বিবিধ বই

বই: আল-ফিকহুল আকবর

ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) -এর লিখিত কিতাব হিসেবে প্রসিদ্ধ “আল-ফিকহুল আকবর”। এটি ছোট বই হলেও ঈমান ও আকীদার উপর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তাত্পর্য বহন করে। আমাদের সমাজে ফিকহে হানাফীর অনেক অনুসারী হলেও আক্বীদা বিষয়ে আমরা তাঁর মতের সাংঘর্ষিক মত পোষণ করে থাকি। এমনকি অনেকে বিভিন্ন তরীকা অবলম্বন করে থাকি। অথচ ইমাম আবু হানীফার (রহ) ঈমান, আকীদা, সুন্নাত, বিদআত সম্পর্কে কি ধারণা ছিলো তা জানি না। অথচ ইমাম আবু হানীফা (রহ) এই বইটিতে ফিকহ সম্পর্কে আলোচনাই করেননি। বরং তিনি আকীদা সম্পর্কে লিখেছেন। অথচ নাম দিয়েছেন সবচেয়ে বড় ফিকহ অর্থ্যাৎ “আল-ফিকহুল আকবর”। এতে বোঝা যায়, ফিকহের চেয়ে বড় হলো আকীদা। আর আকীদাই সবচেয়ে বড় ফিকহ। এই গ্রন্থে অনুবাদ ও ব্যাখ্যাকারী ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর আরও কয়েকটি বইয়ের সাহায্য নিয়ে বঙ্গানুবাদের পাশাপাশি ব্যাখ্যাও সংকলন করেছেন। তিনি আল-আকীদাহ আত-তাহাব্যিয়াহ, আল-ই’তিকাদ গ্রন্থে ইমাম আবু হানীফার আকীদা বিষয়ক বক্তব্যগুলোও যুক্ত করেছেন। এছাড়া তারাবীহ, রিয়া, উজব, কিয়ামতের আলামত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সন্তানদের পরিচয় ইত্যাদি অনেক বিষয় তিনি আলোচনা করেছেন।

বইটি দুটি পর্বে বিভক্ত। প্রথম পর্বে রয়েছে-
– ইমাম আবু হানীফার জীবনী ও মূল্যায়ন
– ইমাম আবু হানীফার রচনাবলি
– ইলমুল আকীদা ও ইলমুল কালাম বিষয়ে আলোচনা।

দ্বিতীয় পর্বে আল-ফিকহুল আকবর গ্রন্থের অনুবাদ ও ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই গ্রন্থের বক্তব্যগুলোকে ধারাবাহিকভাবে বিন্যস্ত করে পাঁচটি পরিচ্ছেদে ভাগ করা হয়েছে। প্রত্যেক পরিচ্ছেদে ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) -এর বক্তব্যের ধারাবাহিতায় আলোচ্য বিষয় ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

pdf

Fiqhul_akbar.pdf 2.9 MB

Download

ইসলামিক ইমেইল নিউজলেটার
নতুন পোস্ট প্রকাশিত হলে সরাসরি আপনার ই-মেইল ইনবক্সে পেতে সাবস্ক্রাইব করুন।
icon

৫টি মন্তব্য

    1. চেহারার কি পর্দা নেই?
      ৩ জুলাই, ২০১৭উমায়ের কোব্বাদী মন্তব্য করুন
      জিজ্ঞাসা–২০৩: হুজুর, আসসালামু আলাইকুম। আপনাকে খুব মহব্বত করি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, কথিত একজন তার এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, পর্দা করা মানে মুখমণ্ডল এবং হাত দেখানো যাবে। এটা কি ঠিক? জানালে উপকৃত হই।–md billal hossain

      জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله প্রশ্নকারী দীনি ভাই, এমন জরুরি বিষয়ের ওপর আলকপাত করার সুযোগ করে দেয়ার জন্য আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন। আমীন।

      মূলত ঐ ব্যক্তির কথা সঠিক নয়। কারণ পরপুরুষের সামনে নারীকে তার চেহারা ঢেকে রাখতে হবে–এটাই কুরআন-সুন্নাহর চূড়ান্ত বিধান। উম্মাহাতুল মুমিনীন ও অন্যান্য সাহাবিয়ার আমল দ্বারাও তা প্রমাণিত। নিম্নে প্রমাণ পেশ করা হল–

      • কোরআন মজিদের সূরা আল-আহযাবে মুসলিম নারীদেরকে স্পষ্টভাবে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে, ঘর থেকে বাইরে বেরুবার সময় যেন তারা নিজেদের শরীরে জিলবাব ঝুলিয়ে নেয়। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,

      يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ قُل لِّأَزۡوَٰجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَآءِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ يُدۡنِينَ عَلَيۡهِنَّ مِن جَلَٰبِيبِهِنَّۚ ذَٰلِكَ أَدۡنَىٰٓ أَن يُعۡرَفۡنَ فَلَا يُؤۡذَيۡنَۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورٗا رَّحِيمٗ
      ‘হে নবী, তুমি তোমার স্ত্রীগণকে, কন্যাগণকে ও মু’মিনদের নারীগণকে বল, তারা যেন তাদের জিলবাবের কিয়দংশ নিজেদের ওপর টেনে দেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজতর হবে, ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না।’ (সূরা আল-আহযাব: ৫৯)
      এ আয়াতে ‘জালাবীব’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যা ‘জিলবাব’ শব্দের বহুবচন। আরবী অভিধানের বিখ্যাত গ্রন্থ ‘লিসানুল আরাব’ (১/২৭৩)– এ লেখা হয়েছে, ‘জিলবাব’ ওই চাদরকে বলা হয় যা মহিলারা নিজেদের মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢাকার জন্য ব্যবহার করে।
      অভিধান থেকে সরে গিয়ে মুফাসসিরগণের বক্তব্য দেখলেও জানা যায়, ‘জিলবাব’ এমন কাপড়কে বলে যদ্বারা মহিলারা নিজেদের শরীর ঢাকেন। ‘জিলবাব’ অর্থ বড় চাদর, যা দ্বারা মুখমণ্ডল ও পূর্ণ দেহ আবৃত করা যায়। (কুরতুবী, আল-জামে‘ লিআহকামিল কুরআন : ১৪/২৪৩)
      আল্লামা আলূসী রহ. আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি.-এর বরাত দিয়ে লিখেন, ‘জিলবাব’ সেই চাদরকে বলে যা মহিলারা দেহের ওপর থেকে নীচ পর্যন্ত উড়িয়ে ছেড়ে দেয়। (রুহুল মা‘আনী : ২২/৮৮)
      কোনো কোনো সাহাবী রাযি. সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, তাঁরা পর্দা হিসেবে ‘জিলবাব’ ব্যবহারের নিয়ম-পদ্ধতিও বর্ণনা করেছেন। আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. মুখমণ্ডলের ওপর ‘জিলবাব’ ফেলার যে পদ্ধতি বর্ণনা করেছেন তা হলো, ‘মুসলিম মহিলারা নিজেদের চাদর দ্বারা নিজ নিজ মাথা ও মুখমণ্ডল ঢেকে বের হবে। তারা কেবল একটি চোখ খোলা রাখতে পারে’। (শাওকানী, ফাতহুল কাদীর : ৭/৩০৭)
      জনৈক ব্যক্তি উবায়দা ইবন সুফইয়ান ইবন হারিছ হাযরামী রাযি. -এর কাছে এর নিয়ম জানতে চান। তিনি নিজের চাদরটি উঠিয়ে এমনভাবে ছড়িয়ে দেন যে, তাঁর মাথা ও কপাল ভ্রূ পর্যন্ত ঢেকে যায়। তারপর চাদরের কিছু অংশ মুখমণ্ডলের ওপর এমনভাবে রাখেন যে, গোটা মুখমণ্ডল ঢেকে যায়, কেবল একটি চোখ খোলা থাকে। (তাফসীরে কুরতুবী : ৪/২৩৪)
      ইমাম নাববী রহ. স্বীয় গ্রন্থ ‘আল-মিনহাজ’-এ লিখেছেন, যদি ফিতনার আশংকা থাকে তাহলে কোনো প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের জন্য কোনো প্রাপ্ত বয়স্কা নারীর মুখমণ্ডল ও হাত দেখা জায়িয নেই। আল্লামা রামালী রহ. ‘আল-মিনহাজ’ গ্রন্থের ব্যাখ্যায় এই মতের ওপর আলিমগণের ইজমা’র কথা বর্ণনা করেছেন। তিনি এও লিখেছেন, সঠিক মতানুযায়ী ফিতনার আশংকা না থাকলেও প্রাপ্ত বয়স্কা নারীকে দেখা হারাম। এর দ্বারা বুঝা যায়, মুখমণ্ডল খোলা অবস্থায় মহিলাদের বাইরে বের হওয়া জায়িয নেই। কারণ, সে অবস্থায় পুরুষ তাদেরকে দেখবে এবং দেখার মাধ্যমে ফিতনা ও কুপ্রবৃত্তির সৃষ্টি হবে। (নিহায়াতুল মিনহাজ ইলা শারহিল মিনহাজ : ৬/১৮৮)
      শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যা রহ. বলেন, বেগানা পুরুষ দেখতে পারে এমনভাবে মহিলাদের মুখমণ্ডল খোলা রাখা জায়িয নেই। দায়িত্বশীল পুরুষদের (স্বামী, পিতা, ভাই প্রমুখের) উচিত ‘আমর বিল মা‘রুফ’ ও ‘নাহি ‘আনিল মুনকার’ তথা ‘সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধে’র অংশ হিসেবে তাদেরকে এমন কাজ থেকে বিরত রাখতে সচেষ্ট হওয়া। অধীনস্থ নারীদের পর্দাহীনতা থেকে বিরত না রাখাও দায়িত্বশীল পুরুষদের জবাবদিহিতামূলক অপরাধ। এজন্য তাদেরকে শাস্তিও দেয়া যেতে পারে। (মাজমূ‘ ফাতাওয়া : ২৪/৩৮২)
      • • হিজাবের আয়াত নাযিলের পর আযওয়াজে মুতাহ্হারাত ও অন্যান্য মহিলা সাহাবীদের যে কর্মপদ্ধতি ছিল তা দ্বারাও এটা প্রমাণিত হয় যে, মহিলাদের জন্য মুখমণ্ডল ঢাকা জরুরী।
      যখন এই আয়াত নাযিল হয় :
      وَقُل لِّلۡمُؤۡمِنَٰتِ يَغۡضُضۡنَ مِنۡ أَبۡصَٰرِهِنَّ وَيَحۡفَظۡنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبۡدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنۡهَاۖ وَلۡيَضۡرِبۡنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّۖ وَلَا يُبۡدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوۡ ءَابَآئِهِنَّ أَوۡ ءَابَآءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوۡ أَبۡنَآئِهِنَّ أَوۡ أَبۡنَآءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوۡ إِخۡوَٰنِهِنَّ أَوۡ بَنِيٓ إِخۡوَٰنِهِنَّ أَوۡ بَنِيٓ أَخَوَٰتِهِنَّ أَوۡ نِسَآئِهِنَّ أَوۡ مَا مَلَكَتۡ أَيۡمَٰنُهُنَّ أَوِ ٱلتَّٰبِعِينَ غَيۡرِ أُوْلِي ٱلۡإِرۡبَةِ مِنَ ٱلرِّجَالِ أَوِ ٱلطِّفۡلِ ٱلَّذِينَ لَمۡ يَظۡهَرُواْ عَلَىٰ عَوۡرَٰتِ ٱلنِّسَآءِۖ وَلَا يَضۡرِبۡنَ بِأَرۡجُلِهِنَّ لِيُعۡلَمَ مَا يُخۡفِينَ مِن زِينَتِهِنَّۚ وَتُوبُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ
      ‘আর মুমিন নারীদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।’ (সূরা আন-নূর: ৩১)
      তখন মহিলা সাহাবীদের আমল কী ছিল তা আমরা জানতে পারি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর প্রিয়তমা পত্নী আয়িশা রাযি.-এর বর্ণনা থেকে। তিনি বলেন,
      يَرْحَمُ اللَّهُ نِسَاءَ الْمُهَاجِرَاتِ الأُوَلَ لَمَّا أَنْزَلَ اللَّهُ : {وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ} شَقَّقْنَ مُرُوطَهُنَّ فَاخْتَمَرْنَ بِهِ.
      ‘আল্লাহ হিজরতকারী অগ্রবর্তী নারীদের ওপর রহমত করুন। যখন তিনি নাযিল করলেন, ‘আর তারা যেন তাদের বক্ষের ওপর ওড়না টেনে দেয়’ তখন তারা তাদের নিম্নাংশের কাপড়ের প্রান্ত ছিঁড়ে ফেলেন এবং তা দিয়ে ওড়না বানিয়ে নেন।’ (বুখারী : ৮৫৭৪)
      আলোচ্য বর্ণনায় ‘ইখতামারনা’ শব্দটি এসেছে। সহীহ বুখারীর ব্যাখ্যাকার হাফিয ইবন হাজার ‘আসকালানী রহ. ‘ইখতামারনা’ শব্দের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘গাত্তাইনা উজুহাহুন্না’। অর্থাৎ তারা নিজেদের মুখমণ্ডল ঢেকে রাখতেন। (ফাতহুল বারী : ৮/৩৪৭)
      • • • শুধু পবিত্র কুরআনের তাফসীর নয় চেহারা আবৃত রাখার বিধান সহীহ হাদীস দ্বারাও প্রমাণিত।
      আবদুল্লাহ ইবন উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, وَلاَ تَنْتَقِبِ المَرْأَةُ المُحْرِمَةُ، وَلاَ تَلْبَسِ القُفَّازَيْنِ‘আর ইহরাম গ্রহণকারী নারী যেন নিকাব ও হাতমোজা পরিধান না করে।’ (বুখারী : ১৮৩৮)
      এই হাদীস থেকে বোঝা যায়, নবী ﷺ যুগে মেয়েরা তাদের হাত ও চেহারা ঢাকতেন। এ কারণে ইহরামের সময় নেকাব ও দস্তানা না পরার আদেশ করতে হয়েছে।
      আয়েশা রাযি. হজ অবস্থায় মহিলা সাহাবীদের পর্দার যে বিবরণ দিয়েছেন তা থেকে অনুমান করা যায় পর্দা রক্ষায় তাঁরা কতটা আন্তরিক ছিলেন। তাঁরা স্বাভাবিক অবস্থায় তো বটেই ইহরাম অবস্থায় যখন মুখ ঢাকতে নিষেধ করা হয়েছে সেখানেও পরপুরুষের সামনে থেকে নিজেদের চেহারা আড়াল করেছেন। আয়েশা রাযি. বলেন,
      كَانَ الرُّكْبَانُ يَمُرُّونَ بِنَا وَنَحْنُ مَعَ رَسُولِ اللَّهﷺ مُحْرِمَاتٌ فَإِذَا حَاذَوْا بِنَا سَدَلَتْ إِحْدَانَا جِلْبَابَهَا مِنْ رَأْسِهَا إِلَى وَجْهِهَا فَإِذَا جَاوَزُونَا كَشَفْنَاهُ.
      ‘আমরা ইহরাম অবস্থায় সাল্লাল্লাহু ﷺ-এর সঙ্গে ছিলাম। তখন আরোহীরা আমাদের সঙ্গে পথ চলছিলেন। যখন তারা আমাদের আড়াআড়ি হন, আমাদের সঙ্গীনীরা তাদের বড় চাদর মাথা থেকে চেহারায় ঝুলিয়ে দেন। তারা আমাদের অতিক্রম করে চলে যাবার পরই আমরা তা উন্মুক্ত করি।’ (আবূ দাঊদ : ৫৩৮১; বাইহাকী : ৩৩৮৮)
      আসমা বিনত আবী বাকর রাযি. বলেন, আমরা পুরুষদের থেকে আমাদের চেহারা আবৃত রাখতাম। (মুস্তাদরাক হাকেম : ১৬৬৪)
      ফাতিমা বিনতুল মুনযির রহ. বলেন, ‘আমরা আসমা বিনতে আবু বকর রাযি.-এর সঙ্গে ইহরাম অবস্থায় থাকাকালে আমাদের চেহারা ঢেকে রাখতাম।’ (ইমাম মালেক, মুয়াত্তা: ১/৩২৮; হাকিম, মুসতাদরাক : ১/৪৫৪)
      মুফতী মুহাম্মদ শাফী রহ. লিখেছেন, ‘ইমাম চতুষ্টয়ের মধ্য থেকে ইমাম মালিক, ইমাম শাফি’ঈ ও ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল রহ. তিনজনই মুখমণ্ডল ও হাতের কবজি খোলা রাখার মোটেই অনুমতি দেন নি- তা ফিতনার আশংকা থাকুক বা না থাকুক। ইমাম আবূ হানীফা রহ. ফিতনার আশংকা যদি না থাকে- এই শর্তে খোলা রাখার কথা বলেন। কিন্তু স্বাভাবিকভাবে এই শর্ত পূরণ হবার নয়, তাই হানাফী ফকীহগণ গায়র মাহরাম পুরুষের সামনে মুখমণ্ডল ও হাতের কবজি খোলা রাখার অনুমতি দেন নি।’ (মা‘আরিফুল কুরআন : ৭/২১৪)
      তেমনি এটাও সঙ্গত নয় যে, মহিলাদের সারা শরীর ঢাকা থাকবে আর মুখমণ্ডল থাকবে খোলা। অথচ মানুষের প্রথম দৃষ্টিটিই পড়ে মুখের ওপর। তারপর সেখান থেকেই অন্তরে খারাপ বাসনার সৃষ্টি হয়। পবিত্র কুরআনে নারীদের হিজাব এবং তদসংক্রান্ত প্রায় আটটি আয়াত আছে। সেগুলো থেকেও একথা জানা যায়, শরীয়তের দাবী কেবল শরীর ঢাকা নয়, বরং মুখমণ্ডল ঢাকাও জরুরী।
      এত সব স্পষ্ট ব্যাখ্যা এবং ফকীহগণের চূড়ান্ত ফাতওয়াসমূহ থাকার পরও কোনো মুমিন নিকাবকে অস্বীকার করতে পারেন না। যারা মুখ না ঢাকার ব্যাপারটি জোর করে সপ্রমাণ করতে চান তারা খেয়াল করেন না যে, তাদের এহেন মত পশ্চিমা ও তাদের ভাব শিষ্যদের অতি পুলকিত করবে। তারা এই রায়কে ব্যবহার করবে হাতিয়ার হিসেবে।

      আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সব মুসলিম বোনকে যথাযথভাবে পর্দা করার তাওফীক দান করুন। আমীন।
      والله اعلم بالصواب
      উত্তর দিয়েছেন
      মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী

  1. আসসালামু-আলাইকুম।একটা প্রচলিত কথা আছে যে,একটা মিথ্যা কথা বললে নাকি চল্লিশ দিন নাকি তার ইবাদত কবুল হয়না। কথাটা কি কোন সহীহ হাদীসে আছে,থাকলে জানাবেন কি??

মন্তব্য করুন

Back to top button