সচেতনতা

হতাশ হয়ো না- আল্লাহ তোমার কণ্ঠ শুনতে চান তোমার দু’আর মাধ্যমে

পাপে ফিরে যাওয়ার পেছনে রয়েছে হতাশা। যখন আমাদের মনে হতাশা এসে ভর করে তা যেকোনো মুহূর্তে আমাদের সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষমতা দূর্বল করে দেয়।
.
কিছু উদাহরনঃ
ক. আপনার হারাম চাকরিটা বিদায় দিলেন। তওবাহ করলেন। আপনি বেকার। নিজের জন্য হালাল কর্মসংস্থান খুঁজছেন। কিংবা
.
খ. আপনি প্রেম করতেন। সেখান থেকে তওবাহ করলেন। নিজেকে তৈরি করছেন পুতঃপবিত্র একজনের জন্য। আপনি অপেক্ষা করছেন আল্লাহর উপর ভরসা করে। কিংবা
.
গ. আপনি অশ্লীল মুভি-গানে মত্ত ছিলেন। আল্লাহর জন্য তওবাহ করে ফিরে এলেন। কিংবা আরো অনেক কিছু থেকে ফিরে এলেন। বিদায় দিলেন পাপকে।
.
শয়তান এসে ওয়াসওয়াসা দিল। এবার আপনি তাকিয়ে দেখছেন ভিন্ন কিছু। দেখলেন অপেক্ষায় আর আপনার কুলাচ্ছে না। অনেকের অনেক কথা শুনতে হয়। আপনার ধৈর্যচ্যুতি ঘটলো। আপনি হতাশ হয়ে গেলেন। সম্পূর্ণ হতাশ। কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। ভেঙে পড়লেন। আপনি আবার পাপে নিমজ্জিত হলেন। ফিরে গেলেন সুদে জড়িত হারাম চাকরিটাতে। পুরনো প্রেমিকার কথা মনে পড়তে লাগলো। ভুল করে ফোনটা দিয়েই ফেললেন আবার। পুরনো গানের সুর ভালো লাগা শুরু করলো। গান আবার শোনা শুরু করলেন। সমস্যা মনে হলো না। “সামাজিক মুভি” দেখা শুরু করলেন। পাপে পাপে আবার জাহেল হয়ে গেলেন ধীরে ধীরে।
.
শয়তান আসলে এটাই চায়। সে চেষ্টায় থাকে আমরা কখন গুনাহ থেকে নিবৃতির হালটা ছেড়ে দিই। আর তখনই নষ্ট করে দেওয়া যায় আমাদের সব। যদি পারছিই না গুনাহ ছাড়তে তবু চেষ্টায় থাকার নাম হাল ছেড়ে না দেওয়া। শয়তান তার উদ্দেশ্য (তথা মানুষকে জাহান্নামে নেওয়ার) সাধনকল্পে সিনসিয়ার। বারবার সে চেষ্টায় থাকে কীভাবে এক একটা কাজের মাধ্যমে আমাদেরকে দূরে সরিয়ে নেওয়া যায় আল্লাহর থেকে। আমরা কেন তার চক্রান্ত নস্যাতে সিনসিয়ার হবো না?
.
মূলত শয়তানের চক্রান্ত দূর্বল মাকড়সার জাল। সে চায় ফিসফিস করে বাঁকা পথে নিয়ে যেতে যেতে গর্তে ফেলে দিতে। কিন্তু স্টিয়ারিং হুইল কিন্তু আমাদের হাতেই। পাপ থেকে বাঁচার পূর্বশর্ত প্রথম বারেই একে থামিয়ে দেওয়া। পাপে প্ররোচিত করার যত উপকরণ সব ধ্বংস করে দেওয়া। দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ধীরে ধীরে তা অশ্লীলতার দিকে নিয়ে যায়। তাই প্রথম কাজ হলো চিন্তা করা কী কী আমার এই পাপে প্ররোচিত করছে। উদাহরণ হিসেবে অশ্লীল কিছু দেখার পেছনে নির্জন জায়গা, ইন্টারনেট আর ইচ্ছা কাজ করে। এর একটি না থাকলে পাপটা হবে না। আপনার মনে ওয়াসওয়াসা এলে এর একটি থেকে সব যুক্তির বাইরে এসে মুক্ত হোন। প্রতিটা কাজই সুক্ষ্মভাবে আল্লাহর জন্য করুন। আল্লাহর ইবাদাতে গাফিলতি সম্পূর্ণ বিলীন করে দিন। ধৈর্য হারাবেন না।আল্লাহ আপনাকে তৈরি করছেন উত্তম পুরষ্কারটির জন্য।
.
ধৈর্য হারালে আখেরে শুধু লাঞ্ছনা আর গঞ্জনা। জান্নাত আল্লাহ রেখেছেন সবরকারীদের জন্য। দুনিয়াতে চূড়ান্ত সম্মানও ধৈর্যশীলদের জন্যেই। কষ্ট আসবেই কিন্তু ভেঙে পড়া যাবে না।
ইবনুল কায়্যিম রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
“যদি আল্লাহ তাঁর বান্দাহর জন্য পর্দা উঠিয়ে দিতেন আর কীভাবে তার জন্য তিনি ব্যাপারগুলো সমাধা করেন তা দেখিয়ে দিতেন, আর আল্লাহ তাঁর বান্দাহর কল্যাণের ব্যাপারে সুতীক্ষ্ণ, তবে তার অন্তর আল্লাহকে ভালোবাসায় গলে যেতো আর তা ছিঁড়ে যেতো আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতায়। সুতরাং এই পৃথিবীর ব্যথা যদি তোমায় ক্লান্ত করে দেয়, দুঃখ করো না। কেননা এমনটা হতে পারে যে আল্লাহ তোমার কণ্ঠ শুনতে চান তোমার দু’আর মাধ্যমে। তাই তোমার প্রবৃত্তিকে ঢেলে দাও সিজদাহতে আর ভুলে যাও তা। আর মনে রেখো- আল্লাহ ভুলে যান না।”

.
আল্লাহই বলে দিয়েছেন কুর’আনে- “এবং তোমার রব কখনো ভুলে যান না” [সূরা মারিয়ামঃ ৬৪]
আপনি হতাশ হবেন কেন? আপনি কাঁর বান্দাহ তাও কী ভুলে গেছেন?
.


উৎস : ফেসবুক

ইসলামিক ইমেইল নিউজলেটার
নতুন পোস্ট প্রকাশিত হলে সরাসরি আপনার ই-মেইল ইনবক্সে পেতে সাবস্ক্রাইব করুন।
icon

মন্তব্য করুন

Back to top button