সাহসী মানুষের গল্প

রাসূল আমার আলোর জ্যোতি

আমাদের প্রিয় নবী ‍মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ (সা)।

জন্মগ্রহণ করেন মরুভূমির দেশ-আরবের মক্কা নগরে।

সময়টি ছিল ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ২০শে এপ্রিল, ১২ই রবিউল আউয়াল।

রাসূলের (সা) আগমন সম্পর্কে আল্লাহ পাক আল কুরআনে বলেন, ‘সৃষ্টি জগতের রহমতস্বরূপ তোমাকে রাসূল করে পাঠিয়েছি।’

সূরা আল আযহাবে আরও বলা হয়েছে:”

‘হে নবী! তোমাকে সাক্ষ্যদানকারী, সুসংবাদ দানকারী ও সতর্ককারী এবং আল্লাহর নির্দেশ তাঁর দিকে আহ্বানকারী ও একটি উজ্জ্বল প্রতীপ বানিয়ে পাঠিয়েছি।’

সত্যিই প্রদীপসম ছিলেন দয়ার নবীজী (সা)।

তাঁর আলোকে চারপাশে আলোকিত হয়ে উঠেছিল। তখন চারদিকে কেমন সব ফকফকা, উজ্জ্বল।

মুহাম্মদ (সা) এর বংশের নাম কুরাইশ। গোত্রের নাম বনি হাশিম। পরিবার মুত্তালিব। আব্বার নাম-আবদুল্লাহ। আম্মার নাম- আমিনা। দাদার নাম- আবদুল মুত্তালিব। আর নানার নাম- ওয়াহাব।

আবদুল মুত্তালিবের পরিবারটি ছিল কুরাইশদের মধ্যে অত্যন্ত খান্দানী ও শরীফ। তার সুনাম ও সুখ্যাতি ছিল প্রচুর।

নবীজীর চাচা ছিলেন যথাক্র্রমে হারিস, আবুল ওজ্জা (আবু লাহাব), আবু তালিব, দিরার, আব্বা. মুকাওবীম, জ্বহল, হামযা ও জুবায়ের।

আর তাঁর ফুফু ছিলেন ‘আতিকাহ, ওায়মা, আরওয়া, বাররা, উম্মে হাকীম ও সাফিয়্যাহ।

মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা) দুধমাতা ছিলেন কানিজ ছওবিয়া ও হালিমা ছা’দিয়া।

দয়ার নবীজীর শৈশবকালটি ছিল একেবারেই অন্যরকম।

তাঁর জন্মের আগেই ইন্তেকাল করলেন আব্বা। পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত দুধ-মা হালিার কাছে প্রতিপালিত হন। পরবর্তী ছয় মাস আম্মার কাছে। ছয় বছর বয়সে ইন্তেকাল করলেন আম্মা। পরবর্তী দুই বছর দাদার কাছে প্রতিপালিত হন।

আট বছর বয়সে দাদা ইন্তকাল করলেন।

দাদার ইন্তেকালের পর চাচা আবু তালিবের কাছে প্রতিপালিত হন রাসূল মুহাম্মাদ (সা)।

বার বছর বয়সে দয়ার নবীজী (সা) চাচা আবু তালিবের সাথে সিরিয়া গমন করেন।

মাত্র সতের বছর বয়সে দুঃসাহসী যুবক নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা) কয়েকজন যুবকের মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে তুললেন মজলুম মানবতার মুক্তিকামী প্রথম সংগঠন ‘হিলফুল ফুজুল।’

‘হিলফুল ফুজুল’ সংগঠনের শপথ ছিল পাঁচটি। যেমন:

১. নিঃস্ব, অসহায়, দুর্গতদেরসেবা করবো।

২. অত্যাচারীকে প্রাণপণে বাধা দেব।

৩. মজলুমকে সাহায্য করবো।

৪. দেশের শান্তি ও শৃংখলা রক্ষা করবো।

৫. বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে সম্প্রীতি স্থাপনের চেষ্টা করবো।

প্রকৃত অর্থে, আজকের দিনের জন্যও এই পাঁচটি শপথ আমাদের সকলের জন্য সমান জরুরি।

মুহাম্মাদ (সা) সেই যৌবন বয়সেই ‘নূর’ পাহাড়েরর হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন। এই হেরা গুহায় ধ্যানরত অবস্থায় একদিন আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিল হলো:

‘ইকরা বিইসমি রাব্বিকাল্‌লাজি খালাক।’

‘পড় তোমার রবের নামে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।’

আয়াতটি শোনার সাথে সাথেই অভিভূত হয়ে গেলেন দয়ার নবীজী। তিনি বাড়ি এসে কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লেন। তখনও তিনি সমানে সম্পমান।

ঠিক এই সময় আবার নাজিল হলো:

‘হে কম্বল আচ্ছাদিত ব্যক্তি!

ওঠো, লোকদেরকে সাবধান করো এবং তোমার রবের শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করো।’

এরপর রাসূল (সা) ছাফা পাহাড়ে উঠে মক্কাবাসীদের ডাকলেন,

‘ইয়া সাবাহা…

রাসূলের (সা) সেই সংকেত শুনে ছুটে এলো মক্কাবাসী।

তাদেরকে লক্ষ্য করে রাসূল (সা) বললেন:

“হে ধ্বংস পথের যাত্রীদল! হুঁশিয়ার হও। এখনো সময় আছে, এখনো পথ আছে। এক আল্লাহর ইবাদত করো। অন্তরকে সুন্দর করো। তাহলেই দুনিয়া ও আখেরাতে তোমাদের  কল্যাণ হবে।”

রাসূলের (সা) প্রথম ডাকেই সারা দিয়ে ঈমান আনলেন মাত্র আটজন। তাঁরা হলেন- প্রথম মহিলা রাসূলের (সা) স্ত্রী খাতিজাতুল কুবরা, প্রথম কিশোর- আলী (রা), প্রথম ক্রীতদাস- জায়েদ (রা), আবু বকর সিদ্দিক (রা), উম্মে আয়মান, আমার বিন আম্বাছা (রা), বেলাল (রা) খালিদ বিন সা’দ (রা)।

নারী ও পুরুষের মধ্যে প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন হযরত খাদিজাতুল কুবরা।

এরপর একে একে আরও কিছু মহিলা ইসলাম কবুল করলেন। যেমন আব্বাসের স্ত্রী উম্মুল ফাজল (রা), আনিসের কন্যা আসমা (রা), আবু বকরের কন্যা আসমা (রা) ও উমরের বোন ফাতিমা (রা)।

খাদিজা (রা) যেমন প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী, তেমনি মহিলাদের মধ্যে প্রথম শহীদ হযরত সুমাইয়া (রা)। তিনি ইসলামের দ্বিতীয় শহীদ হিসাবে ইতিহাসের পাতায়ও অমর হয়ে আছেন।

হযরত ফাতেমার (রা) অক্লান্ত ও নির্ভীক প্রচেষ্টায় ইসলাম গ্রহণ করেন তাঁর ভাই উমর। এই দুঃসাহসী উমরই (রা) ছিলেন রাসূলের (সা) ওফাতের পর আমাদের দ্বিতীয় খলীফা।

সময় এলো আবিসিনিয়ায় হিজরাতের। এটাই প্রথম হিজরার। এই প্রথম হিজরাতের প্রথম দলের সাথে ছিলেন বেশ কয়েকজন মহিলা। তাঁরা হলেন- রোকাইয়া (রা), সালমা বিনতে সুহাহইল (রা), উম্মে সালমা বিনতে আবি উমাইয়া (রা), লায়লা বিনতে আবি হাশমাহ (রা)।

রাসূলের (সা) আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেন সেই সময়ের চিন্তাশীল সত্যানুরাগী মানুষ, বঞ্চিত ও লাঞ্ছিত মানুষ, এবং লাঞ্ছিত বেশ কিছু নারী।

নবীজীর (সা) কণ্ঠ যত বুলন্দ হলো, ইসলারেম আহ্বান যত জোরদার হলো- ততোই সত্যের সাহসী মানুষের ওপর পাপীষ্ঠদের অত্যাচার নির্যাতনের মাত্র বেড়ে গেল।

ইসলারেম বুলন্দ আওয়াজকে মিটিয়ে দেবার জন্য কাফের-মুশরিকরা শুরু করলো সর্বপ্রকার ষড়যন্ত্র ও হামলা।

তাদের নির্যাতন ও অত্যাচার প্রথম দিকেই একে একে শহীদ হলেন- হারেস ইবনে আবিহালা (রা), সুমাইয়া (রা), ইয়াসির (রা) ও খোবায়েব (রা)। আর চরমভঅবে নির্যাতিত হলেন- আম্মার (রা), খাব্বাব (রা), যুবায়ের (রা), বিলাল (রা), সোহাইব (রা), আবু ফকীহা (রা), লুবাইনা (রা), যুনাইয়া (রা) ও নাহদিয়া (রা)।

নবুওয়তের ৬ষ্ঠ বছর।

এই সময়েই ঘটে গেল এক ঐতিহাসিক ঘটনা।

ছাফা থেকে মুসলমানদের একটি মিছিল বের হয় রাসূলের (সা) নবুওয়াতের ৬ষ্ঠ  বছরে।

মিছিলে দুই সারির সামনে ছিলেন হামযা (রা) ও উমর ফারুক (রা)।

উভয়ের মাঝে ছিলেন মহান সেনাপতি- রাসূল (সা)।

সবার কণ্ঠে ছিল ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি। এই ঐতিহাসিক প্রথম মিছিলটি শেষ হয় কাবায় গিয়ে।

নবুওয়াতের ৭ম বছরে মুসলমানরা সামাজিক বয়কটের শিকার হন।

মক্কার সকল গোত্র বনি হাশিম গোত্রের সাথে আত্মীয়তা, কেনা-বেচা, খাদ্য বিনিময়সহ সকল প্রকার লেনদেন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

মুসলমানরা ‘শিআবে আবি তালিব’ নামক স্থানে আশ্রয় গ্রহণ করেন।

এই সময় তাঁরা ক্ষুধা, দারিদ্র ও কষ্টের মধ্যে দিয়ে এক চরমতম পরীক্ষার সম্মুখীন হন। মুসলমানদের ওপরে এই দুঃসহ অবরোধ চলে টানা তিনটি বছর।

তবুও হতোদ্যম হননি রাসূল (সা)।

ভেঙ্গে পড়েননি একজন মুসলমানও।

এই কঠিনতম পরীক্ষায় পাশ করলেন রাসূল (সা) সহ সত্যের সাহসী সৈনিকরা।

নবী (সা) এবার মক্কা থেকে ষাট মাইল দূরে, তায়েফে গেলেন দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে। সেখানে তিনি ক্রমাগত দশদিন দাওয়াতী অভিযান চালালেন।

কিন্তু তায়েফবাসীরা রাসূলের (সা) দাওয়াত গ্রহণ করলো না।

বরং তাদের হাতে চরমভাবে লাঞ্ছিত ও রক্তাক্ত হলেন দয়ার নবীজী (সা)। তবুও থেমে থাকলো না রাসূলের (সা) দ্বীনের দাওয়াতী অভিযান।

দাওয়াতের ব্যাপারে রাসূলের (সা) ক্রমাগত চেষ্টা ও দুঃসাহসিক অভিযাত্রার ফলেই তো এক সময় সেই তায়েফের মানুষই ইসলাম গ্রহণ করেছিল।

নবুওয়তের দশম বছর।

এই সময় মানবতার মুক্তির দিশারী নবী মুহাম্মদ (সা) মিরাজের গমন করেন।

মিরাজের শিক্ষার ভেতরই ছিল ইসলামী সমাজ গঠনের একটি প্রাথমিক সুনিপত্র চিত্র। মিরাজ থেকে চৌদ্দটি বুনিয়াদী শিক্ষার সাথে রাসূল (সা) আমাদেরকে পরিচিত করিয়ে দিলেন। এগুলি হলো:

১. আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও সার্বভৌমত্ব স্বীকার করো না।

২. আব্বা-আম্মার প্রতি সুন্দর ব্যবহার করো।

৩. অবাবগ্রস্ত, আত্মীয়  এবং মুসাফিরদের হক আদায় করো।

৪. সম্পদের অপচয় করো না।

৫. মিতব্যয়ী হও।

৬. রিজিকের হ্রাস-বৃদ্ধি আল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন।

৭. অভাবের আশঙ্কায় সন্তান হত্যা করো না।

৮. ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না।

৯. কাউকে অন্যায়ভাবে হতঅ করো না।

১০. এতিমের সম্পদ আত্মসাৎ করো না।

১১. ওয়াদা ও চুক্তিনামা ভঙ্গ করো না।

১২. সঠিকভাবে পাম ও ওজর করো।

১৩. আন্দাজ-অনুমানের বশবর্তী হয়ো না।

১৪. অহমিকা বর্জন করো।

আল্লাহর মনোনীত ও পছন্দনীয় ইসলামী সমাজ গঠনের জন্য মক্কার পরিবেশ দিনদিনই প্রতিকূলে চলে যেতে লাগলো।

অন্যদিকে মদিনা ছিল ইসলামের জন্য একটি উর্বর ভূমি।

রাসূল (সা) আল্লাহর নির্দেশে সিদ্ধান্ত নিলেন মদিনায় হিজরতের।

হযরত আবুবকরকে (রা) সাথে নিয়ে বহু চড়াই-উতরাই  ও বন্ধুর পথ পেরিয়ে তিনি পৌঁছুলেন মদিনায়।

রাসূলের (সা) এই হিজরাতের সময় থেকেই ‘হিজরী’ সাল গণনা শুরু হয়।

৮ই রবিউল আওয়াল।

মদিনা থেকে তিন মাইল দক্ষিণে কুবা পল্লীতে রাসূল (সা) উপস্থিত হলেন। এই কুবা পল্লীতে রাসুল ছিলেন চৌদ্দ দিন।

এখানেই তিনি স্থাপন করেন মসজিদে কুবা। কুবাই হলো মুসলমানদের প্রথম মসজিদ। এই কুবা মসজিদেই প্রথম সালাতুল জুমআ অনুষ্ঠিত হয়।

কুবা পল্লীতে চৌদ্দদিন অবস্থানের পর রাসূল (সা) আবার যাত্রা শুরু করলেন মদিনার দিকে।

রাসূল (সা) মদিনায় যাচ্ছেন।

পেছনে রয়েছে পড়ে তাঁর প্রিয়তম জন্মভূমি মক্কা।

মক্কা!

মক্কা রাসূলের (সা) জন্মভূমি।

কিন্তু সেই মক্কার দুর্ভাগা মানুষ তার এবং পৃথিবীর শ্রেষ্ঠসন্তানকে চিনতে পারলো না।

তাঁকে কষ্ট দিল নিদারুণ।

মক্কা!

প্রিয় জন্মভূমি মক্কা!

একদিনের জন্যও যেখানে রাসুল (সা) টিকতে পারেননি শান্তিতে। প্রতি পদে পদে যেখানে তিনি পেয়েছেন কষ্ট আর লাঞ্ছনা।

তবুও সেই মক্কার জন্য প্রাণটা কাঁদছে রাসূলের (সা)।

তিনি বারবার পেছনে ফিরে তাকাচ্ছেন। আর দেখে নিচ্ছেন ধূসর-ধূসরতম তাঁর প্রিয় জন্মভূমিটি।

সামনেই মদিনা।

মদিনার পরিবেশ মক্কার সম্পূর্ণ বিপরীত। সেখানে বয়ে যাচ্ছে কোমল বাতাস।

শিরশির হাওয়া।

রাসূল (সা) আসছেন!

আসছেন আলোকের সভাপতি।

মুহূর্তেই সুসংবাদটি ছড়িয়ে গেল মদিনার ঘরে ঘরে।]

মদিনার উপকণ্ঠে মানুষের ভীড়।

হৃদয়ে তাদের তৃষ্ণার মরুভূমি। কখন আসবেন রাসূল (সা)?  কখন?

প্রতীক্ষার পালা শেষ। এক সময় মদিনায় পৌঁছুলেন রাসুল (সা)।

রাসূলের (সা) জন্য মদিনাবাসীরা আয়োজন করলো সম্বর্ধনা।

সে কি মনোরম দৃশ্য! সে কি অভাবনীয় ব্যাপার!

রাসূল (সা) আসছেন!

তাঁর আগমনে আকাশ-বাতাস মুখরিত করে শিশু-কিশোরদের কণ্ঠে ধ্বনিত হলো:

“তালাআল বাদরু আলাইনা

মিন সানিয়াতিল বিদাঈ

ওয়াজাবাশ শুকরু আলাই না

মাদাআ লিল্লাহি দাঈ।”

রাসূল (সা) এসেছেন মদিনায়!

মদিনার ঘরে ঘরে বয়ে যাচ্ছে আজ খুশির ঢল।

পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম মানুষটিকে পেয়ে তারা আনন্দে বাগবাগ।

রাসূল (সা) এসেছেন! রাসূল (সা) এসেছেন মদিনায়।

মুহূর্তেই মদিনার আকাশ-বাতাস মথিত করে ছুটে চললো আনন্দের অপার্থিব, জ্যোতিষ্কমান এক ঘূর্ণি।

হযরত মুহাম্মদ (সা)।

জগতের সর্বশ্রেস্ঠ মানুষ।সর্বশ্রেষ্ঠ নবী।

নূরে ‘আলা নূর।

বস্তুত রাসুল (সা) আমার আলোর জ্যোতি।

 

– মোশাররফ হোসেন খান

ইসলামিক ইমেইল নিউজলেটার
নতুন পোস্ট প্রকাশিত হলে সরাসরি আপনার ই-মেইল ইনবক্সে পেতে সাবস্ক্রাইব করুন।
icon

মন্তব্য করুন

আরও দেখুন
Close
Back to top button