ধর্ম মানতে কোনো ধরনের জোর জবরদস্তি নেই — আল-বাক্বারাহ ২৫৬
ধর্ম মানতে কোনো ধরনের জোর জবরদস্তি নেই। সঠিক পথ ভুল পথ থেকে পরিষ্কারভাবে আলাদা হয়ে গেছে। তাই যে তাগুত (মিথ্যা প্রভুদের) অস্বীকার করবে, এবং আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস আনবে, সে অবশ্যই এমন এক মজবুত হাতল ধরবে, যা ভাঙ্গার কোনো আশঙ্কা নেই। আল্লাহ সব শোনেন, সব জানেন। [আল-বাক্বারাহ ২৫৬]
আল্লাহ تعالى এখানে কঠিনভাবে বলেছেন لَا إِكْرَاهَ, কোনো ধরনের জোর জবরদস্থি করা যাবে না। এই আয়াতে শব্দটা হচ্ছে إِكْرَاه, যার অর্থ কোনো একটা ব্যাপার কেউ ঘৃণা করে, এবং তাকে সেটাই জোর করে করানো।[১][৫] একটু চিন্তা করলেই বোঝা যায়, কেন জোর জবস্থি করে ধর্ম মানানো সম্ভব না। ধর্ম মানুষের অন্তরের ব্যাপার। মানুষকে জোর করে কোনো কিছু বিশ্বাস করানো যায় না। কারো সামনে তলোয়ার ধরে বললাম, “তিন দিন সময় দিলাম। এর মধ্যে মুসলিম হয়ে যাও। নাইলে…” — তাহলে সে মনে প্রাণে ইসলামে বিশ্বাস করে, তার যাবতীয় ভুল বিশ্বাস ভেঙ্গে ফেলবে না। সে বড়জোর একজন মুনাফিক হয়ে যাবে। একইসাথে কাউকে গিয়ে হুমকি দিলাম, “যদি কালকে থেকে পাঁচ ওয়াক্ত মসজিদে না দেখি, তাহলে তোমাকে ধরে… ” — এই হুমকিতে সে হয়তো মসজিদে যাবে। কিন্তু সেটা আল্লাহর تعالى জন্য হবে না, হবে অন্য কোনো উদ্দেশ্যে।
জোর করে ইসলাম গ্রহণ করানো ‘ইসলাম’ এবং ‘মুসলিম’ এই দুটো শব্দের সংজ্ঞারই পরিপন্থী। ‘মুসলিম’ শব্দের অর্থ: যে নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহর تعالى ইচ্ছার কাছে সমর্পণ করেছে। কাউকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার ইচ্ছাকে আল্লাহর تعالى কাছে সমর্পণ করানো যায় না —এটা স্ববিরোধী, অযৌক্তিক কথা। আরও উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো, আল্লাহ تعالى এই আয়াতে বলেননি যে, ইসলামে কোনো জোর জবস্থি নেই। বরং তিনি বলেছে,ধর্মে কোনো জরজবরদস্থি নেই। তাই অন্য ধর্মের লোকেরা যেন তাদের ধ্যান, ধারণা, বিশ্বাস, সংস্কৃতি জোর করে মুসলিমদের উপর চাপিয়ে না দেয়। তারা যেন মুসলিমদের শান্তিপূর্ণভাবে ইসলাম প্রচারে বাঁধা না দেয়। যদি দেয়, সেটা ফিতনা হবে, এবং সেই ফিতনা দূর করতে মুসলিমরা সংগ্রাম করতে পারবে।[১১]
কেন ধর্ম মানতে কোনো জোরজবরদস্থি নেই, সেটাও আল্লাহ تعالى পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন—
সঠিক পথ ভুল পথ থেকে পরিষ্কারভাবে আলাদা হয়ে গেছে।
অন্য সব ধর্মের ভুলগুলো কোথায়, কেন ইসলাম একমাত্র সঠিক ধর্ম, সেটা আল্লাহ تعالى কু’রআনে বহু যুক্তি, উদাহরণ দিয়ে একদম পরিষ্কার করে দিয়েছেন। যাদের বিবেকবুদ্ধি আছে, তারা এগুলো নিয়ে নিরেপক্ষভাবে চিন্তা করলেই বুঝতে পারবে ইসলামের সত্যতা কোথায়। তাদেরকে কোনো ধরনের জোর করার প্রয়োজন পড়বে না। বরং মানুষকে কোনো কিছু মানতে কোনো ধরনের জোর করলেই তার ভেতরে এক ধরনের ঘৃণা জন্মে যায়। সেই ঘৃণা তখন তার নিরেপক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিকে অন্ধ করে দেয়। শুধু ঘৃণার কারণেই সে আর তখন সত্য মেনে নায় না।
ইসলাম ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। কু’রআনে পরিষ্কার বলা হয়েছে—
যদি তোমার প্রভু চাইতেন, তাহলে পৃথিবীতে সবাই অবশ্যই বিশ্বাস করত। তাহলে তুমি কি মানুষকে জোর জবরদস্তি করবে বিশ্বাস না করা পর্যন্ত? [ইউনুস ১০:৯৯]
আহলে কিতাবের মানুষদের সাথে সুন্দরভাবে ছাড়া যুক্তিতর্ক করবে না। তবে যারা অন্যায় করে, তাদের কথা আলাদা। বল, “আমরা বিশ্বাস করি যা আমাদের উপর অবতীর্ণ হয়েছে, এবং যা তোমাদের উপর অবতীর্ণ হয়েছে; আমাদের এবং তোমাদের উপাস্য প্রভু একই সত্তা, আমরা তাঁরই প্রতি নিজেদেরকে সমর্পণ করি।” [আল-আনকাবুত ২৯:৪৬]
কোনো মুশরিক (মূর্তি পূজারি, যারা শিরক করে) যদি তোমাদের কাছ নিরাপত্তা চায়, তাহলে তাকে তা দেবে, যেন সে আল্লাহর বাণী শোনার সুযোগ পায়। তারপর তাকে একটা নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাবে। আসলে তারা এমন একটা জাতি, যাদের জ্ঞান নেই। [আত-তাওবাহ ৯:৬]
কিন্তু আজকে সেকুলার সমাজে ‘বাক স্বাধীনতা’, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা’ নিয়ে অনেক উচ্চবাচ্য করলেও, আমরা আসলে দেখতে পাই যে, সেগুলো সবই অন্য ধর্মের বেলায় খাটে, কিন্তু ইসলামের বেলায় সেগুলো আর চলে না। যেই রাষ্ট্র শাসকরা বাক-স্বাধীনতার জয়গান গায়, সেই রাষ্ট্র প্রধানরাই মুসলিম নারীদের হিজাব করতে বাঁধা দেয়। যেই দেশগুলো ধর্মীয় স্বাধীনতার গুণগান করে, সেই দেশগুলোই মুসলিমদের উপর নানা ধরনের অন্যায় বাঁধা, আইনের অপপ্রয়োগ, মুসলিমদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে। রাসুল عليه السلام এর বিরুদ্ধে জঘন্য সব অপপ্রচারণা করলে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু ইহুদিদের বিরুদ্ধে, রাষ্ট্র প্রধান বা জাতির জনকের বিরুদ্ধে কিছু বললেই মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এভাবে আজকের সেকুলার সমাজ হয়ে গেছে মুখোশধারী ইসলাম বিরোধী সমাজ। বাইরে থেকে এদের নিরপেক্ষ, উদারচেতা হাসি মুখ দেখা যায়, কিন্তু মুখোশের পেছনে ইসলামের প্রতি ঘৃণায় বিকৃত হয়ে যাওয়া এদের আসল চেহারা লুকিয়ে আছে।
আজকে সেকুলার সমাজে ছোটবেলা থেকেই বাচ্চাদের স্কুলে শেখানো হয় যে, মানুষ হচ্ছে এক উন্নত প্রজাতির বানর, এর বেশি কিছু না। মহাবিশ্বের কোনো সৃষ্টিকর্তা নেই। মহাবিশ্ব এমনিতেই শূন্য থেকে বিগ ব্যাংগ-এর মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে। এভাবে ছোটবেলা থেকেই বাচ্চাদের মনে এমন ধারণা ঢুকিয়ে দেওয়া হয় যে, মানুষের কাজ হচ্ছে নিজের জৈব বাসনা পূরণ করা, যেভাবে কিনা বাকি সব প্রাণীরা করছে। আমাদের কাজের জন্য কোনো উচ্চ ক্ষমতার কাছে জবাব দিতে হবে না, এগুলো সব আগেকার আমলের বিজ্ঞান বিবর্জিত কুসঙ্কারাচ্ছন্ন মানুষদের ধারণা। — এই ধরনের মানসিকতা নিয়ে যখন বাচ্চারা বড় হয়, তখন তাদের মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ, জবাবদিহিতা, আল্লাহর تعالى প্রতি গভীর বিশ্বাস তৈরি করা খুবই কঠিন। দিনে ৬-৮ ঘণ্টা বাইরে মগজধোলাই হয়ে আসার পর বাসায় কয়েক ঘণ্টায় সেই মগজ আবারো ধোলাই করা খুবই কঠিন। বিশেষ করে অধিকাংশ বাবা-মা’রা নিজেরাই জানেন না সন্তানদের এই ধরনের সমস্যা কীভাবে দূর করতে হয়। সন্তানদের জোর করে নামাজ পড়িয়ে, কু’রআন তিলাওয়াত করিয়ে, ধাক্কা দিয়ে জুমআহ’র নামাজ পড়তে পাঠিয়ে লাভ হয় না। কারণ অত্যন্ত মোক্ষম পদ্ধতিতে শিশুকাল থেকেই তাদের অন্তরে এমন কিছু ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে, যেখানে আর ঈমান ঢোকে না।
যদি ধর্ম মানতে কোনো জোর-জবরদস্থি না থাকে, তাহলে ইসলামে জিহাদ, ক্বিতালের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন?
ইসলামের শত্রুরা একটি ভুল ধারণা প্রচার করেছে যে, ইসলামের প্রসার হয়েছে তলোয়ারের মাধ্যমে। অমুসলিমরা ‘ইসলাম’ শব্দ শুনলেই মনের কোনায় দেখতে পায় তলোয়ার হাতে অশ্বারোহীরা কালো পতাকা নিয়ে এগিয়ে আসছে, আর অমুলিমদের ধরে ধরে কুপিয়ে মেরে ফেলছে। এগুলো এক বিশেষ ইসলাম বিদ্বেষী মহলের ব্যাপক অপপ্রচারের ফসল। একই সাথে একদল উগ্রপন্থী মুসলিমদের উগ্রতাও এর জন্য দায়ী। এই দুই পক্ষই একে অন্যকে উস্কে দিয়ে ইসলামের অপপ্রচারে একে অন্যকে জ্বালানী যুগিয়েছে।
ইসলাম কখনোই বলে না, জিহাদ, ক্বিতাল করে মানুষকে জোর করে ইসলাম গ্রহণ করানোর জন্য। ইসলামে জিহাদ এবং ক্বিতালের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে ফিতনা এবং ফাসাদ অর্থাৎ ইসলাম মানতে বাঁধা, দুর্নীতি, অন্যায় শাসন, নির্যাতন দূর করা। মুসলিমরা যেন শান্তিতে বিনা বাঁধায় ধর্ম মানতে পারে, সেটা নিশ্চিত করা।[৪][৬][১৪][১৭][১৮]
অন্যায় প্রতিহত করতে গিয়ে যখন মুসলিমরা লড়াই করে, যুদ্ধ করে, তখন তাদেরকে অনেক শর্ত মেনে চলতে হয়। যেমন, শুধুমাত্র তাদের সাথেই যুদ্ধ করা যাবে, যারা মুসলিমদেরকে আক্রমণ করে, বা আক্রমণে সহযোগিতা করে। কোনো নিরীহ নারী, শিশু, বৃদ্ধ, ধর্মযাজক, সন্ন্যাসী — এদেরকে আক্রমণ করা যাবে না। যারা অমুসলিম কর (অর্থাৎ জিযিয়া) দিয়ে ইসলামি রাষ্ট্রের আইন মেনে থাকতে চায়, তাদেরকে শুধু শান্তিতেই থাকতে দিতে হবে না, একই সাথে তাদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে।[৪][৬][১৪][১৭][১৮] আল্লাহ تعالى ১৯০ আয়াতে বার বার সাবধান করেছেন,
“যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে, তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর পথে লড়াই করো, কিন্তু সীমা অতিক্রম করবে না। যারা সীমা অতিক্রম করে, তাদেরকে আল্লাহ কখনোই ভালোবাসেন না।”
স্বাভাবিকভাবেই এই আয়াতের ব্যাপারে বহু বিরোধী মত রয়েছে। কেউ মত দিয়েছেন যে, এখানে শুধু মাত্র ইহুদি, খ্রিস্টান অর্থাৎ আহলে কিতাবদেরকে ধর্ম মানতে জোর করানো যাবে না বলা হয়েছে। অন্য ধর্মের অনুসারীদের, যেমন মূর্তিপূজারিদের ঠিকই জোর করা যাবে। আবার কেউ বলেছেন, এটা শুধুমাত্র কিছু বিশেষ মানুষের জন্য প্রযোজ্য, কারণ এই আয়াত নাজিল হয়েছিল একটি ঘটনার পর। আবার কেউ দাবি করেন, এই আয়াত সম্পূর্ণ বাতিল হয়ে গেছে সূরা তাওবাহ’র আয়াতগুলোর কারণে। মুসলিমরা এখন মারামারি করে সবাইকে ধর্ম মানাতে পারে।[১২][১৪] — এগুলো সবই বিভিন্ন মানুষের মত। রাসুল عليه السلام আমাদেরকে এরকম কোনো শিক্ষা দেননি। তাই আমরা কোনো মানুষের মত মানতে বাধ্য নই।
বরং আমাদেরকে দেখতে হবে রাসুল عليه السلام তার নিজের জীবনে কী করেছেন। উনি কি তার আশেপাশের সব বিধর্মীদের মেরে পিটিয়ে মুসলিম বানিয়ে গেছেন? উনি কি তার আশেপাশের সব অমুসলিম গোত্রগুলোকে আক্রমণ করে মুসলিম বানিয়েছেন? সাহাবারা কি একই কাজ করেছেন?
১৫০ হিজরিতে (৭৬৭ খ্রিস্টাব্দ) ইরাক ও এর সংলগ্ন এলাকায় বসবাসরত মুসলিমদের সংখ্যা ছিলো সেখানকার মোট জনসংখ্যার আনুমানিক ১৫%-২০%। ২৫০ হিজরিতে (৮৬৪ খ্রিস্টাব্দ) সেখানকার মোট জনসংখ্যার ৩৫%-৪০% ছিলো মুসলিম। প্রথমবারের মতো সেখানকার জনসংখ্যার ৫০%-এর অধিক মুসলিম ছিলো ৩০০ হিজরির কাছাকাছি সময়ে। আর ৩৫০ হিজরির দিকে (৯৬১ খ্রিস্টাব্দ) স্থানীয় মোট জনসংখ্যার আনুমানিক ৭৫% ছিলো মুসলিম [Dr. Sherman Jackson]।[৩৩৪]
আজকালকার বেশিরভাগ মুসলিমই সেই সময়ের এই চমকপ্রদ পরিসংখ্যানের সাথে পরিচিত নন। এই পরিসংখ্যানই দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলে দিচ্ছে যে, তলোয়ারের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের প্রসার ঘটেনি। ইসলামী সাম্রাজ্যের রাজধানী ও এর সংলগ্ন এলাকার অবস্থাই যদি এমন হয়ে থাকে, তাহলে গোটা সাম্রাজ্যের বাদবাকী অঞ্চলের অবস্থা কেমন ছিলো, তা অনুমান করতে আমাদের খুব বেশি কষ্ট হওয়ার কথা নয়।
রাসুলকে আদেশ করা হয়েছে মানুষকে ইসলাম গ্রহণ করানোর জন্য সংগ্রাম করতে
একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হাদিস দক্ষ বক্তাদের প্রায়ই ব্যবহার করতে দেখা যায়। বাজারে প্রচলিত জিহাদি বইগুলোতে এই হাদিসটি থাকবেই—
“আমি মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি যতক্ষণ না তারা বলে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” সুতরাং যে ব্যাক্তি “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর সাক্ষ্য দিবে তাঁর জান ও মাল-সম্পদ আমার থেকে নিরাপদ। তবে ইসলামের কোনো হক্ ব্যাতীত। আর তাঁর অন্তরের হিসাব আল্লাহ তাআলার উপর ন্যস্ত।” (বুখারী, মুসলিম)
এই হাদিসটি পড়লে মনে হবে, রাসুল عليه السلام বলছেন যে, তাকে পাঠানো হয়েছে সব অমুসলিমদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য, যতক্ষণ না তারা কালেমা পড়ে সবাই মুসলিম হয়ে না যাচ্ছে। তার মানে আমাদেরকেও সব অমুসলিমদের আক্রমণ করতে হবে, যতক্ষণ না তারা কালেমা পড়ে মুসলিম না হচ্ছে। —এটা কত বড় বিভ্রান্তি দেখুন। এই হাদিসটি মূল হাদিসের অংশবিশেষ। মূল আরবি পড়লেই বিভ্রান্তিটি ধরা যাবে—
عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه و سلم قَالَ: “أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَشْهَدُوا أَنْ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَيُقِيمُوا الصَّلَاةَ، وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ؛ فَإِذَا فَعَلُوا ذَلِكَ عَصَمُوا مِنِّي دِمَاءَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ إلَّا بِحَقِّ الْإِسْلَامِ، وَحِسَابُهُمْ عَلَى اللَّهِ تَعَالَى” .
[رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ]، [وَمُسْلِمٌ]
ইব্নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত: আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি লোকদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার জন্য নির্দেশিত হয়েছি, যতক্ষন না তারা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই ও মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রসূল, আর সালাত প্রতিষ্ঠা করে ও যাকাত আদায় করে। তারা যদি এগুলো করে, তবে আমার পক্ষ হতে তাদের জান ও মালের ব্যাপারে নিরাপত্তা লাভ করলো; অবশ্য ইসলামের বিধান অনুযায়ী যদি কোন কারণ থাকে, তাহলে স্বতন্ত্র কথা। আর তাদের হিসাবের ভার আল্লাহর উপর অর্পিত।
এটি ইমাম নায়ায়ির ৪০ হাদিসের মধ্যে ৮ নম্বর হাদিস, সাহিহ বুখারির ২:১৮ । লক্ষ্য করে দেখুন, এই হাদিসের একটি অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে: “আর সালাত প্রতিষ্ঠা করে ও যাকাত আদায় করে” কারণ এই অংশটি থাকলে বিরাট সমস্যা। বহু মুসলিম আছে যারা সালাত ও যাকাত আদায় করে না। তার মানে আমাদেরকে আমাদের চারপাশের মুসলিমদের সাথেও যুদ্ধ করতে হবে, কারণ তারা অনেকেই সালাত প্রতিষ্ঠা করে না, যাকাতও আদায় করে না। তখন আর এই হাদিসটাকে শুধু অমুসলিমদের নামে চালিয়ে দেওয়া যাবে না।
এই হাদিসটি পড়লে প্রথমেই যেই প্রশ্ন আশা উচিত, সেটা হচ্ছে النَّاسَ বা ‘লোকরা’ কারা যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বলা হয়েছে? এরা কি সব অমুসলিম? বিখ্যাত হাদিস বিশারদরা কী বলেছেন দেখি—
ইবন তাইমিয়্যাহ বলেন, “সেই সব লোকদের নির্দেশ করে, যারা যুদ্ধ শুরু করেছে, যাদের সাথে যুদ্ধ করতে আল্লাহ تعالى আমাদের অনুমতি দিয়েছেন। এটি তাদের নির্দেশ করে না, যাদের সাথে আমাদের চুক্তি আছে, যাদের সাথে চুক্তি মানতে আল্লাহ تعالى আমাদের বলেছেন।” [মাজমু’ আল-ফাতাওয়া ১৯/২০] সৌদি আরবের প্রাক্তন প্রধান মুফতি শাইখ ইবন বা’য এর ফাতয়া অনুসারে এরা হচ্ছে সেই সব লোক, যারা মুখে ইসলাম গ্রহণ করেছে বলে, কিন্তু কাজে তারা ইসলামের মূল ভিত্তিগুলো অনুসরণ করে না, অর্থাৎ নামাজ প্রতিষ্ঠা করে না, যাকাত আদায় করে না।[৩৪৬] ইবন হাজার আল-আস্কালানি তার সাহিহ বুখারির ব্যাখ্যায় ৫ বা ৬ ধরনের মানুষের কথা বলেছেন, যাদের সাথে যুদ্ধ করা যাবে। অর্থাৎ কাদের সাথে যুদ্ধ করা যাবে, সেটা সুনির্দিষ্ট, ঢালাও ভাবে কোনো দেশের সব অমুসলিমরা নয়।[৩৪৭]
এরকম অনেক উদাহরণ আমরা দেখতে পাই, যেখানে কোনো হাদিসের বর্ণনা পড়লে মনে হবে আমাদের বলা হয়েছে ক, খ, গ করতে, অথচ সেই হাদিসের ব্যাখ্যা পড়লে দেখা যাবে আমাদেরকে আসলে চ, ছ, জ করতে হবে। একারণেই সরাসরি সাহিহ হাদিস গ্রন্থগুলো পড়ে যদি মনে করি আমরা রাসুলের عليه السلام নির্দেশ মানছি, তাহলে সেটা বিরাট বোকামি। যারা ইসলাম নিয়ে যথাযথ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিয়েছেন, তারা এই বোকামি করেন না। আমরা কু’রআনের মতো সবচেয়ে পরিষ্কার ভাষার বাণী যথাযথভাবে বোঝার জন্য তাফসীর পড়ি, অথচ হাদিস, যা রাসুলের বাণী মানুষের মুখে বর্ণনা করা, যার ভাষা আল্লাহর تعالى বাণীর ধারে কাছেও সূক্ষ্ম নয়, সেটার কোনো ধরনের ব্যাখ্যা না পড়েই ধরে নেই যে, রাসুল عليه السلام ঠিক কখন কোন প্রেক্ষিতে কী বলতে চেয়েছেন, কাদেরকে নিয়ে সেটা বলেছেন, কাদের ব্যাপারে সেটা বলেননি, তা আমি একদম সঠিকভাবে বুঝে গেছি। কত বড় ভ্রান্ত বিশ্বাস!
কেউ ইসলাম ছেড়ে দিলে তাহলে তাকে হত্যা করা হয় কেন?
একটি ইসলামি রাষ্ট্রে একজন কাফির-এর তার কুফরির উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু সে যদি একবার ইসলামে প্রবেশ করে যায়, তাহলে তাকে আবার ইসলাম ছেড়ে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে না। যদি তা হয়, তাহলে আইন ও নিরাপত্তা নষ্ট হয়ে যাবে। দেখা যাবে, কেউ মুসলিম হয়ে কোনো পছন্দের মুসলিম নারীকে বিয়ে করে, তারপরে আবার নিজেকে অমুসলিম বলে ঘোষণা দিচ্ছে। একই সাথে ইসলামের বদনাম করার উদ্দেশ্যে অনেকে মুসলিম হয়ে আবার অমুসলিম হয়ে দেখিয়ে দেবে যে, ইসলাম আসলে সত্য ধর্ম নয়।
“কিন্তু ধর্ম তো মানুষের নিজের ব্যাপার। সে ইচ্ছা হলে বিশ্বাস করবে, ইচ্ছা না হলে ছেড়ে দেবে” — কিছু মানুষকে দেখা যায় এধরনের কথা বলতে। প্রথমে বুঝতে হবে, ধর্ম কোনো ফ্যাশন না, পছন্দ হলে করলাম, না হলে করলাম না। ইসলামকে ভুল ধর্ম মনে করে ছেড়ে দেওয়া অর্থ স্বীকার করা যে, মুহাম্মাদ عليه السلام একজন প্রতারক, ভণ্ড, যিনি নিজেকে নবী বলে দাবি করেছেন। একইসাথে এটাও স্বীকার করা যে, কু’রআন একটা নকল বই, এটা আল্লাহর تعالى বাণী নয়। মুহাম্মাদ عليه السلام বা তার পরের মুসলিমরা এক বিরাট প্রতারণা করে কু’রআনকে আল্লাহ تعالى বাণী বলে হাজার বছর ধরে প্রচার করেছেন। এগুলো কোনো সহজ দাবি না যে, তা সহজে মেনে নেওয়া যায়।
আর যে ইসলামকে সঠিক জেনেও ইসলাম মানবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সে একজন অপরাধী। সে আর আল্লাহকে تعالى মানে না, আল্লাহর تعالى বিধানকে মানে না। এবং যে আল্লাহকে تعالى একবার মেনে নিয়ে আবার তাঁকে تعالى অমান্য করে, তার দ্বারা যে কোনো অন্যায় করা সম্ভব। কারণ, সে আর জাহান্নামের শাস্তিকে মানে না, সে আল্লাহর تعالى আযাবকে আর ভয় পায় না। এই ধরনের ভয়ঙ্কর অপরাধীদের কাছ থেকে মুসলিমদেরকে রক্ষা করতে হবে।
একারণে একটি ইসলামি রাষ্ট্রে মুরতাদ অর্থাৎ ইসলাম ত্যাগীদের বাঁধা দেওয়া মুসলিমদের নিরাপত্তার জন্য জরুরি। তাই যেমন মানবাধিকারের নামে হত্যা, চুরি, ধর্ষণের অপরাধের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে না, ঠিক একইভাবে ইসলাম ত্যাগীদেরকেও ইসলামের আইন ভাঙ্গার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে না।[১৭]
যেমন, কেউ সিদ্ধান্ত নিলো যে সে কোনো দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করবে। কিন্তু তারপরে সে আবার সেই দেশের নাগরিকত্ব অস্বীকার করলো, নাগরিকদের উপর প্রযোজ্য আইন মানবে না বলে দাবি করলো। তাহলে অবশ্যই তাকে শাস্তি দিতে হবে। একইভাবে মুসলিম হয়ে যাওয়া মানে হচ্ছে ইসলামের নাগরিকত্ব গ্রহণ করা, আর মুরতাদ হচ্ছে ইসলামের নাগরিকত্ব প্রত্যাখ্যান করা, ইসলামের আইন অস্বীকার করা।
“তাই যে তাগুত (আল্লাহ ছাড়া অন্য যে কোনো উপাস্য) অস্বীকার করবে, এবং আল্লাহর تعالى প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস আনবে, সে অবশ্যই এমন এক মজবুত হাতল ধরবে, যা ভাঙ্গার কোনো আশঙ্কা নেই।”
তাগুত শব্দটির আভিধানিক অর্থ যে জেনে শুনে সীমা লঙ্ঘন করে। ইসলামের পরিভাষায় আল্লাহ تعالى ছাড়া যাদেরকেই অনুসরণ করা হয়, যারাই নিজেদেরকে অনুসরণ করতে বলে, আল্লাহর تعالى আইনের উপর নিজের আইন চাপিয়ে দেয়, আল্লাহর تعالى দাবি থেকে নিজেদের দাবিকে প্রাধান্য দেয়, তারাই তাগুত। তাগুত হচ্ছে যাবতীয় অপশক্তি, যা আমাদেরকে আল্লাহর تعالى অবাধ্যতার দিকে নিয়ে যায়।[২][৩][১২][১৮]
আল্লাহর تعالى সাথে বিদ্রোহ করার তিনটি পর্যায় রয়েছে। প্রথম পর্যায় হচ্ছে, সে ইসলামের আইন স্বীকার করে, জানে যে আল্লাহকে تعالى মানতে হবে, কু’রআন, হাদিস অনুসরণ করতে হবে, কিন্তু তারপরেও সে বার বার নিষেধ অমান্য করে, আদেশ মানে না। এদেরকে ফাসিক বলা হয়। দ্বিতীয় পর্যায় হচ্ছে, সে আল্লাহকে تعالى একমাত্র ইলাহ মানে না, সে অন্য কারো বা কিছুর উপাসনা করে। এদেরকে বলা হয় কাফির বা মুশরিক। তৃতীয় পর্যায় হচ্ছে সে মালিক বা প্রভুর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে, তার রাজ্যে এবং তার অনুসারীদের মধ্যে নিজের হুকুম চালাতে থাকে। এই শেষ পর্যায়কে বলা হয় তাগুত।[৩][১৮]
তাগুত ৫ প্রকার। ১) শয়তান —কারণ সে আল্লাহর تعالى সাথে বিদ্রোহ করে মানুষকে আল্লাহর تعالى বিরুদ্ধে কাজ করায়। ২) গণক, জ্যোতিষ — কারণ তারা অদৃশ্যের জ্ঞান আছে বলে দাবি করে। ৩) যে আল্লাহর تعالى আইন অনুযায়ী বিচার করে না, মানব রচিত আইনকে আল্লাহর تعالى আইনের থেকে উত্তম মনে করে, যেমন ইসলাম বিদ্বেষী শাসক। ৪) যাকে মানুষ ইবাদাত করে এবং সে তাতে খুশি থাকে, যেমন ভন্ড পির। ৫) যে মানুষকে নিজের ইবাদতের দিকে আহ্বান জানায়।[১৮]
মানুষ যখন নিজের কামনা বাসনাকে আল্লাহর تعالى ইচ্ছার উপরে প্রাধান্য দেয়, নিজের কামনা বাসনা মেটানোর জন্য আল্লাহর تعالى আইন অস্বীকার করে, তখন সে নিজেই তাগুত হয়ে যায়।[৩] আজকে এর বড় উদাহরণ হচ্ছে কিছু সুশীল সমাজের লেখক এবং বক্তারা, যারা নিজেদের কামনা, বাসনা মেটানোর জন্য আল্লাহর تعالى আদেশ, নিষেধকে ‘যুগের সাথে অসামঞ্জস্য’, ‘সেকেলে নিয়ম, আজকে এসব চলে না’, ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ ইত্যাদি বলে দাবি করে।
আজকে আমাদের চারপাশে অনেক তাগুত রয়েছে, যারা নিজেদের দাবি মেটানোর জন্য আমাদেরকে আল্লাহর تعالى আদেশ নিষেধ ভাঙতে জোর করায়। এই সব তাগুতেরা হলো আমাদের স্বামী, স্ত্রী, সন্তান, আত্মীয়, বাবা, মা, ভাইবোন, সমাজের মুরব্বি, শিক্ষক, নেতা, সরকার। এরা সবাই চায় আগে নিজেদের দাবি পূরণ হোক, তারপরে আল্লাহ تعالى কী বলেছেন দেখা যাবে।[৩] ‘লোকে কী বলবে’—কে আমরা এক বিরাট তাগুত বানিয়ে ফেলেছি। এই সব তাগুতদের দাবি মেটাতে গিয়ে আমরা জেনে শুনে প্রতিনিয়ত আল্লাহর تعالى আদেশ নিষেধ অমান্য করি।
একারণেই আল্লাহ تعالى আমাদেরকে তাগুতকে অস্বীকার করতে বলেছেন। আমাদেরকে ঘোষণা দিতে হবে, ‘লোকে কী বলবে’ তাতে কিছুই যায় আসে না। আমি ‘লোকে কী বলবে’-কে ভয় পাই না, আমি আল্লাহকে تعالى ভয় পাই। আমার স্বামী, স্ত্রী, সন্তানকে আমি আল্লাহর تعالى থেকে বড় মানি না। তাদের খুশি করার জন্য আমি কোনো হারাম কাজ করবো না। আমি কোনো কোনো জ্যোতিষ, গণকের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি না। আমি বিশ্বাস করি ভবিষ্যৎ একমাত্র আল্লাহ تعالى জানেন, ক্বদর শুধু তাঁর تعالى হাতে। আমি আল্লাহর تعالى আইনের বিরুদ্ধে কোনো আইন মানবো না। আমি বিশ্বাস করি না আল্লাহ تعالى যা বলেছেন, তার থেকে মানুষের কথা বেশি সঠিক হতে পারে। আমি আল্লাহ تعالى ছাড়া আর কারো উপাসনা করবো না, কারো সামনে মাথা নত করবো না, সে যত বড় পির, দরবেশ, হাজি সাহেব, মুরব্বি হোক না কেন। আমি আল্লাহ تعالى ছাড়া আর কাউকে আমার প্রভু মানবো না। আমি কোনো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বা সরকারের কথায় আল্লাহর تعالى আদেশ ভাঙবো না।
এভাবে যে তাগুতকে অস্বীকার করবে, সে আল্লাহর تعالى প্রতি দৃঢ় ঈমান ধরে রাখতে পারবে। তখন তার ঈমান এমন শক্ত হবে যে, কেউ আর তাকে ভুল পথে নিয়ে যেতে পারবে না। একারণেই আমাদের সবার সময় নিয়ে আমাদের জীবনে, চারপাশে যত তাগুত আছে, তাদেরকে তাড়াতাড়ি সনাক্ত করতে হবে। তারপর লক্ষ্য করতে হবে, এদেরকে মানতে গিয়ে আমরা আল্লাহর تعالى অবাধ্য হয়ে যাচ্ছি কিনা। যদি এদের জন্য কাজ করতে গিয়ে, এদের কথা শুনতে গিয়ে, এদের খুশি করতে গিয়ে আমি আল্লাহর تعالى অবাধ্যতা করি, তাহলে এরা আমার জন্য তাগুত হয়ে গেছে। তখন জলদি নিজেকে সংশোধন করতে হবে।
তাগুতের বিরুদ্ধে সংগ্রাম একদিন, দুই দিনের নয়, একজন মুমিনকে সারা জীবন সব সময় সাবধান থাকতে হয় কে কখন তার জন্য তাগুত হয়ে গেল। এই সাবধানতাই তাকে সারাজীবন ইসলামের শক্ত হাতল ধরে সঠিক পথে চলার পথ দেখাবে। আর এই সংগ্রামে আল্লাহ تعالى সবসময় তার পাশে থাকবেন, তার ওয়ালী-অভিভাবক হয়ে তাকে বিপদ থেকে রক্ষা করবেন—
যারা বিশ্বাস করেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক। তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসেন। আর যারা সত্য অস্বীকার করে চলেছে, তাদের অভিভাবক হচ্ছে তাগুত (মিথ্যা প্রভু)। এরা তাদেরকে আলোর থেকে অন্ধকারে নিয়ে যায়। এরা সবাই হচ্ছে আগুনের অধিবাসী। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। [আল-বাক্বারাহ ২৫৭]
– ওমর আল জাবির
সূত্র
[১] বাইয়িনাহ এর কু’রআনের তাফসীর। [২] ম্যাসেজ অফ দা কু’রআন — মুহাম্মাদ আসাদ। [৩] তাফহিমুল কু’রআন — মাওলানা মাওদুদি। [৪] মা’রিফুল কু’রআন — মুফতি শাফি উসমানী। [৫] মুহাম্মাদ মোহার আলি — A Word for Word Meaning of The Quran [৬] সৈয়দ কুতব — In the Shade of the Quran [৭] তাদাব্বুরে কু’রআন – আমিন আহসান ইসলাহি। [৮] তাফসিরে তাওযীহুল কু’রআন — মুফতি তাক্বি উসমানী। [৯] বায়ান আল কু’রআন — ড: ইসরার আহমেদ। [১০] তাফসীর উল কু’রআন — মাওলানা আব্দুল মাজিদ দারিয়াবাদি [১১] কু’রআন তাফসীর — আব্দুর রাহিম আস-সারানবি [১২] আত-তাবারি-এর তাফসীরের অনুবাদ। [১৩] তাফসির ইবন আব্বাস। [১৪] তাফসির আল কুরতুবি। [১৫] তাফসির আল জালালাইন। [১৬] লুঘাতুল কুরআন — গুলাম আহমেদ পারভেজ। [১৭] তাফসীর আহসানুল বায়ান — ইসলামিক সেন্টার, আল-মাজমাআহ, সউদি আরব [১৮] কু’রআনুল কারীম – বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসীর — বাদশাহ ফাহাদ কু’রআন মুদ্রণ কমপ্লেক্স [৩৪৬] Alifta.net (2016). Fatwas of Ibn Baz . Retrieved 11 January 2016, from http:/www.alifta.net/fatawa/fatawaDetails.aspx?languagename=en&View=Page&PageID=4910&PageNo=1&BookID=14
[৩৪৭] 40hadithnawawi.com (2016). “Hadith 8 – The Sanctity of a Muslim” Retrieved 11 January 2016, from http:/40hadithnawawi.com/index.php/the-hadiths/hadith-8