ছাহাবী, তাবেঈ, তবে-তাবেঈ ও প্রসিদ্ধ ইমামগণ হাদীছকে যেভাবে দেখতেন
ছাহাবায়ে কেরামের দৃষ্টিতে হাদীছ
ছাহাবায়ে কেরামের সবাই ‘সুন্নাহ’ ও ‘হাদীছ’ কে শরীয়তের একটি উৎস বলে মনে করতেন। একজন ছাহাবীও এমন পাওয়া যাবেনা, যিনি সূন্নাহ সম্পর্কে এর বিপরীত মত পোষণ করতেন। তাই তাদের সম্মুখে যখনই কোন সমস্যা উপস্থিত হত, তখনই তারা প্রথমে তার সমাধান আল্লাহর কিতাবে, অতঃপর রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহের মধ্যে তালাশ করতেন। হাদীছে রাসূলের অনুসরণের ক্ষেত্রে ছাহাবীদের ঘটনাগুলি কেউ একত্রিত করলে, তা বড় একটি বইয়ে পরিণত হবে। এখানে স্মরণীয় দু’একটি ঘটনা আমি উল্লেখ করছি।
(১) রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের পর তাঁর পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে ফাতেমা (রাঃ), আব্বাস (রাঃ) ও উম্মুহাতুল মু’মিনীনগণ (রাঃ) স্ব স্ব মীরাছের দাবী জানালেন, তখন আবুবকর সিদ্দীক (রাঃ) সবাইকে একথা বলে বারণ করলেন যে, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘আমরা নবীগণ কারো মীরাছ লাভ করি না এবং অন্য কেউ আমাদের মীরাছ লাভ করেনা। আমরা যা রেখে যাই তা ছদকা হিসেবে থাকে’।
(২) মায়মুন ইবনু মেহরান বলেনঃ আবুবকর সিদ্দীক (রাঃ) এর কাছে যখন কোন সমস্যা উপস্থিত হত, তখন তিনি প্রথমে আল্লাহর কিতাবে তার সমাধান তালাশ করতেন। তথায় পাওয়া না গেলে, হাদীছে রাসূলে তালাশ করতেন। আর তাঁর জানা হাদীছে পাওয়া না গেলে, তখন অন্যান্য ছাহাবীদের কাছে জিজ্ঞেস করে বলতেন – আপনাদের কারো কাছে এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোন হাদীছ জানা আছে কি? যখন কেউ কোন হাদীছের খবর দিত, তখন খুব খুশী হতেন। আর যখন কারো থেকে সে ব্যাপারে কোন হাদীছের সন্ধান পাওয়া যেতনা, তখন বিজ্ঞ ও জ্ঞানী ব্যক্তিদের সবাই থেকে পরামর্শ নিয়ে ফায়সালা করতেন।
(৩) আবুবকর সিদ্দীক (রাঃ) এর কাছে দাদী তার নাতির মীরাছের অংশ পাবে কি না জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি এ ব্যাপারে কোন হাদীছ আছে কিনা ছাহাবীদের কাছে জিজ্ঞেস করলেন। মুগীরা ইবনু শু’বা (রাঃ) হাদীছ পেশ করলেন এবং মুহাম্মদ ইবনু মাসলামা তার যথার্থতার সাক্ষ্য দান করলেন। অতঃপর তিনি দাদীকে ষষ্ঠাংশ দেয়ার আদেশ দিলেন’।
(৪) রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কোথায় দাফন করা হবে -এ নিয়ে যখন ছাহাবীদের মধ্যে মতবিরোধ হল, তখন আবুবকর সিদ্দীক (রাঃ) এ বলে তাঁদের শান্তনা দিলেন যে, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘নবীগণ যেখানে সমাধিস্থ হতে ভালবাসেন আল্লাহ তাঅ’ালা তাদের সেখানেই মৃত্যু দান করেন।
(৫) রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের পর খলীফা কে হবেন- এ নিয়ে যখন আনছার ও মুহাজির ছাহাবীদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিল, তখন আবুবকর সিদ্দীক (রাঃ) বললেনঃ রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘ইমাম (তথা খলীফা) কুরাইশদের থেকে হবে’। একথা শুনে সবাই শান্ত হয়ে গেল।
(৬) উমর (রাঃ) কাজী শুরাইহের প্রতি এক নির্দেশ নামায় বলেনঃ ‘যদি তোমার নিকট এমন কোন ঘটনা উপস্থিত হয়, যার সমাধান আল্লাহর কিতাবে আছে, তা হলে তুমি সেইরূপ ফায়সালা করবে এবং কারো মতের পরোয়া করবেনা। আর যদি এরূপ ঘটনা উপস্থিত হয়, যার সমাধান আল্লাহর কিতাবে নেই, তখন রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাতে তালাশ করবে এবং তদনুযায়ী ফায়সালা করবে’।
(৭) উমর (রাঃ) বলেনঃ এমন কিছু লোক হবে, যারা কুরআনের ‘মুতাশাবিহাত’ (যে সকল আয়াতের অর্থ সর্ব সাধারণের কাছে স্পষ্ট নয়-) নিয়ে তোমাদের সাথে বিতর্ক করতে চাইবে। যদি এরূপ হয়, তখন তোমরা সুন্নাত তথা হাদীছের মাধ্যমে তাদের উত্তর দাও। কারণ হাদীছ-অভিজ্ঞ ব্যক্তিরাই কুরআনের ব্যাপারে সব চেয়ে বেশী জ্ঞানী হয়ে থাকেন।
(৮) আসলাম (রাঃ) বলেনঃ ‘আমি দেখেছি উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) হাজরে আসওয়াদ চুমু দিয়ে বললেনঃ যদি রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তোমাকে চুমু দিতে না দেখতাম, তা হলে আমিও তোমাকে চুমু দিতাম না’।
(৯) উমর (রাঃ) বলেনঃ দ্বীনের ব্যাপারে যারা নিজের রায় দ্বারা মনগড়া কথা বলে, তাদের থেকে তোমরা সতর্ক থাক। তারা হাদীছের শত্র“। হাদীছ মুখস্ত করা দুষ্কর হবে বলে তারা এরূপ করে থাকে। এতে তারা নিজেরাও গোমরাহ হবে এবং অন্যদেরকেও গোমরাহ করবে।
(১০) উসমান (রাঃ) এর হাতে যখন ছাহাবীগণ খেলাফতের বাইয়াত করলেন, তখন তারা এই বলে বাইয়াত করলেন যে, আমরা আল্লাহর কিতাব, রাসূলের সুন্নাহ এবং খলীফা আবুবকর ও উমরের সুন্নাহ অনুসারে চলব। আর তিনিও এভাবেই বাইয়াত গ্রহন করতেন।
(১১) আলী (রাঃ) বলেনঃ ‘শরীয়ত যদি রায় অথবা কারো বিবেক বুদ্ধি বা কেয়াসের উপরই নির্ভরশীল হত, তাহ’লে অযুর সময় মোজার উপর দিকে মসেহ না করে নীচের দিকে মসেহ করাই বেশী সংগত হত। অথচ রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মোজার উপরিভাগে মসেহ করতে আমি দেখেছি’।
(১২) ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে যখন কোন ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হত, তখন তিনি প্রথমে কুরআনে থাকলে সে মতে ফায়সালা দিতেন। আর যখন কুরআনে না থাকে, তখন হাদীছ মতে ফায়সালা দিতেন। আর যখন হাদীছেও না থাকে, তখন আবুবকর এবং উমরের কথা মত ফায়সালা দিতেন। যখন তাতেও পেতেন না, তখন নিজের রায় প্রকাশ করতেন।
(১৩) যায়েদ ইবনু আসলাম বলেনঃ ‘আমি ইবনু উমর (রাঃ) কে বোতাম খোলা অবস্থায় ছালাত পড়তে দেখে সে ব্যাপারে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ আমি রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এভাবে ছালাত পড়তে দেখেছি’।
তাবেঈ, তবে-তাবেঈ ও ইমামগণের দৃষ্টিতে হাদীছ
(১) উমর ইবনু আব্দুল আযীয (রাঃ) তাঁর শাসনকর্তাদেরকে লিখে জানিয়েছেন যে, ‘আল্লাহর কিতাবে যা আছে সে সম্পর্কে করো কোন রায় বা মত প্রকাশের অধিকার নেই। মণীষীবৃন্দের অভিমত কেবল সেই সম্পর্কেই প্রযোজ্য হবে, যে সম্পর্কে আল্লাহর কিতাবে বা সুন্নাতে রাসূলে কোন সমাধান নেই। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সূন্নাহে যে বিষয়ের সমাধান রয়েছে সে সম্পর্কেও কারো মত প্রকাশের কোন অধিকার নেই’।
(২) কাতাদা (রাঃ) বলেনঃ ‘আল্লাহর কসম! যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সূন্নাহ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে, সে ধ্বংস হয়ে যাবে। সুতরাং তোমরা সূন্নাহকে আঁকড়ে ধর এবং বিদাত প্রত্যাহার কর’।
(৩) ইমাম যুহুরী (রহঃ) বলেনঃ ‘হাদীছকে আঁকড়ে ধরা নাজাতের উপায়’।
(৪) আইয়ুব সাখতিয়ানী (রহঃ) বলেনঃ ‘যদি কোন ব্যক্তিকে কোন হাদীছ বল তখন যদি সে বলে, ‘হাদীছ বাদ দাও আমাকে কুরআন থেকে একটি উত্তর দাও’ তাহ’লে মনে কর, সে একজন পথভ্রষ্ট ও অন্যকে গোমরাহকারী ব্যাক্তি’।
(৫) আব্দুর রহমান ইবনু মাহদী বলেনঃ ‘মানুষ খানা-পিনার চেয়েও অনেক অনেক বেশী হাদীছের মুখাপেক্ষী। কারণ হাদীছ কুরআনকে ব্যাখ্যা করে’।
(৬) ইমাম আউযায়ী (রহঃ) মকহুলের বরাত দিয়ে বলেনঃ ‘হাদীছ কুরআনের তত মুখাপেক্ষী নয়, কুরআন হাদীছের যত মুখাপেক্ষী’।
(৭) ইয়াহয়া ইবনু আদম (রহঃ) বলেনঃ ‘রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা বর্তমান থাকতে অন্য কারো কথার কোন প্রয়োজন হয়না’।
(৮) ইবনু খুযাইমা (রহঃ) বলেনঃ ‘হাদীছ সহীহ হ’লে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথার সামনে কারো কথা চলেনা’।
(৯) মুজাহিদ (রহঃ) বলেনঃ ‘নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যতীত অন্য সব লোকের কথা গ্রহণীয়ও হয়, আবার অগ্রহণীয়ও হয়’।
(১০) মুহাম্মদ ইবনু সীরিন (রহঃ) বলেনঃ ‘যতক্ষণ লোক হাদীছ নিয়ে থাকবে ততক্ষণ সঠিক পথে থাকবে’।
(১১) সুফিয়ান ছাওরী (রহঃ) বলেনঃ ‘হাদীছের জ্ঞানই হ’ল আসল জ্ঞান’।
(১২) ফুযাইল ইবনু আয়ায (রহঃ) বলেনঃ ‘যে ব্যক্তি ইসলাম ও সূন্নাহর উপর মৃত্যু বরণ করেছে, তার জন্য সুসংবাদ’।
(১৩) ইমাম আবু উবাইদ কাসেম ইবনু সাল্লাম (রহঃ) বলেনঃ সুন্নাতের অনুসারী আগুনের টুকরা হাতের মুঠোয় ধারনকারীর ন্যায়। যা বর্তমানে আমার নিকট আল্লাহর রাস্তায় তরবারীর মাধ্যমে যুদ্ধ করার চেয়েও উত্তম।
প্রসিদ্ধ চার ইমামের দৃষ্টিতে হাদীছ
(১) ইমাম আবুহানীফা (রহঃ) থেকে জিজ্ঞেস করা হ’ল, যদি আপনার কথা আল্লাহর কিতাবের বিপরীত হয়? তিনি বললেনঃ কিতাবুল্লাহর জন্য আমার কথা ছেড়ে দাও। আবার প্রশ্ন করা হ’ল, যদি আপনার কথা হাদীছে রাসূলের বিপরীত হয়? তিনি বললেনঃ হাদীছের রাসূলের জন্য আমার কথা পরিহার কর। তারপর প্রশ্ন করা হ’ল, যদি আপনার কথা ছাহাবীদের কথার বিপরীত হয়? তিনি বললেনঃ ছাহাবীদের কথার জন্যও আমার কথা পরিহার কর’ ।
(২) তিনি আরে বলেনঃ ‘হাদীছ সহীহ হলে সেটাই আমার মাযহাব’।
(৩) তিনি আরো বলেনঃ ‘আমরা কোথা থেকে মাসআলা গ্রহন করেছি, তা জানার পূর্বে আমাদের বক্তব্য গ্রহন করা কারোর জন্য জায়েয নয়’।
(৪) তিনি আরো বলেনঃ ‘আমার কোনো কথা বা বক্তব্য যদি কুরআন ও হাদীছের বিপরীত হয়, তাহলে আমার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান কর’।
(৫) তিনি আরো বলেনঃ ‘যদি হাদীছ বা সূন্নাতের সংরক্ষণ না হত, তাহলে আমাদের কেউ কুরআন বুঝতে সক্ষম হতনা’।
(৬) তিনি আরো বলেনঃ ‘যদি রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদীছ হয়, তা হ’লে তা আমদের মাথা ও চক্ষুর উপরে, আর যদি ছাহাবীদের আছার হয়, তাহলে তার থেকে আমরা নির্বাচন করব। আর যদি তাবেঈদের কথা হয়, তাহলে আমরাও ইজতিহাদ করব’।
(৭) তিনি আরো বলেনঃ ‘আমরা প্রথম কিতাবুল্লাহকে গ্রহন করি। তারপর রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ থেকে হুকুম গ্রহন করি। যদি কিতাব ও সুন্নাহে না পাই, তখন ছাহাবীদের কথা গ্রহন করি। এর মধ্যে যার কথা মন চায় গ্রহন করি আর অন্যের কথা ছেড়ে দিই। আর যদি কোন বিষয়ে কুরআন, হাদীছ ও আছার কিছুই পাওয়া না যায়, বরং ইব্রাহীম নখয়ী, শ’াবী, ইবনু সীরিন, হাসান বছরী, অ’াতা, সঈদ ইবনুল মুসায়্যিব ও আরো অন্যান্য তাবেঈদের কথা হয়, তখন তাঁরা যেমন ইজতিহাদ করেছেন আমিও তেমন ইজতিহাদ করি’।
(৮) ইমাম মালেক (রহঃ) বলেনঃ ‘আমি মানুষ, ভুল-শুদ্ধ দুটোই করি, আমার রায় দেখ, যা কুরআন ও সুন্নাহর মোতাবেক তা গ্রহন কর এবং যা তার বিপরীত হয়, তাকে প্রত্যাখ্যান কর’।
(৯) তিনি আরো বলেনঃ ‘রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যতীত অন্য যে কোন ব্যক্তির কথা গ্রহনও করা যায়, বর্জনও করা যায়’।
(১০) ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) বলেনঃ ‘সহীহ শুদ্ধ হাদীছই আমার মাযহাব’।
(১১) তিনি আরো বলেনঃ ‘আমি যা বলেছি তার বিপরীত রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কোন সহীহ বর্ণিত থাকলে, নবীর হাদীছই উত্তম হবে, তখন তোমরা আমার তাকলীদ করনা’।
(১২) তিনি আরো বলেনঃ ‘আমি যা বলেছি তার বিপরীত যদি রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন হাদীছ কারো নিকট বিদ্যমান থাকে, তাহলে আমি আমার জীবিত ও মৃত উভয় অবস্থাতেই ঐ হাদীছের দিকে পিরে আসব’।
(১৩) তিনি আরো বলেনঃ ‘উলামাদের সর্ব সম্মতিক্রমে ‘সূন্নাহ’ তিন প্রকারঃ ১-যাতে, কুরআন যা বলেছে হুবহু তাই বর্ণিত হয়েছে। ২-যাতে, কুরআনে যা আছে তার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ রয়েছে। ৩-যাতে, কুরআন যে বিষয়ে নীরব সে বিষয়ে নতুন কথা বলা হয়েছে। ‘সূন্নাহ’ যে প্রকারেরই হোক না কেন, আল্লাহ তাঅ’ালা সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন যে, তাতে আমাদেরকে তাঁর আনুগত্য করতে হবে। তাঁর ‘সূন্নাহ’ জানার পরে তার বরখেলাফ করার অধিকার আল্লাহ তাআ’লা কাউকে দেন নি’।
(১৪) ইমাম আহমদ ইবনু হাম্বল (রহঃ) বলেনঃ ‘সূন্নাহ’ অর্থ আমাদের মতে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীছসমূহ। আর সুন্নাহ হল, কুরআনের তাফসীর এবং কুরআন বুঝার উপায়’।
(১৫) তিনি আরো বলেনঃ ‘তোমরা আমার, ইমাম মালেক, শাফেয়ী, আউযায়ী এবং সুফিয়ান ছাওরীর তাকলীদ করবে না, বরং তারা যে উৎস থেকে গ্রহন করেছেন তুমিও সেই উৎস থেকেই গ্রহন কর’।
(১৬) তিনি আরো বলেনঃ ‘যে ব্যক্তি রাসূলের হাদীছকে প্রত্যাখ্যান করেছে সে ধ্বংসের মুখে পতিত হয়েছে’।