ছালাত, দো'আ ও যিকর

আযান ও ইক্বামত : বিভ্রান্তি নিরসন

আযান :

আযান অর্থ আহবান করা, ঘোষণা করা। পাঁচ ওয়াক্ত ছালাতের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে শরী‘আত সম্মত উপায়ে উচ্চৈঃস্বরে ছালাতের ঘোষণা প্রদানকে আযান বলা হয়। মুওয়াযযিনের বহু ফযীলত রয়েছে। যেমন মুওয়াযযিনের আযানের আওয়ায যত দূর যাবে তত দূর পর্যন্ত সকল মানুষ, জিন এবং সমুদয় বস্ত্ত তার জন্য ক্বিয়ামতের দিন সাক্ষ্য দিবে।[1] মুওয়াযযিনদের গর্দান ক্বিয়ামতের দিনে সর্বাধিক দীর্ঘ হবে।[2] আযান সম্পর্কিত কতিপয় মাস’আলা নিম্নে আলোচনা করা হ’ল।-

মাসআলা-১ : মুহাম্মাদ বিন সীরীন (রহঃ) বলেছেন, ﺇِﺫَﺍ ﺃَﺫَّﻥَ ﺍﻟْﻤُﺆَﺫِّﻥُ ﺍﺳْﺘَﻘْﺒَﻞَ ﺍﻟْﻘِﺒْﻠَﺔَ ‘যখন মুওয়াযযিন আযান দিবে তখন কিবলামুখী হবে’।[3] এটি ফরয বা ওয়াজিব নয়, তবে উত্তম।

মাসআলা-২ : মহিলাদেরকেও এক্বামত দিয়ে ছালাত আদায় করতে হবে। আয়েশা (রাঃ) আযান দিতেন, এক্বামত দিতেন এবং নারীদের ইমামতি করতেন। তিনি কাতারের মাঝে দাঁড়াতেন।[4] উল্লেখ্য যে, নারীদের আযান, এক্বামত লাগবে না মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ।[5] এক্বামত হচ্ছে একটি বড় ধরনের যিকির। তারা এক্বামত না দিলে এ যিকিরের নেকী হ’তে বঞ্চিত হবে।

মাসআলা-৩ : আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ এবং আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ দু’বারের পরিবর্তে চারবার করে বলাকে তারজী‘ আযান বলা হয়। এই আযান দেয়া জায়েয। তবে হানাফীগণ তারজী‘ আযানকে গ্রহণ করেন না। অপরদিকে একক আযানে আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু এবং আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ দু’দু’বার করে বলা হয়।[6]

মাসআলা-৪ : ফজরে দু’টি আযান রয়েছে। একটি ফজর উদয়ের পরে দেওয়া হয়। অপরটি শেষ রাতে দেওয়া হয়। একে ‘রাতের আযান’ বলা হয়। এই আযান মূলতঃ তাহাজ্জুদের জন্য দেয়া হয়। যেমন নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ﺇِﻥَّ ﺑِﻼَﻟًﺎ ﻳُﺆَﺫِّﻥُ ﺑِﻠَﻴْﻞٍ، ﻓَﻜُﻠُﻮْﺍ ﻭَﺍﺷْﺮَﺑُﻮْﺍ ﺣَﺘَّﻰ ﻳُﺆَﺫِّﻥَ ﺍﺑْﻦُ ﺃُﻡِّ ﻣَﻜْﺘُﻮْﻡٍ ‘বেলাল রাতে আযান দেয়। অতএব তোমরা খাও, পান কর যতক্ষণ না ইবনু উম্মে মাকতূম আযান দেয়’।[7] রাতের আযানে ‘আছ-ছালাতু খায়রুম মিনান নাউম’ বাক্যটি বলা প্রমাণিত নেই।[8]

মাসআলা-৫ : খত্বীব মিম্বারে বসার পর মু্ওয়াযযিন আযান দিবে।[9] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ), আবূ বকর (রাঃ) ও ওমর (রাঃ)-এর যুগে এবং ওছমান (রাঃ)-এর খেলাফতের প্রথমার্ধ্বে এই নিয়ম চালু ছিল। অতঃপর মুসলমানের সংখ্যা ও নগরীর ব্যস্ততা বেড়ে গেলে ওছমান (রাঃ) জুম‘আর পূর্বে মসজিদে নববী থেকে দূরে ‘যাওরা বাজারে’ একটি বাড়ীর ছাদে দাঁড়িয়ে লোকদের আগাম হুঁশিয়ার করার জন্য পৃথক একটি আযানের নির্দেশ দেন।[10] যা এদেশে ডাক আযান হিসাবে চালু আছে। যদিও খলীফার এই নির্দেশ ছিল স্থানীয় প্রয়োজনে একটি সাময়িক নির্দেশ মাত্র। সেকারণ মক্কা, কূফা ও বছরা সহ ইসলামী খেলাফতের বহু গুরুত্বপূর্ণ শহরে এ আযান চালু হয়নি। ওছমান (রাঃ) এটাকে সর্বত্র চালু করার প্রয়োজন মনে করেননি বা উম্মতকে বাধ্য করেননি।[11]

মাসআলা-৬ : আযান চলাকালীন ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ’ শ্রবণ করার পর জবাবে স্রেফ ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ’ বলতে হবে। ‘ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বলা যাবে না। আযান শেষ হবার পরে দরূদ পাঠ করতে হবে।[12]

মাসআলা-৭ : মুওয়াযযিন ইক্বামত দিবেন। যদি অন্য কোন ব্যক্তি ইক্বামত প্রদান করেন তবে কোন অসুবিধা নেই।

মাসআলা-৮ : আযান ব্যতীত ছালাত আদায় করা জায়েয। চাই জামা‘আতে ছালাত হোক বা একাকী ছালাত হোক।

মাসআলা-৯ : আযান দেওয়ার পূর্বে ‘আছ-ছালাতু ওয়াস সালামু আলায়কা ইয়া রাসূলাল্লাহ’ বলা বিদ‘আত। এর পক্ষে কোন দলীল নেই। এমনকি ইমাম চতুষ্টয় থেকেও এমন কোন আমল প্রমাণিত নেই।

মাসআলা-১০ : আযানের শব্দগুলিতে কোন সংযোজন, বিয়োজন করা জায়েয নয়। এটি আল্লাহর পক্ষ হ’তে প্রাপ্ত বিধান। যা পরিবর্তন বা বিকৃত করার অধিকার কারো নেই।

মাসআলা-১১ : আযান চলাকালীন মুওয়াযযিন যদি বেহুঁশ হয়ে পড়েন বা অসুস্থ হয়ে যান বা মারা যান তবে অন্য ব্যক্তি উক্ত আযানের বাকি অংশটুকু পুরা করবেন। পুনরায় আযান দিলেও কোন অসুবিধা নেই।[13]

মাসআলা-১২ : আযান একটি ইবাদত। আর ইবাদত সঠিকভাবে সম্পাদন করতে যদি দুনিয়াবী কোন হালাল বস্ত্তর সহযোগিতা গ্রহণ করতে হয় তবে তা জায়েয। যেমন মাইকের দ্বারা এর শব্দকে প্রসারিত করা ইত্যাদি। মাইককে বিদ‘আত বলা ভুল হবে। কারণ এটি ইবাদতের মধ্যে সংযোজিত কোন বিষয় নয়। বরং ইবাদতকে প্রসারের জন্য এর সহযোগিতা নেয়া হয় মাত্র।

মাসআলা-১৩ : প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য পৃথকভাবে আযান দিতে হবে। ক্যাসেট বা সিডিতে আযান সংরক্ষণ করে সেটি প্রতি ওয়াক্তে শ্রবণ করানোর দ্বারা আযান প্রদান করা হ’লে তা বাতিল হবে। কেননা আযান দেওয়া ইবাদত। যা মুওয়াযযিনের উপর আদায় করা ধার্য করা হয়েছে। এর কোন বিকল্প গ্রহণ করা হারাম।[14]

মাসআলা-১৪ : ইমামের অনুমতি নিয়ে মুওয়াযযিনকে আযান দিতে হবে- এ কথা ঠিক নয়। কেননা আযান দেওয়ার দায়িত্ব মুওয়াযযিনের, ইমামের নয়। বহিরাগত কেউ যদি আযান দিতে চান তবে তাকে ইমাম বা মুওয়াযযিনের অনুমতি গ্রহণ করতে হবে। আর যদি ওয়াক্ত পেরিয়ে যাবার আশংকা থাকে এবং ইমাম বা মুওয়াযযিন কেউ না থাকে, তবে সেক্ষেত্রে যে কোন যোগ্য ব্যক্তি আযান দিতে পারবেন।

মাসআলা-১৫ : একটি মসজিদে যদি আযান দেওয়া হয় এবং অন্য মসিজদে যদি অত্র আযান শ্রবণের পরে জামা‘আত করা হয়, তবে ছালাত হয়ে যাবে। যদিও প্রতিটি মসজিদে আলাদাভাবে আযান দেয়া সুন্নাত।[15]

মাসআলা-১৬ : ﺇِﺫَﺍ ﺳَﻤِﻌْﺘُﻢُ ﺍﻟْﻤُﺆَﺫِّﻥَ، ﻓَﻘُﻮْﻟُﻮْﺍ ﻣِﺜْﻞَ ﻣَﺎ ﻳَﻘُﻮْﻝُ ﺛُﻢَّ ﺻَﻠُّﻮْﺍ ﻋَﻠَﻲَّ، ‘যখন তোমরা আযান শুনবে, তখন আযানের জবাবে তাই বলবে যা মুওয়াযযিন বলে থাকেন। অতঃপর আমার উপর দরূদ পাঠ করতে হবে’।[16] এরপর দো‘আ পাঠ করতে হবে। দো‘আটি হ’ল- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺭَﺏَّ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﺪَّﻋْﻮَﺓِ ﺍﻟﺘَّﺎﻣَّﺔِ، ﻭَﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﺍﻟﻘَﺎﺋِﻤَﺔِ ﺁﺕِ ﻣُﺤَﻤَّﺪًﺍ ﺍﻟﻮَﺳِﻴْﻠَﺔَ ﻭَﺍﻟﻔَﻀِﻴْﻠَﺔَ، ﻭَﺍﺑْﻌَﺜْﻪُ ﻣَﻘَﺎﻣًﺎ ﻣَّﺤْﻤُﻮْﺩًﺍ ﺍﻟَّﺬِﻱْ ﻭَﻋَﺪْﺗَﻪُ، ﺣَﻠَّﺖْ ﻟَﻪُ ﺷَﻔَﺎﻋَﺘِﻲْ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ‘হে আল্লাহ! (তাওহীদের) এই পরিপূর্ণ আহবান ও প্রতিষ্ঠিত ছালাতের তুমি প্রভু। মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে তুমি দান কর ‘অসীলা’ নামক (জান্নাতের সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থান) ও মর্যাদা এবং তাকে পৌঁছে দাও প্রশংসিত স্থান মাক্বামে মাহমূদে যার ওয়াদা তুমি তাকে দিয়েছ’।[17] নবী করীম (ছাঃ) উচ্চৈঃস্বরে আযান দিতে বলেছেন। দো‘আ উচ্চৈঃস্বরে বলতে বলেননি। তাই জোরে দো‘আ পাঠ করা তথা মাইকে পাঠ করা বিদ‘আত। এ দো‘আ জোরে পাঠ করার কোন ভিত্তি নেই। এছাড়া আরো দো‘আ আছে। যেমন- ﺃَﺷْﻬَﺪُ ﺃَﻥْ ﻟَﺎ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻠﻪُ ﻭَﺣْﺪَﻩُ ﻟَﺎ ﺷَﺮِﻳْﻚَ ﻟَﻪُ ﻭَﺃَﻥَّ ﻣُﺤَﻤَّﺪًﺍ ﻋَﺒْﺪُﻩُ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟُﻪُ ﺭَﺿِﻴْﺖُ ﺑِﺎﻟﻠﻪِ ﺭَﺑًّﺎ ﻭَّﺑِﻤُﺤَﻤَّﺪٍ ﺭَّﺳُﻮﻟًﺎ ﻭَﺑِﺎﻟْﺈِﺳْﻠَﺎﻡِ ﺩِﻳْﻨًﺎ ، ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, কোন ইলাহ নেই আল্লাহ ব্যতীত। তিনি একক। তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল। আমি আল্লাহর প্রতি রব রূপে এবং মুহাম্মাদের প্রতি রাসূল হিসাবে, ইসলামকে দ্বীন হিসাবে সন্তুষ্ট হ’লাম’।[18]

মাসআলা-১৭ : ‘হাইয়া আলাছ ছালাহ’ (ছালাতের দিকে আস) এবং ‘হাইয়া আলাল ফালাহ’ (কল্যাণের দিকে আস) বলার ক্ষেত্রে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ (কোন ক্ষমতা নেই, কোন শক্তি নেই আল্লাহ ব্যতীত) বলতে হবে।[19]

মাসআলা-১৮ : ‘আছ-ছালাতু খায়রুম মিনান নাউম’ বলার পরে ‘ছাদাক্বতা ওয়া বারারতা’ বলার কোন ভিত্তি নেই।[20] ইবনে হাজার আসক্বালানী (রহঃ বলেছেন, ﻣِﻦْ ﺣَﺪِﻳْﺚِ ﺃَﺑِﻲْ ﺃُﻣَﺎﻣَﺔَ ﺃَﻥَّ ﺑِﻠَﺎﻟًﺎ ﺃَﺧَﺬَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺈِﻗَﺎﻣَﺔِ ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺑَﻠَﻎَ ﻗَﺪْ ﻗَﺎﻣَﺖْ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓُ ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ” ﺃَﻗَﺎﻣَﻬَﺎ ﺍﻟﻠﻪُ ﻭَﺃَﺩَﺍﻣَﻬَﺎ ” ﻭَﻫُﻮَ ﺿَﻌِﻴﻒٌ ﻭَﺍﻟﺰِّﻳَﺎﺩَﺓُ ﻓِﻴﻪِ ﻟَﺎ ﺃَﺻْﻞَ ﻟَﻬَﺎ ﻭَﻛَﺬَﺍ ﻟَﺎ ﺃَﺻْﻞَ ﻟِﻤَﺎ ﺫَﻛَﺮَﻩُ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓُ ﺧَﻴْﺮٌ ﻣِﻦْ ﺍﻟﻨَّﻮْﻡ ‘আবু উমামা কর্তৃক বর্ণিত হাদীছে রয়েছে যে, বেলাল (রাঃ) আযান দিতে লাগলেন। যখন তিনি ‘ক্বাদক্বা-মাতিছ ছালাহ’ পর্যন্ত পৌঁছলেন, তখন নবী করীম (ছাঃ) ‘আক্বামাহাল্লাহু ওয়া আদামাহা’ বললেন মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ। এতে বর্ধিত অংশটুকুর কোন ভিত্তি নেই। তেমনিভাবে ‘আছ-ছালাতু খায়রুম মিনান নাউম’-এর (জবাবে) যা বর্ণিত তারও কোন ভিত্তি নেই’।[21]

মাসআলা-১৯ : ফজরের আযানের আগে বা পরে বিশেষভাবে জুম‘আর দিনে ফজরের আযানের পূর্বে এবং মাইকে ‘আছ-ছালাতু ওয়াস সালামু আলাইকা…’ ইত্যাদি পাঠ করা বিদ‘আত। অনেকে দরূদে আল্লাহর প্রতি সালাম পেশ করেন। অথচ আল্লাহ স্বয়ং ‘সালাম’। তিনি সালাম তথা শান্তি বর্ষণ করেন। তার উপর সালাম পাঠানো নিষেধ। নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ﻟَﺎ ﺗَﻘُﻮﻟُﻮﺍ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠﻪِ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻫُﻮَ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡُ ‏[ 22 ] গজল গাওয়া, লোকদেরকে মাইকে ডাকাডাকি করা সবই নতুন সৃষ্টি।

মাসআলা-২০ : আযানে ‘তাকাল্লুফ’ বা ভান করা যাবে না। যেমন- আযানের দো‘আটি বাংলাদেশ বেতারের কথক এমন ভঙ্গিতে পড়েন, যাতে প্রার্থনার আকুতি থাকে না। যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। কারণ নিজস্ব স্বাভাবিক সুরের বাইরে যাবতীয় তাকাল্লুফ বা ভান করা ইসলামে দারুণভাবে অপসন্দনীয়।[23]

মাসআলা-২১ : আযানের সময় ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ শুনে বিশেষ দো‘আ সহ আঙ্গুলে চুমু দিয়ে চোখ রগড়ানো, আযান শেষে দুই হাত তুলে আযানের দো‘আ পাঠ করা বা উচ্চৈঃস্বরে

পাঠ করার কোন ভিত্তি নেই।[24]

মাসআলা-২২ : বালা-মুছীবতের সময় আযান দেয়ারও কোন দলীল নেই। কেননা আযান কেবল ছালাতের জন্য হয়ে থাকে।[25]

মাসআলা-২৩ : আযানের উদ্দেশ্য হবে স্রেফ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। এজন্য চুক্তিস্বরূপ কোন মজুরী নেওয়া যাবে না। তবে বিনা চাওয়ায় সম্মানী গ্রহণ করা যাবে। কেননা নিয়মিত ইমাম ও মুওয়াযযিনের বা খিলাফতের কাজে নিযুক্ত ব্যক্তির সম্মানজনক জীবিকার দায়িত্ব গ্রহণ করা সমাজ ও সরকারের উপরে অপরিহার্য কর্তব্য।[26]

মাসআলা-২৪ : ইবরাহীম নাখাঈ (রহঃ) বলেছেন, অযূ বিহীন অবস্থায় আযান দেওয়ায় কোন অসুবিধা নেই।[27] তবে অযূ সহকারে আযান দেওয়া উত্তম।

ইক্বামত :

জোড়া জোড়া শব্দে ইক্বামত প্রদানে কতিপয় হাদীছ পেশ করা হয়। যেগুলির দ্বারা প্রমাণ করতে চেষ্টা করা হয়েছে যে, বেজোড় শব্দে নয় বরং জোড়া জোড়া শব্দে ইক্বামত দিতে হবে। এসম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা নিম্নে পেশ করা হ’ল।

দলীল-১ :

ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﻟَﻴْﻠَﻰ، ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺃَﺻْﺤَﺎﺏُ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﺃَﻥَّ ﻋَﺒْﺪَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦَ ﺯَﻳْﺪٍ ﺍﻟْﺄَﻧْﺼَﺎﺭِﻱَّ ﺟَﺎﺀَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ , ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤَﻨَﺎﻡِ ﻛَﺄَﻥَّ ﺭَﺟُﻠًﺎ ﻗَﺎﻡَ ﻭَﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺑُﺮْﺩَﺍﻥِ ﺃَﺧْﻀَﺮَﺍﻥِ ﻋَﻠَﻰ ﺟِﺬْﻣَﺔِ ﺣَﺎﺋِﻂٍ، ﻓَﺄَﺫَّﻥَ ﻣَﺜْﻨَﻰ، ﻭَﺃَﻗَﺎﻡَ ﻣَﺜْﻨَﻰ، ﻭَﻗَﻌَﺪَ ﻗَﻌْﺪَﺓً، ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﺴَﻤِﻊَ ﺫَﻟِﻚَ ﺑِﻠَﺎﻝٌ، ﻓَﻘَﺎﻡَ، ﻓَﺄَﺫَّﻥَ ﻣَﺜْﻨَﻰ، ﻭَﺃَﻗَﺎﻡَ ﻣَﺜْﻨَﻰ، ﻭَﻗَﻌَﺪَ ﻗَﻌْﺪَﺓً

আব্দুর রহমান ইবনে আবী লায়লা হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছাহাবীগণ আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন যে, নিশ্চয়ই আব্দুল্লাহ বিন যায়েদ আনছারী (রাঃ) নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকটে আসলেন এবং বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি স্বপ্নে দেখলাম, এক ব্যক্তি যার পরিধানে ছিল সবুজ রঙের চাদর ও লুঙ্গি, যেন দেয়ালের এক পাশে দাঁড়ালেন। তিনি জোড়া জোড়া শব্দে আযান এবং জোড়া জোড়া শব্দে ইক্বামত দিলেন। আর কিছুক্ষণ বসে থাকলেন। তিনি বললেন, পরে বিলাল (রাঃ) তা শুনলেন এবং তিনি দাঁড়ালেন। এরপর তিনি জোড়া জোড়া শব্দে আযান দিলেন ও জোড়া জোড়া শব্দে ইক্বামত দিলেন এবং কিছুক্ষণ বসে থাকলেন’।[28]

জবাব : এর সনদে আ‘মাশ নামক রাবী আছেন। যিনি আস্থাভাজন হ’লেও মুদাল্লিস রাবী। তার সম্পর্কে মুহাদ্দিছগণের অভিমত তুলে ধরা হ’ল-

হাফেয ইবনে আব্দুল বার্র লিখেছেন, ﻭَﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﻟَﺎ ﻳُﻘْﺒَﻞُ ﺗَﺪْﻟِﻴْﺲُ ﺍﻟْﺄَﻋْﻤَﺶِ ‘তারা (মুহাদ্দিছগণ) বলেছেন, আ‘মাশের তাদলীস গ্রহণ করা যাবে না’।[29] ইমাম দারাকুৎনী লিখেছেন, ﻭَﻟَﻌَﻞَّ ﺍﻟْﺄَﻋْﻤَﺶَ ﺩَﻟَّﺴَﻪُ ﻋَﻦْ ﺣَﺒِﻴْﺐٍ ‘সম্ভবত আ‘মাশ হাবীব হ’তে তাদলীস করেছেন’।[30] ইমাম আবূ হাতেম বলেছেন, ﺍﻷﻋﻤﺶُ ﺭُﺑَّﻤَﺎ ﺩَﻟَّﺲ ‘আমাশ কদাচিৎ তাদলীস করতেন’।[31] হাফেয যাহাবী লিখেছেন, ﻭﻫﻮ ﻳﺪﻟﺲ، ﻭﺭﺑﻤﺎ ﺩﻟﺲ ﻋﻦ ﺿﻌﻴﻒ، ﻭﻻ ﻳﺪﺭﻯ ﺑﻪ ‘তিনি তাদলীস করতেন এবং কখনো কখনো যঈফ রাবী হ’তে তাদলীস করতেন। অথচ এ বিষয়ে তিনি অবগত থাকতেন না’।[32] হাফেয আলাঈ বলেছেন, ﻭﻫﺬﺍ ﺍﻷﻋﻤﺶ ﻣﻦ ﺍﻟﺘﺎﺑﻌﻴﻦ ﻭﺗﺮﺍﻩ ﺩﻟﺲ ﻋﻦ ﺍﻟﺤﺴﻦ ﺑﻦ ﻋﻤﺎﺭﺓ ﻭﻫﻮ ﻳﻌﺮﻑ ﺿﻌﻔﻪ ‘এই আ‘মাশ তাবেঈনদের অন্তর্ভুক্ত। আর তুমি তাকে হাসান বিন উমারাহ হ’তে তাদলীস করতে দেখবে। অথচ তার যঈফ হওয়ার বিষয় তিনি জানতেন’।[33] ইবনুল ইরাক্বী বলেছেন, ﺳﻠﻴﻤﺎﻥ ﺍﻷﻋﻤﺶ ﻣﺸﻬﻮﺭ ﺑﺎﻟﺘﺪﻟﻴﺲ ﺃﻳﻀﺎً ‘সুলায়মান আ‘মাশও তাদলীসের কারণে প্রসিদ্ধ’।[34] ইবনে হাজার আসক্বালানী (রহঃ) লিখেছেন, ﻭﻛﺎﻥ ﻳﺪﻟﺲ ﻭﺻﻔﻪ ﺑﺬﻟﻚ ﺍﻟﻜﺮﺍﺑﻴﺴﻲ ﻭﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻲ ﻭﺍﻟﺪﺍﺭﻗﻄﻨﻲ ﻭﻏﻴﺮﻫﻢ ‘তিনি তাদলীস করতেন। কারাবীসী, নাসাঈ এবং দারাকুৎনী প্রমুখ বিদ্বানগণ তাকে মুদাল্লিসরূপে তুলে ধরেছেন।[35] হাফেয যুবায়ের আলী যাঈ তাঁকে ‘প্রসিদ্ধ মুদাল্লিস’ বলেছেন।[36] হাফেয জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী (রহঃ) বলেছেন, ﺳﻠﻴﻤﺎﻥ ﺍﻷﻋﻤﺶ ﻣﺸﻬﻮﺭ ﺑﻪ ﺑﺎﻟﺘﺪﻟﻴﺲ ‘সুলায়মান আল-আ‘মাশ তাদলীসের কারণে প্রসিদ্ধ।[37]

মোদ্দাকথা আ‘মাশ একজন ছিক্বাহ এবং মুদাল্লিস রাবী। আর মুদাল্লিস রাবীর আনআনাহ সাধারণত যঈফ হয়ে থাকে। যদি সনদ স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়, তবে তা যঈফ নয়।

দলীল-২ :

ﻛَﺎﻥَ ﺃَﺫَﺍﻥُ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺷَﻔْﻌًﺎ ﺷَﻔْﻌًﺎ ﻓِﻲ

ﺍﻷَﺫَﺍﻥِ ﻭَﺍﻹِﻗَﺎﻣَﺔِ ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর আযান এবং ইক্বামত ছিল জোড়া জোড়া শব্দে’।[38]

জবাব : এই হাদীছটি বর্ণনা করার পর ইমাম তিরমিযী (রহঃ) বলেছেন, ﻭَﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﺑْﻦُ ﺃَﺑِﻲ ﻟَﻴْﻠَﻰ، ﻟَﻢْ ﻳَﺴْﻤَﻊْ ﻣِﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦِ ﺯَﻳْﺪٍ ‘আব্দুর রহমান ইবনে আবী লায়লা আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ থেকে শ্রবণ করেননি।[39]

ইমাম আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বলেছেন, ﺳَﺄَﻟﺘﻪ ﻋَﻦ ﻣُﺤَﻤَّﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻟﻴﻠﻰ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻣُﻀْﻄَﺮﺏ ﺍﻟﺤَﺪِﻳﺚ ‘আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম মুহাম্মাদ বিন আব্দুর রহমান বিন আবী লায়লা সম্পর্কে। তিনি বললেন, তিনি মুযত্বারিবুল হাদীছ।[40]

ইমাম নাসাঈ বলেছেন, ﻣُﺤَﻤَّﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻟﻴﻠﻰ ﻗَﺎﺿِﻲ ﺍﻟْﻜُﻮﻓَﺔ ﺃﺣﺪ ﺍﻟْﻔُﻘَﻬَﺎﺀ ﻟَﻴْﺲَ ﺑِﺎﻟْﻘَﻮِﻱّ ﻓِﻲ ﺍﻟﺤَﺪِﻳﺚ ‘মুহাম্মাদ বিন আব্দুর রহমান বিন আবী লায়লা কূফার বিচারক ও অন্যতম ফক্বীহ। হাদীছের ক্ষেত্রে শক্তিশালী ছিলেন না’।[41]

ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী (রহঃ) বলেছেন,

ﺿﻌﻔﻪ ﺍﻟﻨَّﺴَﺎﺋِﻲّ ﻭَﻏَﻴﺮﻩ ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺃَﺣْﻤﺪ ﻛَﺎﻥَ ﺳﻲﺀ ﺍﻟْﺤِﻔْﻆ ﻣُﻀْﻄَﺮﺏ ﺍﻟﺤَﺪِﻳﺚ ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺍﻟْﻌﺠﻠِﻲّ ﻛَﺎﻥَ ﻓَﻘِﻴﻬﺎ ﺻَﺎﺣﺐ ﺳﻨﺔ ﺻَﺪُﻭﻗًﺎ ﺟَﺎﺋِﺰ ﺍﻟﺤَﺪِﻳﺚ –

‘নাসাঈ ও অন্যরা তাকে যঈফ বলেছেন এবং আহমাদ বলেছেন, তিনি বাজে হিফযের অধিকারী, মুযত্বারিবুল হাদীছ। তিনি ফক্বীহ, সুন্নাতধারী, সত্যবাদী, জায়েযুল হাদীছ ছিলেন’।[42] শায়খ যুবায়ের  আলী যাঈ বলেছেন, এর সনদ

যঈফ।[43] শায়খ আলবানী যঈফুল ইসনাদ বলেছেন।[44]

ইমাম শাওকানী বলেছেন ﻛَﺎﻥَ ﺃَﺫَﺍﻥُ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺷَﻔْﻌًﺎ ﺷَﻔْﻌًﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺄَﺫَﺍﻥِ ﻭَﺍﻟْﺈِﻗَﺎﻣَﺔِ ﻭَﺃُﺟِﻴﺐَ ﻋَﻦْ ﺫَﻟِﻚَ ﺑِﺄَﻧَّﻪُ ﻣُﻨْﻘَﻄِﻊٌ ﻛَﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﺘِّﺮْﻣِﺬِﻱُّ . ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর আযান ও ইক্বামত জোড়া জোড়া শব্দে ছিল। এর উত্তর এই যে, এটি মুনক্বাত্বি‘ যেমনটি তিরমিযী বলেছেন।[45] হাফেয মিয্যী বলেছেন, ﻭﺍﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻟﻴﻠﻰ ﻟﻢ ﻳﺴﻤﻊ ﻣﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺯﻳﺪ ‘ইবনু আবী লায়লা আব্দুল্লাহ বিন যায়েদ হ’তে শ্রবণ করেননি’।[46] হাফেয যায়লাঈ হানাফী বলেছেন, ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ : ﻭَﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﺑْﻦُ ﺃَﺑِﻲ ﻟَﻴْﻠَﻰ ﻟَﻢْ ﻳَﺴْﻤَﻊْ ﻣِﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦِ ﺯَﻳْﺪٍ ، ‘ইবনু আবী লায়লা আব্দুল্লাহ বিন যায়েদ হ’তে শ্রবণ করেননি’।[47] ইমাম দারাকুৎনী বলেছেন, ﺍﺑْﻦُ ﺃَﺑِﻲ ﻟَﻴْﻠَﻰ … ﺿَﻌِﻴﻒُ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳْﺚِ ﺳِﻲﺀُ ﺍﻟْﺤِﻔْﻆِ، ﻭَﺍﺑْﻦُ ﺃَﺑِﻲ ﻟَﻴْﻠَﻰ ﻟَﺎ ﻳُﺜْﺒَﺖُ ﺳَﻤَﺎﻋُﻪُ ﻣِﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦِ ﺯَﻳْﺪٍ ‘ইবনু আবী লায়লা যঈফুল হাদীছ। বাজে স্মৃতির অধিকারী এবং ইবনে আবী লায়লার আব্দুল্লাহ বিন যায়েদ হ’তে শ্রবণ করা প্রমাণিত নয়’।[48]

দলীল-৩ :

ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲْ ﻟَﻴْﻠَﻰ، ﻗَﺎﻝَ : ﻛَﺎﻥَ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦُ ﺯَﻳْﺪٍ ﺍﻟْﺄَﻧْﺼَﺎﺭِﻱُّ، ﻣُﺆَﺫِّﻥُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺸْﻔَﻊُ ﺍﻟْﺄَﺫَﺍﻥَ ﻭَﺍﻟْﺈِﻗَﺎﻣَﺔَ

আব্দুর রহমান ইবনে আবী লায়লা হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম (ছাঃ)-এর মুওয়াযযিন আব্দুল্লাহ বিন যায়েদ আনছারী (রাঃ) আযান এবং ইক্বামত জোড়া জোড়া শব্দে দিতেন’।[49]

জবাব : ইবনে আবী লায়লা যঈফ। তার সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত আলোচনা পেশ করা হয়েছে।

দলীল-৪ :

ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﻟَﻴْﻠَﻰ، ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺃَﺻْﺤَﺎﺑُﻨَﺎ، ﺃَﻥَّ ﺭَﺟُﻠًﺎ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺄَﻧْﺼَﺎﺭِ ﺟَﺎﺀَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺇِﻧِّﻲ ﻟَﻤَّﺎ ﺭَﺟَﻌْﺖُ ﺍﻟْﺒَﺎﺭِﺣَﺔَ ﻭَﺭَﺃَﻳْﺖُ ﻣِﻦِ ﺍﻫْﺘِﻤَﺎﻣِﻚَ، ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﻛَﺄَﻥَّ ﺭَﺟُﻠًﺎ ﻗَﺎﺋِﻤًﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺛَﻮْﺑَﺎﻥِ ﺃَﺧْﻀَﺮَﺍﻥِ، ﻓَﺄَﺫَّﻥَ، ﺛُﻢَّ ﻗَﻌَﺪَ ﻗَﻌْﺪَﺓً، ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻡَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻣِﺜْﻠَﻬَﺎ، ﻏَﻴْﺮَ ﺃَﻧَّﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺪْ ﻗَﺎﻣَﺖِ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓُ –

‘ইবনে আবী লায়লা হ’তে বর্ণিত, আমাদের ছাহাবীগণ আমাদের নিকটে বর্ণনা করেছেন যে, আনছার গোত্রের জনৈক ব্যক্তি এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! গতকাল আমি যখন ফিরে গেলাম এবং আপনার পেরেশানী দেখলাম, তখন আমি স্বপ্নে দেখলাম একজন লোক যেন মসজিদে দাঁড়িয়ে আছে। তার পরিধানে ছিল সবুজ রঙের দু’টি কাপড়। তিনি আযান দিলেন। অতঃপর কিছুক্ষণ বসলেন। অতঃপর আবার দাঁড়ালেন এবং আগের মতই বললেন। শুধু ব্যতিক্রম করে বললেন, ক্বাদ ক্বামাতিছ ছালাহ’।[50]

জবাব : এর সনদ যঈফ। শায়খ যুবায়ের আলী যাঈ (রহঃ) বলেছেন, ‘আমাদের সাথীগণ’ কারা তা আমি চিনতে পারিনি। হাদীছটির কিছু যঈফ সমার্থক বর্ণনা আছে।[51] আব্দুল মতীন ছাহেব আমাদের উস্তাদগণ দ্বারা ছাহাবীগণকে উদ্দেশ্য করেছেন।[52] অথচ আমাদের সাথী দ্বারা ছাহাবী উদ্দেশ্য মর্মে বর্ণিত রেওয়ায়াতটি আ‘মাশের তাদলীসের[53] কারণে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই আব্দুল মতীন ছাহেবের অনুবাদে বন্ধনীর মধ্যে (ছাহাবীগণ) লেখার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ।

দলীল-৫ :

ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻣَﺤْﺬُﻭﺭَﺓَ، ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻠَّﻤَﻪُ ﺍﻷَﺫَﺍﻥَ ﺗِﺴْﻊَ ﻋَﺸْﺮَﺓَ ﻛَﻠِﻤَﺔً، ﻭَﺍﻹِﻗَﺎﻣَﺔَ ﺳَﺒْﻊَ ﻋَﺸْﺮَﺓَ ﻛَﻠِﻤَﺔً ،

আবূ মাহযূরা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নিশ্চয়ই নবী (ছাঃ) তাকে ১৯টি বাক্যে আযান এবং ১৭টি বাক্যে ইক্বামত শিক্ষা দিয়েছেন।[54]

জবাব : ইমাম তিরমিযী বলেছেন, হাদীছটি হাসান ছহীহ। এই হাদীছটি ছহীহ।

দলীল-৬ :

ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻣَﺤْﺬُﻭﺭَﺓَ، ﺃَﻥَّ ﻧَﺒِﻲَّ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻠَّﻤَﻪُ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺄَﺫَﺍﻥَ : ﺍﻟﻠﻪُ ﺃَﻛْﺒَﺮُ ﺍﻟﻠﻪُ ﺃَﻛْﺒَﺮُ، ﺃَﺷْﻬَﺪُ ﺃَﻥْ ﻟَﺎ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻠﻪُ، ﺃَﺷْﻬَﺪُ ﺃَﻥْ ﻟَﺎ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻠﻪُ، ﺃَﺷْﻬَﺪُ ﺃَﻥَّ ﻣُﺤَﻤَّﺪًﺍ ﺭَﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺃَﺷْﻬَﺪُ ﺃَﻥَّ ﻣُﺤَﻤَّﺪًﺍ ﺭَﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺛُﻢَّ ﻳَﻌُﻮْﺩُ ﻓَﻴَﻘُﻮْﻝُ : ﺃَﺷْﻬَﺪُ ﺃَﻥْ ﻟَﺎ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻠﻪُ، ﺃَﺷْﻬَﺪُ ﺃَﻥْ ﻟَﺎ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻠﻪُ، ﺃَﺷْﻬَﺪُ ﺃَﻥَّ ﻣُﺤَﻤَّﺪًﺍ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺃَﺷْﻬَﺪُ ﺃَﻥَّ ﻣُﺤَﻤَّﺪًﺍ ﺭَﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺣَﻲَّ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ ﻣَﺮَّﺗَﻴْﻦِ، ﺣَﻲَّ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻔَﻠَﺎﺡِ ﻣَﺮَّﺗَﻴْﻦِ ﺯَﺍﺩَ ﺇِﺳْﺤَﺎﻕُ : ﺍﻟﻠﻪُ ﺃَﻛْﺒَﺮُ ﺍﻟﻠﻪُ ﺃَﻛْﺒَﺮُ ﻟَﺎ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻠﻪ –

আবূ মাহযূরা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে আযানের কালিমা শিক্ষা দিয়েছেন আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার; আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল্লা ইল্লাহা ইল্লাল্লাহ; আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ; হাইয়া আলাছ ছালাহ, হাইয়া আলাছ ছালাহ; হাইয়া আলাল ফালাহ, হাইয়া আলাল ফালাহ; আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।[55]

জবাব : এই হাদীছ দ্বারা তারজী‘ আযান প্রমাণিত হয় যা হানাফী ভাইগণ মানেন না। একই হাদীছ দ্বারা দু’বার ইক্বামতের দলীল গ্রহণ করা এবং ভুল ব্যাখ্যা করে তারজী‘ আযানকে বাতিল করা দুঃখজনক।

দলীল-৭ :

ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧَﺎ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﺮَّﺯَّﺍﻕِ ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧَﺎ ﻣَﻌْﻤَﺮٌ، ﻋَﻦْ ﺣَﻤَّﺎﺩٍ، ﻋَﻦْ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴْﻢَ، ﻋَﻦِ ﺍﻟْﺄَﺳْﻮَﺩِ ﺑْﻦِ ﻳَﺰِﻳْﺪَ : ﺃَﻥَّ ﺑِﻠَﺎﻟًﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺜَﻨِّﻲ ﺍﻟْﺄَﺫَﺍﻥَ، ﻭَﻳُﺜَﻨِّﻲ ﺍﻟْﺈِﻗَﺎﻣَﺔَ، ﻭَﺃَﻧَّﻪُ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺒْﺪَﺃُ ﺑِﺎﻟﺘَّﻜْﺒِﻴْﺮِ، ﻭَﻳَﺨْﺘِﻢُ ﺑِﺎﻟﺘَّﻜْﺒِﻴْﺮِ –

‘নিশ্চয়ই বেলাল দু’বার করে আযান এবং দু’বার করে ইক্বামত দিতেন এবং তিনি তাকবীর দ্বারা (ছালাত) শুরু করতেন এবং তাকবীর দ্বারা শেষ করতেন’।[56]

জবাব : এটি যঈফ। কারণ ইমাম আবূ দাঊদ বলেছেন, ﺳَﻤِﻌﺖ ﺃَﺣْﻤﺪَ ﻳَﻘُﻮﻝ ﻭَﻟَﻜِﻦ ﺣَﻤَّﺎﺩ ﺑﻦ ﺳَﻠﻤَﺔ ﻋِﻨْﺪﻩ ﻋَﻨﻪُ ﺗَﺨْﻠِﻴﻂ ﻳَﻌْﻨِﻲ ﻋَﻦ ﺣَﻤَّﺎﺩ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺳُﻠَﻴْﻤَﺎﻥ ‘আমি আহমাদকে বলতে শুনেছি, বলেছেন, কিন্তু হাম্মাদ বিন সালামহ-এর তাখলীত্ব হয়েছিল।[57] উক্বায়লী বলেছেন,

ﺇِﺳْﻤَﺎﻋِﻴﻞُ ﺑْﻦُ ﺣَﻤَّﺎﺩِ ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﺳُﻠَﻴْﻤَﺎﻥَ ﺣَﺪِﻳﺜُﻪُ ﻏَﻴْﺮُ ﻣَﺤْﻔُﻮﻅٍ ﻭَﻳَﺤْﻜِﻴﻪِ ﻋَﻦْ ﻣَﺠْﻬُﻮﻝٍ،

‘ইসমাঈল ইবনে হাম্মাদ ইবনে আবী সুলাইমানের হাদীছ অসংরক্ষিত। তিনি মাজহূল হ’তে বর্ণনা করতেন’।[58] শায়খ আলবানী বলেছেন, ﺣﻤﺎﺩ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺳﻠﻴﻤﺎﻥ، ﻭﻫﻮ ﺛﻘﺔ، ﻭﻟﻜﻨﻪ ﺍﺧﺘﻠﻂ ‘হাম্মাদ বিন আবী সুলায়মান আস্থাভাজন। কিন্তু তিনি ইখলিাত্বে পতিত হয়েছিলেন’।[59] হাফেয হায়ছামী বলেছেন, ﻭَﻗَﺪِ ﺍﺧْﺘُﻠِﻒَ ﻓِﻲ ﺍﻟِﺎﺣْﺘِﺠَﺎﺝِ ﺑِﻪِ ‘তার দ্বারা দলীল গ্রহণে মতানৈক্য করা হয়েছে’।[60] তিনি অন্যত্র বলেছেন, ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﻘْﺒَﻞْ ﻣِﻦْ ﺣَﺪِﻳﺚِ ﺣَﻤَّﺎﺩٍ ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﺎ ﺭَﻭَﺍﻩُ ﻋَﻨْﻪُ ﺍﻟْﻘُﺪَﻣَﺎﺀُ : ﺷُﻌْﺒَﺔُ، ﻭَﺳُﻔْﻴَﺎﻥُ ﺍﻟﺜَّﻮْﺭِﻱُّ، ﻭَﺍﻟﺪَّﺳْﺘَﻮَﺍﺋِﻲُّ، ﻭَﻣَﻦْ ﻋَﺪَﺍ ﻫَﺆُﻟَﺎﺀِ ﺭَﻭَﻭْﺍ ﻋَﻨْﻪُ ﺑَﻌْﺪَ ﺍﻟِﺎﺧْﺘِﻠَﺎﻁِ . ‘হাম্মাদের হাদীছ কবুল করা হয়নি। তবে স্রেফ ঐগুলি যেগুলি তার পুরাতন ছাত্ররা যেমন শু‘বা, সুফিয়ান ছাওরী, দাসতাওয়াঈ বর্ণনা করেছেন। তারা ব্যতীত বাকিরা তার ইখতিলাতের শিকার হওয়ার পরে বর্ণনা করেছেন।[61] সুতরাং হাম্মাদ বিন সালামাহ ছিক্বাহ হ’লেও তার মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটার কারণে তার রেওয়ায়াত গ্রহণ করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তাছাড়া তিনি মুদাল্লিসও ছিলেন।

অপর রাবী ইবরাহীম নাখাঈ (রহঃ) একজন প্রসিদ্ধ তাবেঈ এবং মুদাল্লিস রাবী। ‘আল-মুদাল্লিসীন’ গ্রন্থে আছে, ﻭﺻﻔﻪ ﺑﺎﻟﺘﺪﻟﻴﺲ ﺍﻟﺪﺍﺭﻗﻄﻨﻲ ﻭﺍﻟﺤﺎﻛﻢ ‘দারাকুৎনী এবং হাকেম তাকে তাদলীসের সাথে উল্লেখ করেছেন’।[62] হাফেয আলাঈ লিখেছেন, ﻛﺎﻥ ﻳﺪﻟﺲ ﻭﻫﻮ ﺃﻳﻀﺎ ﻣﻜﺜﺮ ﻣﻦ ﺍﻹﺭﺳﺎﻝ ‘তিনি তাদলীস করতেন। এছাড়াও তিনি অত্যধিক মুরসালকারী’।[63]

দলীল-৯ :

ﺃَﻥَّ ﺑِﻠَﺎﻟًﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺆَﺫِّﻥُ ﻟِﻠﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﺜْﻨَﻰ ﻣَﺜْﻨَﻰ ﻭَﻳُﻘِﻴﻢُ ﻣَﺜْﻨَﻰ ﻣَﺜْﻨَﻰ ‘নিশ্চয়ই বেলাল (রাঃ) নবী করীম (ছাঃ)-এর জন্য আযান দিতেন জোড়া জোড়া শব্দে এবং ইক্বামত দিতেন জোড়া জোড়া শব্দে’।[64]

জবাব : এটি যঈফ। এর সনদে যিয়াদ বিন আব্দুল্লাহ নামক বিতর্কিত রাবী আছেন। ‘দলিলসহ নামাযের মাসায়েল’ গ্রন্থেও তার বিতর্কিত হওয়ার বিষয়টি আরবীতে তুলে ধরা  হয়েছে। তবে অনুবাদ করা হয়নি।[65]

দলীল-১০ :

ﺃَﻥَّ ﻋَﻠِﻴًّﺎ، ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻘُﻮﻝُ : ﺍﻟْﺄَﺫَﺍﻥُ ﻭَﺍﻟْﺈِﻗَﺎﻣَﺔُ ﻣَﺜْﻨَﻰ، ﻭَﺃَﺗَﻰ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺆَﺫِّﻥٍ ﻳُﻘِﻴﻢُ ﻣَﺮَّﺓً ﻣَﺮَّﺓً، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺃَﻟَﺎ ﺟَﻌَﻠْﺘَﻬَﺎ ﻣَﺜْﻨَﻰ ﻟَﺎ ﺃُﻡَّ ﻟِﻠْﺂﺧَﺮِ ‘আলী (রাঃ) বলতেন, আযান এবং ইক্বামতের বাক্যগুলি দু’বার দু’বার করে হবে। তিনি একজন মুওয়াযযিনকে একবার একবার করে ইক্বামত দিতে শুনলেন। অতঃপর তিনি তাকে বললেন, দু’বার করে ইক্বামত দিলে না কেন? হতভাগ্যের মা না থাক![66]

জবাব : এটি যঈফ। ইবনে ক্বায়স একজন মাজহূল রাবী। আরেকজন রাবী হুশায়ম মুদাল্লিস ছিলেন। ইবনে সা‘দ বলেন, ﻳﺪﻟﺲ ﻛﺜﻴﺮًﺍ ‘তিনি অত্যধিক তাদলীস করতেন’ (ত্বাবাক্বাতে কুবরা, জীবনী নং ৩৪২২) । ইমাম ইজলী (রহঃ)ও অনুরূপ বলেছেন।[67]

দলীল-১১ :

ﺃَﻥَّ ﺳَﻠَﻤَﺔَ ﺑْﻦَ ﺍﻟْﺄَﻛْﻮَﻉِ، ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺜَﻨِّﻲ ﺍﻟْﺈِﻗَﺎﻣَﺔَ ‘সালামা ইবনুল আকওয়া‘ (রাঃ) ইক্বামতের শব্দগুলি দু’বার করে বলতেন’।[68]

জবাব : এ হাদীছটি যঈফ। শায়খ আলবানী বলেছেন, ﻭﺇﺑﺮﺍﻫﻴﻢ ﺿﻌﻴﻒ ﻋﻨﺪ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﻌﻠﻢ ﺑﺎﻟﺤﺪﻳﺚ ‘ইবরাহীম হাদীছ বিশারদগণের নিকটে যঈফ’।[69] হাফেয ইবনে হাজার আসক্বালানী তাকে মুহাদ্দিছদের উদ্ধৃতিতে যঈফ বলেছেন।[70] ইবনে আব্দুল হাদী তাকে যঈফ বলেছেন।[71] হাফেয যায়লাঈ বলেছেন, ﻭَﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢُ ﺑْﻦُ ﺇﺳْﻤَﺎﻋِﻴﻞَ ﺑْﻦِ ﺟَﺎﺭِﻳَﺔَ ﺿَﻌَّﻔُﻮﻩُ ‘ইবরাহীম বিন ইসমাঈল বিন জারিয়াকে তারা (মুহাদ্দিছগণ) যঈফ বলেছেন’।[72] হাফেয হায়ছামী তাকে যঈফ বলেছেন।[73] ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেছেন, ﻭﻫﻮ ﻛَﺜﻴﺮ ﺍﻟﻮﻫﻢ ، ‘তিনি অত্যধিক ভুলকারী’।[74] ইমাম নাসাঈ তাকে যঈফ বলেছেন।[75]

দলীল-১২ :

ﻛَﺎﻥَ ﺃَﺻْﺤَﺎﺏُ ﻋَﻠِﻲٍّ، ﻭَﺃَﺻْﺤَﺎﺏُ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﻳَﺸْﻔَﻌُﻮﻥَ ﺍﻟْﺄَﺫَﺍﻥَ ﻭَﺍﻟْﺈِﻗَﺎﻣَﺔَ ‘আলী ও আব্দুল্লাহর সাথীগণ আযান এবং ইক্বামতের বাক্যগুলি দু’বার দু’বার করে বলতেন’।[76]

জবাব : এটি যঈফ। ইবনে হাজার আসক্বালানী বলেছেন, ﺍﻟﻘﺎﺿﻲ ﺃﺣﺪ ﺍﻟﻔﻘﻬﺎﺀ ﺻﺪﻭﻕ ﻛﺜﻴﺮ ﺍﻟﺨﻄﺄ ﻭﺍﻟﺘﺪﻟﻴﺲ ‘হাজ্জাজ বিন আরত্বাত সত্যবাদী, অত্যধিক ভুল এবং তাদলীসকারী’।[77] তার উস্তাদ আমর বিন আব্দুল্লাহ আবূ ইসহাক্ব সম্পর্কে ইবনে হাজার বলেন, ﺛﻘﺔ ﻣﻜﺜﺮ ﻋﺎﺑﺪ ﻣﻦ ﺍﻟﺜﺎﻟﺜﺔ ﺍﺧﺘﻠﻂ ﺑﺄﺧﺮﺓ ‘তিনি আস্থাভাজন, অত্যধিক ইবাদতগুযার, তৃতীয় স্তরের রাবী। শেষ জীবনে ইখতিলাত্বের শিকার হয়েছিলেন।[78] আর হাজ্জাজ এই রেওয়ায়াতটি তার উস্তাদের মস্তিষ্ক বিকৃতির পূর্বে গ্রহণ করেছেন মর্মে কোন প্রমাণ আমরা অবগত নই।

দলীল-১৩ :

ﻋَﻦْ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ، ﻗَﺎﻝَ : ﻟَﺎ ﺗَﺪَﻉُ ﺃَﻥْ ﺗُﺜَﻨِّﻲَ ﺍﻟْﺈِﻗَﺎﻣَﺔَ ‘ ইবরাহীম নাখাঈ বলেছেন, দু’বার দু’বার করে ইক্বামত দেওয়া বর্জন করবে না’।[79]

জবাব : এটি যঈফ। এটি একজন তাবেঈর বক্তব্য মাত্র। যা আমাদের জন্য দলীল নয়। ইবনে হাজার অত্র রেওয়ায়াতের রাবী ইবনে আবী লায়লা সম্পর্কে বলেছেন, ﺻﺪﻭﻕ ﺳﻲﺀ ﺍﻟﺤﻔﻆ ﺟﺪﺍ ‘তিনি সত্যবাদী। অত্যন্ত মন্দ স্মৃতির অধিকারী’।[80] এই মর্মের আরো কিছু যঈফ রেওয়ায়াত বিদ্যমান।

ইক্বামতের শব্দাবলী :

দলীল-১ : আনাস (রাঃ) বলেছেন, ﻓَﺄُﻣِﺮَ ﺑِﻼَﻝٌ ﺃَﻥْ ﻳَﺸْﻔَﻊَ ﺍﻷَﺫَﺍﻥَ، ﻭَﺃَﻥْ ﻳُﻮﺗِﺮَ ﺍﻹِﻗَﺎﻣَﺔَ ‘অতঃপর বেলালকে দু’বার দু’বার করে আযান এবং একবার একবার করে ইক্বামাত দিতে আদেশ দেয়া হয়েছিল’।[81]

দলীল-২ : ইবনে ওমর (রাঃ) বলেছেন, ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟْﺄَﺫَﺍﻥُ ﻋَﻠَﻰ ﻋَﻬْﺪِ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﺮَّﺗَﻴْﻦِ، ﻣَﺮَّﺗَﻴْﻦِ ﻭَﺍﻟْﺈِﻗَﺎﻣَﺔُ ﻣَﺮَّﺓً، ﻣَﺮَّﺓً ﻏَﻴْﺮَ ﺃَﻧَّﻪُ، ﻳَﻘُﻮﻝُ : ﻗَﺪْ ﻗَﺎﻣَﺖِ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓُ، ﻗَﺪْ ﻗَﺎﻣَﺖِ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓُ ، ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যুগে আযান ছিল দু’বার দু’বার করে এবং ইক্বামত ছিল একবার একবার। তবে এ ব্যতীত তিনি বলতেন, ক্বাদ ক্বামাতিছ ছালাহ (দু’বার দু’বার বলতেন)।[82] অত্র দলীল প্রমাণ করে যে, ইক্বামত একবার একবার করে দেওয়াই সুন্নাত। দ্বিতীয় দলীলটির সনদ হাসান।

ইক্বামত সংক্রান্ত ফৎওয়াসমূহ :

(১) শায়খ বিন বায (রহঃ) বলেছেন, ﻭﺃﻓﻴﺪﻙ : ﺃﻥ ﺍﻷﻣﺮ ﻓﻲ ﺍﻷﺫﺍﻥ ﻭﺍﻹﻗﺎﻣﺔ ﻭﺍﺳﻊ ﻋﻠﻰ ﺿﻮﺀ ﻣﺎ ﺟﺎﺀ ﻓﻲ ﺍﻷﺣﺎﺩﻳﺚ ﺍﻟﺼﺤﻴﺤﺔ ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ، ﻭﻟﻜﻦ ﺍﻷﻓﻀﻞ : ﻫﻮ ﺓﺛﻨﻴﺔ ﺃﻟﻔﺎﻅ ﺍﻟﺘﻜﺒﻴﺮ ﻓﻲ ﺃﻭﻝ ﺍﻹﻗﺎﻣﺔ ﻭﺁﺧﺮﻫﺎ، ﻭﻓﻲ ‏( ﻗﺪ ﻗﺎﻣﺖ ﺍﻟﺼﻼﺓ ‏) ﻭﺇﻓﺮﺍﺩ ﺃﻟﻔﺎﻅ ﻣﺎ ﺳﻮﻯ ﺫﻟﻚ؛ ﻷﻥ ﺫﻟﻚ ﻫﻮ ﺍﻟﺬﻱ ﻛﺎﻥ ﻳﻔﻌﻠﻪ ﺑﻼﻝ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺑﻴﻦ ﻳﺪﻱ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺇﻟﻰ ﺃﻥ ﺗﻮﻓﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻧﺒﻴﻪ ﻣﺤﻤﺪﺍ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻭﺍﻟﺴﻼﻡ ‘নবী করীম (ছাঃ) হ’তে বর্ণিত ছহীহ হাদীছসমূহে যা এসেছে তার আলোকে (বলা যায়), নিশ্চয়ই আযান এবং ইক্বামত-এর বিষয়টি বিস্তৃত। কিন্তু উত্তম হ’ল, ইক্বামতের প্রথম এবং শেষে তাকবীরগুলি দু’বার দু’বার করে বলা এবং ‘ক্বাদ ক্বামাতিছ ছালাহ’ ব্যতীত অবশিষ্টগুলি একবার একবার করে বলা। কেননা এটিই সেই কাজ যা বিলাল (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সম্মুখে করতেন তার (রাসূলের) মৃত্যু হওয়া পর্যন্ত’।[83]

(২) শায়খুল ইসলাম ইবনে তায়মিয়া (রহঃ) বলেছেন, অতঃপর সঠিক হ’ল আহলেহাদীছদের মাযহাব এবং তাদের সাথে যারা একমত হয়েছেন।[84] অর্থাৎ আহলেহাদীছদের অভিমত হ’ল, ইক্বামত জোড়া জোড়া শব্দেও জায়েয আবার একবার একবার শব্দেও জায়েয। সুতরাং একবার একবার করে ইক্বামত প্রদানকে মানসূখ বা রহিত দাবী করা ভুল এবং দলীলবিহীন। ‘নবীজীর নামায’ বইয়ে একবার একবার করে ইক্বামত প্রদানকে মানসূখ বলা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিমূলক।[85]

(৩) শায়খ যুবায়ের আলী যাঈ (রহঃ) বলেছেন, সাইয়েদুনা বিলাল (রাঃ)-এর ইক্বামত একবার একবার করে এবং সাইয়েদুনা আবূ মাহযূরা (রাঃ)-এর আযানের মধ্যে ইক্বামত জোড়া জোড়া শব্দে আছে। আযান এবং ইক্বামতের এই দু’টি পদ্ধতিই ছহীহ। কতিপয় লোক আযান তো বিলাল (রাঃ)-এর হাদীছ হ’তে গ্রহণ করেন। কিন্তু ইক্বামতের পদ্ধতিটি আবূ মাহযূরা (রাঃ)-এর হাদীছ থেকে গ্রহণ করেন। একইভাবে তারা বেলাল (রাঃ)-এর আযানের দ্বিতীয় অংশ এবং আবূ মাহযূরা (রাঃ)-এর আযানের প্রথম অংশ (তারজী‘ বিশিষ্ট আযান) প্রত্যাখ্যান করেন।[86]

(৪) ‘ক্বাদ ক্বামাতিছ ছালাহ’ ব্যতীত ইক্বামতের শব্দগুলি একবার একবার করে বলা মর্মে ইমাম বুখারী একটি অনুচ্ছেদ বেঁধেছেন।[87]

(৫) মুফতী মুহাম্মাদ ওবায়দুল্লাহ খান আফীফ বলেছেন, যদিও দু’বার দু’বার করে ইক্বামত প্রদান করা জায়েয এবং এর মধ্যে কোন সন্দেহ নেই, তবুও একবার একবার করে দেওয়াই বিশুদ্ধতম ও উত্তম।[88]

ইক্বামত সংক্রান্ত কতিপয় মাসআলা

মাসআলা-১ : আযানদাতার ইক্বামত দেওয়া উত্তম। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বিলাল (রাঃ)-কে আযান এবং ইক্বামত উভয়টির জন্য আদেশ করতেন।[89] তবে অন্য কেউ ইক্বামত দিতে পারে।

মাসআলা-২ : ইক্বামতের জবাবে ‘আক্বামাহাল্লাহু ওয়া আদামাহা’ বলার কোন ছহীহ বা হাসান হাদীছ নেই। এ মর্মে বর্ণিত আবূ দাঊদের (হা/৫২৮) হাদীছটির সনদ অত্যন্ত যঈফ।[90] এখানে তিনটি ত্রুটি বিদ্যমান।-

(ক) এর রাবী মুহাম্মাদ বিন ছাবেত যঈফ রাবী।[91]

(খ) ‘রজুলুম মিন আহলিশ শাম’ (সিরিয়ার অধিবাসীদের মধ্য হ’তে কোন একজন ব্যক্তি)-মাজহূল তথা অজ্ঞাত। অর্থাৎ এখানে মুহাম্মাদ বিন ছাবেত তার উস্তাদের নাম বলেননি। ফলে তার উস্তাদ অজ্ঞাত।

(গ) শাহর বিন হাওশাব একজন বিতর্কিত রাবী।[92] তার মন্দ হিফযের কারণে আলবানী তাকে যঈফ বলেছেন।[93] উল্লেখ্য, ‘নবীজীর নামায’ বইয়ে অত্র যঈফ হাদীছটি পেশ করা হয়েছে।[94]

মাসআলা-৩ : নবজাতকের কানে ইক্বামত প্রদান করার হাদীছটি যঈফ।[95]

মাসআলা-৪ : আযান এবং ইক্বামতের মাঝে অন্তত পক্ষে দু’রাক‘আত ছালাত পড়ার সমপরিমাণ সময় থাকতে হবে।[96]

মাসআলা-৫ : ইক্বামত না দিলে ছালাত বাতিল হবে না। তবে ইচ্ছাকৃত ইক্বামত পরিত্যাগ করা উচিত নয়।

মাসআলা-৬ : একই ছালাতের জন্য একাধিকবার ইক্বামত দেওয়া যায়।[97] তবে আযান ও ইক্বামত পুনরায় না দিলেও অসুবিধা নেই।[98]

মাসআলা-৭ : ইক্বামত ও ছালাত শুরুর মধ্যবর্তী সময়ে প্রয়োজনে কথা বলায় অসুবিধা নেই।[99]

মাসআলা-৮ : ইক্বামত হয়ে গেলে ফরয ছালাত ব্যতীত আর কোন ছালাত নেই।[100]

মাসআলা-৯ : মহিলারা ঘরে ছালাত পড়ার সময় ইক্বামত দিতে পারবেন না বলে কোন ছহীহ হাদীছ নেই। তারা নিম্নস্বরে বা অনুচ্চস্বরে ইক্বামত দিবেন।

আযান ও ইক্বামত সম্পর্কে কতিপয় ভ্রান্ত ধারণা :

(১) মূর্খ ব্যক্তি আযান দিলে সে মাসআলা-মাসায়েল জানা মুওয়াযযিনের সমান ছওয়াব পাবে না।[101] (২) অবোধ বালকের আযান ও ইক্বামত দেয়া মাকরূহ। অবোধ বালক আযান দিলে তা পুনরায় দিতে হবে। তবে ইক্বামত দিলে তা পুনরায় দিতে হবে না।[102] (৩) বসে বসে আযান দিলে তা বাতিল হবে। বিধায় পুনরায় আযান দিতে হবে।[103] (৪) ইক্বামত তাড়াতাড়ি দিতে হবে। (৫) বড় নাপাকীসহ আযান দেয়া মাকরূহে তাহরীমী এবং উক্ত আযান পুনরায় দেওয়া মুস্তাহাব।[104] (৬) যদি কেউ আযান ও ইক্বামতের মাঝখানে কথা বলে তবে আযান পুনরায় দিতে হবে, কিন্তু ইক্বামত নয়।[105] এ জাতীয় যত কথা প্রচলিত আছে সেগুলি গ্রহণযোগ্য নয়।

উপসংহার : পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ মোতাবেক আযান এবং ইক্বামত প্রদান করা যরূরী। গোঁড়ামি ত্যাগ করে কুরআন ও ছহীহ সুন্নার আলোকে জীবন গড়াই হ’ল জান্নাত লাভের উপায়। আল্লাহ আমাদেরকে হক্ব পথে অটল থাকার তাওফীক্ব দান করুন-আমীন!

 

– আহমাদুল্লাহ

সৈয়দপুর, নীলফামারী।


[1]. বুখারী হা/৬০৯; মিশকাত হা/৬৫৬ ।

[2]. মুসলিম হা/৩৮৭; মিশকাত হা/৬৫৪ ।

[3]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ হা/২১৭৭; বিস্তারিত দ্রঃ শায়খ যুবায়ের আলী যাঈ, ফাতাওয়া ইলমিইয়া ১/২৪৪ ।

[4]. বায়হাক্বী, হাদীছ ছহীহ, আলবানী, তামামুল মিন্নাহ, পৃঃ ১৫৩ ।

[5]. তামামুল মিন্নাহ পৃঃ ১৫৩।

[6]. মুসলিম হা/৩৭৯; ফাতাওয়া ইলমিইয়া ১/২৪৬ ।

[7]. বুখারী হা/৬২২ ।

[8]. দেখুন : ফাতাওয়া ইলমিইয়া ১/২৪৮ ।

[9]. বুখারী হা/৯১২ ।

[10]. বুখারী হা/৯১৬; মিশকাত হা/১৪০৪ ।

[11]. দ্রঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) পৃঃ ১৯৪।

[12]. ফাতাওয়া ইলমিইয়া ১/২৫০ ।

[13]. ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ৬/৬৭, ফৎওয়া-৬৯১৪ ।

[14]. ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ৬/৬৯, ফৎওয়া-১০১৮৯ ।

[15]. ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ৬/৭৫ ।

[16]. মুসলিম হা/৩৮৪ ।

[17]. বুখারী হা/৬১৪; মিশকাত হা/৬৫৯ ।

[18]. মিশকাত হা/৬৬১ ।

[19]. মুসলিম হা/৩৮৫ ।

[20]. ইরওয়াউল গালীল হা/২৪১ ।

[21]. আত-তালখীছুল হাবীর হা/৩১০।

[22]. মিশকাত হা/৯০৯ ।

[23]. ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) পৃঃ ৮০।

[24]. ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) পৃঃ ৮০।

[25]. ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) পৃঃ ৮০।

[26]. বুখারী হা/৭১৬৩; আবূ দাঊদ হা/১৬৪৭, ২৯৪৪; মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ হা/২৩৭০ ।

[27]. বুখারী হা/৬৩৪-এর পূর্বে, পর্ব-১০, অনুচ্ছেদ-১৯ দ্রঃ।

[28]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ হা/২১১৮; দলিলসহ নামাযের মাসায়েল, পৃঃ ৬০ ।

[29]. আত-তামহীদ ১/৩০ ।

[30]. আল-ইলালুল ওয়ারিদাহ, মাসআলা-১৮৮৮ ।

[31]. ইবনে আবী হাতেম, ইলালুল হাদীছ হা/৯ ।

[32]. মীযানুল ই‘তিদাল, জীবনী নং ৩৫১৭।

[33]. জামে‘উত তাহছীল ১/১০১ ।

[34]. আল-মুদাল্লিসীন, জীবনী নং ২৫, হারফুস সীন ।

[35]. ত্বাবাক্বাতুল মুদাল্লিসীন, জীবনী নং ৫৫।

[36]. ফাতাওয়া ইলমিইয়া /১৪৯; বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : তাহক্বীক্বী মাক্বালাত ১/২৬৭-২৭২ ।

[37]. আসমাউল মুদাল্লিসীন, জীবনী নং ২১ ।

[38]. তিরমিযী হা/১৯৪ ।

[39]. ঐ।

[40]. আল-ইলাল ওয়া মা‘রিফাতির রিজাল, রাবী নং ৮৬২।

[41]. আয-যু‘আফাউল মাতরূকীন, জীবনী নং ৫২৫ ।

[42]. ত্বাবাক্বাতুল হুফ্ফায, জীবনী  নং ১৫৮।

[43]. আনওয়ারুছ ছহীহফা, যঈফ তিরমিযী হা/১৯৪ ।

[44]. যঈফ তিরমিযী হা/১৯৪ ।

[45]. নায়লুল আওত্বার ২/৪৯ ।

[46]. তুহফাতুল আশরাফ হা/৫৩১১ ।

[47]. নাছবুর রায়াহ ১/২৬৭ ।

[48]. সুনানে দারাকুৎনী হা/৯৩৬ ।

[49]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ হা/২১৩৯; দলিলসহ নামাযের মাসায়েল পৃঃ ৬০ ।

[50]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ হা/২১২৪; আবূ দাঊদ হা/৫০৬ ।

[51]. যঈফ আবূ দাঊদ হা/৫০৬; আনওয়ারুছ ছহীফা, পৃঃ ৩২ ।

[52]. দলিলসহ নামাযের মাসায়েল, পৃঃ ৬১।

[53]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ হা/১৯৭৫।

[54]. তিরমিযী হা/১৯২ ।

[55]. আবূ দাঊদ হা/৫০২, ছহীহ হাদীছ ।

[56]. মুছান্নাফ আব্দুর রায্যাক্ব হা/১৭৯০; দারাকুৎনী হা/৯৪০ ।

[57]. সুওয়ালাতু আবী দাঊদ, জীবনী নং ৩৩৮।

[58]. আয-যুআফাউল কাবীর, জীবনী নং ৮৮।

[59]. আছলু ছিফাতি ছালাতিন নাবী ২/৬৬২ ।

[60]. মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/১২৮২ ।

[61]. ঐ হা/৪৭২ ।

[62]. জীবনী নং ১৩।

[63]. জামেউত তাহছীল, জীবনী নং ১৩ ।

[64]. দারাকুৎনী  হা/৯৩৯ ।

[65]. ঐ, পৃঃ ৬৩ ।

[66]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ  হা/২১৩৭ ।

[67]. আছ-ছিক্বাত, জীবনী  নং ১৯১২ ।

[68]. ত্বাহাবী, মুশকিলুল আছার হা/৮৩৬ ।

[69]. সিলসিলাহ যঈফা হা/৩৬৫৬ ।

[70]. ফাৎহুল বারী ১/৪৫৬, আল-ফাছলুত তাসি‘ ফী সিয়াক্বি আসমা মান তুয়িনা।

[71]. তানক্বীহুত তাহক্বীক্ব হা/২৫৮৬ ।

[72]. নাছবুর রায়াহ ৪/১২৫ ।

[73]. মাজমাউয যাওয়াদে হা/৪৩৬৫ ।

[74]. আত-তারীখুছ ছগীর, জীবনী নং ১ ।

[75]. আয-যুআফাউল মাতরূকীন, জীবনী নং ১ ।

[76]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ হা/২১৪২ ।

[77]. তাক্বরীবুত তাহযীব, জীবনী নং ১১১৯ ।

[78]. আত-তাক্বরীব, জীবনী নং ৫০৬৫ ।

[79]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ হা/২১৪১ ।

[80]. আত-তাক্বরীব, জীবনী নং ৬০৮১ ।

[81]. বুখারী হা/৬০৩, ৬০৫-৬-৭; মুসলিম হা/৩৭৮ ।

[82]. আবূ দাঊদ হা/ ৫১০; আলবানী হাসান বলেছেন।

[83]. মাজমূ ফাতাওয়া ১০/৩৩৭ ।

[84]. মাজমূআ ফাতাওয়া ২২/৬৬, ৬৭ ।

[85]. নবীজীর নামায পৃঃ ১৩৯।

[86]. ফাতাওয়া ইলমিইয়া ২/১৪৯ ।

[87]. বুখারী হা/৬০৭-এর পূর্বে, ১/২৯৫, (তাওহীদ পাবলিকেশন্স), পর্ব-১০, অনুচ্ছেদ-৩ ।

[88]. ফাতাওয়া মুহাম্মাদিয়া ১/৩২০ ।

[89]. বুখারী হা/৬০৬ ।

[90]. আল-ইরওয়া হা/২৪১ ।

[91]. বুখারী, আয-যু‘আফাউছ ছাগীর, জীবনী নং ৩১২; ইবনে আবী হাতেম, আল-জারহু ওয়াত-তা‘দীল, জীবনী নং ১২০১; ইরওয়া হা/২৪১; যঈফ আবূ দাঊদ হা/৮৪ ।

[92]. মুফতী মুবাশ্বির আহমাদ রাববানী, আহকাম ওয়া মাসায়েল পৃঃ ১৪৩ ।

[93]. যঈফ আবূ দাঊদ হা/৮৪ ।

[94]. ড. মুহাম্মাদ ইলিয়াস ফয়ছাল, নবীজীর নামায, পৃঃ ১৪১, সম্পাদনা : মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল মালেক।

[95]. যুবায়ের আলী যাঈ, আনওয়ারুছ ছহীফা, যঈফ আবূ দাঊদ হা/৫১০৫; যঈফ তিরমিযী হা/১৫১৪ ।

[96]. বুখারী হা/৬২৪ ।

[97]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ হা/২২৯৮; বুখারী, পর্ব-১০, অনুচ্ছেদ-৩০, (তাওহীদ পাবলিকেশন্স), যুবায়ের যাঈ এই হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন, ফাতাওয়া ইলমিইয়া ১/২৫৩ ।

[98]. মুসলিম হা/৫৩৪ ।

[99]. বুখারী হা/৬৪২ ।

[100]. বুখারী হা/৬৬৩ ।

[101]. বেহেশতী জেওর ১/৯৭ ।

[102]. ঐ ।

[103]. ঐ ।

[104]. ঐ ।

[105]. ঐ ।

ইসলামিক ইমেইল নিউজলেটার
নতুন পোস্ট প্রকাশিত হলে সরাসরি আপনার ই-মেইল ইনবক্সে পেতে সাবস্ক্রাইব করুন।
icon

মন্তব্য করুন

Back to top button