ছালাতুত তাসবীহ
অধিক তাসবীহ পাঠের কারণে এই ছালাতকে ‘ছালাতুত তাসবীহ’ বলা হয়। এটি ঐচ্ছিক ছালাত সমূহের অন্তর্ভুক্ত।
এ বিষয়ে কোন ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়নি। বরং আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) বর্ণিত এ সম্পর্কিত হাদীছকে কেউ ‘মুরসাল’ কেউ ‘মওকূফ’ কেউ ‘যঈফ’ কেউ ‘মওযূ’ বা জাল বলেছেন। সঊদী আরবের স্থায়ী ফৎওয়া কমিটি ‘লাজনা দায়েমাহ’ এই ছালাতকে বিদ‘আত বলে ফৎওয়া দিয়েছে। যদিও শায়খ আলবানী (রহঃ) উক্ত হাদীছের যঈফ সূত্র সমূহ পরস্পরকে শক্তিশালী করে মনে করে তাকে ‘ছহীহ’ বলেছেন এবং ইবনু হাজার আসক্বালানী ও ছাহেবে মির‘আত একে ‘হাসান’ স্তরে উন্নীত বলেছেন। তবুও এরূপ বিতর্কিত, সন্দেহযুক্ত ও দুর্বল ভিত্তির উপরে কোন ইবাদত বিশেষ করে ছালাত প্রতিষ্ঠা করা যায় না বিধায় ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’-এর ‘দারুল ইফতা’ বিষয়টি থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। [1]
[1] . দ্রঃ ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ)-এর বিস্তারিত আলোচনা; আলবানী, মিশকাত পরিশিষ্ট, ৩ নং হাদীছ ৩/১৭৭৯-৮২ পৃঃ; আবুদাঊদ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১৩২৮ হাশিয়া; বায়হাক্বী ৩/৫২; আব্দুল্লাহ ইবনু আহমাদ, মাসায়েলে ইমাম আহমাদ, মাসআলা নং ৪১৩, ২/২৯৫ পৃঃ; মির‘আত ৪/৩৭২-৭৫; রিয়াদ : লাজনা দায়েমাহ, (صلاة التسبيح بدعة، وحديثها ليس بثابت، بل هو منكر)। ফৎওয়া নং ২১৪১, ৮/১৬৪ পৃঃ।
নিয়ম : দিনে বা রাতে চার রাক‘আত ছালাত এক সালামে আদায় করবে। ১ম রাক‘আতে ক্বিরাআত শেষে সুবহা-নাল্লা-হি, ওয়াল হামদুলিল্লা-হি, অলা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়াল্লাহ-হু আকবর ১৫ বার পড়বে। অতঃপর রুকূতে গিয়ে (দো‘আ পাঠ শেষে) উক্ত তাসবীহ ১০ বার পড়বে। অতঃপর রুকূ থেকে উঠে (সামি‘আল্লাহু লেমান হামিদাহ ও রববানা লাকাল হামদ বলার পর) ১০ বার পড়বে। অতঃপর সিজদায় গিয়ে (দো‘আ পাঠের পর) ১০ বার পড়বে। অতঃপর সিজদা থেকে উঠে (দো‘আ পাঠের পর) ১০ বার পড়বে। অতঃপর দ্বিতীয় সিজদায় গিয়ে (দো‘আ পাঠের পর) ১০ বার পড়বে। অতঃপর উঠে দাঁড়ানোর পূর্বে বসা অবস্থায় ১০ বার পড়বে (মোট ৭৫ বার)। এইভাবে চার রাক‘আতে সর্বমোট তাসবীহ ৪Î৭৫=৩০০ বার পড়বে। পারলে দিনে একবার, নইলে সপ্তাহে, নইলে মাসে, নইলে বছরে, নইলে জীবনে একবার পড়বে। তাতে আগে-পিছের, জানা-অজানা, ছোট-বড় সব গোনাহ মাফ হয়ে যাবে (আবুদাঊদ হা/১২৯৭-৯৯, ইবনু মাজাহ হা/১৩৮৬-৮৭; ঐ, মিশকাত হা/১৩২৮, ‘ছালাতুত তাসবীহ’ অনুচ্ছেদ-৪০)।