কুরআন এর এক অলৌকিক মুজিযা!
বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেনঃ “সূর্যের পক্ষে সম্ভব নয় চন্দ্রের নাগাল পাওয়া, আর রজনীর পক্ষে সম্ভব নয় দিবসকে অতিক্রম করা; আর প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষপথে (Orbit) অতিক্রম করছে (সাঁতার কাটছে)” [সূরা ইয়াসিনঃ ৪০]
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা এখানে আসমানের সকল কিছুর বর্ণনা করছেন। প্রত্যেকেই তাদের নিজেদের কক্ষপথে ভাসছে, সাঁতার কাটছে, ঘুরছে। তিনি কী নিয়ে কথা বলছেন?
চন্দ্র, সূর্য, গ্যালাক্সি, প্ল্যানেট ইত্যাদি। তিনি বলছেন এগুলোর সবই নিজ নিজ কক্ষপথে ঘুরছে। এখানে আল্লাহ কী শব্দ ব্যবহার করেছেন সবার ‘নিজ নিজ কক্ষপথে’ বুঝানোর জন্য?
এর জন্য আল্লাহ বলছেনঃ
كُلٌّ فِي فَلَك
আরবিটা লক্ষ করেছেন? আরো একটু গভীরভাবে লক্ষ করুন তবেই বাক্যাংশটির অলৌকিক মু’জিযাটা বুঝতে পারবেন।
আল্লাহ বলছেন, “প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষপথে ঘুরছে।” এবার আরবিতে দেখুন – কীভাবে শব্দগুলোও অর্থের সাথে সামঞ্জস্য রেখে, আসমানের প্রত্যেকটি জিনিসের ঘূর্ণনের অর্থের সাথে যেই বাক্যটি দিয়ে, যেই শব্দগুলো দিয়ে, যেই অক্ষরগুলো দিয়ে আল্লাহ বলেছেন এই কথা, সেই অক্ষরগুলোও ঘুরছে নিজ নিজ কক্ষপথে (ছবিটি লক্ষ্য করুন)!!! সুবহানাল্লাহ!
কীভাবে ঘুরছে? كُلٌّ فِي فَلَك
প্রথম শব্দের প্রথম অক্ষর (ك)
শেষ শব্দের শেষ অক্ষর (ك)
প্রথম শব্দের দ্বিতীয় অক্ষর (ل)
শেষ শব্দের দ্বিতীয় শেষ অক্ষর (ل)
প্রথম শব্দের তৃতীয় অক্ষর (فِ)
শেষ শব্দের প্রথম অক্ষর (فِ ِ)
এখানে বাকি আছে (ي) অক্ষরটি –
আর ঘূর্ণন অর্থের জন্য কী শব্দ?
يَسْبَحُونَ (ঘুরছে)
ঘূর্ণনের অর্থের জন্য যে শব্দটা ব্যবহৃত সেটা শুরু হয়েছে (ي) দিয়ে আর মাঝখানে আছে (ي) অর্থাৎ অক্ষরটা কিন্তু “নিজ নিজ কক্ষপথে” এর মাঝে রয়েছে আর তার চারপাশে অন্যান্য অক্ষর ঘুরছে অর্থাৎ ঘূর্ণন অর্থের জন্য যেই শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে সেই শব্দের অক্ষরের চারপাশে সবই ঘুরছে!!! অর্থাৎ আয়াতের অক্ষরসমূহ শব্দের অক্ষরগুলোর ঘূর্ণনের সাথে আসমানের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার সব কিছুর নিজ নিজ কক্ষপথে ঘূর্ণনের সাথে কী অপূর্ব মিলে যাচ্ছে !! সুবহানাল্লাহ !! কে পারে এভাবে করতে? কে?
আয়াতের অক্ষর ঘুরছে, সাথে এর অর্থের জিনিসও ঘুরছে। অর্থ এবং বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার দুটোই কী অসাধারণ সামঞ্জস্য রেখেছে আল্লাহর সৃষ্টির সাথে তার আয়াতের মু’জিযার বহিপ্রকাশ!!
আমরা জানি এটা কোন লিখিত বই ছিল না… মানুষের কাছে তিলাওয়াত করে শুনানোর জন্য এসেছে…লিখিত আকারে নয়। অথচ এর উচ্ছারণ, এমনকি লিখিত রুপেও কি অসাধারণ মু’জিযা!!
এটা সেই কুর’আন যেই কুর’আন আসার সাথে সাথে আরবের অনেক উচ্চমার্গিক কবিরাও কবিতা লেখা বন্ধ করে দিয়েছিল। এই সেই কুর’আন যার তিলাওয়াত শোনার জন্য এই কুর’আনের শত্রুরাই মধ্যরাতে রাসূল ﷺ এর তাহাজ্জুদের নামাজের জন্য অপেক্ষা করতো। এই সেই কুর’আন যার প্রভাবে যারা মুহাম্মাদ ﷺ কে পাগল বলতো, তারাই এটাকে অলৌকিক বলতো। তারা জানতো এটা কোন মানবের পক্ষে সম্ভব নয়, এভাবে কোন মানুষ রচনা করতে পারে না। এটা সেই বিশ্ব রবের পক্ষ থেকে মানুষের জন্য চূড়ান্ত ইসলাম, প্রশান্তির পথ, সত্যপথের দিশারী।