আকাইদ

তাওহীদুল ইবাদাহ প্রতিষ্ঠা করা

আল্লাহ তা‘আলা যুগে যুগে যেসব নবী-রাসূল প্রেরণ করেছিলেন তাঁদের সবার একই দাওয়াত ছিল আল্লাহর ইবাদত কর এবং শিরকের পথ পরিহার কর। সাথে সাথে তাঁরা মানুষ ইহকালীন ও পরকালীন জীবনে কিভাবে সফলতা লাভ করতে পারে সে পথ ও পন্থা নির্দেশ করেছেন। আলোচ্য প্রবন্ধে মানব জীবনে সফলতা লাভের কতিপয় উপায় উপস্থাপন করা হ’ল।-

(১) তাওহীদুল ইবাদাহ প্রতিষ্ঠা করা :

ইবাদত কেবল আল্লাহর জন্য হ’তে হবে। এ মর্মে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلاَّ لِيَعْبُدُوْنِ ‘আমি জিন ও মানুষকে কেবল আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি’ (যারিয়াত ৫৬)। আয়াতটিতে বলা হয়েছে, ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই হ’তে হবে। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, وَمَا أُمِرُوْا إِلاَّ لِيَعْبُدُوا اللهَ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ حُنَفَاءَ  ‘তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধ চিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত করতে’ (বায়্যিনাহ ৫)

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, قُلْ إِنِّيْ أُمِرْتُ أَنْ أَعْبُدَ اللهَ مُخْلِصاً لَّهُ الدِّيْنَ  ‘হে নবী! আপনি বলুন, আমি আদিষ্ট হয়েছি, আল্লাহর আনুগত্যে একনিষ্ঠ হয়ে তাঁর ইবাদত করতে’ (যুমার ১১)। আয়াতদ্বয়ে বলা হয়েছে, ইবাদত একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য করতে হবে এবং শিরকী কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে। আল্লাহ বলেন,فَمَنْ كَانَ يَرْجُو لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلاً صَالِحاً وَلاَ يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَداً ‘অতএব যে তার প্রতিপালকের সাক্ষাৎ কামনা করে সে যেন সৎকর্ম করে এবং তার প্রতিপালকের ইবাদতে কাউকে শরীক না করে’ (কাহফ ১১০)

আয়াতটিতে ইবাদত কবুলের দু’টি শর্ত বলা হয়েছে- (১) ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করতে হবে। (২) রাসূল (ছাঃ)-এর অনুসরণে হ’তে হবে। নচেৎ তা কবুল হবে না।

নবী-রাসূলদের দাওয়াতী মিশন ছিল ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই হবে এবং শিরকী কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে। যেমন আল্লাহ বলেন, وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِيْ كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُوْلاً أَنِ اعْبُدُواْ اللهَ وَاجْتَنِبُوْا الطَّاغُوْتَ-  ‘আল্লাহর ইবাদত করার ও তাগূতকে বর্জন করার নির্দেশ দেওয়ার জন্য আমি তো প্রত্যেক জাতির মধ্যেই রাসূল পাঠিয়েছি’ (নাহল ৩৬)

আলোচ্য আয়াতটিতে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই ইবাদত করতে বলা হয়েছে এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যের জন্য যত প্রকার ইবাদত করা হয় সেসব বর্জন করতে বলা হয়েছে। সুতরাং যারা কবরে সিজদা করে, নযর দেয়, কবরে গরু-ছাগল-মুরগী, টাকা-পয়সা দেয়, কবরের নিকট বরকত চায়, ফুল দেয় এবং পীর বাবার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করে, যারা মূর্তি পূজা করে, যাদু করে, গণক গিরি করে সবই তাগূতের পথ, শয়তানের পথ।

আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করা যাবে না। এ মর্মে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رَّسُوْلٍ إِلاَّ نُوْحِيْ إِلَيْهِ أَنَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنَا فَاعْبُدُوْنِ ‘আমি তোমার পূর্বে কোন রাসূল প্রেরণ করিনি এই অহী ব্যতীত যে, আমি ছাড়া অন্য কোন (সত্য) মা‘বূদ নেই। সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদত কর’ (আম্বিয়া ২৫)

তিনি আরো বলেন, لَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوْحاً إِلَى قَوْمِهِ فَقَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوْا اللهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَـهٍ غَيْرُهُ  ‘নূহকে তার কওমের নিকট পাঠিয়েছিলাম। সে বলল, হে আমার কওম! তোমরা শুধু আল্লাহর ইবাদত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের আর কোন সত্য মা‘বূদ নেই’ (আ‘রাফ ৫৯)। তিনি অন্যত্র বলেন, وَاعْبُدُوْا اللهَ وَلاَ تُشْرِكُوْا بِهِ شَيْئاً  ‘আর তোমরা আল্লাহরই ইবাদত কর এবং তাঁর সাথে কোন বিষয়ে অংশী স্থাপন করো না’ (নিসা ৩৬)

অন্যত্র আল্লাহ বলেন, وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُوْا إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ‘আর তোমার প্রভু নির্দেশ দিয়েছেন তোমরা একমাত্র তাঁরই ইবাদত করবে এবং মাতা-পিতার সাথে ভাল ব্যবহার করবে’ (ইসরা ১৭/২৩)

তিনি আরো বলেন, قُلْ تَعَالَوْاْ أَتْلُ مَا حَرَّمَ رَبُّكُمْ عَلَيْكُمْ أَلاَّ تُشْرِكُوْا بِهِ شَيْئًا ‘হে মুহাম্মাদ বলুন! তোমরা এসো, তোমাদের প্রভু তোমাদের উপর যা হারাম করেছেন তা পড়ে শোনাই। (তা হচ্ছে) তোমরা কোন কিছুকে তাঁর সাথে অংশীদার করবে না’ (আন‘আম ১৫১)

উপরোক্ত আয়াতগুলো দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে সকল প্রকার ইবাদত শুধুমাত্র মহান আল্লাহর জন্য হবে এবং তাঁর ইবাদতে অন্য কাউকে শরীক করা যাবে না। মূলতঃ তাওহীদুল ইবাদাহ প্রতিষ্ঠা হচ্ছে মুমিনের সর্বপ্রথম কর্তব্য। এ মর্মে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) যখন মু‘য়ায (ইবনে জাবাল) (রাঃ)-কে শাসনকর্তা হিসাবে ইয়ামান পাঠান, তখন বলেছিলেন, তুমি আহ’লে কিতাব লোকদের নিকট যাচ্ছ। সুতরাং প্রথমে তাদেরকে এই সাক্ষ্য প্রদানের দাওয়াত দিবে যে আল্লাহ ছাড়া কোন প্রকৃত উপাস্য নেই এবং আমি তাঁর রাসূল। যদি তারা এটা মেনে নেয়, তাহ’লে তাদের তুমি বলবে যে, আল্লাহ দিন-রাতে তাদের উপর পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত ফরয করে দিয়েছেন। যদি তারা তা মেনে নেয়, তখন তাদের জানিয়ে দিবে যে, আল্লাহ তাদের উপর যাকাত ফরয করেছেন, যা তাদের ধনীদের নিকট হ’তে গ্রহণ করা হবে এবং তাদের দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করে দেয়া হবে। যখন তারা এর অনুসরণ করবে তখন তাদের হ’তে তা গ্রহণ করবে এবং লোকের উত্তম মাল গ্রহণ করা হ’তে বিরত থাকবে।[1]

হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, আমাদেরকে তাওহীদুল ইবাদাহ প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং সর্বপ্রথম দাওয়াত হবে তাওহীদের। এরপর ছালাত, ছিয়াম, হজ্জ, যাকাত প্রভৃতি ইবাদতের।

তাওহীদ প্রতিষ্ঠাই ছিল রাসূলের মূলকাজ। যেমন তিনি বলেন, আমি লোকদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার জন্য নির্দেশিত হয়েছি, যতক্ষণ না তারা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ব্যতীত সত্য কোন মা‘বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর রাসূল। আর ছালাত প্রতিষ্ঠা করে ও যাকাত আদায় করে। তারা যদি এগুলো করে, তবে আমার থেকে তাদের জান ও মাল নিরাপদে থাকবে; অবশ্য ইসলামের বিধান  অনুযায়ী যদি কোন কারণ থাকে, তাহ’লে স্বতন্ত্র কথা। আর তাদের হিসাবের ভার আল্লাহর উপর অর্পিত হবে’।[2]

অন্যত্র এসেছে, আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) মানুষদের বলেছিলেন, ‘তোমরা বল, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মা‘বূদ নেই, তাহ’লেই তোমরা সফলকাম হবে’।[3]

উল্লিখিত আয়াত ও হাদীছ থেকে দু’টি বিষয় সুস্পষ্ট হ’ল- (১) সকল প্রকার ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই করতে হবে। (২) সকল প্রকার শিরকী আমল পরিহার করতে হবে।

অপরদিকে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর হজ্জটাই ছিল তাওহীদের বাণী প্রচার ক্ষেত্র স্বরূপ। যেমন তিনি তালবিয়াহ পাঠ করতেন এভাবে, لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لاَشَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ، لاَشَرِيْكَ لَكَ- অর্থ : ‘আমি হাযির হে আল্লাহ! আমি হাযির, আমি হাযির। আপনার কোন শরীক নেই, আমি হাযির। নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা ও সকল অনুগ্রহ ও সাম্রাজ্য সবই আপনার; আপনার শরীক নেই’।[4]

মুহাদ্দিছ আল্লামা আব্দুল মুহসিন আল-আববাদ বলেন, হাদীছে তাওহীদ প্রতিষ্ঠিত করতে বলা হয়েছে এবং শিরক থেকে বেঁচে থাকতে বলা হয়েছে। যার অর্থ দাঁড়ায় ইবাদত একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্যই হ’তে হবে, অন্যের জন্য নয়।[5]

আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) আরাফার দো‘আ সম্পর্কে বলেন, উত্তম দো‘আ হ’ল আরাফার দিনের দো‘আ। যে দো‘আ আমি এবং আমার পূর্বের নবীগণ পড়তেন। তাহ’ল ‘আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য মা‘বূদ নেই, তাঁর কোন শরীক নেই, তিনিই সমস্ত রাজত্বের মালিক এবং তাঁর জন্যই সমস্ত প্রশংসা এবং তিনি সমস্ত বিষয়ে ক্ষমতাবান’।[6]

মূলতঃ তাওহীদের স্বীকৃতি দিয়েই মানুষ ইসলামে প্রবেশ করে এবং তাওহীদের স্বীকৃতি প্রদান করে দুনিয়া থেকে পরপারে চলে যায়। এজন্যই আল্লামা ইবনে আবিল-ইয হানাফী (রহঃ) বলেন, ‘তাওহীদের মাধ্যমেই সর্বপ্রথমে ইসলামে প্রবেশ করা হয় এবং সেটার মাধ্যমেই মানব জাতি দুনিয়া থেকে বের হয়ে পরপারে যায়। যেমন নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তির শেষের বাক্য হবে ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে’।[7]

কোন বিদ্বান বলেন, তাওহীদই হচ্ছে প্রথম ওয়াজিব এবং সেটাই হচ্ছে শেষ ওয়াজিব।[8] অপর হাদীছ থেকে পাওয়া যায়, লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ জান্নাতের চাবি। ওয়াহ্হাব ইবনু মুনাবিবহ (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হ’ল, ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ কি জান্নাতের চাবি নয়? উত্তরে তিনি বললেন, অবশ্যই। তবে কোন চাবির দাঁত থাকে। তুমি দাঁত যুক্ত চাবি আনতে পারলে তোমার জন্য (জান্নাতের) দরজা খুলে দেওয়া হবে। অন্যথা তোমার জন্য খোলা হবে না।[9]

উল্লিখিত হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, কালেমা পড়ে বসে থাকলে হবে না, আমলও করতে হবে, নচেৎ নাজাতের কোন পথ নেই।

প্রত্যেক আদম সন্তানই ইসলামের উপর তথা তাওহীদের উপর জন্ম লাভ করে। এ মর্মে রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেন, প্রত্যেক নবজাতকই ফিৎরাতের উপর (তাওহীদের উপর) জন্মলাভ করে। অতঃপর পিতা-মাতা তাকে ইহুদী, নাছারা বা মাজুসী (অগ্নিপূজক) রূপে গড়ে তোলে। যেমন চতুষ্পদ পশু একটা পূর্ণাঙ্গ বাচ্চা জন্ম দেয়। তোমরা কি তাকে কোন (জন্মগত) কানকাটা দেখতে পাও? অতঃপর আবু হুরায়রাহ (রাঃ) তিলাওয়াত করলেন ‘তাঁর (আল্লাহর) দেয়া ফিৎরাতের অনুসরণ কর, যে ফিৎরাতের উপর তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন, এটাই সরল সুদৃঢ় দ্বীন’।[10]

এ আয়াত ও হাদীছের শিক্ষা হ’ল- (১) প্রথমেই আক্বীদা শুদ্ধ করতে হবে এবং সকল ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই হ’তে হবে। কোন পীর, মাজার, দরগা বা অন্য কারো জন্য নয়। কেননা এসব শিরক এবং এর পরিণাম জাহান্নাম।

(২) কালেমা পড়ার সাথে সাথে আমল করতে হবে। অন্তরে বিশ্বাস করতে হবে, মুখে উচ্চারণ এবং তা কাজে বাস্তবায়ন করতে হবে, নইলে মুসলমান হওয়া যাবে না।

(৩) সকল তাগূতীপথকে পরিত্যাগ করতে হবে। তাগূত হচ্ছে, আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যের ইবাদত করা।

(৪) সকল মানব সন্তান ফিৎরাতের উপর (তাওহীদের উপর) জন্ম গ্রহণ করে। পিতা-মাতা তাকে ইহুদী, নাছারা, অগ্নিপূজক বানায়।

(৫) সম্পূর্ণ হজ্জ অনুষ্ঠানই তাওহীদের বাণী প্রচারের উপযুক্ত সময়।

(৬) তাওহীদের মাধ্যমেই মানব সন্তান ইসলামে প্রবেশ করে এবং তাওহীদের মাধ্যমেই দুনিয়া থেকে পরপারে চলে যায়।

(৭) রাসূল (ছাঃ)-এর অনুসরণেই আমল করতে হবে। অন্যথা তা কবুল হবে না।

– হাফেয আব্দুল মতীন


[1]. বুখারী হা/১৪৫৮; মুসলীম হা/১৯

[2]. বুখারী হা/২৫; মুসলিম হা/২১

[3]. আহমাদ হা/১৬০৬৬; ছহীহ ইবনে খুযাইমা হা/১৫৯, সনদ ছহীহ

[4]. ছহীহুল বুখারী হা/১৫৪৯

[5]. তাফসীর আন-নাসিক বে আহকামিল মানাসিক, পৃঃ ৯০-৯১

[6]. তিরমিযী হা/৩৫৮৫; মিশকাত হা/২৫৯৮, সনদ হাসান

[7]. ইবনে হিববান হা/৭১৯ সনদ ছহীহ

[8]. শরহে আক্বীদাহ আত-ত্বহাবিয়্যাহ ১/১২৫

[9]. ছহীহুল বুখারী, কিতাবুল জানায়েয, পৃঃ ১৯৮

[10]. রূম ৩০; ছহীহুল বুখারী হা/১৩৫৯

ইসলামিক ইমেইল নিউজলেটার
নতুন পোস্ট প্রকাশিত হলে সরাসরি আপনার ই-মেইল ইনবক্সে পেতে সাবস্ক্রাইব করুন।
icon

মন্তব্য করুন

আরও দেখুন
Close
Back to top button