আলী বিন আবু তালিব রা. (ইনফোগ্রাফিক)
আলী বিন আবু তালিব (রাযিয়াল্লাহু আনহু)
পুরো নাম : আলী বিন আবু তালিব বিন আবদুল মুত্তালিব বিন হাশিম।
জন্মেছেন ১৩ রজব, জুমাবার, হিজরীপূর্ব ২৩ সনে। ঠিক ৬০০ খ্রিস্টাব্দে। মহানবী সা. -এর জন্মের ত্রিশ বছর পর।
মা : ফাতেমা বিনতে আসাদ বিন হাশিম।
ভাই : তালিব, ওকাইল, জাফর।
বোন : উম্মে হানি, জুমানা।
তাঁর দেহগড়ন ছিল মাধ্যমিক। সুশ্রী চেহারা। ঠিক যেন পূর্ণিমার চাঁদ। কিছুটা পিঙ্গলবর্ণের। টাকযুক্ত মাথা ছিল তাঁর। পেট ছিল বেশ বড়। বুক ছিল তাঁর চওড়া। দুই কাঁধ ছিল যথেষ্ট প্রশস্ত। ঘন দাড়ি তাঁর বুকের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। বাহুযুগল ছিল বেশ শক্তিশালী ও মাংসল।
——
বিয়ে করেছেন নয়টি।
প্রথম স্ত্রী ছিলেন রাসূলের কন্যা
ফাতেমাতুয যাহরা রাযিয়াল্লাহু আনহা
তাঁর গর্ভ থেকে জন্ম হয় হাসান ও হুসাইন রা. -এর
তারা দুজন হবেন জান্নাতী যুবকদের নেতা।
——
তাঁর সন্তান :
পুত্র : ১৪
কন্যা : ১৭
——
শিশুদের মধ্যে সবার আগে তিনিই ইসলাম গ্রহণ করেন।
জীবদ্দশাতেই জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত দশ জনের একজন তিনি।
খায়বার বিজয়ের প্রাক্কালে আল্লাহর রাসূল বলেছিলেন :
‘আগামী কাল যার হাতে ঝাণ্ডা তুলে দেওয়া হবে, সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসে; আল্লাহ ও তাঁর রাসূলও তাঁকে ভালোবাসেন। বিজয় নিশ্চিত হবে তাঁর হাতেই।’
——
তাবুক যুদ্ধের সময় আল্লাহর রাসূল তাঁকে নিজ পরিবারের দেখাশোনার দায়িত্বে রেখে যাওয়ায় এ যুদ্ধ ছাড়া আল্লাহর রাসূলের নেতৃত্বে পরিচালিত সকল যুদ্ধেই তিনি অংশগ্রহণ করেন।
বেশিরভাগ যুদ্ধে তিনিই ঝাণ্ডা ধারণ করতেন। আগে আগে লড়াইয়ে নামতেন। আরবের নামকরা অনেক বীরপৌত্তলিক ও ইহুদী তাঁর তরবারিতেই ধরাশায়ী হয়।
তিনি ছিলেন বীরবিক্রম। দুঃসাহসী। ন্যায়ের পক্ষে আপসহীন সংগ্রামী। বদর, খন্দক ও খায়বার প্রভৃতি যুদ্ধ তাঁর বীরত্বের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
——
তাঁর জন্যে আল্লাহর রাসূলের দোয়া :
‘হে আল্লাহ, তাঁর বাকপ্রতিভা সুদৃঢ় করুন! তাঁর অন্তর সঠিক পথে পরিচালিত করুন!
এ দোয়ার ফলে সবসময় তিনি সঠিক ও ন্যায্য কথা বলতেন।
——
আল্লাহর রাসূলের মৃত্যুর পর :
তিনি আবু বকর সিদ্দিকের হাতে বায়আত নেন।
তিনি ছিলেন আবু বকর রা. -এর ঘনিষ্ঠ সহযোগী, অন্যতম উপদেষ্টা।
এরপর বায়আত নেন ওমর বিন খাত্তাবের হাতে
– ওমর তাঁকে প্রধান বিচারপতি এবং প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন।
– তিনি ছিলেন সেই ছয় জনের একজন, আমীরুল মুমিনীন ওমর রা. মৃত্যুর পূর্বে যাদের কোনো একজনকে খলীফা হিসেবে গ্রহণ করার ওসিয়ত করেছিলেন মুসলমানদের।
——
ওসমান রা. -এর শাহাদাতের পর
হিজরী ৩৫ সনে খলীফা হিসেবে তাঁর বায়আত নেওয়া হয়।
কূফা নগরীকে তিনি খেলাফতের রাজধানী ঘোষণা করেন।
——
তিনি শহীদ হন হিজরী ৪০ সন মোতাবেক ৬৬১ খ্রিস্টাব্দের রমযান মাসে।
কূফার মসজিদে ফজরের নামায আদায়ের সময় আবদুর রহমান বিন মুলজিম নামক এক খারেজী তাঁকে ছুরিকাঘাত করে।
——
আলী রা. ছিলেন আইনশাস্ত্রে সর্ববিজ্ঞ। ধর্মনিষ্ঠায় আদর্শ। ফতোয়া প্রদান এবং বিচারকার্য সমাধায় তিনি ছিলেন খুবই দক্ষ। ছিলেন সাহাবীদের মধ্যে কোরআনের বিষয়ে সর্বজ্ঞানী। আয়াতের শানেনুযুল, আয়াতের গভীর ব্যাখ্যা এবং সূক্ষ্ম অর্থ অনুধাবন এবং লক্ষ্য উদ্ধারে তিনি ছিলেন সর্বাভিজ্ঞ।