শেখ Google থেকে সাবধান
আজকাল আমরা ইসলাম সম্পর্কে জানার জন্য ইন্টারনেটের উপর অনেকখানি নির্ভর করি। যখনি ইসলামের কোনো নিয়মকানুন, কোনো অনুষ্ঠান, কোনো বিতর্কিত ব্যাপার সম্পর্কে মনে প্রশ্ন জাগে, হয় আমরা ইন্টারনেটে সার্চ করি, না হয় ফেইসবুকে বন্ধু-বান্ধবকে জিজ্ঞাসা করি। শেখ Google যেহেতু আমাদেরকে বিজ্ঞান, গণিত, দর্শন ইত্যাদির উপর যাবতীয় প্রশ্নের সঠিক সমাধান দেয়, আমরা ধরে নেই ইসলাম সম্পর্কেও সে নিশ্চয়ই সঠিক সমাধান দেয়। আর ফেইসবুকে যেই ফ্রেন্ডের মুখে ঘন দাঁড়ি এবং মাথায় টুপি দেখা যায় এবং অনেক ইসলামিক আর্টিকেল শেয়ার করতে দেখা যায়, আমরা ধরে নেই ইসলামের ব্যাপারে তার মতামত নিশ্চয়ই সঠিক। আমাদের এই ধারণাগুলো কি ঠিক?
ভুয়া মুসলিম নাম নিয়ে লেখা বই, আর্টিকেল
ইন্টারনেট ভর্তি হাজার রকমের গুজব এবং ভুয়া গবেষণায় ভরা শত শত মতবাদ পাবেন, যা আপনার কাছে পড়লে মনে হবে বিরাট আলেমরা লিখেছে। কিন্তু ভালো করে খোঁজ নিলে দেখবেন আসলে সব ভুয়া। কু’রআনকে নিয়ে ইন্টারনেটে গবেষণা ধর্মী আর্টিকেলের কোনো অভাব নেই। বেশিরভাগই হয় বিধর্মীরা ভুয়া মুসলিম নাম দিয়ে (যেমনঃ ডঃ আব্দুল মাসিহ, যা একটি আরব খ্রিস্টান নাম, এর অর্থ ‘যীশুর দাস’) মুসলমানদেরকে বিভ্রান্ত করতে লিখেছে, না হয় কোনো অর্ধ শিক্ষিত মুসলিম, যার ইসলামের উপরে কোনো ডিগ্রি নেই, প্রাচীন কু’রআনের আরবি নিয়ে কোনোই জ্ঞান নেই, এমন সব মানুষ শুধুমাত্র নিজের যুক্তি এবং পর্যবেক্ষণ ব্যবহার করে, শুধুই কু’রআনের ইংরেজি অনুবাদের উপর ভিত্তি করে, আর্টিকেলের পর আর্টিকেল লিখেছে। এধরনের আর্টিকেল পড়তে যতই পাঠ মধুর হোক না কেন, এগুলো লেখার মুল উদ্দেশ্য হচ্ছে মুসলমানদের ভেতরে খুব সাবধানে মতপার্থক্য ঢুকিয়ে দেওয়া, যাতে করে মুসলমানরা একে অন্যের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক, বিভেদে জড়িয়ে পড়ে এবং একসময় মুসলিম জাতি বিভিন্ন দলে আলাদা হয়ে পড়ে। এধরনের আর্টিকেল পড়লে দেখবেন আপনার মনের ভিতরে ইসলামের বিভিন্ন নিয়ম-কানুন এবং রীতিনীতি নিয়ে প্রশ্ন, দ্বন্দ্ব এবং আল্লাহ্র সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা ধরণের ’কিন্তু…’ বাড়তেই থাকবে। “কেন আল্লাহ এটা বলল? কেন আল্লাহ এরকম না করে ওরকম করলো না? কেন আল্লাহ শুধুই মেয়েদের জন্য এরকম, কিন্তু ছেলেদের জন্য ওরকম নিয়ম দিলো? …“ এই হচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য। আমরা মুসলমানরা নিজেদের মধ্যে যত কামড়াকামড়িতে ব্যস্ত থাকবো, একে অন্যকে ভুল প্রমাণ করতে যত বেশি সময় খরচ করবো, বিধর্মীদেরকে ঠিক তত কম খাটতে হবে ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করার জন্য।
ভুয়া রেফারেন্স দিয়ে লেখা আর্টিকেল
অনেক সময় দেখবেন আর্টিকেলে কোনো এক মুসলিম ওয়েব সাইটের আর্টিকেলের রেফারেন্স দেওয়া আছে, যেটা কোনো এক প্রসিদ্ধ মাওলানা/শেখ/ডঃ লিখেছেন। কিন্তু আসলে সেই ওয়েবসাইটটিও ওই প্রতারকদেরই বানানো এবং রেফারেন্স দেওয়া সেই আর্টিকেলটিও আসলে ওই প্রতারকদেরই লেখা, প্রসিদ্ধ কারো নাম নকল করে। বিখ্যাত লোকদের নাম ব্যবহার করে ডোমেইন কিনে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে সেই বিখ্যাত মানুষদের নাম ব্যবহার করে নকল আর্টিকেল লেখাটা এক পুরনো কৌশল।
এছাড়াও অনেক আর্টিকেলে আপনি বানানো বা সন্দেহজনক রেফারেন্স পাবেন, যেই রেফারেন্সগুলো কোনো একাডেমিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে গিয়ে পরীক্ষিত, পরিমার্জিত এবং অনুমোদিত হয়নি, অথবা কোনো যোগ্য আলেমের স্বীকৃতি পায়নি। শুধুমাত্র নির্ভরযোগ্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশ করা জার্নাল, প্রসিদ্ধ আলেমের লেখা বই এবং বিখ্যাত আলেমদের দ্বারা পরিচালিত ব্লগ বা ওয়েব সাইটগুলোর রেফারেন্সের সত্যতা যাচাই করে, তবেই সেই আর্টিকেল বা ব্লগগুলো বিশ্বাস করবেন এবং অন্যের কাছে সেগুলো প্রচার করবেন।
আল্লাহ্র কুদরত নিয়ে প্রতারণা
ইন্টারনেটে আরেক ধরণের প্রতারণা হল উল্টোপাল্টা কিছু ছবিকে আল্লাহ্র কুদরত হিসেবে প্রচার করা। যেমন, নিচের ছবিটি প্রায়ই ফেইসবুকে মানুষকে প্রচার করতে দেখা যায় যেখানে দাবি করা হয় যে এটি কু’রআনে বলা আ’দ জাতির কংকাল, যারা কি না বিশাল দেহী ছিলঃ
কিন্তু আসলে এই ছবিগুলো বানানো। একটি
এরকম আরও ভুয়া ছবি দেখবেন যেখানে গরুর চামড়ায় আরবিতে আল্লাহ্ লেখা আছে, কোনো গাছ সিজদা দিচ্ছে, কোনো ফলের ভিতরে আল্লাহ্ লেখা আছে, কোনো পাহাড় দেখলে মনে হবে সে সিজদা দিচ্ছে, আকাশের মেঘে আরবিতে আল্লাহ্র নাম ইত্যাদি। এগুলো কোনটাই বিশ্বাস করবেন না এবং অন্যের কাছে ছড়াবেন না।
কু’রআনের উদ্দেশ্য প্রণোদিত অনুবাদ
অনেক সময় কু’রআনের অনুবাদ নিয়েও ব্যাপক প্রতারণা দেখা যায়। যেমন নিচে সূরা আসর এর এই অনুবাদটি দেখুনঃ
By the fleeting time, surely mankind is in continuous loss, except for those who believe, who does righteous deeds, who invite each other to reform and who invite each other to tolerance.
উপরের আয়াতটি যতই সুন্দর মনে হোক না কেন, এটি একটি নকল অনুবাদ। কু’রআনের আয়াতে এমন কোনো শব্দ নেই যা reform, tolerance নির্দেশ করে। এই ধরণের উদ্দেশ্য প্রণোদিত অনুবাদ করে কিছু বিশেষ গোত্র প্রচার করার চেষ্টা করছে যে, ইসলামের অনেক আইনকানুন মধ্যযুগীয়, বর্বর। যেমন, আজকের যুগে হিজাবের কোনো প্রয়োজন নেই; দাঁড়ি রাখাটা ১৪০০ বছর আগের সংস্কৃতি অনুসারে হয়তো প্রয়োজন ছিল, কিন্তু এখন আর নেই; আমাদেরকে সুদের নিয়মগুলো আজকের যুগের অর্থনীতি অনুসারে নতুন করে বিবেচনা করতে হবে; ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড আজকের আধুনিক যুগের আইনি অবকাঠামোর সাথে বেমানান ইত্যাদি। এরকম ইসলামের আইনের মধ্যে নানা ধরণের ‘যুগোপযোগী পরিবর্ধন’ এবং ‘অন্যায়ের প্রতি আরও বেশি সহনীয়’ হওয়ার জন্য তারা নানা মতবাদ প্রচার করে যাচ্ছে, এবং তাদের মতবাদের ভিত্তি হিসেবে কু’রআনের বিশেষ কিছু আয়াতকে তারা নতুন ভাবে অনুবাদ করে তা সমর্থন করার চেষ্টা করছে।
আরেক ধরণের প্রতারণা হচ্ছে কু’রআনের আয়াতের অংশ বিশেষ ব্যবহার করে নানা ধরণের মত সমর্থন করার চেষ্টা করা। যেমন, অনেকে দাবি করে ছেলেদের মুসলমানি করে মহান আল্লাহ প্রদত্ত স্বাভাবিক শারীরিক কাঠামোর বিকৃতি করা হয় এবং এর স্বপক্ষে তারা এই আয়াতটি দেখাবেঃ
لَا تَبْدِيلَ لِخَلْقِ ٱللَّهِ
আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। [৩০:৩০]
তাদের দাবি হচ্ছে, মহান আল্লাহ মানুষকে যেভাবে সৃষ্টি করেছেন, তার মধ্যে কোনো পরিবর্তন করা যাবে না। আপাতত দৃষ্টিতে তাদের যুক্তি সঠিক মনে হলেও, আপনি আসলে এখানে একটি আয়াতের অংশ বিশেষ দেখতে পাচ্ছেন। পুরো আয়াতটি হচ্ছেঃ
তুমি একনিষ্ঠ ভাবে নিজেকে ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ। এটাই আল্লাহর প্রকৃতি, যার উপর তিনি মানব সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। এটাই সরল ধর্ম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।[৩০:৩০]
এখানে মহান আল্লাহ মানুষের ভেতরে এক সৃষ্টিকর্তার প্রতি প্রকৃতিগত আনুগত্য [দেখুন সুরা ইখলাস], ইসলামে যে ব্যাপারগুলোকে ভালো বলা হয়েছে, সেগুলোকে ভালো এবং যে ব্যাপারগুলোকে খারাপ বলা হয়েছে, সেগুলোকে খারাপ মনে করা ইত্যাদি যেসব প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য দিয়ে তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, সেটার যে কোনো পরিবর্তন হয় না, সেটাই তিনি এখানে নির্দেশ করেছেন। আল্লাহ মানুষকে এমন ভাবে প্রোগ্রাম করে সৃষ্টি করেন যে, তার সত্যের প্রতি স্বভাবগত আকর্ষণ সবসময় থাকে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার বাবা-মা, সমাজ এবং সংস্কৃতি তার মগজ ধোলাই করে না ফেলে। এই হচ্ছে এই আয়াতের প্রকৃত অর্থ। এখানে শারীরিক গঠনের কোনো ইংগিত নেই। [তাফসিরঃ মারিফুল কু’রআন পৃষ্ঠা ৭৪০, তাফহিমুল কু’রআন ৩০:৩০, তাফসিরঃ আল-জালালাইন ৩০:৩০]
বিশেষ গোত্রের ওয়েবসাইট
আরেক ধরণের প্রতারণা হল, আপনি মাঝে মাঝে কিছু ইসলামিক ওয়েবসাইট পাবেন,যাতে চমৎকার কিছু ইসলামিক আর্টিকেল দেখতে পাবেন যেগুলো আপনার কাছে মনে হবে ‘ভালোই তো’, কিন্তু এরই মধ্যে এমন কিছু আর্টিকেল পাবেন, যেগুলো বিতর্কিত এবং এক বিশেষ গোত্রের মতবাদ প্রচার করে, যা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম আলেমরা মেনে নেননি। এধরণের ওয়েবসাইটগুলো দেখে আপনি কোনোভাবেই বুঝতে পারবেন না যে, সেই সাইটগুলো আসলে কোনো বিশেষ গোত্রের ওয়েবসাইট, যাদেরকে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম উম্মাহ বর্জন করেছে। তাদের সব আর্টিকেলই দেখে মনে হবে যে, তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জাতির প্রতিনিধি, কিন্তু ভালো করে খোঁজ নিলে দেখবেন আসলে তারা হয়তো আহমেদিয়া বা কাদিয়ানী বা কুরানিস্ট।
ইসলামের অপপ্রচারে কোটি কোটি টাকার বাজেট
ইন্টারনেটে প্রতারকের কোনো অভাব নেই এবং ইসলাম নিয়ে প্রতারণার কোনো শেষ নেই। প্রতি বছর শত শত অমুসলিম সংগঠন কোটি কোটি টাকার বাজেট খরচ করছে ইসলামের বিরুদ্ধে ভুয়া, হিংসাত্মক, অশ্লীল, চমকপ্রদ, অলৌকিক তথ্য দিয়ে ইন্টারনেট ভরে দিতে, যা পড়ে মুসলিম এবং অমুসলিম উভয় মানুষরাই ব্যপক বিভ্রান্ত হয়ে ইসলামের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে। শুধুমাত্র আমেরিকাতেই নিচের বিখ্যাত দাতা সংগঠনগুলো ২০০১-২০০৯ সালের মধ্যে ৪২.৬ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে বই, ওয়েবসাইট, টিভি প্রোগ্রাম, চলচ্চিত্র, ইউটিউব, ফেইসবুক এর মাধ্যমে আমেরিকায় এবং সারা বিশ্বে মানুষের মধ্যে ইসলামের প্রতি আতংক ছড়িয়ে দিয়ে, ইসলাম যে একটি মধ্যযুগীয়, বর্বর, ‘টেররিস্ট বানানোর ধর্ম’ – মানুষের মধ্যে এই ভুল ধারনাগুলো বদ্ধমূল করে দেবার জন্যঃ
- Donors Capital Fund
- Richard Mellon Scaife foundations
- Lynde and Harry Bradley Foundation
- Newton D. & Rochelle F. Becker foundations and charitable trust
- Russell Berrie Foundation
- Anchorage Charitable Fund and William Rosenwald Family Fund
- Fairbrook Foundation
Democracy Now এর নিচের ভিডিও ইন্টার্ভিউটি দেখলে এবং এই রিপোর্টটি পড়লে বুঝতে পারবেন, কত ব্যাপক ভাবে মানুষের মধ্যে ইসলামের প্রতি ভীতি প্রচার করার জন্য এবং মুসলিমদেরকে কোণঠাসা করে রাখার জন্য সরকারের উচ্চপদস্থ নেতা থেকে শুরু করে, বিলিয়নীয়াররা পর্যন্ত সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
মনে রাখবেন, ইন্টারনেট হচ্ছে শিক্ষিত এবং অত্যন্ত দক্ষ প্রতারকদের জায়গা। এখানে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে, সবচেয়ে মোক্ষম ভাবে মানুষকে প্রতারিত করা হয়, যেটা অনেক শিক্ষিত, আধুনিক মানুষও ধরতে পারেন না। আপনি নিজেকে যতই বুদ্ধিমান, আধুনিক, বিবেচক মানুষ মনে করুন না কেন, বছরে কয়েক কোটি টাকার বেতন দিয়ে পিএইচডি করা স্কলারদের রাখা হয়েছে, যাদের কাজই হচ্ছে ভুয়া ইসলামিক আর্টিকেল লিখে মুসলমানদেরকে বোকা বানানো, ইসলামের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য প্রচার করে বিধর্মীদেরকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে উস্কে দেওয়ার জন্য বই লেখা, সারা পৃথিবীতে ইসলামের বিরুদ্ধে লেকচার দিয়ে বেড়ানো এবং বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরকে মগজ ধোলাই করা, যাতে করে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হয়। এদের বই, আর্টিকেল, ওয়েবসাইট, লেকচারে মগজ ধোলাইয়ের শিকার হয়ে অনেক শিক্ষিত, ধার্মিক মানুষ ঘোরতর নাস্তিক হয়ে গেছে। সুতরাং সাবধান!
প্রতারণামূলক ওয়েবসাইট
নিচের ওয়েবসাইটগুলো দেখে যদিও মুসলিমদের ওয়েব সাইট মনে হয়, কিন্তু এগুলো হয় ভুয়া ওয়েবসাইট, যেগুলো হয় মুসলিমদের নাম দিয়ে প্রচার করা হচ্ছে, না হয় এগুলো বিশেষ কিছু বিতর্কিত মতবাদ প্রচারের ওয়েব সাইট। ইন্টারনেটে ঘুরে বেড়াবার সময় ভুলেও এই সাইটগুলোতে যাবেন না। এমনকি ইন্টারনেটে অনেক ভুয়া কু’রআনও পাওয়া যাচ্ছে! এছাড়াও আইফোনে, এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে ভুয়া কু’রআনের উপর app পাওয়া যায়।
এখানে আমি এমন কিছু ওয়েব সাইটের নাম দিলাম যেগুলো সাধারণত গুগল সার্চে প্রায়ই আসে এবং এদেরকে দেখে সহজে বোঝা যায় না যে এগুলো ইসলাম বিরোধী ওয়েবসাইট। এরকম শত শত ওয়েব সাইট রয়েছে যেগুলো আপনি গিয়ে একটু ভালো ভাবে চিন্তা করলেই বুঝতে পারবেন তারা আসলে ইসলাম বিরোধী।
- www.answering-islam.org
- www.thequran.com
- www.FaithFreedom.org
- www.Islam-Watch.com
- www.wikiislam.net
উপরের লিংকগুলো অনুগ্রহ করে ক্লিক করবেন না।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগে, কেন মানুষ এরকম উঠে পড়ে লেগেছে ইসলামের বিরুদ্ধে? এতো কোটি কোটি টাকা খরচ করে কার কি লাভ হচ্ছে? এর অন্যতম কারণ হচ্ছে পৃথিবীতে মুসলিমরা ‘আশঙ্কাজনক’ হারে বাড়ছে। বর্তমানে পৃথিবীতে ১.৭ বিলিয়ন মুসলিম, খ্রিষ্টান ২ বিলিয়ন। যেভাবেই হোক মুসলিমদের সংখ্যা গরিষ্ঠ হওয়া বন্ধ করতে হবে। না হলে খ্রিষ্টান ধর্ম এবং তাদের কোটি কোটি ডলারের বিশাল চার্চ বাণিজ্য ব্যাপক ক্ষতির মধ্যে পড়বে। দ্বিতীয় কারণ শারিয়াহ আইন বন্ধ করা। যদি শারিয়াহ আইন কোনো দেশে প্রচলিত হয়, তাহলে মদ, জুয়া, সুদ ইত্যাদি বন্ধ হয়ে যাবে। শুধুমাত্র ব্রিটেনেই বছরে ১৭ বিলিয়ন পাউন্ডের বিয়ার বিক্রি হয়। ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলে এই সব হারাম ব্যবসার শেয়ার হোল্ডার শত শত বিলিয়নিয়ার এবং হাজার হাজার মিলিয়নিয়ারের ব্যাপক ক্ষতি হবে। সামরিক অস্ত্র তৈরির পিছনে জড়িত হাজার কোটি ডলারের বাণিজ্যে ব্যাপক ধ্বস নামবে। প্রচলিত হারাম ব্যাংকগুলো বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিতে পড়বে। এজন্য মাত্র কয়েক শ মিলিয়ন ডলার খরচ করে ইসলামের প্রচারে বাধা দিতে পারলে এবং শারিয়াহ নিষিদ্ধ করে মানুষকে ইসলামিক আইন মানা থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারলে শেষ পর্যন্ত বিলিয়ন ডলারের লাভ করা যায়। একারণেই পৃথিবীর অনেক বড় বড় মিলিওনিয়ার এবং বিলিয়নিয়াররা কয়েক শ মিলিয়ন ডলার বাজেট বরাদ্দ করে রেখেছে ইসলামের বিরুদ্ধে যে সংগঠনগুলো কাজ করে যাচ্ছে, তাদেরকে যথাসাধ্য অর্থনীতিক সাহায্য দেওয়ার জন্য, কারণ সেই বিলিয়নিয়ারদের কাছে এটা একটি লাভজনক লঙ টার্ম ইনভেস্টমেন্ট।