সচেতনতা

অজু করে সাহিত্য, চটুল ইসলামি রোমান্টিকতা ও কাসিম বিন আবু বাকার

আলমাহমুদ আমার এক ভাবীর সাথে একবার সাক্ষাতকার দেন। ভাবী তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় অনার্স নিয়েছেন। কাড়ি কাড়ি লিখতেনও। প্রশ্ন করলেনঃ স্যার, এই পানকৌড়ির রক্ত থেকে শুরু করে পুরুষ সুন্দর পর্যন্ত, এই যে সোনালী কাবিন থেকে শুরু করে বখতিয়ারের ঘোড়া পর্যন্ত আপনার সাহিত্যে এত অশ্লীলতা এনেছেন কেন? আপনার নাতি নাতিনরা যখন এই গুলো পড়ে, আপনার লজ্জা লাগেনা? তিনি বলেছিলেন, ………, অযু করে সাহিত্য হয়না।

ইসলামী সাহিত্য সমালোচক আলী আলজুরজানী তো আরো কিছু কথা বলে গেছেন যা আজকের যামানায় আমাদের তৌবা তৌবা করতে হয়। তিনি বলছেনঃ সাহিত্যে তোমরা ধর্ম এনোনা, আদ্দীনু বিমা’যিলিন ‘আনিশ শি’র, কবিতার জগত ও ধর্মের জগত আলাদা। তিনি আরো বলেছেনঃ আ’যাবু শি’রিন আকযাবুহু। অর্থাৎ সবচেয়ে মিষ্টি কবিতা হলো সবচেয়ে জঘন্য মিথ্যায় সাজানো।

এইসব কথা পড়তাম, ভাবতাম, আর বলতাম আহারে সাহিত্য! তোরে পাবো কেমনে!! খালি ঝামেলা; প্রেম, অনুরাগ, বেড়া ভাংগা গরুর মত পরের ক্ষেতে ধান খাওয়ার পরকীয়া ইত্যাকার ঝামেলায় সাহিত্য আজ চেরনোবিলের পরমাণুর বিষ্ফোরনের মত ভয় ধরাচ্ছে। এর মধ্যে আসলো কাসিম বিন আবু বকরের গুরুত্ব।

মগবাজার এলাকায় যত গুলো বইএর দোকান ছিলো সেখানে আশির দশকের শেষের দিকে বই চাইতে গেলেই দোকানদার দ্বীনি ভায়েরা এক ফোকলা হাসির বাণ মেরে ঐসব বই ধরিয়ে দিতেন, যার প্রচ্ছদে থাকতো সুন্দর ললনার ছবিতে প্রেমের শীরোনাম ঋদ্ধ ‘যুবক মনে সুখ সুখ ভাব জাগানিয়া’ সৌন্দর্য।

সে সময় কাসিম বিন আবু বকরের দুই তিনটা ইসলামি (?) ঊপন্যাস পড়েছি ধৈর্য নিয়ে। সাহিত্য জগতে ঠাঁই পেতে তিনি অনেক কাজ করেছেন। ঠাঁই পেয়েছেন, পাবেন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খ্যাতি নিয়ে আসবেন। আসলে তাকে তা দেয়াও উচিৎ। কারণ সামাজিক সম্পর্ক বিশেষ করে নারী পুরুষের যে জৈবিক ও মনোস্তাত্বিক প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক ইসলাম নিষেধ করে তা তিনি স্থূলভাবে আমাদের দ্বীনী ভাইদের মধ্যে সঞ্চারিত করেছেন।

বিকেলে হিজাবি মেয়েকে তার ছেলেবন্ধুর সাথে নদীর ধারে নিয়ে গেছেন কাসিম সাহেব।, সেখানে ছেলেবন্ধু আবেগে টলমল হয়ে মেয়েবন্ধুকে জড়িয়ে চুমু খাইতে যাওয়ার সময় কাসিম সাহেব মেয়ের মুখে অহীর বাণী দিয়েছেনঃ উহু, ঐটা এখন না, বিয়ের পরে।

অনেক প্রেমের প্রস্রবন তার সাহিত্যে বয়েছে, আরও বইবে এটাই স্বাভাবিক। ঐগুলো দিয়ে একটা বাজে জেনারেশান তৈরি করা খুব সহজ। ফলে তার সাহিত্যের কদর বাড়তে বাড়তে আমাদের সুইডেনে এসে ধাক্কা লাগুক, এই আশাও রাখছি।

কারে আর কি বলবো, সাহিত্যের সাগরে উর্মি উঠানো লোকের যে আকাল, তাতে কাসিম বিন আবু বাকারকে আর মন্দ বলে লাভ কি?

তবে ইসলামের সার্বজনীন শিক্ষার গায়ে উনি সুন্দর করে গোবর লেপেছেন বলে একটু একটু ক্ষেপতেছি। সরি, গোবর বলেছি, গরুর চেনা বলিনি, কারণ ঐটাও এক বিশাল ধর্মের অনুসারীরা পবিত্রজ্ঞানে পান করে।

ইসলামিক ইমেইল নিউজলেটার
নতুন পোস্ট প্রকাশিত হলে সরাসরি আপনার ই-মেইল ইনবক্সে পেতে সাবস্ক্রাইব করুন।
icon

মন্তব্য করুন

Back to top button