মানুষ হতভম্ব হয়ে বলবে, “কী হচ্ছে এর!” — আয-যালযালাহ
পৃথিবীকে যখন ভীষণভাবে ঝাঁকানো হবে এবং পৃথিবী তার সব বোঝা বের করে দেবে। আর মানুষ হতভম্ব হয়ে বলবে, “কী হচ্ছে এর!” সেদিন সে সবকিছু জানিয়ে দেবে, কারণ তোমার প্রতিপালক তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। সেদিন মানুষ আলাদা আলাদাভাবে বের হবে, যাতে তাদেরকে দেখানো যায় তারা কী করেছে। তারপর কেউ অণু পরিমাণ ভালো কাজ করে থাকলেও তা দেখতে পাবে। আর কেউ অণু পরিমাণ খারাপ কাজ করে থাকলেও তা দেখতে পাবে। —আয-যালযালাহ
সুধীবৃন্দরা প্রশ্ন করেন, “গত হাজার বছরে কত প্রজন্ম ‘কিয়ামত আসলো বলে!’ — এই ভয় পেয়ে জীবন পার করে গেছে। কই? কিয়ামত তো হয়নি? তাহলে কি তারা সারাজীবন এক অমূলক ভয় পেয়ে জীবন পার করে গেলো না? আমার জীবনে কিয়ামত হবে তার তো কোনো নিশ্চয়তা নেই? তাহলে খামোখা ভয় পেয়ে কী লাভ? মক্কার আরবদের হাজার বছর আগে কিয়ামতের এত সব ভয় দেখানো হলো, কই, কিয়ামত তো তাদের জীবনে হলো না? তাহলে এত এত সব আয়াত ফালতু ভয়?”
— তাদের এই সমস্যার উত্তর তাদের প্রশ্নের ভেতরেই রয়েছে: “ভয় দেখিয়ে কী লাভ?”
ট্রাফিক সিগন্যাল থাকার পরেও মানুষ দেখে আশেপাশে কোনো ট্রাফিক সার্জন দাঁড়িয়ে আছে কিনা। থাকলে মানে, না থাকলে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করে। একারণে শুধুই ভয় দেখানোর জন্য ট্রাফিক সার্জন বা ক্যামেরা দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়। সেই ট্রাফিক সার্জন সারাদিন মোবাইলে ফেইসবুক করুক, আর ক্যামেরা বন্ধ থাকুক না কেন, মানুষ ঠিকই সোজা হয়ে যায়। একইভাবে বিদ্যুতের বিল, ফোনের বিল, কর খেলাপিদের কাছ থেকে আদায় করার জন্য তাদেরকে কোর্টে নেওয়ার ভয় দেখিয়ে চিঠি পাঠালেই হলো। মানুষ সোজা হয়ে যায়। যদিও কোর্টে নেওয়া অনেক খরচ এবং সময় সাপেক্ষ ব্যাপার এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা করা হয় না। কিন্তু মানুষকে সোজা করার জন্য কোর্টের ভয়ই যথেষ্ট।
মানুষ জানে ট্রাফিক সিগনাল অমান্য করলে তার নিজের জীবনেরই ঝুঁকি রয়েছে। বিল, কর খেলাপি হলে দেশের ক্ষতি হয়, যা তাকেও প্রভাবিত করে। তারপরেও মানুষ অন্যায় করে। মানুষের ভালোর জন্যই মানুষকে ভয় দেখাতে হয়।
মানুষকে অপরাধ থেকে দূরে রাখার সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হলো অপরাধের ভয়ংকর পরিণামের ভয় দেখানো, তারপর সেই অপরাধ থেকে কীভাবে দূরে থাকতে হবে, তার পথ দেখিয়ে দেওয়া। আমেরিকাতে Scare Straight বলে একটা প্রোগ্রাম আছে, যেখানে কিশোর তরুণদেরকে জেল থেকে আসামি এনে তার অভিজ্ঞতার বর্ণনা করতে বলা হয়। যখন কিশোর তরুণরা নিজের চোখে দেখে একজন অপরাধীর কী করুন পরিণতি, নিজের কানে শোনে তার ভয়ংকর জীবনের কথা, তখন তারা ভয় পেয়ে যায়। সেই ভয় তাদেরকে অপরাধ থেকে দূরে রাখার জন্য শক্তিশালী প্রভাব হিসেবে কাজ করে।
গত হাজার বছরে অনেক প্রজন্ম কিয়ামতের ভয় পেয়ে অনেক অপরাধ করা থেকে দূরে থেকেছে, নিজেদের ভবিষ্যৎ নিরাপদ করেছে। কিয়ামতের ভয় দেখানোর উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। আগামী যত প্রজন্ম আসবে, সবাই এই আয়াতগুলো পড়বে এবং যাদের শিক্ষা নেওয়ার তারা ঠিকই শিক্ষা নেবে। “কিন্তু কিয়ামতের ভয় দেখিয়েও তো মানুষকে ভালো করা যায় না? সবাই তো আর ভালো হয়ে যাচ্ছে না?” —যারা ঘাগু অপরাধী, তাদের কোনো কিছুতেই কিছু যায় আসে না। তাই এই ভয় কতজনের কাজে লাগলো, কতজনের কাজে লাগলো না তার হিসেব করে লাভ নেই। একজনও যদি এই ভয়ের কারনে জাহান্নামে না গিয়ে জান্নাতে যেতে পারে, তাহলে যথেষ্ট।
“যদি আমার জীবনে কিয়ামত না হয়, তাহলে কিয়ামতের ভয় পেয়ে কী লাভ?” —কিয়ামত হবে কি হবে না তার সম্ভাবনা ৫০-৫০। যে এই প্রশ্ন করছে, তাকে একইভাবে, একই গুরুত্ব দিয়ে প্রশ্ন করতে হবে, “যদি আমার জীবনে কিয়ামত হয়, তাহলে কী হবে?” কিন্তু এই প্রশ্ন তারা করবে না। তারা শুধু প্রথম প্রশ্ন করে নিজেকে এবং অন্যদেরকে প্রতারিত করে, যেন কিয়ামত না হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি। কীভাবে যেন তারা নিশ্চিত হয়ে গেছে যে, তাদের জীবনে আর কিয়ামত হচ্ছে না, তাই কিয়ামত-এর ভয় পেয়ে কোনো লাভ নেই। এগুলো সবই হচ্ছে ফুর্তি করার অজুহাত তৈরি করা। আসল কথা হচ্ছে এরা ইসলামের নিয়ম মানবে না।
আল্লাহর تعالى অশেষ অনুগ্রহ যে, তিনি আমাদেরকে কিয়ামতের বর্ণনা দিয়েছেন, যেন আমরা প্রস্তুত হতে পারি। না হলে আমরা কোনো রকম পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই কিয়ামতের মুখোমুখি হতাম। তখন গিয়ে দাবি করতাম, “কই? কেউ তো আমাকে বলেনি এই অবস্থা হবে? আগে জানলে তো আমি ভালো হয়ে যেতাম। আমাকে কিছু জানানো হয়নি কেন?”
পৃথিবীকে যখন ভীষণভাবে ঝাঁকানো হবে এবং পৃথিবী তার বোঝা বের করে দেবে
যালযালাহ হচ্ছে প্রচণ্ডভাবে ঝাড়া দেওয়া, ভীষণ ভূমিকম্প হওয়া।[৫][৪] শেষে ‘হা’ যোগ করে একে আরও ভয়ংকর করে দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ تعالى যেন বলছেন, “যখন পৃথিবীকে ভীষণভাবে ঝাঁকানো হবে, সে এক ঝাঁকি!”[৭] অর্থাৎ আমরা কেউ কল্পনাও করতে পারবো না সেদিন কী ভয়ংকর ভূমিকম্প হবে।
কুর‘আনের অন্য জায়গায় আল্লাহ تعالى আরও কিছু ছবি দিয়েছেন—
যখন পৃথিবীকে প্রসারিত করা হবে এবং তার ভেতরে যা আছে তা সে ছুড়ে ফেলে খালি হয়ে যাবে। —আল-ইনশিক্বাক্ব ৪-৫
হে মানুষ, তোমাদের প্রতিপালকের প্রতি সাবধান, সেই সময়ের ঝাঁকুনি এক ভীষণ ব্যাপার। যেদিন মা তার বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর কথা ভুলে যাবে। প্রত্যেক গর্ভবতীর গর্ভপাত হয়ে যাবে। আর তুমি মনে করবে মানুষ মাতাল হয়ে গেছে, কিন্তু আসলে তারা হয়নি। বরং আল্লাহর শাস্তি হবে ভীষণ কঠিন। — আল-হাজ্জ ১
পৃথিবীর বোঝা বলতে কী বোঝানো হয়েছে এবং সেদিন কী বের করে দেবে সেটা নিয়ে নানা ধারনা রয়েছে। হতে পারে সেদিন কবরে ধরে রাখা সমস্ত মৃত দেহকে পৃথিবী বের করে দেবে, যেরকম কিনা সূরাহ আদিয়াত-এ বলা হয়েছে—
এরা কি জানে না, যেদিন কবরগুলোর ভেতর থেকে সব বের করে ফেলা হবে? — আল-আদিয়াত ৯
অথবা হতে পারে, সেদিন পৃথিবীর ভেতরের সব মূল্যবান খনিজ-সম্পদ বের হয়ে আসবে। যেই সম্পদের জন্য মানুষ এত ঝগড়া, বিবাদ, যুদ্ধ, হত্যা করেছে, সেই সম্পদ সব বেরিয়ে আসবে। তখন তার আর কোনো মূল্য থাকবে না।[১৭][১৮]
অথবা পৃথিবী মানুষের সব কাজের ফলাফল প্রকাশ করে দেবে, যা সে এতদিন ভেতরে আটকে রেখেছিল, যেরকম কিনা পরের আয়াতে বলা হয়েছে।[৭][১৮]
আর মানুষ হতভম্ব হয়ে বলবে, “কী হচ্ছে এর!” সেদিন তা সব জানিয়ে দেবে, কারণ তোমার প্রতিপালক তাকে নির্দেশ দিয়েছেন
চোখের সামনে ঘটে যাওয়া অসম্ভব সব ঘটনা দেখে মানুষ বিস্ময়ে অবাক হয়ে বলবে, “এর কী হয়েছে!” পৃথিবী যেন একটি বিরাট রেকর্ড করার যন্ত্র, যা মানুষের সব ভালো-খারাপ কাজের রেকর্ড রাখছে। পৃথিবীর উপরে মানুষ যা কিছু করছে, তার সব রেকর্ড হচ্ছে পৃথিবীর ভেতরে। মানবজাতির সব কাজের রেকর্ড সেদিন পৃথিবী প্রকাশ করে দেবে।[১৮][১৪]
এধরণের আয়াত পড়ে অনেক বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ নাক সিটকান। কারণ তাদের আপাতত জ্ঞান অনুসারে পৃথিবী কোনো বুদ্ধিমান সত্ত্বা বা কোনো জীবিত কিছু নয় যে, সেটা নিজে থেকে কিছু করতে পারে। এতে এমন কিছু নেই যা তথ্য সংরক্ষণ করতে পারে। পৃথিবী হচ্ছে শুধুই মাটি, পানি আর খনিজ পদার্থের এক বিরাট স্তূপ। এধরনের আয়াত পড়ে তাদের কাছে রূপকথার গল্প মনে হয়, বা হিন্দু পুরাণের কল্পকাহিনী থেকে কপি করা মনে হয়।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, যারা তাদের বিজ্ঞানের জ্ঞানের কারনে নাক সিটকান, তাদের আসলে বিজ্ঞানের জ্ঞানেরই অভাব। কারণ কোয়ান্টাম ফিজিক্স পড়লে তারা দেখতে পেতেন যে, মানুষের প্রতিটি কাজের ফলাফল মহাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। মানুষ যখনই কিছু পর্যবেক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন কোয়ান্টাম ঘটনাগুলোর সকল সম্ভাবনার মধ্যে থেকে একটি সম্ভাবনা নির্দিষ্ট হয়ে যায়। যার কারনে মানুষের প্রতিটি সিদ্ধান্তের ফলাফল আজকে মহাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে। মহাবিশ্বের অতীত এবং বর্তমান দুটোই কোয়ান্টাম পর্যায়ে গিয়ে প্রভাবিত হয় মানুষের নেওয়া সিদ্ধান্তের কারনে।[৩৯৭] আর মানুষের প্রতিটি সিদ্ধান্তের প্রথম প্রতিক্রিয়া হয় পৃথিবীর উপরে। পৃথিবী যেন মানুষের সিদ্ধান্তের ফলে ঘটা যাবতীয় কোয়ান্টাম পরিণতির এক বিরাট ধারক। রাস্তায় কলার খোসা পড়ে থাকলে আমরা যেমন বুঝতে পারি আজকে একজন কলা খেয়েছে, ঠিক একইভাবে পৃথিবীর এক মুঠো মাটি পর্যবেক্ষণ করলে যেন মানুষের হাজার বছরের ইতিহাস দেখা যায়।
সেদিন মানুষ আলাদা আলাদা দলে বের হবে, যাতে তাদেরকে দেখানো যায় তারা কী করেছে
মানুষ সেদিন কবর থেকে উঠে দাঁড়াবে এবং আলাদা আলাদা ভাবে এগিয়ে যাবে। তার সাথে তার পরিবার, বন্ধু, আত্মীয়, সাগরেদরা কেউ থাকবে না। কেউ তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে না। মান-সম্মান, ডিগ্রি, উপাধি, ক্ষমতা, প্রতিপত্তি কিছুই সেদিন থাকবে না। যেগুলো পাওয়ার চেষ্টায় মানুষ নিজেকে শেষ করে দিচ্ছে, পাওয়ার পর গর্বে বুক ফুলিয়ে হাঁটছে, সেগুলোর কোনো মূল্যই থাকবে না সেদিন। সে তার প্রভুর সামনে দাঁড়াবে একা—
সেদিন প্রত্যেকে আসবে একা। —আল-মারইয়াম ১৯:৯৫
তোমরা আজকে আমার কাছে একা এসেছ, যেভাবে আমি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম। —আল-আনআম ৬:৯৪
তারপর তাদেরকে দেখানো হবে তারা কী করেছিল পৃথিবীর জীবনে। এক অভাবনীয় প্রযুক্তিতে মানুষকে তার জীবন রিপ্লে করে দেখানো হবে। সেদিন তার চামড়া সাক্ষী দেবে তার বিরুদ্ধে। তার হাত, পা, চোখ, কান বলে দেবে সে কী করেছিল।[৭][১৮]
তারপর কেউ অণু পরিমাণ ভালো কাজ করে থাকলেও তা দেখতে পাবে।
আমরা যেন সামান্য ভালো কাজের সুযোগ পেলেও তা ছেড়ে না দেই। হতে পারে প্রতিদিন করা ছোট ছোট ভালো কাজ জমে একদিন বিন্দু থেকে সিন্ধু হয়ে যাবে। বড় বড় পাপের ওজনকেও হারিয়ে দেবে। একারণেই এই আয়াতে আমাদেরকে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে যে, কোনো ভালো কাজকেই যেন আমরা হেলা না করি। প্রতিবেশীকে সামান্য তেল ধার দেওয়া, বা স্ত্রীকে এক লোকমা খাবার মুখে তুলে দেওয়া, বা সন্তানদের সাথে সময় কাটানো — এগুলো যতই সামান্য মনে হোক না কেন, এগুলোই জমতে জমতে একদিন বিরাট পরিমাণের হয়ে যেতে পারে। আর আল্লাহ تعالى যেকোনো সাদাকাকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেবেন বলে কথা দিয়েছেন। কাউকে এক হাজার টাকা দান করলে আমরা সাত লক্ষ টাকার প্রতিদান পেতে পারি। কুর‘আনে আল্লাহ تعالى আমাদেরকে কয়েকবার ভালো কাজের বিনিময়ে বহুগুণ বেশি পুরস্কারের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। এরপরও কেউ যদি ভালো কাজ করতে গিয়ে মনে করে, “এত অল্পতে আর কীই বা হবে?” — তাহলে সে বড়ই বোকামি করবে।
আর কেউ অণু পরিমাণ খারাপ কাজ করে থাকলেও তা দেখতে পাবে
একজন মুসলিমের জন্য এর চেয়ে ভয়ের কিছু নেই। আমরা অনেক সময় এমন কিছু কাজ করি, যা যদি অন্য কেউ দেখে ফেলে বা মানুষের কাছে প্রকাশ হয়ে যায়, তাহলে আর মানুষকে মুখ দেখাতে পারবো না। সারা জীবন মাথা নিচু করে অপমানিত হয়ে জীবন পার করতে হবে। এত কষ্ট করে অর্জন করা মান-সম্মান, মানুষের ভালবাসা সব মুহূর্তের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। অনেক সম্মানিত মানুষ আছেন যাদেরকে আমরা শ্রদ্ধা করি, অনুসরণ করি। অথচ তাদেরই জীবনে দেখা যায় তারা এমন কিছু করেছেন, যা জানতে পারলে আমরাই তাদের মুখে থুথু মারব। এরকম একটা মানুষকে কীভাবে আমরা এতদিন সম্মান করেছি, তা ভেবে নিজেকে ধিক্কার দেবো। প্রতিটি মানুষের জীবনেই এরকম লজ্জার ঘটনা আছে, যা সে সারাজীবন মানুষের কাছে গোপন রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে। মানুষের কাছে গোপন রাখতে পারলেও, একজনের কাছে সে তা কখনই গোপন রাখতে পারে না। একদিন তাঁর تعالى সামনে একা দাঁড়িয়ে আমরা আমাদের প্রতিটি লজ্জা, প্রতিটি অন্যায় এক এক করে দেখতে থাকবো।
উপসংহার
এই সূরাহ’র মূল শিক্ষা রয়েছে শেষ দুই আয়াতের মধ্যে। সূরাহ আল-ক্বারিয়াহ-তে আমরা জানতে পারি যে, আমাদের প্রতিটি কাজের ওজন করা হবে, সেটা যতই নগণ্য হোক না কেন। সেটা কতখানি ভালো, কতখানি খারাপ তা পরিমাপ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পাল্লা থাকবে। আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে যেভাবেই হোক আমাদের ভালো কাজের পাল্লা যেন মন্দ কাজের পাল্লা থেকে ভারি হয়। সাবধান থাকতে হবে যে, প্রতিদিন করা ছোট ছোট খারাপ কাজও একসাথে জমে ভারি হয়ে যেতে পারে। আবার, খুব ছোট ছোট ভালো কাজও একসাথে জমে ভারি হয়ে যেতে পারে। তাই কোনো কাজের বেলাতেই অবহেলা করা যাবে না। হতে পারে আমরা গিয়ে দেখলাম যে, আমাদের ভালো কাজের পাল্লা একটুর জন্য হালকা হয়ে গেলো। দরকার ছিল আর একটি মাত্র ছোট দান। আর দুটো রাকাত নফল নামাজ। আর একটু কুর‘আন পড়া। কিন্তু না। অল্পের জন্য সব হারিয়ে ফেললাম।
[১] বাইয়িনাহ এর কু’রআনের তাফসীর। [২] ম্যাসেজ অফ দা কু’রআন — মুহাম্মাদ আসাদ। [৩] তাফহিমুল কু’রআন — মাওলানা মাওদুদি। [৪] মা’রিফুল কু’রআন — মুফতি শাফি উসমানী। [৫] মুহাম্মাদ মোহার আলি — A Word for Word Meaning of The Quran [৬] সৈয়দ কুতব — In the Shade of the Quran [৭] তাদাব্বুরে কু’রআন – আমিন আহসান ইসলাহি। [৮] তাফসিরে তাওযীহুল কু’রআন — মুফতি তাক্বি উসমানী। [৯] বায়ান আল কু’রআন — ড: ইসরার আহমেদ। [১০] তাফসীর উল কু’রআন — মাওলানা আব্দুল মাজিদ দারিয়াবাদি [১১] কু’রআন তাফসীর — আব্দুর রাহিম আস-সারানবি [১২] আত-তাবারি-এর তাফসীরের অনুবাদ। [১৩] তাফসির ইবন আব্বাস। [১৪] তাফসির আল কুরতুবি। [১৫] তাফসির আল জালালাইন। [১৬] লুঘাতুল কুরআন — গুলাম আহমেদ পারভেজ। [১৭] তাফসীর আহসানুল বায়ান — ইসলামিক সেন্টার, আল-মাজমাআহ, সউদি আরব [১৮] কু’রআনুল কারীম – বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসীর — বাদশাহ ফাহাদ কু’রআন মুদ্রণ কমপ্লেক্স। [১৯] তাফসির আল-কাবির। [২০] তাফসির আল-কাশ্শাফ।