সাহসী মানুষের গল্প

রূপালি চাঁদ রাখাল রাজা

ছেলেটি ছায়ার মত শান্ত।

শান্ত এবং স্থির।

সরলতাটুকু জোছনার মত লেপ্টে থাকে তার সমস্ত চেহারায়।

সরল। কিন্তু আবার চরিত্রের দিক দিয়ে উহুদ পর্বতেরমত দৃঢ়। এতটুকুও টলে না তার হৃদয়। টলে না কোনো মোহে কিংবা স্বার্থের হাতছানিতে।

চোখ দুটো হরিণের চোখের মত তীক্ষ্ণ। ভঅলো-মন্দের পার্থক্যটা ততোদিনে বুঝে গেছেন আলো আঁধারের মত। আর আমানতের দিক থেকে সে আবার এক অতুলনীয় দৃষ্টান্ত।

খুব কম বয়স।

বয়সে কিশোর তবু বিবেকের দিক দিয়ে পরিপূর্ণ কয়ার মত ভরপুর।

উকাবার ছাগল চরান কিশোরটি।

ছাগলের পাল নিয়ে তিন বেরিয়ে যান ভোর-সকালে।

সারাটি দিন কেটে যায় তার মাথার উপর দিয়ে। মরুভূমির উত্তপ্ত বালু, পাথরের নুড়ি আর মরুঝড়ের সাথে তার বন্ধুত্ব। আর ভঅলোবাসা যত, সে কেবল উকাবার আমানত- ছাগলের পাল।

আজও ছাগল চরাচ্ছেন তিনি।

পশুগুলো খুঁটে খুঁটে খাচ্ছে তাদের ক্ষুধার খাদ্য। আর পরিতৃপ্তির সাথে সেই দিকে তাকিয়ে আছেন কিশোর বালক। ভাবছেন, আহ কী চমৎকার দৃশ্য!

এই মরুভূমিতেও কোন্‌ সেই মহান স্রষ্টা আহার্ রেখে দিয়েছেন এইসব অবুঝ প্রাণীর জন্য?

ভাবছেন আর মাঝে মাঝে ‍ুদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছেন ধু-ধু মরুভূীম, দিগন্ত বালিরেখা, আর বৃষ্টিহীন, মেঘহীন স্বচ্ছ আকাশ।

দূর থেকে, বহু দূর থেকে কারা যেন এগিয়ে আসছেন তার দিকে।

খুব ভঅলেঅ করে দেখা যাচ্ছে না তাদের চেহারা।

কারা আসছেন গনগনে বালির তরঙ্গ ভেঙে।

খুব উৎসাহের সাথে সেদিকে তাকিয়ে অপেক্ষায় আছেন কিশোর বালক।

অপেক্ষার পালা শেষ।

ধুলো উড়িয়ে এক সময় তার খুব কাছাকাছি চলে এলেন দু’জন আগন্তুক।

তাঁদের চেহারায় রয়ে গেছে আত্মমর্যাদার গোলাপি শোভা।

কিন্তু বোঝাই যায়, তারা বড় ক্লান্ত। ক্লান্ত এবং পিপাসার্ত।

সন্দেহ নেই, তারা এসেছেন বহু কষ্টের মরুপথ পাড়ি দিয়ে।

তাদের ঠোঁট শুকিয়ে গেছে। কণ্ঠও চুপসে গেছে শুকনো বেলুনের মত।

খুব কষ্টে কেবল উচ্চারণ করলেন:

আমরা তৃষ্ণার্ত। পিপাসায় কলিজাটা শুকিয়ে গেছে। আর পারছি না। তুমি কি আমাদেরকে একটু সাহায্য করবে?

-কিভাবে? কিশোর জিজ্ঞেস করলেন।

-কেন, তোমার এই ছাগলের পাল থেকে কিছু দুধ দুইয়ে আমাদেরকে পান করতে দাও।দেখছি তো, কত ছাগীর ওলান ভরে আছে দুধে। তা থেকে কিছুটা দিলেই আমরা আমাদের কষ্টদায়ক পিপাসা মেটাতে পারি।

-অসম্ভব! এটা কিছুতেই সম্ভব নয় হে সম্মানিত মেহমানবৃন্দ! আপনাদের কষ্ট আমি বুঝতে পারছি। এই দুঃসময়ে আপনাদের খেদমত করতে পারলে আমি নিজেকেও ধন্য মনে করতাম। কিন্তু সেটা যে আমার পক্ষে সম্ভব নয়! আমি তো নিজেই নিতান্ত নিরুপায়।

-নিরুপায়! তার মানে? এই তো কত ছাগল চরে বেড়াচ্ছে আমাদের সামনে।তবু তুমি এমন কথা বলছো কেন?

-বলছি এই কারণে যে, এই ছাগলগুলোর একটিও আমার নয়। আমি এগুলোর রাখাল। এর আমানতদার মাত্র। আর এজন্যই আমার পক্ষে সম্ভব নয়, সম্ভব নয় মালিকের হুকুম ছাড়া কোনো ছাগীর বাট থেকে দুধ দুইয়ে আনাদের পিপাসা মেটানো।

কিশোরটির কথায় এতটুকুও রেগে গেলেন না তাঁরা। বরং কী এক আনন্দ আর খুশির রেখা ফুটে উঠলো তাঁদের চোখে-মুখে।

দু’জনের মধ্যেই একটি অবাক বিস্ময় আর কৌতুহল কেবলই দুলে দুলে উঠছে।

খুব ভালো করে তাকালেন কিশোরটির দিকে। দেখলে বয়সে ছোট হলেও দীপ্তি ঝলমলছেলেটির অন্য এক সুদৃঢ় অবয়ব। মরুর রুক্ষ লুহাওয়ার সাধ্য নেই কিশোরটির মুখ থেকে সেই দীপ্তির ঝলক কেড়ে নেবার।

দারুণ খুশি হলেন তাঁরা।

কিছুক্ষণ চেয়ে থাকলেন রাখালটির দিকে। তারপর তাদের থেকে একজন হেসে বললেন:

-ঠিক আছে। যেসব ছাগীর বাটে দুধ আছে, সেগুলোর তো তুমিই আমানতদার। কিন্তু যে ছাগীর বাটে এখনও দুধ আসেনি, সেগুলো?

-সেগুলো? অবাক কণ্ঠে রাখালের। যে ছাগীর এখনও বাচ্চাই হয়নি তার বাটে দুধ আসবে কী করে? আর এমন ছাগী দিয়েই বা কী হবে?

আবারও হাসলেন তিনি। বললেন:

-হ্যা, সেই রকম একটি ছোট ছাগী হলেই চলবে। যার এখনও বাচ্চাই হয়নি।

তাঁর কথার মধ্যে এমন এক ধরনের আকর্ষণ ও মাধুর্য ছিল, যা কেবল শুনতেই ইচ্ছা করে।

তাঁর মুখের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন কিশোর রাখাল। যতই দেখেন, ততোই মুগ্ধ হন।

-কী হলো, দেবে? একটি ছোট ছাগী দিলেই হবে।

তাঁর এই উচ্চারণে রাখাল ইশারা করলেন সামনের দিকে।

রাখঅলের অনুমতি পেয়ে বিশাল পাল থেকে তিনি ধরে আনলেন তেমনি একটি ছোট ছাগী, যার এখনও বাচ্চা হয়নি। হওয়া সম্ভবও নয়।

এবার রাখালের কেবল দেখার পালা। তিনি কী করেন এই ছাগীটি নিয়ে।

কৌতূহল দৃষ্টি নিয়ে তিনি তাকিয়ে আছেন সেই অবাক পুরুষটির দিকে।

আর তিনি, সেই অবাক পুরুষ- ছোট্ট ছাগীটির বাটে হাত রেখে উচ্চারণ করলেন:

‘বিসমিল্লাহহির রাহমানির রাহিম।’

আর কী আশ্চর্য!

তাঁর হাতের স্পর্শেই সাথে সাথে দুধে ফুলে উঠলো সেই ছোট্ট ছাগীটির বাট।

নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছেন না রাখাল।

ভাবছেন, এও কি সম্ভব? এই ছোট্ট ছাগী, যার কোনো বাচ্চাই হয়নি, তার বাটে দুধ? কী করে বিশ্বাস করা যায়?

বিশ্বাস না করেও তো উপায় নেই। কারণ সত্যটা যে সামনেই। শুধু সামনেই নয়, নিজের হাতের নাগালে। এমন সত্য অস্বীকার করবে কে? সেই এক অবাক পুরুষ!

তিনি ছাগীটির বাটে হাত রাখছেন আর ঝর্ণনাধারার মত ঝরঝরে করে গড়িয়ে পড়ছে কেবল ধবধবে সাদা সুস্বাদু ঘন দুধ।

দ্বিতীয়জন একটি পাত্র ধরে আছেন বাটের নিচে।

দুধ ঝরছে একাধারে।

ঝরতে ঝরতে মুহূর্তেই ভরে উঠলো পাত্রটি।

প্রথমে তাঁরা দু’জনই তৃপ্তিসহকারে, যতটুকু প্রয়োজন ছিল, ততোটুকু পান করলেন। তারপর সেই দুধ পানের জন্য আহবান জানালেন রাখালটিকে।

তাঁর আহবানে রাখালও পান করলেন সেউ দুধ পেট ভরে।

পান করলেন বটে, কিন্তু তার সারা শরীরে তখনও পিল পিল করে হেঁটে যাচ্ছে বিস্ময়ের পিঁপড়ার ঝাঁক। ভাবছেন, এটা কিভাবে সম্ভব!

সবাই যখন দুধপানে পরিতৃপ্ত, তখন সেই জ্যোতির্ময়ী পুরুষ- এবার তিনি সেই ছাগীর বাট লক্ষ্য করে বললেন: ‘চুপসে যাও।’

এবং বিস্ময়ের ব্যাপার।

এই কথার সাথে সাথেই ছাগীর বাটটি আবার আগেরমত চুপসে গেল।

রাখালটি তাঁকে অনুরোধ করলেন:

আপনি যে কথাগুলি উচ্চারণ করলেণ, তা কি আমাকে শিখিয়ে দেবেন?

‘তুমি তো শিক্ষাপ্রাপ্ত বালক।’

শিক্ষাপ্রাপ্ত বালক?

চমকে উঠলেন রাখাল।

তার বিস্ময়ের চমকে আলোকিত হয়ে উঠলো চারপাশ।

কেনই বা হবে না!

যিনি তাকে এই সার্টিফিকেট দিলেন, তিনি তো আর কেউ নন- স্বয়ং রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। সাথে যিনি আছেন তিনি হযরত আবু বকর। আর যার সম্পর্কে রাসূল (সা) এই কথাটি উচ্চারণ করলেন- তিনি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ।

ইসলামের প্রথম দিক।

কুরাইশদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ রাসূল (সা)। তাই হযরত আবু বকরকে (রা) সাথে নিয়ে কুরাইশদের অত্যাচার আর উৎপীড়ন থেকে আত্মরক্ষার জন্য নির্জন গিরিপথে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি।

এইভাবেই আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ দেখা পেলেন রাসুলের (সা)।

রাসূল (সা) এবং আবু বকরকে (রা) দেখা মাত্রই খুব ভাল লেগে গেল তার।

আবার তাকে দেখামাত্রই রাসূলেও  (সা) ভালো লাগলো। তিনি মুগ্ধ হলেন এমন একটি কিশোর রাখালের সততা, নিষ্ঠা এবং আমানতদারিতে।

সেইতো শুরু।

তারপরই ইসলাম গ্রহণ করলেন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ। আর কালে কালে তিনিই তো হয়ে উঠলেন রাসূলের পরশে এক আলোকি সোনার মানু।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ ছিলেন একজন রাখাল।

ইসলাম গ্রহণের পর, সেই কিশোর বয়সেই তিনি এবার নিজেকে উৎসর্গ করে দিলেন ইসলামের খেদমতে, রাসূলের (সা) কাছে।

রাসূলও (সা) তাকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করলেন খাদেম হিসেবে।

সেইদিন থেকে এই সৌভাগ্যবান শিক্ষাপ্রাপ্ত বালকটি ছাগলের রাখাল থেকে পরিণত হলেন সৃষ্টি জগতের শ্রেষ্ঠতম রাসূলের (সা) খাদেম।

রাসূলের (সা) খেদমতের জন্য আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ তাঁর সাথে থাকতেন ছায়ার মত।

রাসূলের (সা) সফরে, ইকামতে, বাড়ির ভেতরে, বা বাইরে- সকল সময় তিনি রাসূলের (সা) সাথে থাকতেন। রাসূল (সা) ঘুময়ে গেলে সময় মত জাগিয়ে দিতেন। তাঁর গোসলের সময় পর্দা করতেন। বাইরে যাবার সময় জুতা পরিয়ে দিতেন। আবার ঘরে ফিরলে জুতা খুলে দিতেন। রাসূলের (সা) মেসওয়াক এবং লাঠিও তিনি বহন করতেন।

রাসূল (সা) যখন একান্তে বিশ্রাম করতেন, তখনও তিনি সেখানে যাতায়াত করতেন।

রাসূল এ ধরনের অবাধ যাতায়াতের অধিকারও দিয়েছিলেন তাকে।

রাসূলের (সা) সংস্পর্শে থাকার কারণে এবং নবীর (সা) গৃহে প্রতিপালিত হবার কারণে তিনি নবীর (সা) শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠেছিলেন। নবীর (সা) আচার-আচরণ, কথা-বার্তা, চরিত্র-বৈশিষ্ট্য-এসবই অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ খোদ রাসূলের (সা) শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ওঠেন। এ কারণে তাকে বলা হতো:

হিদায়াতপ্রাপ্ত, আচার-আচরণ ও চারিত্রিক বেশিষ্ট্যের দিকে দিয়ে তিনিই হচ্ছেন রাসূলের (সা) নিকটতম ব্যক্তি।

রাসূলের (সা) সাহাবীদের মধ্যে কুরআনের যারা সবচেয়ে ভালো পাঠক, তার ভাব ও অর্থের সবচেয়ে বেশি সমঝদার এবং আল্লাহর আইন ও বিধি-বিধানের সবচেয়ে বেশি অভিজ্ঞ, তিনি ছিলেন তাদের একজন, অন্যতম।

রাসূল (সা) নিজেই বলতেন:

যে ব্যক্তি বিশুদ্ধভাবে কুরআন পাঠ করে আনন্দ পেতে চায়, যেমন তা অবতীর্ণ হয়েছে- সে যেন ইবন উম্মুল আবদের [আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ] পাঠের অনসরণে পাঠ করে।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদও বলতেন:

যিনি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই, সেই আল্লাহর কসম! আল্লাহর কিতাবের এমন কোনো একটি আয়াতও নাজিল হয়নি যে সম্পর্কে আমি জানি না যে, তা কোথায় নাজিল হয়েছে এবং কী সম্পর্কে নাজিল হয়েছে। আল্লাহর কিতাব সম্পর্কে আমার থেকে অধিক পারদর্শী কোনো ব্যক্তির কথা আমি যদি জানতে পারি এবং তার কাছে পৌঁছা সম্ভব হয়, তাহলে আমি তার কাছে উপস্থিত হই।

এই আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদই আবার সাহসের দিক থেকে ছিলেন অসাধারণ। রাসূলের (সা) সাহাবীরা একদিন মক্কায় একত্রিত হলেন। তারা সংখ্যায় খুবই অল্প। নিজেরা বলাবলি করছেন, আল্লাহর শপথ। প্রকাশ্যে কুরআন তিলাওয়াত করে কুরাইশদেরকে কখনও শুনো হয়নি। তাদেরকে কুরআন শোনাতে পারে এমন কে আছে?

তাদের মধ্য থেকে হঠাৎ উঠে দাঁড়ালেন একজন, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ। বললেন, আমি-আমিই কুরাইশদেরকে কুরআন শোনাতে চাই।

-তুমি? তোমার ব্যাপারে আমাদের ভয় হচ্ছে। যদি ওরা তোমাকে শাস্তি দেয়? আমরা এমন একজনকে চাইছি, যার লোকজন আছে, যার ওপর কুরাইশরা অত্যাচার করতে সাহস পাবে না।

-না, আমাকেই অনুমতি দিন। আল্লাহ আমাকে হিফাজত করবেন। একথা বলে তিনি মাকামে ইবরাহীমের কাছে দাঁড়িয়ে জোরো জোরো তিলাওয়াত শুরু করলেন:

‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। আররাহমান আল্লামাল কুরআন, খালাকাল ইনসানা আল্লামা হুল বায়ান।’……

থমকে গেল কুরাইশরা।

একি! এ যে মুহাম্মাদ যা পাঠ করে, তাই!

কুরাইশরা মুহূর্তেই ঝাঁপিয়ে পড়লো তার ওপর। তারপর তার মুখের ওপর আঘাত করতে শুরু করলো। সে কী মার!

রক্তাক্ত হয়ে ফিরে এলেন তিনি সঙ্গীদের মাঝে।

সঙ্গীরা বললেন, আমরা এটাই আশঙ্কা করেছিলাম।

সহজ ভঙ্গিতে জবাব দিলেন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ:

আল্লাহর  কসম! আল্লাহর শত্রুরা এখন আমার কাছে আজ এত তুচ্ছ, যা আগে ছিল না। আপনারা চাইলে আমি আগামী কালও এমনটি করতে পারি।

-না, তার আর দরকার নেই। যথেষ্ট হয়েছে। তাদের অপছন্দনীয় কথা এই প্রথম তুমিই তাদেরকে শুনিয়েছে।

শুধু একবার নয়। এভাবে বহুবারই তিনি কুরাইশদের অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। হয়েছেন রক্তাক্ত এবং ক্ষত-বিক্ষত।

কিন্তু না, এতটুকুও তিনি ভেঙ্গে পড়েননি। কিংবা এতটুকু চিড় ধরেনি তার সাহসে।

বরং বাধা এবং অত্যাচার যিই কঠিন হয়েছে, ততোই দৃঢ় হয়েছে তার সাহস আর ঈমানের শক্তি।

রাসূলে (সা) সাথে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধেই অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এবং অসীম সাহসের সাথে যুদ্ধ করেছিলেন।

হুনাইনের যুদ্ধের সময়।

কাফিরদের অতর্কিত আক্রমণে মুসলিম বাহিনীর দশ হাজার সৈন্য বিক্ষিপ্ত এবং বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।

মাত্র আশিজন যোদ্ধা জীবনবাজি রেখে রাসূলকে (সা) ঘিরে রাখেন। এদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি। এই যুদ্ধে রাসূল যে একমুঠো ধূলি নিয়ে নিক্ষেপ করেন কাফিরদের দিকে, সেউ ধূলি রাসূলের (সা) হাতে তুলে দিয়েছিলেন এই দুঃসাহসী যোদ্ধা আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ।

কী অসাধারণ এক সৌভাগ্যবান পুরুষ আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ!

 

– মোশাররফ হোসেন খান

ইসলামিক ইমেইল নিউজলেটার
নতুন পোস্ট প্রকাশিত হলে সরাসরি আপনার ই-মেইল ইনবক্সে পেতে সাবস্ক্রাইব করুন।
icon

মন্তব্য করুন

আরও দেখুন
Close
Back to top button