হজ্জ ও ওমরাহ

পুণ্যভূমি মক্কা : মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী মুসলিম মাত্রেই মক্কা শব্দটির সঙ্গে পরিচিত। মক্কা শব্দটি উচ্চারিত হতেই তিনি হৃদয়ে এক গভীর ভালোবাসা অনুভব করেন। তার অন্তরে এ নগরীকে দুচোখ জুড়ে দেখার এবং এখানে অবস্থিত আল্লাহর মহাপবিত্র ঘর কা‘বা যিয়ারতের একান্ত আকাঙ্ক্ষা লালন করেন। আর যারা হজ বা উমরা করতে চান, তাদেরকে অবশ্যই এ পবিত্র ভূমিতে গমন করতে হয়। তাই এ সম্মানিত শহর সম্পর্কে জানা প্রতিটি মুসলিমের একান্ত কর্তব্য। নিম্নে তাই পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে এ মহান নগরীর কিছু বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হল :

ক. কুরআন কারীমে পবিত্র মক্কা নগরীর কয়েকটি নাম উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, ১- মক্কা {আল-ফাতহ : ২৪}; ২- বাক্কা {সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ৯৬}; ৩- উম্মুল কুরা (প্রধান শহর) {সূরা আশ-শূরা, আয়াত : ৭}; ৪- আল-বালাদুল আমীন (নিরাপদ শহর) {সূরা আত-তীন, আয়াত : ৩}। বস্তুত কোনো কিছুর নাম বেশি হওয়া তার মর্যাদা ও মাহাত্ম্যেরই পরিচায়ক।

খ. আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে ওহীর মাধ্যমে হারাম শরীফের সীমানা নির্ধারিত হয়েছে। জিবরীল আলাইহিস সালাম কা‘বা ঘরের নির্মাতা ইবরাহীম আলাইহিস সালামকে হারামের সীমানা দেখিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর দেখানো মতে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তা নির্ধারণ করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে হারামের সীমানা সংস্কার করা হয়। [আল-ইসাবা : ১/১৮৩]

ইমাম নববী রহ. বলেন, হারামের সীমানা সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ এর সঙ্গে অনেক বিধি-বিধানের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। [তাহযীবুল আসমা ওয়াল লুগাত : ৩/৮২]

গ. মক্কা নগরীতে আল্লাহ তা‘আলার অনেক নিদর্শন রয়েছে : যেমন, আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে এ মর্মে বলেন,

﴿ فِيهِ ءَايَٰتُۢ بَيِّنَٰتٞ مَّقَامُ إِبۡرَٰهِيمَۖ ﴾ [ال عمران: ٩٧]

‘তাতে (মক্কা নগরীতে) রয়েছে অনেক সুস্পষ্ট নিদর্শন যেমন মাকামে ইবরাহীম।’ {সূরা আলে-ইমরান, আয়াত : ৯৭} কাতাদা ও মুজাহিদ রহ. বলেন, ‘প্রকাশ্য নিদর্শনগুলোর একটি হলো মাকামে ইবরাহীম।’ [তাফসীরে তাবারী : ৪/৮]

মূলত মক্কা নগরীর একাধিক নাম, এর সীমারেখা সুনির্ধারিত থাকা, এর প্রাথমিক পর্যায় ও নির্মাণের সূচনা এবং একে হারাম ঘোষণার মধ্য দিয়ে এ নগরীর সম্মান ও উঁচু মর্যাদার কথা ফুটে ওঠে। তাই দেখা যায় ইতিহাসের পরম্পরায় সবসময়ই পৃথিবীর বুকে মানুষ পবিত্র মক্কার আলাদা মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য মেনে নিয়ে এর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছে।

মক্কার অতুলনীয় মর্যাদা :

১. আল্লাহ তা‘আলা মক্কা নগরীকে হারাম (সম্মানিত) ঘোষণা করেছেন :

আল্লাহ তা‘আলা যে দিন যমীন ও আসমান সৃষ্টি করেছেন সেদিন থেকেই মক্কা ভূমিকে সম্মানিত করেছেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,

﴿ إِنَّمَآ أُمِرۡتُ أَنۡ أَعۡبُدَ رَبَّ هَٰذِهِ ٱلۡبَلۡدَةِ ٱلَّذِي حَرَّمَهَا ﴾ [النمل: ٩١]

‘আমিতো আদিষ্ট হয়েছি এ নগরীর মালিকের ইবাদাত করতে যিনি একে সম্মানিত করেছেন।’ {সূরা আন-নামল, আয়াত : ৯১}

একই কথার প্রতিধ্বনি শোনা যায় আল্লাহর প্রিয় রাসূলের মুখেও। ঐতিহাসিক মক্কা বিজয়ের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِنَّ هَذَا الْبَلَدَ حَرَّمَهُ اللهُ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ فَهُوَ حَرَامٌ بِحُرْمَةِ اللهِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ. »

‘এ শহরটিকে আল্লাহ যমীন ও আসমান সৃষ্টির দিন থেকেই হারাম অর্থাৎ সম্মানিত করেছেন। আল্লাহ কর্তৃক সম্মানিত এ শহরটি কিয়ামত পর্যন্ত সম্মানিত থাকবে। [মুসলিম : ১৩৫৩]

আল্লাহর খলীল ইবরাহীম আলাইহিস্ সালাম মক্কাকে হারাম হওয়ার ঘোষণা দেন। আল্লাহর নির্দেশে তিনি আল্লাহর ঘর কা‘বা নির্মাণ করেন এবং একে পবিত্র ঘোষণা করেন। অতপর মানুষের উদ্দেশে তিনি হজের ঘোষণা দেন এবং মক্কা নগরীর জন্য দু‘আ করেন। আবদুল্লাহ ইবন যায়েদ রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِنَّ إِبْرَاهِيمَ حَرَّمَ مَكَّةَ وَدَعَا لَهَا. »

‘নিশ্চয় ইবরাহীম মক্কাকে হারাম ঘোষণা করেন এবং শহরটির জন্য দু‘আ করেন।’ [বুখারী : ১৮৮৩; মুসলিম : ১৩৮৩]

২. আল্লাহ মক্কা নগরীর কসম খেয়ে তাকে সম্মানিত করেছেন :

আল্লাহ কর্তৃক কোনো কিছুর কসম খাওয়া তার সম্মানের প্রমাণ বহন করে। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ এই মক্কার কসম খেয়েছেন। মক্কা নগরীর কসম খেয়ে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,

﴿ وَٱلتِّينِ وَٱلزَّيۡتُونِ ١ وَطُورِ سِينِينَ ٢ وَهَٰذَا ٱلۡبَلَدِ ٱلۡأَمِينِ ٣ ﴾ [التين: ١، ٣]

‘কসম তীন ও যাইতূনের। কসম সিনাই পর্বতের। এবং কসম এ নিরাপদ শহরের।’ {সূরা আত-তীন, আয়াত : ১-৩} আয়াতে ‘এই নিরাপদ শহর’ বলে মক্কা নগরী বুঝানো হয়েছে। আরেক আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ لَآ أُقۡسِمُ بِهَٰذَا ٱلۡبَلَدِ ١ وَأَنتَ حِلُّۢ بِهَٰذَا ٱلۡبَلَدِ ٢ ﴾ [البلد: ١، ٢]

‘আমি কসম করছি এ শহরের। আর আপনি এ শহরের অধিবাসী।’ {সূরা আল-বালাদ, আয়াত : ১-২}

৩. মক্কা ও এর অধিবাসীর জন্য ইবরাহীম আলাইহিস সালাম দু‘আ করেছেন :

মক্কা নগরী শুধু মর্যাদাবান তাই নয়, এর নগরীতে যারা বাস করবেন তাদের জন্য আল্লাহর নবী ইবরাহীম আলাইহিস সালাম বহু আগে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দু‘আও করেছেন। যার ফলে মক্কা হলো বিশ্বের সবচে নিরাপদ ও শান্তির স্থান। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,

﴿ وَإِذۡ قَالَ إِبۡرَٰهِيمُ رَبِّ ٱجۡعَلۡ هَٰذَا ٱلۡبَلَدَ ءَامِنٗا وَٱجۡنُبۡنِي وَبَنِيَّ أَن نَّعۡبُدَ ٱلۡأَصۡنَامَ ٣٥ ﴾ [ابراهيم: ٣٥]

‘আর (স্মরণ করুন) যখন ইবরাহীম বলেছিলেন, হে আমার রব, এ শহরকে নিরাপদ করুন এবং আমাকে ও আমার পুত্রগণকে মূর্তি পূজা হতে দূরে রাখুন।’ {সূরা ইবরাহীম, আয়াত : ৩৫}

৪. মক্কা রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রিয়তম শহর :

মক্কা ছিল আমাদের প্রিয় নবীর প্রিয় শহর। আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হিজরতের সময় রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা শরীফের উদ্দেশে বলেন,

« مَا أَطْيَبَكِ مِنْ بَلَدٍ وَمَا أَحَبَّكِ إِلَيَّ وَلَوْلاَ أَنَّ قَوْمَك أَخْرَجُونِي مِنْكِ مَا سَكَنْتُ غَيْرَكِ. »

‘কতই না পবিত্র শহর তুমি, আমার কাছে কতই না প্রিয় তুমি! যদি তোমার কওম আমাকে তোমার থেকে বের করে না দিত, তাহলে তুমি ছাড়া অন্য কোনো শহরে আমি বসবাস করতাম না।’ [আল-মু‘জামুল কাবীর : ১০৪৭৭]

৫. দাজ্জাল এ নগরীতে প্রবেশ করতে পারবে না :

কিয়ামতের পূর্বলগ্নে পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে দাজ্জাল সদম্ভ বিচরণ করবে। কেবল মক্কা ও মদীনায় সে প্রবেশ করতে পারবে না। আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«لَيْسَ مِنْ بَلَدٍ إِلَّا سَيَطَؤُهُ الدَّجَّالُ، إِلَّا مَكَّةَ، وَالمَدِينَةَ، لَيْسَ لَهُ مِنْ نِقَابِهَا نَقْبٌ، إِلَّا عَلَيْهِ المَلاَئِكَةُ صَافِّينَ يَحْرُسُونَهَا، ثُمَّ تَرْجُفُ المَدِينَةُ بِأَهْلِهَا ثَلاَثَ رَجَفَاتٍ، فَيُخْرِجُ اللَّهُ كُلَّ كَافِرٍ وَمُنَافِقٍ. »

‘এমন কোনো ভূখণ্ড নেই যা দাজ্জালের পদভারে মথিত হবে না। তবে মক্কা ও মদীনায় সে প্রবেশ করতে পারবে না। সেখানকার প্রতিটি গলিতে ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে পাহারায় নিয়োজিত থাকবে। এরপর মদীনা তার অধিবাসীসহ তিনটি ঝাঁকুনি দেবে। যার ফলে আল্লাহ (মদীনা থেকে) সকল কাফির ও মুনাফিককে বের করে দেবেন।’ [বুখারী : ১৮৮১; মুসলিম : ২৯৪৩]

৬. ঈমানের প্রত্যাবর্তন :

কিয়ামতের আগে মানুষের ঈমানের জগতে চরম বিপর্যয় ঘটবে। মানুষ ঈমান থেকে যোজন দূরে চলে যাবে। দুনিয়া থেকে ঈমান ও ঈমানদার উধাও হয়ে যাবে। তখন ঈমান আর ঈমানদারদের পাওয়া যাবে মক্কা ও মদীনায় তথা মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববীতে। আবদুল্লাহ ইব্ন উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِنَّ الإِسْلاَمَ بَدَأَ غَرِيبًا وَسَيَعُودُ غَرِيبًا كَمَا بَدَأَ وَهُوَ يَأْرِزُ بَيْنَ الْمَسْجِدَيْنِ كَمَا تَأْرِزُ الْحَيَّةُ فِى جُحْرِهَا. »

‘ইসলামের সূচনা হয়েছিল অপরিচিত হিসেবে এবং সূচনা কালের মতই আবার তা অপরিচিত অবস্থার দিকে ফিরে যাবে। আর তা পুনরায় দু’টি মসজিদে ফিরে আসবে, যেমন সাপ নিজ গর্তে ফিরে আসে।’ [মুসলিম : ১৪৩; সহীহুত-তারগীব ওয়াত-তারহীব : ১১৭৩]

ইমাম নববী রহ. বলেন, ‘দু’টি মসজিদ দ্বারা মক্কা ও মদীনার মসজিদকে বুঝানো হয়েছে।’ [মুসলিম : ৩৯০]

৭. মসজিদুল হারামে সালাত আদায়ের ছাওয়াব :

মক্কায় অবস্থিত মসজিদে হারামে সালাত আদায়ের মাধ্যমে অকল্পনীয় নেকী লাভ করা যায়, যা অন্য কোথায় হাসিল করা যায় না। জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«صَلاَةٌ فِى مَسْجِدِى هَذَا أَفْضَلُ مِنْ أَلْفِ صَلاَةٍ فِيمَا سِوَاهُ إِلاَّ الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ وَصَلاَةٌ فِى الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ أَفْضَلُ مِنْ مِائَةِ أَلْفِ صَلاَةٍ فِيمَا سِوَاهُ. »

‘আমার মসজিদে একবার সালাত আদায় মসজিদে হারাম ছাড়া অন্যান্য মসজিদে হাজারবার সালাত আদায়ের চেয়ে বেশি উত্তম। তবে মসজিদুল হারামে একবার সালাত আদায় অন্যান্য মসজিদের তুলনায় এক লক্ষ গুণ বেশি।’ [মুসনাদে আহমাদ : ১৫২৭২; ইব্ন মাজা : ১৪০৬; সহীহ ইব্ন খুযাইমা : ১১৫৫]

মসজিদে হারাম বলতে কেউ কেউ শুধু কা‘বার চতুষ্পার্শ্বস্থ সালাত আদায় করার স্থান বা মসজিদকে বুঝেছেন; কিন্তু অধিকাংশ শরীয়তবিদের মতে, হারামের সীমারেখাভুক্ত পূর্ণ এলাকা মসজিদে হারামের আওতাভুক্ত। প্রসিদ্ধ তাবেঈ ‘আতা ইব্ন আবী রাবাহ আল-মক্কী রহ. যিনি মসজিদে হারামের ইমাম ছিলেন। তাঁকে একবার রাবী‘ ইব্ন সুবাইহ রহ. প্রশ্ন করলেন, ‘হে আবূ মুহাম্মাদ! মসজিদে হারাম সম্পর্কে যে ফযীলত বর্ণিত হয়েছে এটা কি কেবল মসজিদের জন্য না সম্পূর্ণ হারাম এলাকার জন্য?’ জবাবে আতা‘ রহ. বললেন, এর দ্বারা সম্পূর্ণ হারাম এলাকাই বুঝানো হয়েছে। কারণ, হারাম এলাকার সবটাই মসজিদ বলে গণ্য করা হয়।’ [মুসনাদুত তায়ালিসী : ১৪৬৪]

অধিকাংশ আলেম এ মতটিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। [আল-ইখতিয়ারাতুল ফিকহিয়্যা লিল- ইমাম ইব্ন তাইমিয়া : পৃ. ১১৩; ইবনুল কায়্যিম, যাদুল মা‘আদ : ৩/৩০৩-৩০৪; মাজমূ‘ ফাতাওয়া ইব্ন বায : ৪/১৪০]

সুতরাং পবিত্র মক্কা নগরীর হারাম এলাকার যেখানেই সালাত আদায় করা হবে, সেখানেই এক সালাতে এক লক্ষ সালাতের ছাওয়াব পাওয়া যাবে।

৮. মসজিদে হারামের উদ্দেশে সফর করার গুরুত্ব :

আল্লাহর যমীনে ইবাদাতের উদ্দেশে কোনো জায়গা সফরের অনুমতি নেই কেবল তিনটি জায়গা ছাড়া। হ্যাঁ, সফর যে কোনো জায়গায়ই করা যেতে পারে, কিন্তু তা হবে ইবাদাত জ্ঞানে নয়; তাঁর সৃষ্টিদর্শন ও পরিচয় বা সৃষ্টিকুশলতা অবলোকনের অভিপ্রায়ে। সেই তিনটি জায়গার একটি হলো এই মক্কার মসজিদ তথা মসজিদে হারাম। আবূ হুরায়রা রাদিআল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

«لَا تُشَدُّ الرِّحَالُ إِلَّا إِلَى ثَلَاثَةِ مَسَاجِدَ مَسْجِدِي هَذَا وَالْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَالْمَسْجِدِ الْأَقْصَى»

‘(ইবাদাত মনে করে) কোথায় সফর করা যাবে কেবল তিনটি মসজিদ ছাড়া। আমার এই (মদীনার) মসজিদ, মসজিদে হারাম এবং মসজিদে আকসা (ফিলিস্তিনের বাইতুল মুকাদ্দাসের মসজিদ)।’ [বুখারী : ১১৮৯; মুসলিম : ১৩৯৭]

অতএব আমাদের কর্তব্য হবে একজন মুসলিম হিসেবে হৃদয়ে মক্কার প্রতি গভীর ভালোবাসা লালন করা এবং যথাসাধ্য মক্কা ও মদীনার মসজিদে সালাত আদায় করে ছাওয়াব হাসিলে সচেষ্ট হওয়া। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর হাবীবের এ প্রিয় শহর এবং তাঁর সম্মানিত ঘর দর্শন ও যিয়ারতের তাওফীক দান করুন। আমীন।

– আলী হাসান তৈয়ব
সম্পাদনা : ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী

ইসলামিক ইমেইল নিউজলেটার
নতুন পোস্ট প্রকাশিত হলে সরাসরি আপনার ই-মেইল ইনবক্সে পেতে সাবস্ক্রাইব করুন।
icon

১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

Back to top button