسَ ‘আল্লাহ ঐ ব্যক্তির প্রতি দয়া প্রদর্শন করেন না, যে মানুষের প্রতি দয়া করে না’।[11]
আল্লাহর আনুগত্যকে ভালবাসুন, আল্লাহ আপনাকে ভালবাসবেন এবং তার সৃষ্টিজীবের নিকটে আপনাকে প্রিয় করবেন। আল্লাহ তাঁর নবীকে সম্বোধন করে বলেন, قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللهُ ‘তুমি বল, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তবে আমার অনুসরণ কর। তাহ’লে আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন’ (আলে ইমরান ৩/৩১)।
আল্লাহর উদ্দেশ্যে সংগোপনে সিজদাবনত হেŠন। কেননা রাসূল (ছাঃ) ইবনু ওমর (রাঃ)-কে বলেন, عَلَيْكَ بِالسُّجُودِ فَإِنَّكَ لاَ تَسْجُدُ لِلَّهِ سَجْدَةً إِلاَّ رَفَعَكَ اللهُ بِهَا دَرَجَةً وَحَطَّ بِهَا عَنْكَ خَطِيئَةً ‘তুমি সিজদাকে অপরিহার্য করে নাও। কেননা যখনই তুমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে একটি সিজদা করবে, তখন আল্লাহ তোমার একটি মর্যাদার স্তর বাড়িয়ে দিবেন এবং এর মাধ্যমে তোমার একটি পাপ মোচন করবেন’।[12]
ছালাত আদায়কে অপরিহার্য করে নিন। কেননা নবী (ছাঃ) বলেন, جُعِلَتْ قُرَّةُ عيني في الصلاة ‘ছালাতকে আমার জন্য চক্ষু শীতলকারী করা হয়েছে’।[13]
আপনি আপনার অন্তরকে সংশোধন করুন। আল্লাহ আপনার বহির্জগতকে সংশোধন করে দিবেন। বাহন, বৈঠক ও কথা-বার্তায় ধীরস্থিরতা অবলম্বন করুন। কেননা মানুষেরা যখন নবী (ছাঃ)-এর পাশে ভীড় জমিয়েছিল তখন তিনি বলেন,أَيُّهَا النَّاسُ عَلَيْكُمْ بِالسَّكِينَةِ، فَإِنَّ الْبِرَّ لَيْسَ بِالإِيضَاعِ ‘হে লোকসকল! তোমরা ধীরস্থিরতা অবলম্বন কর। কেননা দ্রুততায় কোন নেকী নেই’।[14]
চতুষ্পদ জন্তুর উপর আরোহণের প্রাক্কালে তাকে যমীনের ঘাস-লতাপাতা খেতে দিন এবং গন্তব্যে পৌঁছার পরও তার অংশ দিন। কেননা আমার কাছে নবী করীম (ছাঃ)-এর হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন,
فَإِذَا رَكِبْتُمْ هَذِهِ الدَّوَابَّ الْعُجْمَ فَأَنْزِلُوهَا مَنَازِلَهَا فَإِنْ كَانَتْ الْأَرْضُ جَدْبَةً فَانْجُوا عَلَيْهَا بِنِقْيِهَا وَعَلَيْكُمْ بِسَيْرِ اللَّيْلِ فَإِنَّ الْأَرْضَ تُطْوَى بِاللَّيْلِ مَا لَا تُطْوَى بِالنَّهَارِ وَإِيَّاكُمْ وَالتَّعْرِيسَ عَلَى الطَّرِيقِ فَإِنَّهَا طُرُقُ الدَّوَابِّ وَمَأْوَى الْحَيَّاتِ-
‘তোমরা যখন এই নির্বাক চতুষ্পদ জন্তুগুলোর (বাহন) পিঠে আরোহণ করবে, তখন তাদেরকে তাদের চারণভূমিতে ছেড়ে দিবে। অনাবাদি-শুষ্কভূমি হলে শস্য-শ্যামল ভূমিতে তাদের নিয়ে যাবে। তোমরা রাতে ভ্রমণ করবে। কেননা রাতে পৃথিবীকে সংকুচিত করা হয়, যা দিনে হয় না। আর রাতে রাস্তায় ঘুমানো থেকে বিরত থাকবে। কেননা তখন তা হিংস্র প্রাণী এবং সাপ-বিচ্ছুদের আশ্রয়স্থল হয়ে দাঁড়ায়’।[15]
ধৈর্য ধারণ করুন এবং অপসন্দনীয় বিষয় হতে বিরত থাকুন। কষ্টদানকারী কারো প্রতি পাল্টা বদলা নিবেন না। যখন আপনাকে কেউ কষ্ট দান করবে যাকে আপনি অপসন্দ করেন, তার পাল্টা বদলা না নিলে দুনিয়া ও আখিরাতে তার উত্তম প্রতিদান লাভ করবেন। কেননা আমার কাছে নবী করীম (ছাঃ)-এর হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন, إن الله يُحِبُّ الحَلِيْمَ الْغَنِيَّ الْحَيِيَّ الْعَفِيفَ الْمُتَعَفِّفَ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীল, অমুখাপেক্ষী, লজ্জাশীল, চরিত্রবান ও নিষ্পাপ ব্যক্তিকে ভালবাসেন’।[16]
সর্বোত্তম পন্থায় মন্দকে ভাল দিয়ে প্রতিহত করুন। কেননা এটা আল্লাহর নির্দেশ। অবাধ্যতা ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা থেকে বিরত থাকুন। কেননা এর দ্বারা দুনিয়াতে বদনাম হয় এবং পরকালে তা লাঞ্ছনার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। কেননা আমার কাছে নবী করীম (ছাঃ)-এর হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন,
إِنَّ اللهَ خَلَقَ الْخَلْقَ حَتَّى إِذَا فَرَغَ مِنْهُمْ قَامَتِ الرَّحِمُ فَقَالَتْ هَذَا مَقَامُ الْعَائِذِ مِنَ الْقَطِيعَةِ. قَالَ نَعَمْ أَمَا تَرْضَيْنَ أَنْ أَصِلَ مَنْ وَصَلَكِ وَأَقْطَعَ مَنْ قَطَعَكِ قَالَتْ بَلَى. قَالَ فَذَاكَ لَكِ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم اقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ فَهَلْ عَسَيْتُمْ إِنْ تَوَلَّيْتُمْ أَنْ تُفْسِدُوا فِى الأَرْضِ وَتُقَطِّعُوا أَرْحَامَكُمْ أُولَئِكَ الَّذِينَ لَعَنَهُمُ اللَّهُ فَأَصَمَّهُمْ وَأَعْمَى أَبْصَارَهُمْ أَفَلاَ يَتَدَبَّرُونَ الْقُرْآنَ أَمْ عَلَى قُلُوبٍ أَقْفَالُهَا-
‘আল্লাহ যখন সৃষ্টিজীবকে সৃষ্টি করে শেষ করলেন তখন আত্মীয়তার বন্ধন দাঁড়িয়ে বলল, এটা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা থেকে আশ্রয় গ্রহণকারীর স্থান। আল্লাহ বললেন, হ্যাঁ। তুমি কি এতে সন্তুষ্ট হবে না যে, তোমার সাথে যে সম্পর্ক বজায় রাখবে আমিও তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখব? আর তোমার সাথে যে ব্যক্তি সম্পর্ক ছিন্ন করবে আমিও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করব? আত্মীয়তার সম্পর্ক বলল, জী হ্যাঁ। আল্লাহ বললেন, এটা তোমার জন্য। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ইচ্ছা করলে তোমরা এই আয়াতটি তেলাওয়াত করতে পার, ‘যদি তোমরা (জিহাদ থেকে) মুখ ফিরিয়ে নাও, তাহলে সম্ভবতঃ তোমরা জনপদে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে। এদের প্রতিই আল্লাহ অভিসম্পাৎ করেন। অতঃপর তাদেরকে তিনি বধির করেন ও তাদের চক্ষুগুলিকে দৃষ্টিহীন করে দেন। তবে কি তারা কুরআন গবেষণা করে না? নাকি তাদের হৃদয়গুলি তালাবদ্ধ?’ (মুহাম্মাদ ৪৭/২২-২৪)।[17]
বৈষয়িক কোন ব্যাপারে রাগান্বিত হলে ক্রোধ সংবরণের মাধ্যমে আল্লাহর পারিতোষিকের কথা স্মরণ করুন। কেননা মহান আল্লাহ বলেন,وَالْكَاظِمِينَ الْغَيْظَ وَالْعَافِينَ عَنِ النَّاسِ وَاللهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ ‘যারা ক্রোধ দমন করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। বস্ত্ততঃ আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন’ (আলে ইমরান ৩/১৩৪)।
নবী (ছাঃ) থেকে আমার নিকট হাদীছ পৌঁছেছে যে, নিশ্চয়ই তিনি বলেন,مَنْ كَظَمَ غَيْظًا وَهُوَ يَسْتَطِيعُ أَنْ يُنَفِّذَهُ دَعَاهُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى رُءُوسِ الْخَلاَئِقِ حَتَّى يُخَيِّرَهُ فِى أَىِّ الْحُورِ شَاءَ ‘যে ব্যক্তি তার ক্রোধ বাস্তবায়িত করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও রাগ দমন করে, ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে সমস্ত মাখলূকের সামনে ডেকে যে কোন হূর গ্রহণের স্বাধীনতা দিবেন’।[18]
আল্লাহর আনুগত্যের ব্যাপারে কোন ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করবেন না। আর আল্লাহর সন্তুষ্টিমূলক কোন কথা বললে তা পূরণ করুন এবং তার উপর দৃঢ় থাকুন। কেননা আমার কাছে নবী করীম (ছাঃ)-এর হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন,اضْمَنُوا لِى سِتًّا مِنْ أَنْفُسِكُمْ أَضْمَنْ لَكُمُ الْجَنَّةَ اصْدُقُوا إِذَا حَدَّثْتُمْ وَأَوْفُوا إِذَا وَعَدْتُمْ وَأَدُّوا إِذَا ائْتُمِنْتُمْ وَاحْفَظُوا فُرُوجَكُمْ وَغُضُّوا أَبْصَارَكُمْ وَكُفُّوا أَيْدِيَكُمْ ‘তোমরা নিজেদের ছয়টি বিষয়ের দায়িত্ব গ্রহণ কর, আমি তোমাদের জন্য জান্নাতের দায়িত্ব গ্রহণ করব। (১) কথা বললে সত্য বল (২) ওয়াদা করলে তা পালন কর (৩) আমানত রাখা হ’লে সঠিকভাবে আদায় কর (৪) লজ্জাস্থানের হেফাযত কর (৫) দৃষ্টি অবনমিত রাখ এবং (৬) হাত সংবরণ কর’।[19]
যখন এমন কোন কাজ করার ব্যাপারে আপনি বদ্ধপরিকর হন, যাতে আল্লাহর আনুগত্য নেই, তখন তা করবেন না; বরং কৃত কসমের কাফফারা আদায় করুন। কেননা আমার কাছে নবী করীম (ছাঃ)-এর হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন, لا نَذْرَ في معصيةِ الله عز وجل وكَفّارَتُها كفّارَةُ يَمين ‘আল্লাহর অবাধ্যতায় কোন মানত নেই। আর তার কাফফারা হল শপথ ভঙ্গের কাফফারার মত’।[20] তিনি আরো বলেন, النَّذْرُ يَمينٌ وكفَّارتُه كفارةُ يَمِيْنٍ ‘মানত হল শপথের মত। আর তার কাফফারা হল শপথ ভঙ্গের কাফফারার ন্যায়’।[21]
যখন কোন কাজ করার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হবেন, কিন্তু অন্য কাজে অপেক্ষাকৃত বেশী কল্যাণ মনে করবেন, তখন সর্বাধিক কল্যাণকর কাজটি সম্পাদন করুন এবং কসমের কাফফারা প্রদান করুন। কেননা আমার কাছে নবী করীম (ছাঃ)-এর হাদীছ পৌঁছেছে যে তিনি বলেন,إِذَا حَلَفْتَ عَلَى يَمِينٍ فَرَأَيْتَ غَيْرَهَا خَيْرًا مِنْهَا، فَكَفِّرْ عَنْ يَمِينِكَ، وَأْتِ الَّذِى هُوَ خَيْرٌ ‘কোন শপথ করার পর তার চেয়ে কল্যাণকর অন্য কোন কাজ সম্পর্কে অবগত হলে শপথ ভঙ্গের কাফফারা দাও এবং সর্বোত্তম কাজটি সম্পাদন কর’।[22]
বাচালতা থেকে নিবৃত্ত থাকবেন। এমন কোন কথা বলবেন না, যে ব্যাপারে আপনি জানেন যে, বিষয়টি এমন হতে পারে না। আর শাসকের জন্য এটি আরো জঘন্য।
পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করুন। প্রত্যেক ছালাতে তাদের জন্য বিশেষভাবে দো‘আ করুন। তাদের জন্য বেশী বেশী ক্ষমা প্রার্থনা করুন এবং তার পূর্বে আপনার নিজের জন্য দো‘আ করুন। কেননা ইবরাহীম ও নূহ (আঃ) দো‘আ করেছিলেন,رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ ‘হে আমাদের প্রভু! আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে এবং ঈমানদার সকলকে ক্ষমা কর যেদিন হিসাব দন্ডায়মান হবে’ (ইবরাহীম ১৪/৪১)। এঁরা সকলেই পিতা-মাতার পূর্বে নিজের জন্য দো‘আ করেছিলেন। আমার নিকট নবী (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন,مَنْ سَرَّهُ أَنْ يُمَدَّ لَهُ فِى عُمْرِهِ وَيُزَادَ لَهُ فِى رِزْقِهِ فَلْيَبَرَّ وَالِدَيْهِ وَلْيَصِلْ رَحِمَهُ- ‘যে ব্যক্তি তার বয়স ও জীবিকা বৃদ্ধি হওয়া পসন্দ করে, সে যেন তার পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করে এবং তার আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখে’।[23]
আপনার প্রতি মানুষের কৃত অবদানের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। সাধ্যানুযায়ী তাদের উত্তম বিনিময় প্রদান করুন। কেননা আমার নিকট রাসূল (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে, ‘যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না, সে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না’।[24]
পশুপৃষ্ঠে আরোহণ কালে বাহনে পা রাখার সময় বলুন بسم الله ‘আল্লাহর নামে যাত্রা শুরু করছি’। অতঃপর ঠিকভাবে বসে ভ্রমণের সময় বলুন,
اَللهُ أَكْبَرُ، اَللهُ أَكْبَرُ، اَللهُ أَكْبَرُ، سُبْحَانَ الَّذِيْ سَخَّرَ لَنَا هَذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِيْنَ وَإِنَّا إِلَى رَبِّنَا لَمُنْقَلِبُوْنَ، اَللَّهُمَّ إِنَّا نَسْأَلُكَ فِيْ سَفَرِنَا هَذَا الْبِرَّ وَالتَّقْوَى وَمِنَ الْعَمَلِ مَا تَرْضَى، اَللَّهُمَّ هَوِّنْ عَلَيْنَا سَفَرَنَا هَذَا وَاطْوِ لَنَا بُعْدَهُ، اَللَّهُمَّ أَنْتَ الصَّاحِبُ فِي السَّفَرِ وَالْخَلِيْفَةُ فِي الْأَهْلِ وَالْمَالِ، اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ وَعْثَاءِ السَّفَرِ وَكَآبَةِ الْمَنْظَرِ وَسُوْءِ الْمُنْقَلَبِ فِي الْمَالِ وَ الْأَهْلِ-
‘আল্লাহ সবার চেয়ে বড় (তিনবার)। মহা পবিত্র সেই সত্তা যিনি এই বাহনকে আমাদের জন্য অনুগত করে দিয়েছেন। অথচ আমরা একে অনুগত করার ক্ষমতা রাখি না। আর আমরা সবাই আমাদের প্রভুর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী’ (যুখরুফ ৪৩/১৩-১৪)। হে আল্লাহ! আমরা আপনার নিকটে আমাদের এই সফরে কল্যাণ ও তাক্বওয়া এবং এমন কাজ প্রার্থনা করি, যা আপনি পসন্দ করেন। হে আল্লাহ! আমাদের উপরে এই সফরকে সহজ করে দিন এবং এর দূরত্ব কমিয়ে দিন। হে আল্লাহ! আপনি এই সফরে আমাদের একমাত্র সাথী এবং পরিবারে ও মাল-সম্পদে আপনি আমাদের একমাত্র প্রতিনিধি। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকটে পানাহ চাই সফরের কষ্ট, খারাপ দৃশ্য এবং মাল-সম্পদ ও পরিবারের নিকটে মন্দ প্রত্যাবর্তন হ’তে।[25] রাসূল (ছাঃ) বাহনে আরোহণ করে এভাবে দো‘আ করতেন।
পানাহারের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলুন। প্রথমে বলতে ভুলে গেলে স্মরণ হওয়া মাত্রই দো‘আ পাঠ করুন। পানাহার শেষে বলুন, ‘আল-হামদুলিল্লাহ’। অন্য লোকের সাথে খেতে বসলে আপনার সন্নিকট থেকে নিন। ডান হাত দিয়ে খান, বাম হাতে পানাহার করবেন না। খাবারের উপর থেকে বা অপরের সামনে থেকে খাবেন না। কেননা আমার নিকট হাদীছ পৌঁছেছে যে, জনৈক ব্যক্তি এরূপ করছিল। তখন নবী (ছাঃ) বললেন,اُذْكُرِ اللهَ وكُلْ مِمَّا يَليكَ وكلْ بِيَمينِك ولا تأكلْ بشمالِك ولا تشربْ بشمالك ‘আল্লাহর নাম নাও (বিসমিল্লাহ বলো), তোমার সন্নিকট হতে এবং ডান হাতে খাও, বাম হাতে পানাহার করো না’।[26]
সম্ভব হলে কেবলমাত্র বৃহস্পতিবারে সফর করুন। কেননা আমার নিকট হাদীছ পৌঁছেছে যে, নবী (ছাঃ) বৃহস্পতিবারে সফরে বের হতে পসন্দ করতেন।[27]
(চলবে)
অনুবাদ: ইহসান ইলাহী যহীর
[1]. ত্বাবারাণী, ছহীহাহ হা/৪৫০; ছহীহ ইবনু হিববান হা/৫৬৬।
[2]. মুসলিম হা/২৫৫৮; আবুদাঊদ হা/৪৭৬৫।
[3]. বুখারী হা/৬০২১, মুসলিম হা/১০০৫।
[4]. বুখারী হা/৬০২২; মুসলিম হা/১০০৮; মিশকাত হা/১৮৯৫।
[5]. আহমাদ হা/১৬৬৬৭, ছহীহাহ হা/১৩৫২।
[6]. তিরমিযী হা/২৬৫৬; দারেমী হা/২৩০; ছহীহাহ হা/৪০৩।
[7]. ছহীহ বুখারী হা/২৩০৫; ছহীহ মুসলিম হা/১৬০১।
[8]. বুখারী হা/২৪৪৭; মুসলিম হা/২৫৭৮, ২৫৭৯।
[9]. বায়হাক্বী হা/২০৩৬৪; ছহীহাহ হা/৯৭৮; ছহীহ আত-তারগীব হা/১৮৩৬।
[10]. ছহীহ বুখারী হা/৬৪৭৬; ছহীহ মুসলিম হা/৪৭।
[11]. ছহীহ বুখারী হা/৭৩৭৬; মুসলিম হা/২৩১৯।
[12]. তিরমিযী হা/৩৮৯; ইবনু মাজাহ হা/১৪৮৭; সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৯৩৭।
[13]. নাসাঈ হা/৩৯৪০; ছহীহুল জামে হা/৩১২৪; মিশকাত হা/৫২৬১, সনদ ছহীহ।
[14]. ছহীহ বুখারী হা/১৬৭১; ছহীহ মুসলিম হা/১২৮২।
[15]. মুওয়াত্ত্বা মালেক হা/৩৫৯০; ছহীহুল জামে হা/১৭৭০; ছহীহাহ হা/৬৮২।
[16]. বায়হাক্বী শু‘আব; সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৩২০।
[17]. ছহীহ বুখারী হা/৪৫৫২; ছহীহ মুসলিম হা/৬৬৮২।
[18]. আবুদাঊদ হা/৪৭৭৭; তিরমিযী হা/২০২১; ইবনু মাজাহ হা/৪১৪৬; সনদ হাসান।
[19]. আহমাদ হা/২২৮০৯; মিশকাত হা/৪৮৭০; ছহীহ আত-তারগীব হা/১৯০১,; সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৪৭০।
[20]. আবুদাঊদ হা/৩২৯০, মিশকাত হা/৩৪৩৫।
[21]. আহমাদ হা/১৭৩৭৮; সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৮৬০।
[22]. বুখারী হা/৬৬২২, মুসলিম হা/১৬৫২; মিশকাত হা/৩৪১২।
[23]. আহমাদ হা/১৩৮৩৮; ছহীহ আত-তারগীব হা/২৪৮৮।
[24]. তিরমিযী হা/১৯৫৫; মিশকাত হা/৩০২৫।
[25]. মুসলিম, মিশকাত হা/২৪২০, ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়-৯, অনুচ্ছেদ-৭।
[26]. আবুদাঊদ হা/৩৭৭৭; তিরমিযী হা/১৮৫৭;; ইবনে হিববান হা/১২৭৩।
[27]. ত্বাবারাণী, ছহীহুল জামে‘ হা/৪৯৫০।